০১:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

কাদেরের পরিবার নিয়ে কটূক্তি, কাল কোম্পানীগঞ্জে হরতাল

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০১:০৭:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৪১৩৩ বার দেখা হয়েছে

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আগামীকাল রোববার অর্ধদিবস (সকাল ৬টা থেকে বেলা ২টা) হরতাল ডেকেছে নাগরিক সমাজ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পরিবার নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে এবং জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিল ও নোয়াখালী-৪ আসনের (সদর ও সুবর্ণচর) সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীকে বহিষ্কারের দাবিতে এ হরতালের ডাক দেওয়া হয়।

আজ শনিবার সকালে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট বঙ্গবন্ধু চত্বরে সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। একই সময় তিনি হরতালের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি আজকের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। নাগরিক সমাজের এ হরতালকে সমর্থন জানিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

জানতে চাইলে হরতাল ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সেতুমন্ত্রীর ভাই আবদুল কাদের মির্জা। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, কোম্পানীগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পরিবার সম্পর্কে সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর কটূক্তির প্রতিবাদে এ হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, সাংসদ একরামুলকে দল থেকে বহিষ্কার, জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিল ও অপরাজনীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আগামীকাল সকাল ছয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত হরতাল পালন শেষে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এদিকে ওবায়দুল কাদেরের পরিবার নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। তাঁরা ওবায়দুল কাদেরের পরিবার নিয়ে কটূক্তির নিন্দা জানান। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবু নাছের।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান প্রথম আলোকে বলেন, ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনে আবদুল কাদের মির্জা মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা দিতে নাগরিক সমাজ একটি কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটির পক্ষ থেকে আগামীকাল কোম্পানীগঞ্জে হরতাল ডাকা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নাগরিক সমাজের এ হরতালে সমর্থন জানানো হয়েছে।

 

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে ওবায়দুল কাদের ও আবদুল কাদের মির্জাকে রাজাকার পরিবারের সদস্য বলে মন্তব্য করেন নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী। ২৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিও রাতেই ভাইরাল হয়ে যায়। তবে সাংসদ একরামুল করিমের ফেসবুক আইডি থেকে ওই ভিডিও বার্তা প্রচারের কয়েক মিনিটের মধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হয়। অবশ্য গতকাল শুক্রবার দুপুরে আরেকটি লাইভ ভিডিও প্রচার করেন সাংসদ একরামুল। তাতে তিনি দাবি করেন, আগের দিন রাতে প্রচার করা ভিডিও বার্তায় তিনি ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে কিছু বলেননি, যা বলেছেন আবদুল কাদের মির্জা সম্পর্কে। এসব বিষয় নিয়ে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন।

সাংসদ একরামুল করিমের ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল কোম্পানীগঞ্জে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা গতকাল বিকেলে বসুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল শেষে রুপালি চত্বরে প্রতিবাদ সভা করেন। তাঁরা এ সময় সাংসদ একরামুলের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। প্রতিবাদ সভায় সেতুমন্ত্রীর ভাই ও নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিল, অপরাজনীতি বন্ধ ও সাংসদ একরামুল করিমকে দল থেকে বহিষ্কার না করা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন। এ ছাড়া গতকাল সন্ধ্যায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কাদের মির্জা একই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

শেয়ার করুন

x
English Version

কাদেরের পরিবার নিয়ে কটূক্তি, কাল কোম্পানীগঞ্জে হরতাল

আপডেট: ০১:০৭:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২১

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় আগামীকাল রোববার অর্ধদিবস (সকাল ৬টা থেকে বেলা ২টা) হরতাল ডেকেছে নাগরিক সমাজ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পরিবার নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে এবং জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিল ও নোয়াখালী-৪ আসনের (সদর ও সুবর্ণচর) সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীকে বহিষ্কারের দাবিতে এ হরতালের ডাক দেওয়া হয়।

আজ শনিবার সকালে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট বঙ্গবন্ধু চত্বরে সেতুমন্ত্রীর ছোট ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। একই সময় তিনি হরতালের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি আজকের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। নাগরিক সমাজের এ হরতালকে সমর্থন জানিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

জানতে চাইলে হরতাল ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সেতুমন্ত্রীর ভাই আবদুল কাদের মির্জা। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, কোম্পানীগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পরিবার সম্পর্কে সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর কটূক্তির প্রতিবাদে এ হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, সাংসদ একরামুলকে দল থেকে বহিষ্কার, জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিল ও অপরাজনীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আগামীকাল সকাল ছয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত হরতাল পালন শেষে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এদিকে ওবায়দুল কাদেরের পরিবার নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। তাঁরা ওবায়দুল কাদেরের পরিবার নিয়ে কটূক্তির নিন্দা জানান। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবু নাছের।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান প্রথম আলোকে বলেন, ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনে আবদুল কাদের মির্জা মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁকে নাগরিক সংবর্ধনা দিতে নাগরিক সমাজ একটি কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটির পক্ষ থেকে আগামীকাল কোম্পানীগঞ্জে হরতাল ডাকা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নাগরিক সমাজের এ হরতালে সমর্থন জানানো হয়েছে।

 

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে ওবায়দুল কাদের ও আবদুল কাদের মির্জাকে রাজাকার পরিবারের সদস্য বলে মন্তব্য করেন নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী। ২৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিও রাতেই ভাইরাল হয়ে যায়। তবে সাংসদ একরামুল করিমের ফেসবুক আইডি থেকে ওই ভিডিও বার্তা প্রচারের কয়েক মিনিটের মধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হয়। অবশ্য গতকাল শুক্রবার দুপুরে আরেকটি লাইভ ভিডিও প্রচার করেন সাংসদ একরামুল। তাতে তিনি দাবি করেন, আগের দিন রাতে প্রচার করা ভিডিও বার্তায় তিনি ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে কিছু বলেননি, যা বলেছেন আবদুল কাদের মির্জা সম্পর্কে। এসব বিষয় নিয়ে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন।

সাংসদ একরামুল করিমের ওই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল কোম্পানীগঞ্জে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা গতকাল বিকেলে বসুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল শেষে রুপালি চত্বরে প্রতিবাদ সভা করেন। তাঁরা এ সময় সাংসদ একরামুলের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। প্রতিবাদ সভায় সেতুমন্ত্রীর ভাই ও নবনির্বাচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বাতিল, অপরাজনীতি বন্ধ ও সাংসদ একরামুল করিমকে দল থেকে বহিষ্কার না করা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন। এ ছাড়া গতকাল সন্ধ্যায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কাদের মির্জা একই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।