বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এসএস স্টিল লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা উদ্যেক্তাদের মধ্যে তিন উদ্যোক্তা পরিচালক ওয়াইম্যাক্স ইলেক্ট্রোড লিমিটেডের উদ্যোক্তাদের শেয়ার অধিগ্রহন করবে। এজন্য কোম্পানিটির কাছে থাকা ৩০ শতাংশ শেয়ার ফেস ভ্যালুতে অর্থাৎ ১০ টাকা মূল্যে ক্রয় করার প্রস্তাব দিয়েছে। বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
জানা গেছে, এরই মধ্যে কোম্পানি দুটি প্রস্তাবিত শেয়ার হস্তান্তর করার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাথে বৈঠক করেছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন সাপেক্ষে এই শেয়ার হস্তান্তর করা হবে।
ওয়াইম্যাক্স অধিগ্রহণ প্রসংগে এসএস স্টিলের এক উদ্যোক্তা পরিচালক বলেন, ‘আমরা আমাদের ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ খুঁজছি এবং ওয়াইম্যাক্স অধিগ্রহণের প্রস্তাব তারই একটি অংশ। আমাদের দেশব্যাপী কার্যক্রমের শক্তি ওয়াইম্যাক্স আরও বেশি বাড়াবে বলে আমরা মনে করি।’
তিনি আরও বলেন, ওয়াইম্যাক্সকে অধিগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোক্তারা ওয়াইম্যাক্সের ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করবে। এই বিষয়ে ওয়াইম্যাক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মালেকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা যায়নি।
ইতিমধ্যে, এসএস স্টিলের মালিকরা ওয়াইম্যাক্সের ধাতব উৎপাদন কারখানাটিকে কম খরচে মানসম্পন্ন পণ্য তৈরি করতে যথেষ্ট দক্ষ বলে মনে করছে। এসএস স্টিলের উদ্যোক্তারা অভিহিত মূল্যে অধিগ্রহণের ব্যয় ছাড়াও কোম্পানিটির ব্যবসায় আরও বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করেছে।
ওআইম্যাক্স ইলেক্ট্রোড ২০১৭ সালে ১০ টাকা মূল্যের ১ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার ছেড়ে শেয়ারবাজার থেকে ১৫ কোটি টাকা উত্তোলন করেছিল।
বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগৃহীত তার তহবিল ব্যবহার করে কোম্পানিটি উৎপাদন এবং গবেষণা ও উন্নয়ন ক্ষমতা প্রসারিত করেছে। কিন্তু কোম্পানিটির প্রধান বাজার দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সীমাবদ্ধ থাকায় কোম্পানিটির বিপণন ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা বিরাজ করছে।
কোম্পানিটি ২০১৯ সাল পর্যন্ত রাজস্ব এবং নিট মুনাফা বৃদ্ধি দেখালেও এরপর থেকে মুনাফা কমতে থাকে। ২০২০ সাল থেকে কোম্পানিটির মুনাফায় বড় পতন হয়। আর ২০২১ সালের শুরু থেকেই কোম্পানিটি লোকসানে ধাবিত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত লোকসান বেড়েই চলছে।
২০১৭ সালে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি ২০২০ সালে বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। কিন্তু ২০২১ সালে কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। চলতি অর্থবছরে তিন প্রান্তিক পর্যন্ত শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ১৭ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি মুনাফা ছিল ৫১ পয়সা।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে যে, কোম্পানিটি তার রাজস্ব এবং সম্পদকে অতি মাত্রায় বৃদ্ধি করছে। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডিএসই কর্মকর্তাদের কাছে এটাও স্বীকার করেছেন যে, কোম্পানির নথির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ছিল।
কোম্পানিটির নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান আর্টিসান চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনের বিষয়ে কোন আপত্তি উত্থাপন করেনি। বিএসইসিকে ডিএসইর দেওয়া প্রতিবেদনে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে।
ওয়াইম্যাক্স ইলেক্ট্রোডের বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন ৬৭ কোটি টাকার বেশি। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার উদ্যোক্তাদের কাছে রয়েছে ৩০.০১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৯.১২ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৪০.৮৭ শতাংশ।
ঢাকা/টিএ