এখনই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়: মিনহাজ মান্নান ইমন

- আপডেট: ১০:৪৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
- / ১০৭৯৭ বার দেখা হয়েছে
বিএলআই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, যিনি বর্তমানে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শেয়ারহোল্ডার পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মিনহাজ মান্নান ইমন ৩৫ বছর ধরে পুঁজিবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। তিনি এ দীর্ঘসময়ে বেশকিছু কোম্পানির ইস্যু ম্যানেজার এবং আন্ডাররাইটার’র দায়িত্ব পালন করেছেন৷
তিনি টুমোরোল্যান্ড লিমিটেড এবং গ্রিনওয়ার্ক লিমিটেডের উদ্যোক্তা পরিচালক। এ ছাড়া তিনি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) করপোরেট সদস্য প্লাটিনাম সিকিউরিটিজ লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ২০১২ সালের মার্চে প্রথমবারের মতো তিনি ডিএসইর পরিচালক নির্বাচিত হয়ে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ২০১৮ সালের মার্চে পুনরায় পরিচালক নির্বাচিত হন এবং ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
সম্প্রতি মিনহাজ মান্নান ইমন পুঁজিবাজারের নানা বিষয় নিয়ে বিজনেস জার্নালের সাথে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
বিজনেস জার্নাল: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অবস্থাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? বাজারে পতনের প্রধান কারণগুলো কী?
মিনহাজ মান্নান ইমন: সরকারের দীর্ঘ দিনের দু:শাসন-অপশাসনের কারণে বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে নেতিবাচক মন-মানসিকতা তৈরি হয়েছে। বাজারে একটা সময় নৈতিকতার অভাব যথেষ্ট ছিল। যে-কারণে অনেক বিনিযোগকারী বাজার থেকে চলে গেছে। মোটাদাগে তারা এখন পর্যন্ত ফিরে আসেনি। কিছু বিনিয়োগকারী ফিরে এসেছে। সম্প্রতি বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাজারের টার্নওভার (লেনদেন) কিছুটা বেড়েছে। তবে তা যথেষ্ট নয়। ফলে বলতেই পারি বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে এখনও আস্থাহীনতা রয়েছে।
তিনি বলেন, বাজারের প্রতি মানুষের অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। বাজারের সুশাসনের প্রতি অবিশ্বাস, নৈতিকতার প্রতি অবিশ্বাস, সরকারের নজরদারির প্রতি অবিশ্বাস এবং বাজারের প্রাথমিক গণপ্রাস্তাবের (আইপিও) প্রতি বিনিয়োগকারীদের মনে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। এসব কারণের বাজারের পতন হয়েছে।
বিজনেস জার্নাল: বর্তমান বাজারে শেয়ারের মূল্যায়ন কি সঠিকভাবে হচ্ছে, নাকি আন্ডারভ্যালু শেয়ারের সংখ্যা বেশি?
মিনহাজ মান্নান ইমন: দীর্ঘদিন ধরেই বাজারে অবমূল্যায়িত শেয়ারের সংখ্যাই বেশি দেখা যাচ্ছে। যদিও সম্প্রতি কিছু শেয়ার অবমূল্যায়ন থেকে বেরিয়ে এসেছে। তারপরেও আমি বলবো প্রাইস আর্নিংস (পিই) রেশিও অনুযায়ী বেশিরভাগ শেয়ারেই এখন অবমূল্যায়িত অবস্থায় রয়েছে।
বিজনেস জার্নাল: সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সামনে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী, এবং এ থেকে উত্তরণের উপায় কী?
মিনহাজ মান্নান ইমন: বিনিয়োগকারীরা বাজারে সুশাসন দেখতে চায়। নতুন কমিশন বাজারে সুশাসন ফিরিয়ে আনবে, বিনিয়োগকারীরা সেটি দেখতে চায়। তারা দেখতে চায়, বাজারের উন্নয়নে যে-সমস্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেসমস্ত কমিটি সঠিক সময়ে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে, যে টাস্কফোর্স গঠন হয়েছে, সেটি সঠিকভাবে কাজ করবে, পূর্বে যে-সমস্ত ভুল হয়েছে, সেগুলো নতুন কমিশন করবে না, ভালো ভালো আইপিও বাজারে আসবে এবং ইস্যু ম্যানেজার ও অডিটরদের মধ্যে দায়বদ্ধতা তারা দেখতে চায়। পাশাপাশি বাজারের উন্নয়নে আরও যে-সমস্ত সীমাবদ্ধতা রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে যদি সমাধান করা যায়, সরকারের যদি নজরদারি বাড়ে, তবে বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে।
বিজনেস জার্নাল: বিএসইসির নতুন কমিশনার বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজার উন্নয়ন বা স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখতে পারছে কী? কোনো নীতিগত পরিবর্তন প্রয়োজন কী?
মিনহাজ মান্নান ইমন: নতুন কমিশনের ভিতরে কিছু ঘাটতিতো আমরা দেখতেই পারছি। কিছু বিশৃঙ্খলা আমরা দেখতে পেরেছি। কিছু সুশাসনের ঘাটতি দেখতে পারছি। এগুলো বিনিয়োগকারীদের জন্য নেতিবাচক সংবাদ। কিন্তু এসব ব্যাপারে নতুন কমিশন বা তার কর্মকর্তাদের কতটুকু দায় সেটি বিতর্কের বিষয়। কারো পক্ষ নিয়ে কথা বলা মুশকিল। সম্প্রতি কমিশনে যে-সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো কাঙ্খিত না। এধরনের ঘটনা দেশে এবং বিদেশে কমিশনের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। ফলে কমিশনে যে-সমস্ত সমস্যা দেখা দিয়েছে, সেগুলোর দ্রুতই সমাধান হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, নীতির অবশ্যই পরিবর্তন হওয়া উচিত। অতিতে যে-সমস্ত লুন্ঠনের নীতি, মিথ্যা আশ্বাসের নীতি, বিনিযোগকারীদের ভুল বোঝানোর নীতি ছিল সেগুলো পরিবর্তন প্রয়োজন রয়েছে। অতিতে রোড শোর নামে বিদেশি টাকা পাচারের নীতি, বাজে আইপিও’র নামে বিনিয়োগকারীদের পকেট খালি করার নীতি, অপশাসন চালু করার নীতি, ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) নামে কোম্পানিগুলোতে যেসমস্ত অবন্ঠিত ডিভিডেন্ড ছিল, সেগুলো আত্মসাৎ করার যে নীতি এতোদিন আমরা দেখেছি, সেগুলোর পরিবর্তন প্রয়োজন রয়েছে।
বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন। বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য কী পদক্ষেপ নেওয়া্ উচিত?
মিনহাজ মান্নান ইমন: অতিতের কমিশনের কর্মকান্ডে বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। মানহীন আইপিও যদি না আসে, বাজারের তদারকি ব্যবস্থা যদি শক্তিশালী হয়, যেসমস্ত দু:শাসন হয়েছে, সেগুলো যদি কমে আসে, বর্তমান কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি আগের চেয়ে বেশি সততার পরিচয় দেন, সার্ভিল্যান্সের পরিমাণটা যদি বাড়ে, তবে খুব দ্রুতই বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা চলে আসবে।
বিজনেস জার্নাল: স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর জন্য ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট কতটুকু কাজে এসেছে? ডিএসই-সিএসই এবং বাজারের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আইনটি কি রিভিউ করা উচিত?
মিনহাজ মান্নান ইমন: স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর পুরাতন সদস্যদের কর্তৃত্ব কমানোর জন্য ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট করা হয়েছিল। বাজারে সুশাসন ফিরিয়ে আনার জন্য নির্বাচিত পরিচালকের সংখ্যা কম এবং অনির্বাচিত পরিচালকের সংখ্যা বেশি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সুশাসন ফিরে আসেনি। স্টক এক্সচেঞ্জগুলো ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশন হওয়ার আগে যে-পরিমাণ দুনীতি হয়েছে, ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশন হওয়ার পর দুর্নীতির পরিমাণ আরও বেড়েছে। স্বতন্ত্র পরিচালকের সংখ্যা বেশি থাকার পরেও দুর্নীতি বেশি হয়েছে। তাই এই ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্টটি পুনর্বিবেচনা বা পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত বলে আমি মনে করি।
বিজনেস জার্নাল: বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর ব্যবসায়িক অবস্থা কেমন? ইদানিং শোনা যাচ্ছে বেশকিছু সিকিউরিটিজ হাউসে কর্মী ছাটাই হচ্ছে, এর কারণ কী?
মিনহাজ মান্নান ইমন: বর্তমানে ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে লেনদেন হচ্ছে, যা যথেষ্ট কম। এই লেনদেনে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ব্যবসা পরিচালনা করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রত্যেকটা হাউজ নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে হাউজ পরিচালনা করছে। বড় বড় হাউজগুলোতো ব্যবসা পরিচালনার জন্য রিজার্ভের টাকা ভাঙছে। ডিএসইতে কমপক্ষে ৮০০ কোটি টাকা এবং মোট ১২০০ কোটি টাকার লেনদেন হলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ব্যবসা পরিচালনা সহজ হবে। সংগত কারণেই ব্যবসার পরিস্থিতি ভালো না থাকায় ব্রোকারেজ হাউজগুলো কর্মী ছাটাই করছে।
বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক আইপিওগুলো বাজারে কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে? বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুযোগ কী?
মিনহাজ মান্নান ইমন: বর্তমান কমিশনের সময়ে কোনো আইপিও বাজারে আসেনি। অতিতে মানহীন আইপিও, কোম্পানিগুলোর ব্যালেন্স শীটের স্বচ্ছতা না থাকায় বিনিয়োগকারীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আইপিওতে ঝুঁকি কম থাকার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের পুঁজিবাজারে হয়েছে উল্টোটি। কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্তির আগেই প্রিমিয়াম নিয়ে যাচ্ছে, কারসাজিকারকরা এমন জায়গায় শেয়ারের দাম নিয়ে যাচ্ছে, সেখানে যেই কিনছে সেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায় আইপিওতে বিনিয়োগকারীরা লাভ করলেও দীর্ঘ মেয়াদে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিজনেস জার্নাল: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কতটা আকর্ষনীয়? এই বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য কী উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে?
মিনহাজ মান্নান ইমন: আমাদের পুঁজিবাজার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য যথেষ্ট আকর্ষনীয়। আমরা যদি পিই রেশিও, প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি), শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) দেখি, তাহলে তাদের জন্য এই বাজার নি:সন্দেহে আকর্ষনীয় বাজার। তবে বিগত দুই কমিশনের ভুল নীতির কারণে তারা বিনিয়োগে তেমন আগ্রহ দেখায়নি।
‘বিদেশিরা শুধু লাভের জন্যই বাজারে আসে না। যদি ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়, তবে তারা বিনিয়োগে বাধাগ্রস্ত হন। স্বাচ্ছন্দে বিনিয়োগ করতে পারেন না। তারা বিনিয়োগ করতে ভয় পায়। তারা মনে করে বাজারে এন্ট্রি (প্রবেশ) রয়েছে, কিন্তু এক্সিটের (বাহির) ব্যবস্থা নেই।’
তিনি বলেন, ডলারের মূল্যায়ন যদি স্ট্যাবল (স্থিতিশীল) হয়ে আসে। বাজারে যদি বহুজাতিক বা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির তালিকাভুক্তি বাড়ে, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বড় ভলিউমের কোম্পানি যদি তালিকাভুক্ত হয় এবং ভালো পলিসি প্রয়োগ করা হয়, তবে তাদের বিনিয়োগ বাড়বে।
বিজনেস জার্নাল: মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনগুলি কিভাবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করছে?
মিনহাজ মান্নান ইমন: যে-কোনো দেশের মূল্যস্ফীতি, সে সেদেশের পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করবেই। মূল্যস্ফীতি যদি ৮ থেকে ১০ শতাংশ হয়। তখন ভোক্তাদের জীবন পরিচালনার জন্য বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হয়। তখন স্বাভাবিক ভাবেই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে তাদের মধ্যে অনাগ্রহ দেখা দেয়। এ ছাড়াও বিশ্বে নতুন যুদ্ধ পরিস্থিতি, ট্যারিফ পরিস্থিতি, নতুন কে ক্ষমতায় আসলো তার প্রভাবতো পুঁজিবাজারে পড়েই।
বিজনেস জার্নাল: নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য এই বাজারে প্রবেশের উপযুক্ত সময় কখন? এবং তাদের কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?
মিনহাজ মান্নান ইমন: বাজারে বিনিয়োগের জন্য এখনই পার্ফেক্ট সময়। এখন বাজারের পিই রেশিও যথেষ্ট কম রয়েছে। অনেক শেয়ারের দাম কম রয়েছে। এখন দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন।
তিনি বলেন, অতি মূল্যায়িত বাজারে বিনিয়োগকারীদের সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু এখনতো বাজার অবমূল্যায়িত অবস্থায় রয়েছে। তাই এখন খুব বেশি সতর্কতার প্রয়োজন নেই। এখন বিনিয়োগ করলে সব শেয়ারেই লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজনেস জার্নাল: দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য বর্তমান বাজারে কী সম্ভাবনা রয়েছে? বিনিয়োগকারীরা কীভাবে একটি স্থায়ী কৌশল তৈরি করতে পারে?
মিনহাজ মান্নান ইমন: আগামী ১ থেকে দেড় বছরের মধ্যে বহু শেয়ারের দাম ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ বাড়বে। তাই দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করলে লাভবান হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। বিনিয়োগের জন্য কয়েক খাত বেছে নেওয়া যেতে পারে। বর্তমান অবমূল্যায়িত বাজারে কয়েকটি খাতে বিনিয়োগ করলে, একটি বা দুটি খাতে লাভ অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। বাকি খাতগুলোতে হয়তো কম লাভ হবে। তাই কয়েকটি খাতে বিনিয়োগ করা উচিত।
বিজনেস জার্নাল: আপনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে ডিএসই’র চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আপনারা পুঁজিবাজার নিয়ে বাজেট প্রস্তাবনা দিয়েছেন। কিন্তু এনবিআর চেয়ারম্যান আপনাদের বাজেট প্রস্তাবনায় কিছুটা অসন্তুষ্ট হয়ে ভৎসনা করেছেন। এ ব্যাপারে আপনি কি বলবেন?
মিনহাজ মান্নান ইমন: আসলে ভৎসনার কিছু নেই। ডিএসই ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পক্ষে দাবি করেছে। আগে ক্যাপিটাল গেইনের (মূলধনী লাভ) ওপর কর ছিল শূন্য। গত সরকারের শেষ দিকে মূলধনী লাভের ওপর প্রায় ৪০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়। সেসময় বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান আমাদের দাবির ওপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মূলধনী লাভের ওপর কর মৌকুফ করেছেন, এবং পরবর্তী লাভের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপ করেছেন। এখনতো বাজারের পরিস্থিতি খারাপ। তাই আমরা বলেছি মূলধনী লাভের ৫০ লক্ষ টাকার বাহিরে ১০ শতাংশ কর আরোপ করার জন্য। এনবিআর চেয়ারম্যান বলেছেন, আগেতো কর কমিয়েছি। নতুন কোনো প্রস্তাবনা থাকলে সেটি নিয়ে যেতে বলেছে। এই বিষয়টি আসলে ভুল ভাবে পত্রপত্রিকায় এসেছে। এনবিআর চেয়ারম্যান তার জায়গায় ঠিক আছেন। আবার আমাদের জায়গায় আমরা ঠিক ছিলাম।
আরও পড়ুন: তিন কোম্পানির শেয়ার কারসাজির অভিযোগে ৮০ কোটি টাকা জরিমানা
বিজনেস জার্নাল: বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতেন।
মিনহাজ মান্নান ইমন: পুঁজিবাজারে এখনই বিনিয়োগের মোক্ষম সময়। প্রতিদিনই ৪/৫টি শেয়ারের দাম বাড়ছে। এখন বিনিয়োগ করলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিনিয়োগকারীদের এখনই বিনিয়োগ করা উচিত।
বিজনেস জার্নাল: বিজনেস জার্নালকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মিনহাজ মান্নান ইমন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
ঢাকা/টিএ