ইইউ ভিসা সেন্টার দিল্লি থেকে অন্য দেশে স্থানান্তরের অনুরোধ প্রধান উপদেষ্টার
- আপডেট: ০৫:৩৭:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
- / ১০৩১৬ বার দেখা হয়েছে
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে তিনি ইউরোপীয় ভিসা সেন্টারগুলো দিল্লি থেকে সরিয়ে ঢাকায় অথবা প্রতিবেশী কোনো দেশে স্থানান্তরের অনুরোধ জানিয়েছেন। আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
জানা যায়, প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে ১৫ জন প্রতিনিধি তাদের মতামত তুলে ধরেন। বৈঠকে শ্রম অধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইবুনাল অ্যাক্ট, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন ও টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে উভয়ের অঙ্গীকার ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ডিসেম্বর মাসজুড়ে আমরা বিজয় উদযাপন করি। বিজয়ের মাসে আপনাদের সঙ্গে এমন একটি ইনট্যারক্টিভ আলোচনায় অংশ নিতে পেরে আমি খুব আনন্দিত।’
ভিসা সেন্টার দিল্লি থেকে সরিয়ে ঢাকায় অথবা প্রতিবেশী দেশে স্থানান্তরের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সীমিত করায় অনেক শিক্ষার্থী দিল্লি গিয়ে ইউরোপের ভিসা নিতে পারছেন না। ফলে তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশের শিক্ষার্থী পাচ্ছে না। ভিসা অফিস ঢাকা অথবা প্রতিবেশী কোনো দেশে স্থানান্তর হলে বাংলাদেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়ই উপকৃত হবে।’
আরও পড়ুন: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন ইউরোপের ২৮ রাষ্ট্রদূত
বৈঠকের সময়- বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন তিনি। এ সময় তিনি গত ১৬ বছর ধরে অত্যাচার, শোষণ, বলপূর্বক গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘন সম্পর্কে সংক্ষেপে তুলে ধরেন। তিনি অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রের বিষয় উল্লেখ করে দুর্নীতি, অর্থ পাচার এবং ব্যাংকিং সিস্টেমকে কীভাবে বিপর্যস্ত করা হয়েছিল সেসব কথা জানান।
বাংলাদেশ সম্পর্কে ব্যাপক আকারে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা এই মিসইনফরমেশন ঠেকাতে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করি।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা যে ব্যাপক টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে তা দিয়ে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি। সম্প্রীতি জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের কথাও আজকের বৈঠকে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কেও ইইউ প্রতিনিধিদের বিশদভাবে জানিয়েছেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানান, ইতোমধ্যে বুলগেরিয়া বাংলাদেশিদের জন্য তাদের ভিসা সেন্টার ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে স্থানান্তর করেছে। তিনি অন্য দেশগুলোকেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণের আহ্বান জানান।
বৈঠকে সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন ইইউ প্রতিনিধিরা। এ সময় পরামর্শ ও সুপারিশ জানিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দেন তারা।
ঢাকা/এসএইচ