০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বেড়েই চলেছে ভোজ্য তেল আর চালের দাম!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৩৩:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৪২০৬ বার দেখা হয়েছে

বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছেই। খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম যেমন কিছুটা বেড়েছে, তেমনি বাড়তি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম।

তেলের সঙ্গে চিনির দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। তবে কমেছে আলুর দাম। বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি। সবজির দাম বেশ কিছুদিন ধরেই কম। চাল ও পেঁয়াজের বাজারে কোনো হেরফের নেই।

ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাটাসুর বাজার, রায়েরবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে গতকাল বৃহস্পতিবার দেখা যায়, রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল ৫৭৫-৫৯০, বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের তেল ৫৭০-৫৮০ টাকা এবং পুষ্টি ও তীর ব্র্যান্ডের তেল ৫৫০-৫৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগের তুলনায় দাম ৫ লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। ব্র্যান্ডভেদে বোতলজাত সয়াবিন তেলের ১ লিটারের বোতলের দাম ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে তা ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ছিল বলে দাবি বিক্রেতাদের।

দেশে গত আগস্ট মাসে ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) ছিল ৫০৫ থেকে ৫১৫ টাকা। বর্তমানে তা ৬১৫ থেকে ৬২৫ টাকা। এর মানে হলো, পাঁচ মাসে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ২২ টাকা বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) গতকালের হিসাব বলছে, ১ লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১০৮ থেকে ১১০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০৭ থেকে ১০৯ টাকা। পাম সুপার তেল ২ থেকে ৩ টাকা বেড়ে প্রতি লিটার ১০০-১০২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের সোনালী ট্রেডার্সের মালিক আবুল কাশেম বলেন, কোম্পানিগুলো যে দাম নির্ধারণ করেছে, ক্রেতারা সেই দামে তেল কিনতে চান না।
রাজধানীর তিনটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল খুচরা বাজারে সরু মিনিকেট চাল ৬৫-৬৮ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫-৬৬ টাকা, ভালো মানের বিআর-২৮ চাল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা এবং মোটা গুটি ও স্বর্ণা চাল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সরকার গতকাল চাল আমদানি শুল্ক-কর ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যা কার্যকর থাকবে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। খাদ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে বেসরকারি খাতে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে। শুল্কসুবিধার আওতায় অনুমতি সাপেক্ষে চাল আমদানি করা যাবে।

মোহাম্মদপুর সরকারি কৃষিপণ্যের পাইকারি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বলছেন, চালের দাম নতুন করে বাড়েনি। আবার কমেওনি।
গতকাল পেঁয়াজ আমদানিতেও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক নতুন করে আরোপ করা হয়েছে। আর স্থগিত থাকা ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বহাল করা হয়েছে। এই শুল্ক আরোপ করা হলো ভারত ১ জানুয়ারি পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর।

ভারত রপ্তানির দরজা খুলে দেওয়ার পর থেকে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমছিল। রাজধানীর তিনটি বাজারে গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও দেশি পেঁয়াজের বাজারমূল্য ছিল প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে।

এখন শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম। বেশির ভাগ সবজি পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি ১৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। তবে টমেটোর দাম এখনো কিছুটা বাড়তি। প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

ঢাকার রায়েরবাজার সিটি করপোরেশন বাজারে কেনাকাটা করতে যাওয়া রেহেনা সরকার বলেন, বাজারে সবজির দাম কমেছে। তবে চাল ও তেলের দাম অনেক বেশি। চাল-তেল কিনতেই অনেক টাকা বাড়তি চলে যাচ্ছে।

শেয়ার করুন

x
English Version

বেড়েই চলেছে ভোজ্য তেল আর চালের দাম!

আপডেট: ১১:৩৩:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী ২০২১

বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ছেই। খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম যেমন কিছুটা বেড়েছে, তেমনি বাড়তি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম।

তেলের সঙ্গে চিনির দাম কেজিপ্রতি ২ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। তবে কমেছে আলুর দাম। বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা কেজি। সবজির দাম বেশ কিছুদিন ধরেই কম। চাল ও পেঁয়াজের বাজারে কোনো হেরফের নেই।

ঢাকার মোহাম্মদপুরের কাটাসুর বাজার, রায়েরবাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে গতকাল বৃহস্পতিবার দেখা যায়, রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল ৫৭৫-৫৯০, বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের তেল ৫৭০-৫৮০ টাকা এবং পুষ্টি ও তীর ব্র্যান্ডের তেল ৫৫০-৫৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগের তুলনায় দাম ৫ লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। ব্র্যান্ডভেদে বোতলজাত সয়াবিন তেলের ১ লিটারের বোতলের দাম ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে তা ১২০ থেকে ১২৫ টাকা ছিল বলে দাবি বিক্রেতাদের।

দেশে গত আগস্ট মাসে ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) ছিল ৫০৫ থেকে ৫১৫ টাকা। বর্তমানে তা ৬১৫ থেকে ৬২৫ টাকা। এর মানে হলো, পাঁচ মাসে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ২২ টাকা বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) গতকালের হিসাব বলছে, ১ লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১০৮ থেকে ১১০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০৭ থেকে ১০৯ টাকা। পাম সুপার তেল ২ থেকে ৩ টাকা বেড়ে প্রতি লিটার ১০০-১০২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের সোনালী ট্রেডার্সের মালিক আবুল কাশেম বলেন, কোম্পানিগুলো যে দাম নির্ধারণ করেছে, ক্রেতারা সেই দামে তেল কিনতে চান না।
রাজধানীর তিনটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল খুচরা বাজারে সরু মিনিকেট চাল ৬৫-৬৮ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫-৬৬ টাকা, ভালো মানের বিআর-২৮ চাল ৫২ থেকে ৫৪ টাকা এবং মোটা গুটি ও স্বর্ণা চাল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সরকার গতকাল চাল আমদানি শুল্ক-কর ৬২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যা কার্যকর থাকবে আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। খাদ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে বেসরকারি খাতে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে। শুল্কসুবিধার আওতায় অনুমতি সাপেক্ষে চাল আমদানি করা যাবে।

মোহাম্মদপুর সরকারি কৃষিপণ্যের পাইকারি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বলছেন, চালের দাম নতুন করে বাড়েনি। আবার কমেওনি।
গতকাল পেঁয়াজ আমদানিতেও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক নতুন করে আরোপ করা হয়েছে। আর স্থগিত থাকা ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বহাল করা হয়েছে। এই শুল্ক আরোপ করা হলো ভারত ১ জানুয়ারি পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর।

ভারত রপ্তানির দরজা খুলে দেওয়ার পর থেকে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমছিল। রাজধানীর তিনটি বাজারে গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও দেশি পেঁয়াজের বাজারমূল্য ছিল প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয় ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে।

এখন শীতকালীন সবজির ভরা মৌসুম। বেশির ভাগ সবজি পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি ১৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। তবে টমেটোর দাম এখনো কিছুটা বাড়তি। প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা।

ঢাকার রায়েরবাজার সিটি করপোরেশন বাজারে কেনাকাটা করতে যাওয়া রেহেনা সরকার বলেন, বাজারে সবজির দাম কমেছে। তবে চাল ও তেলের দাম অনেক বেশি। চাল-তেল কিনতেই অনেক টাকা বাড়তি চলে যাচ্ছে।