০২:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ভালোবাসা দিবস বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৫:০৪:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৪১২৪ বার দেখা হয়েছে

ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে অনেক অনৈতিক কার্যক্রম চলে। পথেঘাটে বেহায়াপনা নির্লজ্জতা দেখা যায়। যেগুলো ইসলাম সমর্থন করে না। কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, যারা মুমিনদের মাঝে অশ্লিলতা কামনা করে, তাদের জন্য আল্লাহ রেখেছেন দুনিয়া ও আখেরাতের যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। -সুরা নূর, আয়াত নং ১৯।

ভালোবাসা দিবসের নামে ইসলামবহির্ভূত কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিবাহের আগে তরুণ-তরুণীদের পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ, কথাবার্তা-মেলামেশা, প্রেম-ভালোবাসা ইসলাম ধর্মে হারাম। তবে কাউকে ভালোবাসতে হলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালোবাসতে হবে। আবার কাউকে ঘৃণা করতে হলেও আল্লাহর জন্য ঘৃণা করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট শ্রেষ্ঠ আমল হল, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ভালবাসা এবং তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে শত্রুতা রাখা। -মুসনাদে আহমদ,হাদিস নং ২০৩৪১।

মূলত ভালোবাসা পবিত্র জিনিস। মহান রবের পক্ষ থেকে এক বিশাল নিয়ামতও। এ নিয়ামত না পেলে আল্লাহ বান্দাকে, বান্দা আল্লাহকে, নবীজি উম্মতকে, উম্মতগণ নবীজিকে, পিতা-মাতা সন্তানকে, সন্তানগণ পিতা-মাতাকে ভালোবাসতো না। তাদের মধ্যে আত্মীয়তার নিগূঢ় সম্পর্ক তৈরি হতো না। মানুষ বঞ্চিত হতো বৈধ ভালোবাসার বন্ধন থেকে।

হাদিসে এসেছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসল, আল্লাহর জন্য কাউকে ঘৃণা করল, আল্লাহর জন্য কাউকে দান করল এবং আল্লাহর জন্য কাউকে দান করা থেকে বিরত থাকল, সে ব্যক্তি নিজ ঈমানকে পূর্ণতা দান করল। -আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৬৮৩।

মুসলমানদের আনন্দের দিন দু’টি। একটি ঈদুল ফিতর অন্যটি ঈদুল আজহা। এগুলো ছাড়া বাকি উৎসবকে ইসলাম নিষেধ করেছে।

এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, খায়বার যাত্রাকালে নবীজি মূর্তিপূজকদের একটি গাছ অতিক্রম করলেন। তাদের নিকট যে গাছটির নাম ছিল ‘জাতু আনওয়াত’। এর উপর তির টানিয়ে রাখা হত। এটা দেখে কতক সাহাবি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল, হে আল্লাহর রসুল! আমাদের জন্যও এমন একটি ‘জাতু আনওয়াত’ নির্ধারণ করে দিন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্ষোভ প্রকাশ করলেন, সুবহানাল্লাহ, এ তো মুসা আ. এর জাতির মত কথা। আমাদের জন্য একজন প্রভু তৈরি করে দিন, তাদের প্রভুর ন্যায়। আমি নিশ্চিত, আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, তোমরা পূর্ববর্তীদের আচার-অনুষ্ঠানের অন্ধানুকরণ করবে। – মিশকাত, হাদিস নং ৫৪০৮।

অন্য হাদীছে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই একজন বলে গণ্য হবে। -আবু দাউদ হাদিস নং ৪০৩১। তাই ইসলাম  ভালোবাসা দিবস পালনের অনুমতি দেয় না। এসব থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয়।

লেখক : মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।

শেয়ার করুন

x
English Version

ভালোবাসা দিবস বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

আপডেট: ০৫:০৪:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে অনেক অনৈতিক কার্যক্রম চলে। পথেঘাটে বেহায়াপনা নির্লজ্জতা দেখা যায়। যেগুলো ইসলাম সমর্থন করে না। কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, যারা মুমিনদের মাঝে অশ্লিলতা কামনা করে, তাদের জন্য আল্লাহ রেখেছেন দুনিয়া ও আখেরাতের যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। -সুরা নূর, আয়াত নং ১৯।

ভালোবাসা দিবসের নামে ইসলামবহির্ভূত কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিবাহের আগে তরুণ-তরুণীদের পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ, কথাবার্তা-মেলামেশা, প্রেম-ভালোবাসা ইসলাম ধর্মে হারাম। তবে কাউকে ভালোবাসতে হলে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালোবাসতে হবে। আবার কাউকে ঘৃণা করতে হলেও আল্লাহর জন্য ঘৃণা করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট শ্রেষ্ঠ আমল হল, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ভালবাসা এবং তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য কারো সাথে শত্রুতা রাখা। -মুসনাদে আহমদ,হাদিস নং ২০৩৪১।

মূলত ভালোবাসা পবিত্র জিনিস। মহান রবের পক্ষ থেকে এক বিশাল নিয়ামতও। এ নিয়ামত না পেলে আল্লাহ বান্দাকে, বান্দা আল্লাহকে, নবীজি উম্মতকে, উম্মতগণ নবীজিকে, পিতা-মাতা সন্তানকে, সন্তানগণ পিতা-মাতাকে ভালোবাসতো না। তাদের মধ্যে আত্মীয়তার নিগূঢ় সম্পর্ক তৈরি হতো না। মানুষ বঞ্চিত হতো বৈধ ভালোবাসার বন্ধন থেকে।

হাদিসে এসেছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য কাউকে ভালোবাসল, আল্লাহর জন্য কাউকে ঘৃণা করল, আল্লাহর জন্য কাউকে দান করল এবং আল্লাহর জন্য কাউকে দান করা থেকে বিরত থাকল, সে ব্যক্তি নিজ ঈমানকে পূর্ণতা দান করল। -আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৬৮৩।

মুসলমানদের আনন্দের দিন দু’টি। একটি ঈদুল ফিতর অন্যটি ঈদুল আজহা। এগুলো ছাড়া বাকি উৎসবকে ইসলাম নিষেধ করেছে।

এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, খায়বার যাত্রাকালে নবীজি মূর্তিপূজকদের একটি গাছ অতিক্রম করলেন। তাদের নিকট যে গাছটির নাম ছিল ‘জাতু আনওয়াত’। এর উপর তির টানিয়ে রাখা হত। এটা দেখে কতক সাহাবি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল, হে আল্লাহর রসুল! আমাদের জন্যও এমন একটি ‘জাতু আনওয়াত’ নির্ধারণ করে দিন। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্ষোভ প্রকাশ করলেন, সুবহানাল্লাহ, এ তো মুসা আ. এর জাতির মত কথা। আমাদের জন্য একজন প্রভু তৈরি করে দিন, তাদের প্রভুর ন্যায়। আমি নিশ্চিত, আমি আল্লাহর শপথ করে বলছি, তোমরা পূর্ববর্তীদের আচার-অনুষ্ঠানের অন্ধানুকরণ করবে। – মিশকাত, হাদিস নং ৫৪০৮।

অন্য হাদীছে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি যে জাতির অনুকরণ করবে, সে ব্যক্তি সেই জাতিরই একজন বলে গণ্য হবে। -আবু দাউদ হাদিস নং ৪০৩১। তাই ইসলাম  ভালোবাসা দিবস পালনের অনুমতি দেয় না। এসব থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয়।

লেখক : মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা।