০৫:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

আইএমএফের ঋণের কিস্তি না পেলে ক্ষতি হবে না: গভর্নর

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৩৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১০২৯১ বার দেখা হয়েছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর সঙ্গে চলমান আলোচনা থাকলেও, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য তাদের ঋণ গ্রহণ খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

শুক্রবার ওয়াশিংটনে আইএমএফের সঙ্গে বৈঠক শেষে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা এখনো আইএমএফের সঙ্গে কোনো চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছাইনি, তবে আমাদের অবস্থান একেবারে দূরত্বেও নেই। যদি সমঝোতা না-ও হয়, তবুও বাংলাদেশে কোনো বড় সমস্যা হবে না, আমাদের অর্থনীতি স্বাভাবিকভাবেই চলবে।

গভর্নর মনসুর বাংলাদেশের মিশনের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন, যা তিনি শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকালে তার ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট করেন।

গভর্নর মনসুর বলেন, আমাদের নিজেদের ব্যাংকিং খাত ও বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সংস্কার করতে হবে, এবং আইএমএফ শুধু সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। যদি মনে করি ঋণ আমাদের সহায়ক নয়, তবে আমরা নেব না।

মনসুর বলেন, আইএমএফের ব্যালান্স অব পেমেন্ট সহায়তা না পেলেও আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। এটা শুধুমাত্র একটি অতিরিক্ত সুবিধা, যদি না পাই, তাও সমস্যা হবে না। আমাদের রিজার্ভ এখন ভালো অবস্থায় রয়েছে।

আইএমএফের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে মন্সুর বলেন, আলোচনার মূল বিষয় হলো সংস্কার — আর্থিক খাতের সংস্কার, কর ব্যবস্থার সংস্কার। অর্থ (ঋণ) মূল উদ্দেশ্য নয়।

তিনি আরও জানান, প্রধানত মুদ্রার বিনিময় হার এবং রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে কিছু মতপার্থক্য রয়েছে। রাজস্বের বিষয়ে মোটামুটি সমঝোতা হয়েছে। মুদ্রা বিনিময় হার নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো- বাজার এখন স্থিতিশীল, ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে না।

গভর্নর মনসুর বলেন, আমরা শ্রীলঙ্কা হইনি, পাকিস্তানও হইনি। আমাদের এখন কোনো চাপে পড়ে ঋণ নিতে হচ্ছে না। ছয় মাস আগে হয়তো এমন অবস্থা ছিল, কিন্তু এখন নয়।

আরও পড়ুন: ইইউতে পোশাক রপ্তানিতে বেড়েছে ৩৭ শতাংশ

এসময় আর্থিকখাতে সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রকৃত লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক খাতকে রাজনৈতিক চাপ থেকে মুক্ত রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

পূর্ববর্তী সরকারের আমলে অর্থ পাচারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, প্রায় ২৪-২৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। যদি কিছু (আইএমএফের ঋণ) সহায়তা পাইও, কয়েক বিলিয়নের বেশি পাব না। তাই সংস্কারই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যান্য দাতা সংস্থার প্রসঙ্গে মনসুর বলেন, প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো অতিরিক্ত শর্ত থাকে না, তবে বাজেট সহায়তা ঋণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শর্ত থাকে।

আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির অধীনে ২৩১ কোটি ডলার ইতিমধ্যে ছাড় হয়েছে। আরও ২৩৯ কোটি ডলার পাওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

আইএমএফের ঋণের কিস্তি না পেলে ক্ষতি হবে না: গভর্নর

আপডেট: ১০:৩৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর সঙ্গে চলমান আলোচনা থাকলেও, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য তাদের ঋণ গ্রহণ খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

শুক্রবার ওয়াশিংটনে আইএমএফের সঙ্গে বৈঠক শেষে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা এখনো আইএমএফের সঙ্গে কোনো চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছাইনি, তবে আমাদের অবস্থান একেবারে দূরত্বেও নেই। যদি সমঝোতা না-ও হয়, তবুও বাংলাদেশে কোনো বড় সমস্যা হবে না, আমাদের অর্থনীতি স্বাভাবিকভাবেই চলবে।

গভর্নর মনসুর বাংলাদেশের মিশনের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন, যা তিনি শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকালে তার ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট করেন।

গভর্নর মনসুর বলেন, আমাদের নিজেদের ব্যাংকিং খাত ও বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে সংস্কার করতে হবে, এবং আইএমএফ শুধু সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। যদি মনে করি ঋণ আমাদের সহায়ক নয়, তবে আমরা নেব না।

মনসুর বলেন, আইএমএফের ব্যালান্স অব পেমেন্ট সহায়তা না পেলেও আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। এটা শুধুমাত্র একটি অতিরিক্ত সুবিধা, যদি না পাই, তাও সমস্যা হবে না। আমাদের রিজার্ভ এখন ভালো অবস্থায় রয়েছে।

আইএমএফের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে মন্সুর বলেন, আলোচনার মূল বিষয় হলো সংস্কার — আর্থিক খাতের সংস্কার, কর ব্যবস্থার সংস্কার। অর্থ (ঋণ) মূল উদ্দেশ্য নয়।

তিনি আরও জানান, প্রধানত মুদ্রার বিনিময় হার এবং রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে কিছু মতপার্থক্য রয়েছে। রাজস্বের বিষয়ে মোটামুটি সমঝোতা হয়েছে। মুদ্রা বিনিময় হার নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো- বাজার এখন স্থিতিশীল, ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে না।

গভর্নর মনসুর বলেন, আমরা শ্রীলঙ্কা হইনি, পাকিস্তানও হইনি। আমাদের এখন কোনো চাপে পড়ে ঋণ নিতে হচ্ছে না। ছয় মাস আগে হয়তো এমন অবস্থা ছিল, কিন্তু এখন নয়।

আরও পড়ুন: ইইউতে পোশাক রপ্তানিতে বেড়েছে ৩৭ শতাংশ

এসময় আর্থিকখাতে সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রকৃত লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক খাতকে রাজনৈতিক চাপ থেকে মুক্ত রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

পূর্ববর্তী সরকারের আমলে অর্থ পাচারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, প্রায় ২৪-২৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। যদি কিছু (আইএমএফের ঋণ) সহায়তা পাইও, কয়েক বিলিয়নের বেশি পাব না। তাই সংস্কারই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যান্য দাতা সংস্থার প্রসঙ্গে মনসুর বলেন, প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে সাধারণত কোনো অতিরিক্ত শর্ত থাকে না, তবে বাজেট সহায়তা ঋণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শর্ত থাকে।

আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির অধীনে ২৩১ কোটি ডলার ইতিমধ্যে ছাড় হয়েছে। আরও ২৩৯ কোটি ডলার পাওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকা/এসএইচ