০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পেছনে উ. কোরীয় হ্যাকার গ্রুপ!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:৪৫:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৪২৪৮ বার দেখা হয়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ওই টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো হয়। দেশীয় কোনো চক্রের সহায়তায় হ্যাকার গ্রুপ রিজার্ভের অর্থ পাচার করেছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

তবে রিজার্ভ চুরির বিষয়ে নতুন তথ্য দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভসহ বিভিন্ন দেশ, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ চুরির পেছনে উত্তর কোরীয় সামরিক বাহিনীর হ্যাকার গ্রুপের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটি।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত বুধবার লস অ্যাঞ্জেলসের একটি আদালতে পার্ক জিন হিয়ক (৩৬), জন চ্যাং হিয়ক (৩১) ও কিম ইলের (৩১) বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছে মার্কিন বিচার বিভাগ। তারা উত্তর কোরিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা রিকনেসেন্স জেনারেল ব্যুরোর সদস্য বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

উত্তর কোরীয় সামরিক বাহিনীর এই তিন হ্যাকার সাইবার নিরাপত্তা সম্প্রদায়ে ‘ল্যাজারাস গ্রুপ’ এবং ‘অ্যাডভান্সড পারসিসটেন্ট থ্রেট ৩৮ (এটিপি৩৮)’ নামে পরিচিত।

বলা হয়েছে, এরা তিনজন বিশ্বজুড়ে বড় বড় সব সাইবার হামলার সঙ্গে জড়িত। ২০১৪ সালে সনি পিকচার্স এন্টারটেইনমেন্ট, এরপর এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশের ব্যাংক থেকে তারা অন্তত ১৩০ কোটি ডলার সমমানের অর্থ চুরি করেছেন। এর মধ্যে বিপুল পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সিও (ডিজিটাল অর্থ) রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি ট্রেসি উইলকিনসনের কথায়, দীর্ঘদিন ধরে চলা উত্তর কোরীয় হ্যাকারদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পরিধি ব্যাপক এবং তারা যে অপরাধ করেছে তা বিস্ময়কর!

এসব হ্যাকারের পেছনে রাষ্ট্রীয় মদদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভিযোগপত্রের বিবরণী অনুসারে, এটি এমন একটি অপরাধী রাষ্ট্রের কাজ, যারা প্রতিশোধ এবং অর্থ উপার্জনের স্বার্থে কোনো কিছুতেই থামে না।

জানা যায়, উত্তর কোরিয়ার এই হ্যাকাররা ২০১৪ সালে সনি পিকচার্সে হানা দিয়েছিল। এরপর বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, মেক্সিকো, মাল্টার মতো দেশগুলো থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ চুরি করেছে।

২০১৬ সালে তারা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। পাকিস্তানের ইসলামী ব্যাংক থেকেও ৬১ লাখ ডলার হাতিয়েছে উত্তর কোরীয় হ্যাকাররা।

তারা স্লোভেনিয়ার একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে সাত কোটি ডলার, ইন্দোনেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে আড়াই কোটি ডলার এবং নিউইয়র্কের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১ কোটি ২০ লাখ ডলার ডিজিটাল অর্থ চুরি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসব কাজ তারা উত্তর কোরিয়ার বাইরে, যেমন- চীন ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোতে বসে পরিচালনা করেছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

পার্ক জিন হিয়কের বিরুদ্ধে আগে থেকেই সনি পিকচার্স ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির অভিযোগ ছিল। তার সঙ্গে এবার উত্তর কোরীয় গোয়েন্দা সংস্থার আরও দুই হ্যাকারের নাম যোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

সূত্র: এএফপি, দ্য গার্ডিয়ান।

 

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x
English Version

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পেছনে উ. কোরীয় হ্যাকার গ্রুপ!

আপডেট: ০৫:৪৫:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে ওই টাকা ফিলিপাইনে পাঠানো হয়। দেশীয় কোনো চক্রের সহায়তায় হ্যাকার গ্রুপ রিজার্ভের অর্থ পাচার করেছে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

তবে রিজার্ভ চুরির বিষয়ে নতুন তথ্য দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভসহ বিভিন্ন দেশ, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ চুরির পেছনে উত্তর কোরীয় সামরিক বাহিনীর হ্যাকার গ্রুপের হাত রয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটি।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত বুধবার লস অ্যাঞ্জেলসের একটি আদালতে পার্ক জিন হিয়ক (৩৬), জন চ্যাং হিয়ক (৩১) ও কিম ইলের (৩১) বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনেছে মার্কিন বিচার বিভাগ। তারা উত্তর কোরিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা রিকনেসেন্স জেনারেল ব্যুরোর সদস্য বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

উত্তর কোরীয় সামরিক বাহিনীর এই তিন হ্যাকার সাইবার নিরাপত্তা সম্প্রদায়ে ‘ল্যাজারাস গ্রুপ’ এবং ‘অ্যাডভান্সড পারসিসটেন্ট থ্রেট ৩৮ (এটিপি৩৮)’ নামে পরিচিত।

বলা হয়েছে, এরা তিনজন বিশ্বজুড়ে বড় বড় সব সাইবার হামলার সঙ্গে জড়িত। ২০১৪ সালে সনি পিকচার্স এন্টারটেইনমেন্ট, এরপর এশিয়া ও আফ্রিকার অনেক দেশের ব্যাংক থেকে তারা অন্তত ১৩০ কোটি ডলার সমমানের অর্থ চুরি করেছেন। এর মধ্যে বিপুল পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সিও (ডিজিটাল অর্থ) রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি ট্রেসি উইলকিনসনের কথায়, দীর্ঘদিন ধরে চলা উত্তর কোরীয় হ্যাকারদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পরিধি ব্যাপক এবং তারা যে অপরাধ করেছে তা বিস্ময়কর!

এসব হ্যাকারের পেছনে রাষ্ট্রীয় মদদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভিযোগপত্রের বিবরণী অনুসারে, এটি এমন একটি অপরাধী রাষ্ট্রের কাজ, যারা প্রতিশোধ এবং অর্থ উপার্জনের স্বার্থে কোনো কিছুতেই থামে না।

জানা যায়, উত্তর কোরিয়ার এই হ্যাকাররা ২০১৪ সালে সনি পিকচার্সে হানা দিয়েছিল। এরপর বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, মেক্সিকো, মাল্টার মতো দেশগুলো থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ চুরি করেছে।

২০১৬ সালে তারা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। পাকিস্তানের ইসলামী ব্যাংক থেকেও ৬১ লাখ ডলার হাতিয়েছে উত্তর কোরীয় হ্যাকাররা।

তারা স্লোভেনিয়ার একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে সাত কোটি ডলার, ইন্দোনেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে আড়াই কোটি ডলার এবং নিউইয়র্কের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ১ কোটি ২০ লাখ ডলার ডিজিটাল অর্থ চুরি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসব কাজ তারা উত্তর কোরিয়ার বাইরে, যেমন- চীন ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোতে বসে পরিচালনা করেছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

পার্ক জিন হিয়কের বিরুদ্ধে আগে থেকেই সনি পিকচার্স ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির অভিযোগ ছিল। তার সঙ্গে এবার উত্তর কোরীয় গোয়েন্দা সংস্থার আরও দুই হ্যাকারের নাম যোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

সূত্র: এএফপি, দ্য গার্ডিয়ান।

 

আরও পড়ুন: