০৩:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

পাইলসের অপারেশন কখন করা লাগবে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:৩৭:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৪২৩৩ বার দেখা হয়েছে

পাইলস খুবই পরিচিত একটি রোগ। মলদ্বারের ভেতরে বা মলদ্বারের চারপাশে ত্বকের নিচে এ রোগ হয়ে থাকে।

পাইলসের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া, মলদ্বারে মাংসপিণ্ড ফুলে ওঠা, যা কখনও কখনও মলদ্বারের বাইরে ঝুলে পড়ে এবং হাত দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দিতে হয়। এ সময় যে রক্ত পড়ে সেটি সাধারণত টাটকা লাল হয়ে থাকে।

পায়ুপথে ক্যান্সার হলেও রক্ত যায়। তাই নিজে সিদ্ধান্ত নেবেন না, আপনার পাইলস হয়েছে। মলদ্বারের ভেতর বিশেষ ধরনের পরীক্ষা যেমন, সিগময়ডস্কপি বা কোলনস্কপি ছাড়া কারও পক্ষে সঠিক রোগ নির্ণয় করা সম্ভব নয়।  এসব সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
 
পাইলসের কারণ

অন্ত্রের নড়াচড়ার সময় স্ট্রেইন করা, টয়লেটে দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা, দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া, স্থূল হওয়া, গর্ভবতী, মলদ্বারে সহবাস এবং কম আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া।

কখন অপারেশন করাবেন

অনেকে মনে করেন, পাইলস (অর্শ) হলেই অস্ত্রোপচার করতে হবে। বিষয়টি এমন নয়। আর এ জন্য অনেকে চিকিৎসকের কাছে যেতে ভয় পান।

অনেক রোগী প্রশ্ন করে থাকেন, অপারেশন ছাড়া ঠিক করা যাবে কিনা, সার্জারির পরে সেটি আবার হবে কিনা।

সাধারণ ফার্স্ট ডিগ্রি পাইলস যখন থাকে, তখন সাধারণত সার্জারির জন্য পরামর্শ দেয়া হয় না। তখন আমরা ওষুধ দিয়ে রোগীকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করি।

এই রোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য। কোষ্ঠকাঠিন্যের সঙ্গে পাইলসের সম্পর্ক নিবিড়। অ্যানাল ফিশারের জন্যও কোষ্ঠকাঠিন্য দায়ী এবং এর জন্য পাইলস বাড়তে থাকে।

প্রাথমিক পর্যায়ে যখন আমাদের কাছে রোগী আসে, চিকিৎসার দুটি ধাপ রয়েছে।  প্রথমত রোগীর জীবনযাপন পরিবর্তন করা ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা।

এ জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা, শাকসবজি খাওয়া ও প্রয়োজনে ইসপগুলের ভুসি খেতে পারেন ।

এর পর যখন সেকেন্ড ডিগ্রিতে আসে, সে ক্ষেত্রেও আমরা ওষুধপত্র ও পরামর্শ দিই। এর পর রোগীর অবস্থার উন্নতি না হলে তখন কাটাছেঁড়া ছাড়াও এই রোগের চিকিৎসা করা যায়।

তখন আমরা একটা প্রসিডিউর করি, যেটাকে বলা হয় ব্যান্ডিং। একটি রাবার ব্যান্ডের মতো জিনিস, যেটা রক্তনালির টিউমারের মুখে পরিয়ে দেয়া হয়। তখন পাইলস অটোমেটিক্যালি শুকিয়ে ঝরে যায়। এ ক্ষেত্রে কোনো কাটাছেঁড়া করতে হয় না।

আগের চেয়েও যদি বেড়ে যায়, থার্ড বা ফোর ডিগ্রির দিকে চলে আসে, তখন সার্জারি করা হয়।  

তবে এখন মলদ্বারের কাছে খুব বেশি কাটাছেঁড়ার প্রয়োজন হয় না। আগে কাটাছেঁড়া করা হতো, তখন খুব ব্যথা হতো, রস ঝরত, বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা হতো; এখন মেশিনের সাহায্যে অপারেশনের ফলে এই অসুবিধাগুলো হয় না।

অস্ত্রোপচারের এক থেকে দুদিনের মধ্যে রোগীরা বাসায় যেতে পারেন।

লেখক
বিভাগীয় প্রধান ও উপাধ্যক্ষ
জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ, সিলেট।

শেয়ার করুন

x
English Version

পাইলসের অপারেশন কখন করা লাগবে

আপডেট: ১২:৩৭:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১

পাইলস খুবই পরিচিত একটি রোগ। মলদ্বারের ভেতরে বা মলদ্বারের চারপাশে ত্বকের নিচে এ রোগ হয়ে থাকে।

পাইলসের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাওয়া, মলদ্বারে মাংসপিণ্ড ফুলে ওঠা, যা কখনও কখনও মলদ্বারের বাইরে ঝুলে পড়ে এবং হাত দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দিতে হয়। এ সময় যে রক্ত পড়ে সেটি সাধারণত টাটকা লাল হয়ে থাকে।

পায়ুপথে ক্যান্সার হলেও রক্ত যায়। তাই নিজে সিদ্ধান্ত নেবেন না, আপনার পাইলস হয়েছে। মলদ্বারের ভেতর বিশেষ ধরনের পরীক্ষা যেমন, সিগময়ডস্কপি বা কোলনস্কপি ছাড়া কারও পক্ষে সঠিক রোগ নির্ণয় করা সম্ভব নয়।  এসব সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
 
পাইলসের কারণ

অন্ত্রের নড়াচড়ার সময় স্ট্রেইন করা, টয়লেটে দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা, দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া, স্থূল হওয়া, গর্ভবতী, মলদ্বারে সহবাস এবং কম আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া।

কখন অপারেশন করাবেন

অনেকে মনে করেন, পাইলস (অর্শ) হলেই অস্ত্রোপচার করতে হবে। বিষয়টি এমন নয়। আর এ জন্য অনেকে চিকিৎসকের কাছে যেতে ভয় পান।

অনেক রোগী প্রশ্ন করে থাকেন, অপারেশন ছাড়া ঠিক করা যাবে কিনা, সার্জারির পরে সেটি আবার হবে কিনা।

সাধারণ ফার্স্ট ডিগ্রি পাইলস যখন থাকে, তখন সাধারণত সার্জারির জন্য পরামর্শ দেয়া হয় না। তখন আমরা ওষুধ দিয়ে রোগীকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করি।

এই রোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য। কোষ্ঠকাঠিন্যের সঙ্গে পাইলসের সম্পর্ক নিবিড়। অ্যানাল ফিশারের জন্যও কোষ্ঠকাঠিন্য দায়ী এবং এর জন্য পাইলস বাড়তে থাকে।

প্রাথমিক পর্যায়ে যখন আমাদের কাছে রোগী আসে, চিকিৎসার দুটি ধাপ রয়েছে।  প্রথমত রোগীর জীবনযাপন পরিবর্তন করা ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা।

এ জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা, শাকসবজি খাওয়া ও প্রয়োজনে ইসপগুলের ভুসি খেতে পারেন ।

এর পর যখন সেকেন্ড ডিগ্রিতে আসে, সে ক্ষেত্রেও আমরা ওষুধপত্র ও পরামর্শ দিই। এর পর রোগীর অবস্থার উন্নতি না হলে তখন কাটাছেঁড়া ছাড়াও এই রোগের চিকিৎসা করা যায়।

তখন আমরা একটা প্রসিডিউর করি, যেটাকে বলা হয় ব্যান্ডিং। একটি রাবার ব্যান্ডের মতো জিনিস, যেটা রক্তনালির টিউমারের মুখে পরিয়ে দেয়া হয়। তখন পাইলস অটোমেটিক্যালি শুকিয়ে ঝরে যায়। এ ক্ষেত্রে কোনো কাটাছেঁড়া করতে হয় না।

আগের চেয়েও যদি বেড়ে যায়, থার্ড বা ফোর ডিগ্রির দিকে চলে আসে, তখন সার্জারি করা হয়।  

তবে এখন মলদ্বারের কাছে খুব বেশি কাটাছেঁড়ার প্রয়োজন হয় না। আগে কাটাছেঁড়া করা হতো, তখন খুব ব্যথা হতো, রস ঝরত, বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা হতো; এখন মেশিনের সাহায্যে অপারেশনের ফলে এই অসুবিধাগুলো হয় না।

অস্ত্রোপচারের এক থেকে দুদিনের মধ্যে রোগীরা বাসায় যেতে পারেন।

লেখক
বিভাগীয় প্রধান ও উপাধ্যক্ষ
জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ, সিলেট।