০১:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির তোড়জোড়

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:১৪:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৪০৯৮ বার দেখা হয়েছে

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। ভর্তির তোড়জোড় শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যেও। এমন প্রেক্ষাপটে শিক্ষামন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের একটি ত্রিপক্ষীয় অনলাইন সভা হবে আগামী সোমবার ৮ ফেব্রুয়ারি। সেখানে গুচ্ছ পরীক্ষার বিস্তারিত সূচিও চূড়ান্ত করা হবে। আগামী সপ্তাহে উপাচার্যদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’ও বৈঠক করবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গুচ্ছ পরীক্ষা নিয়ে রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কক্ষে সভা করেন। সেখানে ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতা, পরীক্ষার বিষয় ও পদ্ধতি এবং মানবণ্টন চূড়ান্ত করা হয়।
এ প্রসঙ্গে উপাচার্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম সমকালকে জানান, বৃহস্পতিবারের সভায় ভর্তি পরীক্ষা কেমন হওয়া উচিত সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কবে পরীক্ষা হবে তার চূড়ান্ত সূচি এখনও হয়নি।
রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান জানান, দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব না কমা পর্যন্ত এই ভর্তি পরীক্ষা করা যাবে না। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধাপে ধাপে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে। তিনি জানান, গুচ্ছ পদ্ধতিতে আবেদন ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থী মোবাইলে এসএমএস পাবে। পরীক্ষায় বসার আগে তাকে ফি পরিশোধ করতে হবে। কোথায় ভর্তি হবেন ও ভর্তি পরীক্ষায় বসবেন, প্রার্থী তা নিজেই পছন্দ করবেন। এ জন্য ২০টি চয়েস অপশন থাকবে। পরীক্ষার্থী নিজে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করবেন।
উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে যতগুলো আসনে বসার সুযোগ থাকবে, তত জনকে এসএমএস দিয়ে ডাকা হবে। এভাবে কয়েকটি ধাপে পরীক্ষা নেওয়া হবে। ভর্তি পরীক্ষা মাল্টিপল চয়েস অব কোশ্চেন (এমসিকিউ) পদ্ধতিতে নেওয়া হবে। অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, প্রতিটি প্রশ্নের এক নম্বর করে মান বা মূল্যায়ন করা হবে। ভুল উত্তরের জন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা হবে। ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন যাচাই-বাছাই করতে আলাদা পাঁচটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আবেদনের যোগ্যতা, ভর্তি পরীক্ষার বিষয় ও মানবণ্টন :গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, পদার্থ, রসায়ন এবং আইসিটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, অ্যাকাউন্টিং, বিজনেস অর্গানাইজেশন ও ম্যানেজমেন্ট এবং আইসিটি বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে। আর মানবিক বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের বাংলা, ইংরেজি এবং আইসিটি বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে।
গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য নূ্যনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবেদনের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মোট জিপিএর চতুর্থ বিষয় ছাড়া বিজ্ঞান বিভাগে ৭, ব্যবসায় শিক্ষায় সাড়ে ৬ এবং মানবিকে ৬ পয়েন্ট থাকতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষার মানবণ্টনও চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে ২০ নম্বর, রসায়নে ২০, জীববিজ্ঞান-গণিত এবং আইসিটি মিলে ৪০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। জীববিজ্ঞান, আইসিটি ও গণিতের মধ্যে যে কোনো দুটি বিষয়ের উত্তর দিতে হবে। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ১০ নম্বর করে মোট ২০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।
বাণিজ্য বিভাগের জন্য অ্যাকাউন্টিংয়ে ২৫ নম্বর, বিজনেস অর্গানাইজেশন ও ম্যানেজমেন্টে ২৫, আইসিটিতে ২৫, বাংলায় ১৩ এবং ইংরেজিতে ১২ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। আর মানবিক বিভাগে বাংলায় ৪০, ইংরেজিতে ৩৫ এবং আইসিটি বিষয়ে ২৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।
বুয়েটের পর অন্য তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা :বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একাডেমিক কাউন্সিল শেষ পর্যন্ত এককভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মেডিকেল ও বুয়েটের পর অন্য তিন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হবে। এ তিন বিশ্ববিদ্যালয় হলো- রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)।
এ প্রসঙ্গে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম শেখ গত বৃহস্পতিবার বলেন, আনুষ্ঠানিক চিঠি না পেলেও জানতে পেরেছি গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষায় বুয়েট আসবে না। বুয়েটের দেওয়া শর্ত মানা সম্ভব নয়। মেডিকেল ও বুয়েটের পর ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলেও জানান তিনি।
বিভাগ পরিবর্তনে থাকছে না আলাদা ইউনিট :গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় বিভাগ পরিবর্তনের জন্য আলাদা ইউনিট থাকছে না। গত বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটি। সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগ পরিবর্তন ইউনিট নিয়ে আলোচনার পর আগের সিদ্ধান্তই বহাল রাখা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা শুধু একটি পরীক্ষা নেব। সেটিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা পরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কুলার অনুযায়ী আবেদন করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ই সিদ্ধান্ত নেবে, বিভাগ পরিবর্তনে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কীভাবে ভর্তি করা হবে।
এই ভর্তিযজ্ঞের মধ্য দিয়ে দেশের ৪৬টি সরকারি ও ১০৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য পা রাখবে লাখ লাখ শিক্ষার্থী। মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ, কারিগরি কলেজে ভর্তির পাশাপাশি বিদেশেও পাড়ি জমাবেন ভর্তিচ্ছুদের অনেকে।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এবার আসনের কোনো সংকট নেই। তবে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীই উত্তীর্ণ হওয়ায় এবং সর্বোচ্চ ফল জিপিএ ৫ প্রাপ্তির সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ায় উচ্চ শিক্ষার স্তরে একটি পছন্দসই আসন পেতে ভর্তিচ্ছুদের মধ্যে মেধার লড়াই তীব্র হবে।
সবচেয়ে বেশি যুদ্ধ হবে এবার মেডিকেল ও প্রকৌশল শিক্ষায় ভর্তি নিয়ে। কারণ সর্বোচ্চ ফল জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীই সিংহভাগ। দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২১টির ভর্তি পরীক্ষা হবে এবার একসঙ্গে, গুচ্ছ পদ্ধতিতে। একই দিনে না হয়ে তা ধাপে ধাপে হতে পারে। এই ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩ হাজার ১০৪ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন।

শেয়ার করুন

x
English Version

এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির তোড়জোড়

আপডেট: ০৪:১৪:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। ভর্তির তোড়জোড় শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যেও। এমন প্রেক্ষাপটে শিক্ষামন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের একটি ত্রিপক্ষীয় অনলাইন সভা হবে আগামী সোমবার ৮ ফেব্রুয়ারি। সেখানে গুচ্ছ পরীক্ষার বিস্তারিত সূচিও চূড়ান্ত করা হবে। আগামী সপ্তাহে উপাচার্যদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ’ও বৈঠক করবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গুচ্ছ পরীক্ষা নিয়ে রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কক্ষে সভা করেন। সেখানে ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতা, পরীক্ষার বিষয় ও পদ্ধতি এবং মানবণ্টন চূড়ান্ত করা হয়।
এ প্রসঙ্গে উপাচার্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. রফিকুল আলম সমকালকে জানান, বৃহস্পতিবারের সভায় ভর্তি পরীক্ষা কেমন হওয়া উচিত সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কবে পরীক্ষা হবে তার চূড়ান্ত সূচি এখনও হয়নি।
রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান জানান, দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব না কমা পর্যন্ত এই ভর্তি পরীক্ষা করা যাবে না। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ধাপে ধাপে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে। তিনি জানান, গুচ্ছ পদ্ধতিতে আবেদন ফি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থী মোবাইলে এসএমএস পাবে। পরীক্ষায় বসার আগে তাকে ফি পরিশোধ করতে হবে। কোথায় ভর্তি হবেন ও ভর্তি পরীক্ষায় বসবেন, প্রার্থী তা নিজেই পছন্দ করবেন। এ জন্য ২০টি চয়েস অপশন থাকবে। পরীক্ষার্থী নিজে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করবেন।
উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে যতগুলো আসনে বসার সুযোগ থাকবে, তত জনকে এসএমএস দিয়ে ডাকা হবে। এভাবে কয়েকটি ধাপে পরীক্ষা নেওয়া হবে। ভর্তি পরীক্ষা মাল্টিপল চয়েস অব কোশ্চেন (এমসিকিউ) পদ্ধতিতে নেওয়া হবে। অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, প্রতিটি প্রশ্নের এক নম্বর করে মান বা মূল্যায়ন করা হবে। ভুল উত্তরের জন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা হবে। ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন যাচাই-বাছাই করতে আলাদা পাঁচটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আবেদনের যোগ্যতা, ভর্তি পরীক্ষার বিষয় ও মানবণ্টন :গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, পদার্থ, রসায়ন এবং আইসিটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, অ্যাকাউন্টিং, বিজনেস অর্গানাইজেশন ও ম্যানেজমেন্ট এবং আইসিটি বিষয়ে প্রশ্ন থাকবে। আর মানবিক বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের বাংলা, ইংরেজি এবং আইসিটি বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে।
গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য নূ্যনতম যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবেদনের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মোট জিপিএর চতুর্থ বিষয় ছাড়া বিজ্ঞান বিভাগে ৭, ব্যবসায় শিক্ষায় সাড়ে ৬ এবং মানবিকে ৬ পয়েন্ট থাকতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষার মানবণ্টনও চূড়ান্ত করা হয়েছে। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে ২০ নম্বর, রসায়নে ২০, জীববিজ্ঞান-গণিত এবং আইসিটি মিলে ৪০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। জীববিজ্ঞান, আইসিটি ও গণিতের মধ্যে যে কোনো দুটি বিষয়ের উত্তর দিতে হবে। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ১০ নম্বর করে মোট ২০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।
বাণিজ্য বিভাগের জন্য অ্যাকাউন্টিংয়ে ২৫ নম্বর, বিজনেস অর্গানাইজেশন ও ম্যানেজমেন্টে ২৫, আইসিটিতে ২৫, বাংলায় ১৩ এবং ইংরেজিতে ১২ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। আর মানবিক বিভাগে বাংলায় ৪০, ইংরেজিতে ৩৫ এবং আইসিটি বিষয়ে ২৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে।
বুয়েটের পর অন্য তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা :বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একাডেমিক কাউন্সিল শেষ পর্যন্ত এককভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মেডিকেল ও বুয়েটের পর অন্য তিন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হবে। এ তিন বিশ্ববিদ্যালয় হলো- রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)।
এ প্রসঙ্গে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম শেখ গত বৃহস্পতিবার বলেন, আনুষ্ঠানিক চিঠি না পেলেও জানতে পেরেছি গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষায় বুয়েট আসবে না। বুয়েটের দেওয়া শর্ত মানা সম্ভব নয়। মেডিকেল ও বুয়েটের পর ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলেও জানান তিনি।
বিভাগ পরিবর্তনে থাকছে না আলাদা ইউনিট :গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় বিভাগ পরিবর্তনের জন্য আলাদা ইউনিট থাকছে না। গত বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটি। সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগ পরিবর্তন ইউনিট নিয়ে আলোচনার পর আগের সিদ্ধান্তই বহাল রাখা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা শুধু একটি পরীক্ষা নেব। সেটিতে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা পরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কুলার অনুযায়ী আবেদন করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ই সিদ্ধান্ত নেবে, বিভাগ পরিবর্তনে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কীভাবে ভর্তি করা হবে।
এই ভর্তিযজ্ঞের মধ্য দিয়ে দেশের ৪৬টি সরকারি ও ১০৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য পা রাখবে লাখ লাখ শিক্ষার্থী। মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ, কারিগরি কলেজে ভর্তির পাশাপাশি বিদেশেও পাড়ি জমাবেন ভর্তিচ্ছুদের অনেকে।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এবার আসনের কোনো সংকট নেই। তবে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীই উত্তীর্ণ হওয়ায় এবং সর্বোচ্চ ফল জিপিএ ৫ প্রাপ্তির সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ায় উচ্চ শিক্ষার স্তরে একটি পছন্দসই আসন পেতে ভর্তিচ্ছুদের মধ্যে মেধার লড়াই তীব্র হবে।
সবচেয়ে বেশি যুদ্ধ হবে এবার মেডিকেল ও প্রকৌশল শিক্ষায় ভর্তি নিয়ে। কারণ সর্বোচ্চ ফল জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীই সিংহভাগ। দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২১টির ভর্তি পরীক্ষা হবে এবার একসঙ্গে, গুচ্ছ পদ্ধতিতে। একই দিনে না হয়ে তা ধাপে ধাপে হতে পারে। এই ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩ হাজার ১০৪ শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন।