০৫:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

২০৩০ সালের মধ্যে আন্তঃবাণিজ্য ১০ শতাংশে নিতে চায় ডি-৮

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:০০:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪১৪০ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ উন্নয়নশীল আটটি দেশ নিয়ে গঠিত জোট ডি-৮ এর বর্তমান আন্তঃবাণিজ্যের পরিমাণ ছয় শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে এর পরিমাণ ১০ শতাংশে উন্নীত করতে চায় সদস্য রাষ্ট্রগুলো।

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) ডি-৮ শীর্ষ নেতাদের ভার্চুয়াল সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। এতে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাণিজ্য বাড়াতে একমত হয়েছে। এজন্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) নিয়ে কাজ চলছে। এরইমধ্যে ছয়টি দেশ এ চুক্তি অনুমোদন করেছে, আরও দুটি দেশ বাকি রয়েছে। দুটি দেশ অনুমোদন করলেই এ চুক্তিটি করতে সক্ষম হবে ডি-৮ রাষ্ট্রগুলো।’

ডি-৮ এর বাইরেও বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিকভাবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান মাসুদ বিন মোমেন।

বাংলাদেশের আয়োজনে চার দিনব্যাপী সম্মেলনের সমাপনী দিনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ডি-৮ এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেন। বাংলাদেশ আগামী দুই বছর ডি-৮ এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবে।

বাংলাদেশ ছাড়া জোটের অন্য দেশগুলো হলো মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক।

সম্মেলনের সমাপনী দিনে সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে দেশটির ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য ডি-৮ এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি তার বক্তব্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ডি-৮ শীর্ষ নেতাদের অবহিত করেন যে, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে তা পুরো অঞ্চলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে জানান, মুজিববর্ষ উদযাপনের পাশাপাশি বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎযাপন করেছে। এ সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের সুপারিশ লাভ করেছে। এ ঐতিহাসিক মুহূর্তে ডি-৮ এর পরবর্তী দুই বছরের সভাপতিত্ব লাভ করার মাধ্যমে বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় হবে বলে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।’

মোমেন জানান, শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য নারীর ক্ষমতায়নের গুরুত্ব, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন এডুকেশন প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। সেইসঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের ১১ লাখ রোহিঙ্গাদেরকে তাদের ভূমিতে প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য সদস্য দেশগুলোর কাছে আহ্বান জানান।

এবারের ডি-৮ সম্মেলনে বাণিজ্যখাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘সম্মেলনে বাণিজ্যখাতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি সইয়ের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার জন্য ডি-৮ সচিবালয়কে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন টিকা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড টিকা নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে মত দিয়েছে ডি-৮ দেশগুলো। নিজ নিজ দেশে টিকা উৎপাদনের ওপর তারা জোর দিয়েছে। একইসঙ্গে এ ব্যাপারে একে অপরের সহযোগিতা চেয়েছে।’

‘বৈশ্বিক রূপান্তরের জন্য অংশীদারিত্ব : যুব সম্প্রদায় ও প্রযুক্তি শক্তির মুক্তি’ প্রতিপাদ্যে চার দিনব্যাপী সম্মেলন শুরু হয় সোমবার (৫ এপ্রিল)। ১৯৯৬ সালে উন্নয়নশীল আটটি মুসলিম দেশ নিয়ে ডি-৮ জোট গঠন করা হয়। গঠনের এক বছরের মাথায় ১৯৯৭ সালে জোটটির প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তী তথা ডি-৮ জোটের দ্বিতীয় সম্মেলন ১৯৯৯ সালে ঢাকায় আয়োজন করা হয়।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

x
English Version

২০৩০ সালের মধ্যে আন্তঃবাণিজ্য ১০ শতাংশে নিতে চায় ডি-৮

আপডেট: ১২:০০:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদকঃ উন্নয়নশীল আটটি দেশ নিয়ে গঠিত জোট ডি-৮ এর বর্তমান আন্তঃবাণিজ্যের পরিমাণ ছয় শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে এর পরিমাণ ১০ শতাংশে উন্নীত করতে চায় সদস্য রাষ্ট্রগুলো।

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) ডি-৮ শীর্ষ নেতাদের ভার্চুয়াল সম্মেলন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। এতে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ‘ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রগুলো বাণিজ্য বাড়াতে একমত হয়েছে। এজন্য অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) নিয়ে কাজ চলছে। এরইমধ্যে ছয়টি দেশ এ চুক্তি অনুমোদন করেছে, আরও দুটি দেশ বাকি রয়েছে। দুটি দেশ অনুমোদন করলেই এ চুক্তিটি করতে সক্ষম হবে ডি-৮ রাষ্ট্রগুলো।’

ডি-৮ এর বাইরেও বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিকভাবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান মাসুদ বিন মোমেন।

বাংলাদেশের আয়োজনে চার দিনব্যাপী সম্মেলনের সমাপনী দিনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ডি-৮ এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেন। বাংলাদেশ আগামী দুই বছর ডি-৮ এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবে।

বাংলাদেশ ছাড়া জোটের অন্য দেশগুলো হলো মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক।

সম্মেলনের সমাপনী দিনে সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে দেশটির ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য ডি-৮ এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি তার বক্তব্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ডি-৮ শীর্ষ নেতাদের অবহিত করেন যে, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে তা পুরো অঞ্চলের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে জানান, মুজিববর্ষ উদযাপনের পাশাপাশি বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উৎযাপন করেছে। এ সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের সুপারিশ লাভ করেছে। এ ঐতিহাসিক মুহূর্তে ডি-৮ এর পরবর্তী দুই বছরের সভাপতিত্ব লাভ করার মাধ্যমে বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় হবে বলে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।’

মোমেন জানান, শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য নারীর ক্ষমতায়নের গুরুত্ব, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন এডুকেশন প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। সেইসঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের ১১ লাখ রোহিঙ্গাদেরকে তাদের ভূমিতে প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য সদস্য দেশগুলোর কাছে আহ্বান জানান।

এবারের ডি-৮ সম্মেলনে বাণিজ্যখাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘সম্মেলনে বাণিজ্যখাতে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি সইয়ের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার জন্য ডি-৮ সচিবালয়কে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন টিকা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড টিকা নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে মত দিয়েছে ডি-৮ দেশগুলো। নিজ নিজ দেশে টিকা উৎপাদনের ওপর তারা জোর দিয়েছে। একইসঙ্গে এ ব্যাপারে একে অপরের সহযোগিতা চেয়েছে।’

‘বৈশ্বিক রূপান্তরের জন্য অংশীদারিত্ব : যুব সম্প্রদায় ও প্রযুক্তি শক্তির মুক্তি’ প্রতিপাদ্যে চার দিনব্যাপী সম্মেলন শুরু হয় সোমবার (৫ এপ্রিল)। ১৯৯৬ সালে উন্নয়নশীল আটটি মুসলিম দেশ নিয়ে ডি-৮ জোট গঠন করা হয়। গঠনের এক বছরের মাথায় ১৯৯৭ সালে জোটটির প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তী তথা ডি-৮ জোটের দ্বিতীয় সম্মেলন ১৯৯৯ সালে ঢাকায় আয়োজন করা হয়।

ঢাকা/এসএ