১০:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হলে কী করবেন?

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৮:২৮:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • / ৪১৪১ বার দেখা হয়েছে

গত কয়েক মাস ধরেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনকে ঘিরে প্রচুর গুঞ্জন চলছে। একথা সত্যি যে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এর ভ্যাকসিন নতুন করে আশার আলো নিয়ে এসেছে। তবে এখন বেশিরভাগ মানুষ যে জিনিসটি নিয়ে ভয় পান, তা হলো প্রতিকূল এবং মারাত্মক জটিলতা যা কখনও কখনও আরও বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। 

ভাইরাসজনিত অসুস্থতা থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য ভ্যাকসিন নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তাই ভ্যাকসিন নেওয়ার সময় ভীত হওয়া চলবে না। বরং ভ্যাকসিন নেয়ার পরে অনাকাঙিক্ষতভাবে কিছু ঘটলে অর্থাৎ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সঠিক পদক্ষেপগুলো কী হতে পারে তা জেনে নেওয়া উচিত।

ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে প্রতিক্রিয়া

অনেকগুলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও উপসর্গের সমন্বয়কে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরের প্রতিক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করা যায়। সেসব লক্ষণ বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ এসব লক্ষণ অনেক সময় গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। তবে ভীত না হয়ে খেয়াল করুন, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার ঘটনা এখনও বেশ কম। এখনও পর্যন্ত যতজনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যকের ক্ষেত্রেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। 

আমাদের যা জানা দরকার

ভ্যাকসিন পরবর্তী বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভীত হলে মনে রাখা জরুরি, এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাকে নষ্ট করে না। এটি অন্যান্য ভ্যাকসিনের মতোই, যাতে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এর কারণে ভ্যাকসিন নেওয়া থেকে বিরত থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য অনুসারে, কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এও বোঝায় যে আপনার শরীর ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা তৈরি করছে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে ঝুঁকি হ্রাস করার উপায় হলো নিজেকে আগে থেকে প্রস্তুত করা এবং সময়মতো চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া।

ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে সতর্ক থাকা উচিত এবং লক্ষণগুলো লক্ষ্য করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি অস্বাভাবিক কোনো লক্ষণ অনুভব করেন, যেমন উচ্চ জ্বর, ফোলাভাব, শরীর অবশ হয়ে আসা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। ইনজেকশনের এক সপ্তাহ পরে হালকা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (জ্বর, ইনজেকশনের জায়গায় ব্যথা, ক্লান্তি ইত্যাদি) একইরকম থাকলে চিকিৎসককে জানান। 

বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে

যদিও ভ্যাকসিনের সাথে যুক্ত নেতিবাচক বা খারাপ প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যন্ত খুব কম দেখা গেছে, তবু যেকোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে আপনার শরীরের কোনোরকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে যেখান থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদেরকে এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে জানান। আপনার সমস্যার ওপর নির্ভর করে তাত্ক্ষণিক চিকিত্সা সহায়তা করা হবে। কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তিরও প্রয়োজন হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ভ্যাকসিন জোটের জারি করা নির্দেশিকা অনুসারে, গুরুতর সমস্যা দেখা দিলে ক্ষতিপূরণও দেওয়া যেতে পারে। নীতিগুলো দেশভেদে আলাদা হতে পারে।

এর চিকিৎসা করা যেতে পারে?

ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া গুরুতর আকার ধারণ করলেও সময়মতো চিকিৎসা হলে সুস্থ হওয়া সম্ভব। যাদের ক্ষেত্রে এসব লক্ষণ দেখা দিয়েছিল তারা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরে এখন সুস্থ জীবনযাপন করছেন। আপনার যেসব লক্ষণ রয়েছে তার ওপর নির্ভর করে চিকিত্সকরা আপনাকে ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ডোজ থেকে বিরত থাকতে বা স্থগিত করার পরামর্শও দিতে পারেন।

কীভাবে জানতে পারবেন যে আপনি ঝুঁকিতে আছেন?

ভ্যাকসিন পরবর্তী ঝুঁকি থেকে দূরে থাকার সহজ উপায় হলো এটি আপনার জন্য নিরাপদ কি না তা নিজেই পরীক্ষা করে জানা। যদিও টিকা দেওয়া সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে আপনার যদি আগে থেকেই কোনো সমস্যা বা অ্যালার্জি থাকে যার ওষুধগুলো ভ্যাকসিনের কাজে বাধা দিতে পারে তবে তা সনাক্ত করুন।

উদাহরণস্বরূপ, রক্ত ​​পাতলা করে এমন ওষুধ সেবনকারীদের এখনই এই ভ্যাকসিন নেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আপনাকে সঠিক ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে কি না তা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে জেনে নিতে পারেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে।

শেয়ার করুন

x
English Version

ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হলে কী করবেন?

আপডেট: ০৮:২৮:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

গত কয়েক মাস ধরেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনকে ঘিরে প্রচুর গুঞ্জন চলছে। একথা সত্যি যে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এর ভ্যাকসিন নতুন করে আশার আলো নিয়ে এসেছে। তবে এখন বেশিরভাগ মানুষ যে জিনিসটি নিয়ে ভয় পান, তা হলো প্রতিকূল এবং মারাত্মক জটিলতা যা কখনও কখনও আরও বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। 

ভাইরাসজনিত অসুস্থতা থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য ভ্যাকসিন নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তাই ভ্যাকসিন নেওয়ার সময় ভীত হওয়া চলবে না। বরং ভ্যাকসিন নেয়ার পরে অনাকাঙিক্ষতভাবে কিছু ঘটলে অর্থাৎ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সঠিক পদক্ষেপগুলো কী হতে পারে তা জেনে নেওয়া উচিত।

ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে প্রতিক্রিয়া

অনেকগুলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও উপসর্গের সমন্বয়কে ভ্যাকসিন নেওয়ার পরের প্রতিক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করা যায়। সেসব লক্ষণ বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ এসব লক্ষণ অনেক সময় গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে। তবে ভীত না হয়ে খেয়াল করুন, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার ঘটনা এখনও বেশ কম। এখনও পর্যন্ত যতজনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যকের ক্ষেত্রেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। 

আমাদের যা জানা দরকার

ভ্যাকসিন পরবর্তী বিরূপ প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভীত হলে মনে রাখা জরুরি, এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভ্যাকসিনের কার্যকারিতাকে নষ্ট করে না। এটি অন্যান্য ভ্যাকসিনের মতোই, যাতে পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এর কারণে ভ্যাকসিন নেওয়া থেকে বিরত থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য অনুসারে, কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এও বোঝায় যে আপনার শরীর ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা তৈরি করছে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে ঝুঁকি হ্রাস করার উপায় হলো নিজেকে আগে থেকে প্রস্তুত করা এবং সময়মতো চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া।

ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে সতর্ক থাকা উচিত এবং লক্ষণগুলো লক্ষ্য করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি অস্বাভাবিক কোনো লক্ষণ অনুভব করেন, যেমন উচ্চ জ্বর, ফোলাভাব, শরীর অবশ হয়ে আসা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। ইনজেকশনের এক সপ্তাহ পরে হালকা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া (জ্বর, ইনজেকশনের জায়গায় ব্যথা, ক্লান্তি ইত্যাদি) একইরকম থাকলে চিকিৎসককে জানান। 

বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে

যদিও ভ্যাকসিনের সাথে যুক্ত নেতিবাচক বা খারাপ প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যন্ত খুব কম দেখা গেছে, তবু যেকোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি। ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে আপনার শরীরের কোনোরকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে যেখান থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদেরকে এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে জানান। আপনার সমস্যার ওপর নির্ভর করে তাত্ক্ষণিক চিকিত্সা সহায়তা করা হবে। কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তিরও প্রয়োজন হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ভ্যাকসিন জোটের জারি করা নির্দেশিকা অনুসারে, গুরুতর সমস্যা দেখা দিলে ক্ষতিপূরণও দেওয়া যেতে পারে। নীতিগুলো দেশভেদে আলাদা হতে পারে।

এর চিকিৎসা করা যেতে পারে?

ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া গুরুতর আকার ধারণ করলেও সময়মতো চিকিৎসা হলে সুস্থ হওয়া সম্ভব। যাদের ক্ষেত্রে এসব লক্ষণ দেখা দিয়েছিল তারা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পরে এখন সুস্থ জীবনযাপন করছেন। আপনার যেসব লক্ষণ রয়েছে তার ওপর নির্ভর করে চিকিত্সকরা আপনাকে ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ডোজ থেকে বিরত থাকতে বা স্থগিত করার পরামর্শও দিতে পারেন।

কীভাবে জানতে পারবেন যে আপনি ঝুঁকিতে আছেন?

ভ্যাকসিন পরবর্তী ঝুঁকি থেকে দূরে থাকার সহজ উপায় হলো এটি আপনার জন্য নিরাপদ কি না তা নিজেই পরীক্ষা করে জানা। যদিও টিকা দেওয়া সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে আপনার যদি আগে থেকেই কোনো সমস্যা বা অ্যালার্জি থাকে যার ওষুধগুলো ভ্যাকসিনের কাজে বাধা দিতে পারে তবে তা সনাক্ত করুন।

উদাহরণস্বরূপ, রক্ত ​​পাতলা করে এমন ওষুধ সেবনকারীদের এখনই এই ভ্যাকসিন নেওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। আপনাকে সঠিক ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হবে কি না তা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে জেনে নিতে পারেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে।