০৩:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

রোজায় বেশি বেশি পানি ও জুস পান করুন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:০৭:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ মে ২০১৮
  • / ৪৪৩৪ বার দেখা হয়েছে

পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে। ফলে প্রতিদিনের খাদ্যাভাস ও জীবন-যাত্রায় পরিবর্তন আসাটাই স্বাভাবিক। গোটা মাস সুস্থ থেকে রোজা রাখাটাই জরুরি। এজন্য সুষম, পুষ্টিকর ও পরিমিত খাবার খেতে হবে। সেহরি ও ইফতারের ডায়েট সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদ সৈয়দা শারমিন আক্তার।

ইফতারি মানেই বেগুনী, পেঁয়াজুসহ নানা পদের ভাজা-পোড়া খাবারের সমারোহ। তাই রমজানে অনেকেরই পাকস্থলিতে এসিড বেড়ে যায়। এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে বুক জ্বলা ও পেটের উপরের অংশে ব্যথা অনুভব হতে পারে।

অতিভোজন, বেশি মসলাযুক্ত ও ভাজা-পোড়া খাবার এসিডের মাত্রা বাড়ায়। ধুমপানও এসিডিটি বাড়ায়। তবে আঁশযুক্ত খাবার পাকস্থলির এসিড কমায়।

সুস্থ থাকতে কে না চায়। রোজা রাখতে গিয়ে সাধারণত যেসব সমস্যা দেখা দেয়, তা থেকে নিজেকে সুস্থ রাখতে যা করবেনথ

– হজমে অসুবিধার জন্য পেটে গ্যাস হয়। এ অবস্থার জন্য দায়ী অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত খাবার এবং অতিমাত্রায় খাদ্য গ্রহণ। সুস্থ থাকতে হলে বাঁধাকপি, ডাল, কোমল পানীয় এবং অতিমাত্রায় খাদ্যগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

– ফলের জুস বা সাধারণ পানি বেশি করে পান করতে হবে। ভাজা-পোড়া খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

– রমজানে অবসাদগ্রস্ত, প্রেসার লো হয়ে যাওয়া একটি কমন সমস্যা। ইফতারের পরপর অপরিকল্পিত খাবার গ্রহণের ফলেই এটি হয়ে থাকে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে লবণ মিশ্রিত খাবার, পানীয় বা পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

– যারা ইফতারিতে বেশি চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণ করেন, তাদের মধ্যে অবসাদ বেশি দেখা দেয়। তাই কম চিনিযুক্ত শরবত খেতে হবে।

– রোজায় কম পানি ও কম আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ বিপরীতে প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এজন্য ইফতারির পর থেকে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত আড়াই লিটারের মতো পানি পান করতে হবে। এ ছাড়া অতি আঁশযুক্ত খাবার যেমন: লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত বেশি পরিমাণে খেতে হবে।

– কম ঘুম, ধুমপান, লো প্রেসারে আক্রান্তদের মধ্যে ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে বমি বমি ভাব হয়। ফলে মাথা ব্যথা শুরু হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে ধুমপান বাদ দেয়াসহ পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করা, ক্যাফেইন খুবই কম এমন ধরনের চা (গ্রিন টি) পান করতে হবে।

– সারাদিন উপোস থাকা হয় বলে কখনো কখনো হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যেতে পারে। লক্ষণ হিসাবে দেখা যায় দুর্বলতা, কাজে অমনোযোগ, মাথা ব্যথা। এজন্য সেহরিতে খাবার শেষে একটি ফল এবং খাবারের মাঝে ১ কাপ দুধ খাওয়া উচিত।

– রোজায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম কম গ্রহণের ফলেও এটা হতে পারে। এজন্য সবজি, ফল, দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার, মাংস ও খেজুর বেশি খাওয়া প্রয়োজন।

– যাদের পেপটিক আলসার রয়েছে, তাদের ফল, সবজি, বিশেষ করে চাঁপা কলা, ফলের রস, দুধ, বেলের শরবত ইত্যাদি খেলে উপকার হবে।

রহমতের মাসে রোজা পালনের সঙ্গে নিজের আমল ঠিকমত করার জন্য নিজেকে সুস্থ থাকতে হবে।

লেখক: সৈয়দা শারমিন আক্তার

সিইও, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার, ঢাকা

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

x
English Version

রোজায় বেশি বেশি পানি ও জুস পান করুন

আপডেট: ০৭:০৭:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ মে ২০১৮

পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়েছে। ফলে প্রতিদিনের খাদ্যাভাস ও জীবন-যাত্রায় পরিবর্তন আসাটাই স্বাভাবিক। গোটা মাস সুস্থ থেকে রোজা রাখাটাই জরুরি। এজন্য সুষম, পুষ্টিকর ও পরিমিত খাবার খেতে হবে। সেহরি ও ইফতারের ডায়েট সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদ সৈয়দা শারমিন আক্তার।

ইফতারি মানেই বেগুনী, পেঁয়াজুসহ নানা পদের ভাজা-পোড়া খাবারের সমারোহ। তাই রমজানে অনেকেরই পাকস্থলিতে এসিড বেড়ে যায়। এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে বুক জ্বলা ও পেটের উপরের অংশে ব্যথা অনুভব হতে পারে।

অতিভোজন, বেশি মসলাযুক্ত ও ভাজা-পোড়া খাবার এসিডের মাত্রা বাড়ায়। ধুমপানও এসিডিটি বাড়ায়। তবে আঁশযুক্ত খাবার পাকস্থলির এসিড কমায়।

সুস্থ থাকতে কে না চায়। রোজা রাখতে গিয়ে সাধারণত যেসব সমস্যা দেখা দেয়, তা থেকে নিজেকে সুস্থ রাখতে যা করবেনথ

– হজমে অসুবিধার জন্য পেটে গ্যাস হয়। এ অবস্থার জন্য দায়ী অতিরিক্ত তেল ও মসলাযুক্ত খাবার এবং অতিমাত্রায় খাদ্য গ্রহণ। সুস্থ থাকতে হলে বাঁধাকপি, ডাল, কোমল পানীয় এবং অতিমাত্রায় খাদ্যগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।

– ফলের জুস বা সাধারণ পানি বেশি করে পান করতে হবে। ভাজা-পোড়া খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

– রমজানে অবসাদগ্রস্ত, প্রেসার লো হয়ে যাওয়া একটি কমন সমস্যা। ইফতারের পরপর অপরিকল্পিত খাবার গ্রহণের ফলেই এটি হয়ে থাকে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে লবণ মিশ্রিত খাবার, পানীয় বা পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

– যারা ইফতারিতে বেশি চিনিযুক্ত খাবার গ্রহণ করেন, তাদের মধ্যে অবসাদ বেশি দেখা দেয়। তাই কম চিনিযুক্ত শরবত খেতে হবে।

– রোজায় কম পানি ও কম আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ বিপরীতে প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এজন্য ইফতারির পর থেকে রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত আড়াই লিটারের মতো পানি পান করতে হবে। এ ছাড়া অতি আঁশযুক্ত খাবার যেমন: লাল আটার রুটি, লাল চালের ভাত বেশি পরিমাণে খেতে হবে।

– কম ঘুম, ধুমপান, লো প্রেসারে আক্রান্তদের মধ্যে ইফতারের ঠিক আগ মুহূর্তে বমি বমি ভাব হয়। ফলে মাথা ব্যথা শুরু হয়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে ধুমপান বাদ দেয়াসহ পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করা, ক্যাফেইন খুবই কম এমন ধরনের চা (গ্রিন টি) পান করতে হবে।

– সারাদিন উপোস থাকা হয় বলে কখনো কখনো হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যেতে পারে। লক্ষণ হিসাবে দেখা যায় দুর্বলতা, কাজে অমনোযোগ, মাথা ব্যথা। এজন্য সেহরিতে খাবার শেষে একটি ফল এবং খাবারের মাঝে ১ কাপ দুধ খাওয়া উচিত।

– রোজায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম কম গ্রহণের ফলেও এটা হতে পারে। এজন্য সবজি, ফল, দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার, মাংস ও খেজুর বেশি খাওয়া প্রয়োজন।

– যাদের পেপটিক আলসার রয়েছে, তাদের ফল, সবজি, বিশেষ করে চাঁপা কলা, ফলের রস, দুধ, বেলের শরবত ইত্যাদি খেলে উপকার হবে।

রহমতের মাসে রোজা পালনের সঙ্গে নিজের আমল ঠিকমত করার জন্য নিজেকে সুস্থ থাকতে হবে।

লেখক: সৈয়দা শারমিন আক্তার

সিইও, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার, ঢাকা