০৭:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

এমডি বিহীন ন্যাশনাল ব্যাংকে ক্ষমতার বিবাদ!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৯:৫৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪৩২২ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল ডেস্কঃ ঋণ বিতরণে অনিয়ম, নেই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পরিচালনা পর্ষদে শুরু হয়েছে বিবাদ- সব মিলিয়ে অস্থির অবস্থায় ন্যাশনাল ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এখন থেকে ঋণ বিতরণে তাদের অনুমোদন নিতে হবে।

দীর্ঘদিন পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নেই ন্যাশনাল ব্যাংকে। ব্যাংকটির অতিরিক্ত এমডি এ এস এম বুলবুল এমডির চলতি দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে সরিয়ে দিতে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মনোয়ারা সিকদার তার মেয়াদ বাড়ান, যা কার্যকর হয় ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু বিষয়টি বিধি পরিপন্থি হওয়ায় তাকে চলতি দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে আরেকবার (৬ এপ্রিল) নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে এখন এমডিশূন্য অবস্থায় চলছে ব্যাংকটির কার্যক্রম।

ন্যাশনাল ব্যাংক চলছে অনেকটা সিকদার পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। দীর্ঘদিন এর চেয়ারম্যান ছিলেন জয়নুল হক সিকদার। গত ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। ২৪ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তার স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার। এরপর কোনো পর্ষদ সভা হয়নি। কিন্তু ঋণ বিতরণ অব্যাহত রাখা হয়েছে, যেখানে বেশকিছু অনিয়মের ইঙ্গিত পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। (সাধারণত বড় ঋণ বোর্ডসভায় অনুমোদিত হতে হয়।)

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জয়নুল হক সিকদারের মৃত্যুর পর ব্যাংকটি নিজেদের একক নিয়ন্ত্রণে নিতে চাচ্ছেন পরিচালক রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদার। তারা দুজনই জয়নুল হক সিকদারের ছেলে। তবে মেয়ে সাংসদ পারভীন হক সিকদারসহ অন্য পরিচালকরা চাচ্ছেন নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনার মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে। অনিয়ম করে ঋণ বিতরণসহ নানা কারণে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে ব্যাংকটির পরিচালকদের মধ্যে দুটি পক্ষ হওয়ায় পর্ষদে বিবাদ শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত এমডি এ এস এম বুলবুলের নিয়োগ নিয়েও দ্বিমত রয়েছে অনেক পরিচালকের।

ন্যাশনাল ব্যাংকের এসব ঘটনা নজরে এলে গত ৫ এপ্রিল বেশকিছু তথ্য চেয়ে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া ঋণ বিতরণ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া রংধনু বিল্ডার্স, দেশ টিভি, রূপায়ণ ও শান্তা এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে দেওয়া সব ঋণের দলিলাদি (ঋণ আবেদন থেকে বিতরণ পর্যন্ত) এবং ঋণের পূর্ণাঙ্গ হিসাব বিবরণীর কপি পাঠাতে বলা হয়।

ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম বুলবুল বর্তমানে (৫ এপ্রিল তারিখে) কর্মরত আছেন কি না, থাকলে তার সমর্থনে দলিলাদি সরবরাহ করা, না থাকলে তাকে ব্যাংকের সব দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে বলা হয়। এরপর ব্যাংকের চেয়ারম্যান তার মেয়াদ বাড়ালেও তা বিধি পরিপন্থি হওয়ায় তাকে চলতি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে সবশেষ ৬ এপ্রিল নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ন্যাশনাল ব্যাংকের চলমান পরিস্থিতিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংকের বিষয়ে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের চলতি দায়িত্বে থাকা এমডিকে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে বলা হয়েছে। তাদের ঋণ বিতরণ ও মঞ্জুরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ঋণের কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে। এখন তারা যদি এসব নির্দেশনা না মানে, তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

ব্যাংকের ঋণ বিতরণে অনিয়ম ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণের তথ্যাদি চাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে এএমডি বুলবুল বলেন, এটি নতুন কিছু নয়। সময় সময় বাংলাদেশ ব্যাংক এ ধরনের নির্দেশনা দিয়ে থাকে। আর যেসব প্রতিষ্ঠানের ঋণের তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। পর্ষদের মতবিরোধ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বুলবুল বলেন, আমি এর কিছু জানি না। যাদের কাছে শুনেছেন তাদের জিজ্ঞাসা করলে ভালো বলতে পারবে।

ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) ব্যাংকটি নতুন করে ৪৫০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। পাশাপাশি সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ১১৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। ঋণের ওপর প্রথম প্রান্তিকে সুদ যুক্ত হয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির ঋণ বেড়েছে এক হাজার ২১৩ কোটি টাকা। তবে তিন মাসে আমানত বেড়েছে মাত্র ৫২১ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংকটির ৪০টি শাখা লোকসানে রয়েছে।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকটির ঋণ ছিল ৪০ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা, চলতি বছরের মার্চে তা বেড়ে হয়েছে ৪২ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে আমানত ছিল ৪৩ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। মার্চে বেড়ে হয়েছে ৪৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা।

১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার দীর্ঘ দিন ধরে ফেসভ্যালুর নিচে রয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকটির ১০ টাকা মূল্যে প্রতিশেয়ার ৭ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৭ টাকা ৩০ পয়সায় কেনাবেচা হচ্ছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল ব্যাংকটি।

সূত্রঃ ঢাকা পোস্ট 

শেয়ার করুন

x
English Version

এমডি বিহীন ন্যাশনাল ব্যাংকে ক্ষমতার বিবাদ!

আপডেট: ০৯:৫৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল ডেস্কঃ ঋণ বিতরণে অনিয়ম, নেই ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), ক্ষমতার দ্বন্দ্বে পরিচালনা পর্ষদে শুরু হয়েছে বিবাদ- সব মিলিয়ে অস্থির অবস্থায় ন্যাশনাল ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এখন থেকে ঋণ বিতরণে তাদের অনুমোদন নিতে হবে।

দীর্ঘদিন পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নেই ন্যাশনাল ব্যাংকে। ব্যাংকটির অতিরিক্ত এমডি এ এস এম বুলবুল এমডির চলতি দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে সরিয়ে দিতে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মনোয়ারা সিকদার তার মেয়াদ বাড়ান, যা কার্যকর হয় ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু বিষয়টি বিধি পরিপন্থি হওয়ায় তাকে চলতি দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে আরেকবার (৬ এপ্রিল) নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে এখন এমডিশূন্য অবস্থায় চলছে ব্যাংকটির কার্যক্রম।

ন্যাশনাল ব্যাংক চলছে অনেকটা সিকদার পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। দীর্ঘদিন এর চেয়ারম্যান ছিলেন জয়নুল হক সিকদার। গত ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। ২৪ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকটির নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন তার স্ত্রী মনোয়ারা সিকদার। এরপর কোনো পর্ষদ সভা হয়নি। কিন্তু ঋণ বিতরণ অব্যাহত রাখা হয়েছে, যেখানে বেশকিছু অনিয়মের ইঙ্গিত পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। (সাধারণত বড় ঋণ বোর্ডসভায় অনুমোদিত হতে হয়।)

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জয়নুল হক সিকদারের মৃত্যুর পর ব্যাংকটি নিজেদের একক নিয়ন্ত্রণে নিতে চাচ্ছেন পরিচালক রিক হক সিকদার ও রন হক সিকদার। তারা দুজনই জয়নুল হক সিকদারের ছেলে। তবে মেয়ে সাংসদ পারভীন হক সিকদারসহ অন্য পরিচালকরা চাচ্ছেন নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনার মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে। অনিয়ম করে ঋণ বিতরণসহ নানা কারণে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে ব্যাংকটির পরিচালকদের মধ্যে দুটি পক্ষ হওয়ায় পর্ষদে বিবাদ শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত এমডি এ এস এম বুলবুলের নিয়োগ নিয়েও দ্বিমত রয়েছে অনেক পরিচালকের।

ন্যাশনাল ব্যাংকের এসব ঘটনা নজরে এলে গত ৫ এপ্রিল বেশকিছু তথ্য চেয়ে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া ঋণ বিতরণ না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া রংধনু বিল্ডার্স, দেশ টিভি, রূপায়ণ ও শান্তা এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে দেওয়া সব ঋণের দলিলাদি (ঋণ আবেদন থেকে বিতরণ পর্যন্ত) এবং ঋণের পূর্ণাঙ্গ হিসাব বিবরণীর কপি পাঠাতে বলা হয়।

ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম বুলবুল বর্তমানে (৫ এপ্রিল তারিখে) কর্মরত আছেন কি না, থাকলে তার সমর্থনে দলিলাদি সরবরাহ করা, না থাকলে তাকে ব্যাংকের সব দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে বলা হয়। এরপর ব্যাংকের চেয়ারম্যান তার মেয়াদ বাড়ালেও তা বিধি পরিপন্থি হওয়ায় তাকে চলতি দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে সবশেষ ৬ এপ্রিল নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ন্যাশনাল ব্যাংকের চলমান পরিস্থিতিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংকের বিষয়ে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাদের চলতি দায়িত্বে থাকা এমডিকে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে বলা হয়েছে। তাদের ঋণ বিতরণ ও মঞ্জুরের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ঋণের কিছু তথ্য চাওয়া হয়েছে। এখন তারা যদি এসব নির্দেশনা না মানে, তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

ব্যাংকের ঋণ বিতরণে অনিয়ম ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণের তথ্যাদি চাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে এএমডি বুলবুল বলেন, এটি নতুন কিছু নয়। সময় সময় বাংলাদেশ ব্যাংক এ ধরনের নির্দেশনা দিয়ে থাকে। আর যেসব প্রতিষ্ঠানের ঋণের তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা ইতোমধ্যে দেওয়া হয়েছে। পর্ষদের মতবিরোধ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বুলবুল বলেন, আমি এর কিছু জানি না। যাদের কাছে শুনেছেন তাদের জিজ্ঞাসা করলে ভালো বলতে পারবে।

ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) ব্যাংকটি নতুন করে ৪৫০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। পাশাপাশি সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ১১৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। ঋণের ওপর প্রথম প্রান্তিকে সুদ যুক্ত হয়েছে ৬৫০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির ঋণ বেড়েছে এক হাজার ২১৩ কোটি টাকা। তবে তিন মাসে আমানত বেড়েছে মাত্র ৫২১ কোটি টাকা। এছাড়া ব্যাংকটির ৪০টি শাখা লোকসানে রয়েছে।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে ব্যাংকটির ঋণ ছিল ৪০ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা, চলতি বছরের মার্চে তা বেড়ে হয়েছে ৪২ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। ডিসেম্বরে আমানত ছিল ৪৩ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। মার্চে বেড়ে হয়েছে ৪৩ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা।

১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার দীর্ঘ দিন ধরে ফেসভ্যালুর নিচে রয়েছে। বর্তমানে ব্যাংকটির ১০ টাকা মূল্যে প্রতিশেয়ার ৭ টাকা ১০ পয়সা থেকে ৭ টাকা ৩০ পয়সায় কেনাবেচা হচ্ছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল ব্যাংকটি।

সূত্রঃ ঢাকা পোস্ট