০৪:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ঝাল কোনো স্বাদ নয়

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:৪২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪২৩০ বার দেখা হয়েছে

দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো গেলেও ঝালের স্বাদ মরিচ ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে মেটানো দায়। পেটের ক্ষুধা মেটাতে ঝাল মরিচের প্রয়োজন না থাকলেও মনের ক্ষুধা মেটাতে ঝাল মরিচের ভূমিকা অপরিসীম। জাতিগতভাবে আমাদের ঝাল খাবার খুব পছন্দ। এই ভালোবাসা কখনো প্রকাশ পায় ভর্তার সঙ্গে, কখনো আবার পান্তা বা ঝালমুড়ির সঙ্গে। এই ঝাল আসলে কোনো স্বাদ নয়। ঝাল এক ধরনের অনুভূতি।

অবাক হচ্ছেন? আচ্ছা, আপনি হাত দিয়ে লবণ, টক বা যেকোনো মসলা ধরলে আপনার হাত জ্বলে? জ্বলে না। কিন্তু মরিচ ধরলে হাত জ্বলে। তা ছাড়া আমাদের জিব যে পাঁচটি স্বাদ বুঝতে পারে, তার মধ্যে ঝাল নেই। আমাদের জিবে প্রায় ১০ হাজার স্বাদগ্রন্থি এবং ধারক কোষ থাকে, যা আমাদের পাঁচ ধরনের স্বাদ বুঝতে সাহায্য করে। জিবের ডগা বা অগ্রভাগে মিষ্টি এবং পশ্চাদ্‌ভাগে তিক্ত বা তেতো স্বাদগ্রাহক থাকে, অগ্রভাগের কিছু পরে এবং মাঝখানে লবণাক্ত বা নোনতা, দুই পাশে টক ও উমামি স্বাদ গ্রহণের জন্য একটি করে অংশ থাকে। উমামি হচ্ছে ক্ষুধাবর্ধক স্বাদ এবং একে সুগন্ধি বা মাংসের গন্ধযুক্ত স্বাদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই স্বাদ পনির ও সয়া সসে পাওয়া যায়।

এভার কেয়ার হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী বলেন, ঝাল আসলে কোনো স্বাদ নয়। এটা একধরনের অনুভূতি। এই অনুভূতি তৈরি হয় একধরনের জ্বালাপোড়া ও উষ্ণতা থেকে।

বিভিন্ন মরিচের মধ্যে ক্যাপসিসিন নামের রাসায়নিক উপাদান থাকে। এটি মরিচ ছাড়া আর কোনো উদ্ভিদে পাওয়া যায় না। ক্যাপসিসিনসমৃদ্ধ রাসায়নিক উপাদানযুক্ত খাবার খাওয়ার পর তা জিবের স্বাদগ্রন্থিগুলোর সঙ্গে মিশে মুখের ভেতর একধরনের জ্বালাপোড়া ও উষ্ণতা তৈরি করে, যা আমাদের ঝালের অনুভূতি দেয়।

ঝাল খাওয়ার জন্য অভ্যাসের প্রয়োজন আছে। সবাই একই ধরনের ঝাল খেতে পারেন না। ঝাল যদি স্বাদ হতো, তাহলে সবার জন্য সমান হতো। যেহেতু ঝাল স্বাদ নয়, সেহেতু অল্পতেই কারও ঝাল কম বা বেশি অনুভূত হয়।

তিনি আরও বলেন, ভিটামিন সি পাওয়ার সবচেয়ে সহজলভ্য উপায় হচ্ছে কাঁচা মরিচ। কাঁচা মরিচে ভিটামিন সির পরিমাণ কমলার চেয়ে বেশি। কাঁচা মরিচ রান্না করে না খেয়ে কাঁচা খেলে আপনি ভিটামিন সির পাশাপাশি আরও অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাবেন।

শেয়ার করুন

x
English Version

ঝাল কোনো স্বাদ নয়

আপডেট: ০৭:৪২:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ এপ্রিল ২০২১

দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো গেলেও ঝালের স্বাদ মরিচ ছাড়া অন্য কিছু দিয়ে মেটানো দায়। পেটের ক্ষুধা মেটাতে ঝাল মরিচের প্রয়োজন না থাকলেও মনের ক্ষুধা মেটাতে ঝাল মরিচের ভূমিকা অপরিসীম। জাতিগতভাবে আমাদের ঝাল খাবার খুব পছন্দ। এই ভালোবাসা কখনো প্রকাশ পায় ভর্তার সঙ্গে, কখনো আবার পান্তা বা ঝালমুড়ির সঙ্গে। এই ঝাল আসলে কোনো স্বাদ নয়। ঝাল এক ধরনের অনুভূতি।

অবাক হচ্ছেন? আচ্ছা, আপনি হাত দিয়ে লবণ, টক বা যেকোনো মসলা ধরলে আপনার হাত জ্বলে? জ্বলে না। কিন্তু মরিচ ধরলে হাত জ্বলে। তা ছাড়া আমাদের জিব যে পাঁচটি স্বাদ বুঝতে পারে, তার মধ্যে ঝাল নেই। আমাদের জিবে প্রায় ১০ হাজার স্বাদগ্রন্থি এবং ধারক কোষ থাকে, যা আমাদের পাঁচ ধরনের স্বাদ বুঝতে সাহায্য করে। জিবের ডগা বা অগ্রভাগে মিষ্টি এবং পশ্চাদ্‌ভাগে তিক্ত বা তেতো স্বাদগ্রাহক থাকে, অগ্রভাগের কিছু পরে এবং মাঝখানে লবণাক্ত বা নোনতা, দুই পাশে টক ও উমামি স্বাদ গ্রহণের জন্য একটি করে অংশ থাকে। উমামি হচ্ছে ক্ষুধাবর্ধক স্বাদ এবং একে সুগন্ধি বা মাংসের গন্ধযুক্ত স্বাদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই স্বাদ পনির ও সয়া সসে পাওয়া যায়।

এভার কেয়ার হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী বলেন, ঝাল আসলে কোনো স্বাদ নয়। এটা একধরনের অনুভূতি। এই অনুভূতি তৈরি হয় একধরনের জ্বালাপোড়া ও উষ্ণতা থেকে।

বিভিন্ন মরিচের মধ্যে ক্যাপসিসিন নামের রাসায়নিক উপাদান থাকে। এটি মরিচ ছাড়া আর কোনো উদ্ভিদে পাওয়া যায় না। ক্যাপসিসিনসমৃদ্ধ রাসায়নিক উপাদানযুক্ত খাবার খাওয়ার পর তা জিবের স্বাদগ্রন্থিগুলোর সঙ্গে মিশে মুখের ভেতর একধরনের জ্বালাপোড়া ও উষ্ণতা তৈরি করে, যা আমাদের ঝালের অনুভূতি দেয়।

ঝাল খাওয়ার জন্য অভ্যাসের প্রয়োজন আছে। সবাই একই ধরনের ঝাল খেতে পারেন না। ঝাল যদি স্বাদ হতো, তাহলে সবার জন্য সমান হতো। যেহেতু ঝাল স্বাদ নয়, সেহেতু অল্পতেই কারও ঝাল কম বা বেশি অনুভূত হয়।

তিনি আরও বলেন, ভিটামিন সি পাওয়ার সবচেয়ে সহজলভ্য উপায় হচ্ছে কাঁচা মরিচ। কাঁচা মরিচে ভিটামিন সির পরিমাণ কমলার চেয়ে বেশি। কাঁচা মরিচ রান্না করে না খেয়ে কাঁচা খেলে আপনি ভিটামিন সির পাশাপাশি আরও অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাবেন।