১০:২৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

অতিরিক্ত ১০০ কোটি টিকা মজুত করেছে ধনী দেশগুলো

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:৩৫:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৪১৬৪ বার দেখা হয়েছে

গরিব দেশগুলো এখনো টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে না পারলেও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত ধনী দেশগুলো একশো কোটিরও বেশি অতিরিক্ত  টিকা মজুতের বন্দোবস্ত করেছে। দারিদ্র্য বিমোচন সংক্রান্ত একটি প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষণে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।  

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দারিদ্র্য বিমোচন সংক্রান্ত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘দ্য ওয়ান ক্যাম্পেইন’ বলছে, অন্যায্যভাবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডার মতো দেশগুলো চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত টিকার বন্দোবস্ত করে রাখায় টিকা পাওয়ার দৌঁড়ে দরিদ্র দেশগুলো অনেকটা পিছিয়ে পড়ছে।

এতে করে বৈশ্বিকভাবে করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি আরও দীর্ঘায়িত হবে।

করোনার টিকা ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তিগুলো নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিশ্লেষণী ওই প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়ে বলা হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী মহামারির লাগাম টানতে হলে ধনী দেশগুলোর উচিত হবে, তাদের মজুত করা বাড়তি কোটি কোটি টিকা গরিব দেশগুলোকে সরবরাহ করা।

দারিদ্র্য বিমোচন ও নিরাময়যোগ্য রোগ নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, টিকার সমবণ্টন না হলে কোটি কোটি মানুষ করোনা থেকে সুরক্ষা পাবে না। এতে করে বৈশ্বিকভাবে করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি আরও দীর্ঘায়িত হবে।

করোনা টিকার উদ্ভাবক বিশ্বের প্রধান পাঁচটি ওষুধ ও জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানির সঙ্গে কোন কোন দেশের টিকা ক্রয়সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে, সেসব তথ্য বিশ্লেষণ করেই মূলত ‘ওয়ান ক্যাম্পেইন’ ধনী দেশগুলোর অতিরিক্ত টিকা মজুত নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জাপান ইতোমধ্যেই তিনশো কোটি ডোজ টিকা কিনলেও চাহিদা পূরণে এসব দেশের দুইশো কোটি টিকাই যথেষ্ট।

কোম্পানিগুলো হল ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসন ও নোভাভ্যাক্স। এসব কোম্পানির বেশিরভাগ যুক্তরাষ্ট্রের। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জাপান ইতোমধ্যেই তিনশো কোটি ডোজ করোনা টিকা কিনেছে। দেশগুলোর মোট জনসংখ্যাকে টিকার দুটি করে ডোজ দেওয়ার পরও আরও একশো কোটি বাড়তি থেকে যাবে।

মোট টিকার ৭৫ শতাংশ পেয়েছে মাত্র ১০টি দেশ। অথচ ১৩০টি দেশ এখনো করোনা টিকার একটি ডোজও পায়নি। 

প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ নীতি নির্ধারণী বিষয়ক পরিচালক জেনি ওটেনহফ বলেন, ‘এটা টিকা জাতীয়তাবাদের ফল। শুরু থেকেই আগাম টিকা মজুতের চেষ্টা করেছে ধনী দেশগুলো। সব মানুষকে টিকার আওতায় আনতে এখনই এমন প্রবণতার পরিবর্তন প্রয়োজন।’

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের তুলে ধরা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মোট টিকার ৭৫ শতাংশ পেয়েছে মাত্র ১০টি দেশ। অথচ ১৩০টি দেশ এখনো করোনা টিকার একটি ডোজও পায়নি। এমন বৈষম্যের অবসান ঘটাতে বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘের এমন উদ্বেগ ও উৎণ্ঠার পর অবশ্য শুক্রবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা যেন তাদের হাতে থাকা করোনা টিকার সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত জরুরিভিত্তিতে গরীব ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সরবরাহ করে।

সূত্র : রয়টার্স

 

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x
English Version

অতিরিক্ত ১০০ কোটি টিকা মজুত করেছে ধনী দেশগুলো

আপডেট: ০৩:৩৫:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২১

গরিব দেশগুলো এখনো টিকাদান কর্মসূচি শুরু করতে না পারলেও উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত ধনী দেশগুলো একশো কোটিরও বেশি অতিরিক্ত  টিকা মজুতের বন্দোবস্ত করেছে। দারিদ্র্য বিমোচন সংক্রান্ত একটি প্রতিষ্ঠানের বিশ্লেষণে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।  

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দারিদ্র্য বিমোচন সংক্রান্ত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘দ্য ওয়ান ক্যাম্পেইন’ বলছে, অন্যায্যভাবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডার মতো দেশগুলো চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত টিকার বন্দোবস্ত করে রাখায় টিকা পাওয়ার দৌঁড়ে দরিদ্র দেশগুলো অনেকটা পিছিয়ে পড়ছে।

এতে করে বৈশ্বিকভাবে করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি আরও দীর্ঘায়িত হবে।

করোনার টিকা ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তিগুলো নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিশ্লেষণী ওই প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়ে বলা হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী মহামারির লাগাম টানতে হলে ধনী দেশগুলোর উচিত হবে, তাদের মজুত করা বাড়তি কোটি কোটি টিকা গরিব দেশগুলোকে সরবরাহ করা।

দারিদ্র্য বিমোচন ও নিরাময়যোগ্য রোগ নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, টিকার সমবণ্টন না হলে কোটি কোটি মানুষ করোনা থেকে সুরক্ষা পাবে না। এতে করে বৈশ্বিকভাবে করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি আরও দীর্ঘায়িত হবে।

করোনা টিকার উদ্ভাবক বিশ্বের প্রধান পাঁচটি ওষুধ ও জৈবপ্রযুক্তি কোম্পানির সঙ্গে কোন কোন দেশের টিকা ক্রয়সংক্রান্ত চুক্তি হয়েছে, সেসব তথ্য বিশ্লেষণ করেই মূলত ‘ওয়ান ক্যাম্পেইন’ ধনী দেশগুলোর অতিরিক্ত টিকা মজুত নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জাপান ইতোমধ্যেই তিনশো কোটি ডোজ টিকা কিনলেও চাহিদা পূরণে এসব দেশের দুইশো কোটি টিকাই যথেষ্ট।

কোম্পানিগুলো হল ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসন ও নোভাভ্যাক্স। এসব কোম্পানির বেশিরভাগ যুক্তরাষ্ট্রের। 

প্রতিবেদন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জাপান ইতোমধ্যেই তিনশো কোটি ডোজ করোনা টিকা কিনেছে। দেশগুলোর মোট জনসংখ্যাকে টিকার দুটি করে ডোজ দেওয়ার পরও আরও একশো কোটি বাড়তি থেকে যাবে।

মোট টিকার ৭৫ শতাংশ পেয়েছে মাত্র ১০টি দেশ। অথচ ১৩০টি দেশ এখনো করোনা টিকার একটি ডোজও পায়নি। 

প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ নীতি নির্ধারণী বিষয়ক পরিচালক জেনি ওটেনহফ বলেন, ‘এটা টিকা জাতীয়তাবাদের ফল। শুরু থেকেই আগাম টিকা মজুতের চেষ্টা করেছে ধনী দেশগুলো। সব মানুষকে টিকার আওতায় আনতে এখনই এমন প্রবণতার পরিবর্তন প্রয়োজন।’

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের তুলে ধরা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মোট টিকার ৭৫ শতাংশ পেয়েছে মাত্র ১০টি দেশ। অথচ ১৩০টি দেশ এখনো করোনা টিকার একটি ডোজও পায়নি। এমন বৈষম্যের অবসান ঘটাতে বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘের এমন উদ্বেগ ও উৎণ্ঠার পর অবশ্য শুক্রবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বিশ্বনেতাদের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা যেন তাদের হাতে থাকা করোনা টিকার সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত জরুরিভিত্তিতে গরীব ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সরবরাহ করে।

সূত্র : রয়টার্স

 

আরও পড়ুন: