০৫:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

বাণিজ্য ঘাটতি কমে চলতি হিসাবের উদ্বৃত্ত বেড়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৯:৫০:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • / ৪১৯৭ বার দেখা হয়েছে

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ৬৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ পাঁচ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ২০৫ কোটি ডলার। প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে গত অর্থবছর শেষ হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আমদানি ব্যয় তুলনামূলক কমে যাওয়ায় কমে এসেছে বাণিজ্য ঘাটতি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, আলোচ্য দুই মাসে আমদানি ব্যয় কমলেও উল্টো বেড়েছে রফতানি আয়। ফলে আমদানি-রফতানির মধ্যকার ব্যবধান বা বাণিজ্য ঘাটতি কমে এসেছে।

জুলাই-অগাস্ট এই দুই মাসে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ৬৭৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার আয় করেছে। আর আমদানিতে ব্যয় করেছে ৭৪৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। এ হিসাবেই জুলাই-আগস্ট সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এই দুই মাসে রফতানি আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৪ শতাংশ। আর আমদানি ব্যয় কমেছে প্রায় ১৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতিও কমেছে। গত বছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে এ খাতের ঘাটতি ছিল ৫০ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর এ বছরের একই সময়ে তা কমে ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। মূলত বীমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।

জুলাই-আগস্ট সময়ে ৩৬ কোটি ডলারের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বাংলাদেশে এসেছে। গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এ হিসাবে দুই মাসে এফডিআই কমেছে ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ। বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে মোট যে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আসে, তা থেকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুনাফার অর্থ দেশে নিয়ে যাওয়ার পর যেটা অবশিষ্ট থাকে, সেটাকেই নিট এফডিআই বলা হয়।

আলোচ্য সময়ে ৪৫৬ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছর এই দুই মাসে পাঠিয়েছিলেন ৩০৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। বাংলাদেশের ইতিহাসে দুই মাসে রেমিট্যান্সে এত বেশি প্রবৃদ্ধি আর কখনও হয়নি।

এদিকে, করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যেও অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) বড় উদ্বৃত্ত ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-অগাস্ট) এই উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার।

গত অর্থবছরের একই সময়ে এই উদ্বৃত্ত ছিল মাত্র ২০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষ হয়েছিল ৪৮৪ কোটি ৯০ লাখ (প্রায় ৫ বিলিয়ন) ডলারের বড় ঘাটতি নিয়ে।

তার আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই ঘাটতি ছিল আরও বেশি, ৫১০ কোটি ২০ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ৯৫৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

শেয়ার করুন

x
English Version

বাণিজ্য ঘাটতি কমে চলতি হিসাবের উদ্বৃত্ত বেড়েছে

আপডেট: ০৯:৫০:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে ৬৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ পাঁচ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তিন ভাগের এক ভাগ। গত বছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিল ২০৫ কোটি ডলার। প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে গত অর্থবছর শেষ হয়েছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আমদানি ব্যয় তুলনামূলক কমে যাওয়ায় কমে এসেছে বাণিজ্য ঘাটতি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, আলোচ্য দুই মাসে আমদানি ব্যয় কমলেও উল্টো বেড়েছে রফতানি আয়। ফলে আমদানি-রফতানির মধ্যকার ব্যবধান বা বাণিজ্য ঘাটতি কমে এসেছে।

জুলাই-অগাস্ট এই দুই মাসে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ৬৭৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার আয় করেছে। আর আমদানিতে ব্যয় করেছে ৭৪৩ কোটি ২০ লাখ ডলার। এ হিসাবেই জুলাই-আগস্ট সময়ে পণ্য বাণিজ্যে সামগ্রিক ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৯ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এই দুই মাসে রফতানি আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৪ শতাংশ। আর আমদানি ব্যয় কমেছে প্রায় ১৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতিও কমেছে। গত বছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে এ খাতের ঘাটতি ছিল ৫০ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আর এ বছরের একই সময়ে তা কমে ১৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। মূলত বীমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।

জুলাই-আগস্ট সময়ে ৩৬ কোটি ডলারের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বাংলাদেশে এসেছে। গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এ হিসাবে দুই মাসে এফডিআই কমেছে ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ। বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে মোট যে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আসে, তা থেকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুনাফার অর্থ দেশে নিয়ে যাওয়ার পর যেটা অবশিষ্ট থাকে, সেটাকেই নিট এফডিআই বলা হয়।

আলোচ্য সময়ে ৪৫৬ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছর এই দুই মাসে পাঠিয়েছিলেন ৩০৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ। বাংলাদেশের ইতিহাসে দুই মাসে রেমিট্যান্সে এত বেশি প্রবৃদ্ধি আর কখনও হয়নি।

এদিকে, করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যেও অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সূচক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) বড় উদ্বৃত্ত ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-অগাস্ট) এই উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার।

গত অর্থবছরের একই সময়ে এই উদ্বৃত্ত ছিল মাত্র ২০ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর ২০১৯-২০ অর্থবছর শেষ হয়েছিল ৪৮৪ কোটি ৯০ লাখ (প্রায় ৫ বিলিয়ন) ডলারের বড় ঘাটতি নিয়ে।

তার আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই ঘাটতি ছিল আরও বেশি, ৫১০ কোটি ২০ লাখ ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঘাটতি ছিল ৯৫৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।