০৫:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

ক্যাবল টিভি সংযোগের ভ্যাট ২ শতাংশও আদায় হচ্ছে না

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:০০:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ মার্চ ২০২১
  • / ৪১৭৬ বার দেখা হয়েছে

দেশে বর্তমানে প্রায় চার কোটি ক্যাবল টিভি সংযোগ (ডিস লাইন) রয়েছে। এর মাসিক সাবসক্রিপশন ফি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এ বাবদ ক্যাবল অপারেটরদের বছরে বিল আদায় হয় কমপক্ষে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এ সেবার বিপরীতে সরকার বছরে অন্তত দুই হাজার ৫২০ কোটি টাকা মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট প্রাপ্য হলেও এনবিআরের দুই শতাংশও আদায় করতে পারছে না বলে দাবি করেছেন একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো) সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজাম্মেল বাবু।

বুধবার (২৪ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় (ভার্চুয়ালি) এ দাবি করেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন (ভার্চুয়ালি) এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

সভায় এনবিআরের আয়কর নীতির সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, সদস্য সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, ভ্যাট নীতির সদস্য মো. মাসুদ সাদিকসহ বাজেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মোজাম্মেল বাবু বলেন, বাংলাদেশে এখন প্রায় চার কোটি ক্যাবল টিভি সংযোগ (ডিস লাইন) রয়েছে। এর মাসিক সাবসক্রিপশন ফি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এ বাবদ ক্যাবল অপারেটরদের বিল আসে বছরে কমপক্ষে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এ সেবার বিপরীতে সরকার বছরে অন্তত দুই হাজার ৫২০ কোটি টাকা মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট প্রাপ্য হলেও এনবিআরের দুই শতাংশও আদায় করতে পারছে না।

তিনি বলেন, ক্যাবল টিভি পরিচালনা আইন ২০০৬ এর ১৯ ( ১৩ ) ধারা এবং ক্যাবল টিভি পরিচালনা বিধিমালা ২০১০ এর ৯ ( ১৩ ) ধারায় বিদেশি চ্যানেলসমূহের বাংলাদেশে ডাউনলিংক ও বিতরণের ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনশূন্য সম্প্রচারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয় বিদেশি চ্যানেলের পরিবেশকসমূহকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে তারা আজও সে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পারছে না। এ সুযোগে বাংলাদেশি দর্শকদের উদ্দেশ্য বিদেশি চ্যানেলসমূহে বহুজাতিক কোম্পানির, এমনকি দেশীয় কোম্পানির বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচার করছে। এতে দেশীয় টেলিভিশনসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

গ্রাহক থেকে এক হাজার ৭২০ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় করা সম্ভব বলে এমন দাবি করে মোজাম্মেল আরও বলেন, সরকার চাইলে মাত্র ২০ মাসের মধ্যে ন্যূনতম তিন কোটি গ্রাহকের কাছ থেকে বছরে অন্তত এক হাজার ৭২০ কোটি টাকা ভ্যাট বা মূসক আদায় করতে পারে। এখান থেকে আরও সমপরিমাণ আয়কর আদায়েরও সুযোগ হবে। এছাড়া দেশীয় ৪০টি চ্যানেল বিতরণ থেকে প্রত্যেক বছরে অন্তত ৩৬ কোটি টাকা আয় করবে, যা তাদেরকে চলমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে রক্ষা করবে। অন্যদিকে ক্যাবল অপারেটররাও বছরে প্রাথমিকভাবে তিন কোটি গ্রাহক থেকে ১১ হাজার ৫২০ কোটি টাকা আয় করতে পারবে। তৃতীয় বছর চার কোটি গ্রাহক ডিজিটাল সেবার আওতায় এলে সবার আয় আরও ৩৩ শতাংশ বাড়বে।

এ সময়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ক্যাবল অপারেটরদের ভ্যাটের আওতায় আনা সুন্দর প্রস্তাব। সমস্যা হচ্ছে, সব ক্যাবল অপারেটরদের এক প্লাটফর্মে আনা। আমাদের চেষ্টা থাকবে তাদের কীভাবে এক জায়গায় এনে রাজস্ব আদায় করা যায়।

বিজনেসজার্নাল/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

ক্যাবল টিভি সংযোগের ভ্যাট ২ শতাংশও আদায় হচ্ছে না

আপডেট: ০৬:০০:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ মার্চ ২০২১

দেশে বর্তমানে প্রায় চার কোটি ক্যাবল টিভি সংযোগ (ডিস লাইন) রয়েছে। এর মাসিক সাবসক্রিপশন ফি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এ বাবদ ক্যাবল অপারেটরদের বছরে বিল আদায় হয় কমপক্ষে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এ সেবার বিপরীতে সরকার বছরে অন্তত দুই হাজার ৫২০ কোটি টাকা মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট প্রাপ্য হলেও এনবিআরের দুই শতাংশও আদায় করতে পারছে না বলে দাবি করেছেন একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো) সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজাম্মেল বাবু।

বুধবার (২৪ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় (ভার্চুয়ালি) এ দাবি করেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন (ভার্চুয়ালি) এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

সভায় এনবিআরের আয়কর নীতির সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, সদস্য সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, ভ্যাট নীতির সদস্য মো. মাসুদ সাদিকসহ বাজেট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মোজাম্মেল বাবু বলেন, বাংলাদেশে এখন প্রায় চার কোটি ক্যাবল টিভি সংযোগ (ডিস লাইন) রয়েছে। এর মাসিক সাবসক্রিপশন ফি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এ বাবদ ক্যাবল অপারেটরদের বিল আসে বছরে কমপক্ষে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এ সেবার বিপরীতে সরকার বছরে অন্তত দুই হাজার ৫২০ কোটি টাকা মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট প্রাপ্য হলেও এনবিআরের দুই শতাংশও আদায় করতে পারছে না।

তিনি বলেন, ক্যাবল টিভি পরিচালনা আইন ২০০৬ এর ১৯ ( ১৩ ) ধারা এবং ক্যাবল টিভি পরিচালনা বিধিমালা ২০১০ এর ৯ ( ১৩ ) ধারায় বিদেশি চ্যানেলসমূহের বাংলাদেশে ডাউনলিংক ও বিতরণের ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনশূন্য সম্প্রচারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তথ্য মন্ত্রণালয় বিদেশি চ্যানেলের পরিবেশকসমূহকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে তারা আজও সে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে পারছে না। এ সুযোগে বাংলাদেশি দর্শকদের উদ্দেশ্য বিদেশি চ্যানেলসমূহে বহুজাতিক কোম্পানির, এমনকি দেশীয় কোম্পানির বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ বিদেশে পাচার করছে। এতে দেশীয় টেলিভিশনসমূহ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

গ্রাহক থেকে এক হাজার ৭২০ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় করা সম্ভব বলে এমন দাবি করে মোজাম্মেল আরও বলেন, সরকার চাইলে মাত্র ২০ মাসের মধ্যে ন্যূনতম তিন কোটি গ্রাহকের কাছ থেকে বছরে অন্তত এক হাজার ৭২০ কোটি টাকা ভ্যাট বা মূসক আদায় করতে পারে। এখান থেকে আরও সমপরিমাণ আয়কর আদায়েরও সুযোগ হবে। এছাড়া দেশীয় ৪০টি চ্যানেল বিতরণ থেকে প্রত্যেক বছরে অন্তত ৩৬ কোটি টাকা আয় করবে, যা তাদেরকে চলমান অর্থনৈতিক সংকট থেকে রক্ষা করবে। অন্যদিকে ক্যাবল অপারেটররাও বছরে প্রাথমিকভাবে তিন কোটি গ্রাহক থেকে ১১ হাজার ৫২০ কোটি টাকা আয় করতে পারবে। তৃতীয় বছর চার কোটি গ্রাহক ডিজিটাল সেবার আওতায় এলে সবার আয় আরও ৩৩ শতাংশ বাড়বে।

এ সময়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ক্যাবল অপারেটরদের ভ্যাটের আওতায় আনা সুন্দর প্রস্তাব। সমস্যা হচ্ছে, সব ক্যাবল অপারেটরদের এক প্লাটফর্মে আনা। আমাদের চেষ্টা থাকবে তাদের কীভাবে এক জায়গায় এনে রাজস্ব আদায় করা যায়।

বিজনেসজার্নাল/এসএ