০৪:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

জেএমআই থেকে সাড়ে ১০ কোটি সিরিঞ্জ কিনছে স্বাস্থ্য অধিদফতর

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:৪৮:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৪১৪০ বার দেখা হয়েছে

করোনার টিকা প্রয়োগের জন্য পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডকে তিন কোটি ৩০ লাখ পিস অটো ডিজেবল সিরিঞ্জের ক্রয়াদেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। পাশাপাশি সরকারের নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) জন্য সাত কোটি ১০ লাখ পিস সিরিঞ্জের ক্রয়াদেশ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত কোম্পানির ২২০তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় এ বিষয়টি জানানো হয়। সভা শেষে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জেএমআই কর্তৃপক্ষ।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, করোনার টিকা দেয়ার জন্য ব্যবহৃত অটো ডিজেবল সিরিঞ্জ এক ধরনের বিশেষায়িত পণ্য, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পিকিউএস সনদ নিয়ে বিশ্বের অল্পসংখ্যক কোম্পানি উৎপাদন করে। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী এ পণ্যটির সরবরাহ সংকট চলছে। দেশের একমাত্র অটো ডিজেবল (এডি) সিরিঞ্জ তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেড।

যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে ২৩ কোটি ও ৩০ কোটি পিস বিভিন্ন ধরনের সিরিঞ্জ কেনার আগ্রহপত্র দিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন আকারের এডি সিরিঞ্জ ২০২০ এবং ২০২১ সালে কোন মাসে কি পরিমাণ সরবরাহ করা সম্ভব তা জানতে চেয়ে জেএমআইকে চিঠি দিয়েছে শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা জাতিসংঘের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফ।

পরিচালনা পর্ষদ সভায় জানানো হয়, ২০১২ সাল থেকে জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস-এর রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সনদ, যার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানি করতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। এ বছরই করোনার টিকা কার্যক্রমে ব্যবহৃত এডি সিরিঞ্জ, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাজারজাতের অনুমতির পূর্বশর্ত (সিই০০৬৮ সনদ) নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে দিনে ১২ লাখ সিরিঞ্জ বানাতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। সে হিসাবে মাসে তিন কোটি ৬০ লাখ পিস।

সভায় কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত কয়েক বছরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও কোম্পানির উৎপাদিত পণ্যের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে। করোনার এই দুঃসময়ে একদিনের জন্যও কারখানা বন্ধ থাকেনি। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে উৎপাদন অব্যাহত রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, গুণগত মানের পণ্য উৎপাদনের স্বীকৃতি আমরা এরই মধ্যে পাচ্ছি। ২০০৭ সাল থেকে সরকারের টিকাদান কর্মসূচিতে আমরা নিরবচ্ছিন্নভাবে সিরিঞ্জ সরবরাহ করে আসছি। যার ধারাবাহিকতায় সরকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধক টিকাদান কর্মসূচিতে আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে। এরই মধ্যে আমাদের তিন কোটি ৩০ লাখ সিরিঞ্জ সরবরাহের আদেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনার টিকা কার্যক্রম হাতে নেয়ায় আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে সিরিঞ্জ কেনার আগ্রহপত্র পাচ্ছি। এরই মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় দেড় কোটি সিরিঞ্জ রফতানি করেছি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইউনিসেফও আমাদের কাছ থেকে সিরিঞ্জ নিতে চাচ্ছে। তাছাড়া আমরা নেপালসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধির মাধ্যমে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করছি। একটি বিষয় আপনাদের বলতে চাই, আমরা রফতানির বিষয়ে অবশ্যই গুরুত্ব দেব। তবে দেশের চাহিদা পূরণের বিষয়টি সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে।

সভায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জাবেদ ইকবাল পাঠান বলেন, দেশে শিশুদের টিকাদান কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমুনাইজেশন (জিএভিআই) প্রধানমন্ত্রীকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ সম্মাননায় ভূষিত করেছে। আমরা সরকারের এই সফলতার অংশীদার হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গত ১৩ বছর ধরে দেশে আমদানি বিকল্প অটো ডিজেবল (এডি) সিরিঞ্জ উৎপাদন করে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ করে আসছি। করোনা প্রতিরোধক টিকাদানের ক্ষেত্রেও আমরা দেশের স্বার্থে কাজ করে যেতে চাই।

সভায় জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ তারেক হোসেন খান জানান, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেষে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৮৮ পয়সা, যা গত অর্থবছর একই সময় ছিল ২ টাকা ৫৯ পয়সা। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল শূন্য দশমিক ৮০ পয়সা, যার ফলে তিন মাসের ব্যবধানে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে ২ টাকা ৮ পয়সা।

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডের স্বতন্ত্র পরিচালক আব্দুল হক, এটিএম সেরাজুল সালেকিন চৌধুরী এবং মুস্তাফিজুর রহমান, জেএমআই গ্রুপের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা রনজিৎ চক্রবর্তী প্রমুখ।

শেয়ার করুন

x
English Version

জেএমআই থেকে সাড়ে ১০ কোটি সিরিঞ্জ কিনছে স্বাস্থ্য অধিদফতর

আপডেট: ১২:৪৮:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২১

করোনার টিকা প্রয়োগের জন্য পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডকে তিন কোটি ৩০ লাখ পিস অটো ডিজেবল সিরিঞ্জের ক্রয়াদেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। পাশাপাশি সরকারের নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) জন্য সাত কোটি ১০ লাখ পিস সিরিঞ্জের ক্রয়াদেশ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত কোম্পানির ২২০তম পরিচালনা পর্ষদ সভায় এ বিষয়টি জানানো হয়। সভা শেষে সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জেএমআই কর্তৃপক্ষ।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, করোনার টিকা দেয়ার জন্য ব্যবহৃত অটো ডিজেবল সিরিঞ্জ এক ধরনের বিশেষায়িত পণ্য, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পিকিউএস সনদ নিয়ে বিশ্বের অল্পসংখ্যক কোম্পানি উৎপাদন করে। করোনা মহামারির কারণে বিশ্বব্যাপী এ পণ্যটির সরবরাহ সংকট চলছে। দেশের একমাত্র অটো ডিজেবল (এডি) সিরিঞ্জ তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেড।

যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে ২৩ কোটি ও ৩০ কোটি পিস বিভিন্ন ধরনের সিরিঞ্জ কেনার আগ্রহপত্র দিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন আকারের এডি সিরিঞ্জ ২০২০ এবং ২০২১ সালে কোন মাসে কি পরিমাণ সরবরাহ করা সম্ভব তা জানতে চেয়ে জেএমআইকে চিঠি দিয়েছে শিশুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা জাতিসংঘের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফ।

পরিচালনা পর্ষদ সভায় জানানো হয়, ২০১২ সাল থেকে জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস-এর রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সনদ, যার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্য রফতানি করতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। এ বছরই করোনার টিকা কার্যক্রমে ব্যবহৃত এডি সিরিঞ্জ, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাজারজাতের অনুমতির পূর্বশর্ত (সিই০০৬৮ সনদ) নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে দিনে ১২ লাখ সিরিঞ্জ বানাতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। সে হিসাবে মাসে তিন কোটি ৬০ লাখ পিস।

সভায় কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত কয়েক বছরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও কোম্পানির উৎপাদিত পণ্যের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে। করোনার এই দুঃসময়ে একদিনের জন্যও কারখানা বন্ধ থাকেনি। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে উৎপাদন অব্যাহত রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, গুণগত মানের পণ্য উৎপাদনের স্বীকৃতি আমরা এরই মধ্যে পাচ্ছি। ২০০৭ সাল থেকে সরকারের টিকাদান কর্মসূচিতে আমরা নিরবচ্ছিন্নভাবে সিরিঞ্জ সরবরাহ করে আসছি। যার ধারাবাহিকতায় সরকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধক টিকাদান কর্মসূচিতে আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে। এরই মধ্যে আমাদের তিন কোটি ৩০ লাখ সিরিঞ্জ সরবরাহের আদেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনার টিকা কার্যক্রম হাতে নেয়ায় আমরা বিভিন্ন দেশ থেকে সিরিঞ্জ কেনার আগ্রহপত্র পাচ্ছি। এরই মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় দেড় কোটি সিরিঞ্জ রফতানি করেছি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইউনিসেফও আমাদের কাছ থেকে সিরিঞ্জ নিতে চাচ্ছে। তাছাড়া আমরা নেপালসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রতিনিধির মাধ্যমে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করছি। একটি বিষয় আপনাদের বলতে চাই, আমরা রফতানির বিষয়ে অবশ্যই গুরুত্ব দেব। তবে দেশের চাহিদা পূরণের বিষয়টি সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে।

সভায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জাবেদ ইকবাল পাঠান বলেন, দেশে শিশুদের টিকাদান কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমুনাইজেশন (জিএভিআই) প্রধানমন্ত্রীকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ সম্মাননায় ভূষিত করেছে। আমরা সরকারের এই সফলতার অংশীদার হিসেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে গত ১৩ বছর ধরে দেশে আমদানি বিকল্প অটো ডিজেবল (এডি) সিরিঞ্জ উৎপাদন করে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ করে আসছি। করোনা প্রতিরোধক টিকাদানের ক্ষেত্রেও আমরা দেশের স্বার্থে কাজ করে যেতে চাই।

সভায় জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডের কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ তারেক হোসেন খান জানান, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক (অক্টোবর-ডিসেম্বর) শেষে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৮৮ পয়সা, যা গত অর্থবছর একই সময় ছিল ২ টাকা ৫৯ পয়সা। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল শূন্য দশমিক ৮০ পয়সা, যার ফলে তিন মাসের ব্যবধানে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে ২ টাকা ৮ পয়সা।

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডের স্বতন্ত্র পরিচালক আব্দুল হক, এটিএম সেরাজুল সালেকিন চৌধুরী এবং মুস্তাফিজুর রহমান, জেএমআই গ্রুপের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম, জেএমআই সিরিঞ্জেস অ্যান্ড মেডিকেল ডিভাইসেস লিমিটেডের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা রনজিৎ চক্রবর্তী প্রমুখ।