০৫:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

‘কলকাতা দখল’ মন্তব্য নিয়ে মমতা বললেন, আমরা ললিপপ চুষব?

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:১৮:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১০২৭৬ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

নয়াদিল্লি এবং ঢাকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলাকে প্রভাবিত করে এমন কোনও উসকানিমূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সোমবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় দেওয়া বক্তৃতায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সময় এই আহ্বান জানান তিনি। রাজ্যের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেত্রী বলেন, ‘‘প্রতিবেশী বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের ঘটনায় সবাই উদ্বিগ্ন।’’

‘‘হিন্দু, মুসলিম, শিখ বা খ্রিস্টানরা দাঙ্গা শুরু করেন না। সমাজ-বিরোধীরা দাঙ্গা শুরু করেন। আমাদের এমন কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়; যা বাংলায় খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করে। তবে আমি খুশি যে,  বাংলাদেশে নিপীড়নের ঘটনায় এখানে হিন্দু এবং সংখ্যালঘু মুসলিম—উভয়ই প্রতিবাদ করছে। এটা আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ।’’

তিনি বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু নেতারা সমাবেশ করতে চেয়েছিলেন। আমি তাদের নিষেধ করেছি। অনেক মানুষ এটিকে সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করছে। তারা আরেকটি দাঙ্গা শুরু করতে চায়। আমরা দাঙ্গা চাই না। আমরা শান্তি চাই। হিন্দু-মুসলিম এবং শিখ ও খ্রিস্টানদের রক্ত একই।’’

আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়া বন্ধের ঘোষণা ট্রাম্পের

তিনি ভারতীয় গণমাধ্যমের একাংশকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন। মমতা বলেন, এটি উত্তরপ্রদেশ বা রাজস্থান নয় যে, আমরা আপনাকে নিষিদ্ধ অথবা গ্রেপ্তার করব। তবে আমি আপনাদের অনুরোধ জানাই। অনেক ভুয়া ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করছে। উভয় সম্প্রদায়কেই এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বিধানসভায় দেওয়া বক্তৃতায় মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যারা বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করার কথা ভাবছেন, তাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে এটি আপনার রাজ্য এবং আপনার বন্ধুদেরও ক্ষতি করবে।’’

পশ্চিমবঙ্গের এই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে অনেকেই সীমান্ত পেরিয়ে এই রাজ্যে ঢুকতে চান। বিএসএফ দেখছে। আমরা এই বিষয়ে মন্তব্য করব না। যাদের টাকা আছে তারা বিমানে বা ট্রেনে আসছেন। কিন্তু গরীবরা আসতে পারছেন না। আমরা সীমান্ত দেখভাল করি না। এটা কেন্দ্রের বিষয়। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনও বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না।’’

তিনি বলেন, ‘‘চলুন আমরা সীমান্তের ওপারের বাঙালিদের জাতীয়তা, মমতা ও স্নেহের অনুভূতি দেখাই।’’ এ সময় বাংলাদেশের কিছু ব্যক্তির কলকাতা দখল করে নেওয়ার বিষয়ে করা সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের বিষয়েও কথা বলেছেন মমতা।

তৃণমূল কংগ্রেসের এই প্রধান বলেন, ‘‘আপনারা বাংলা, বিহার এবং ওড়িশা দখল করবেন আর আমরা ললিপপ চুষবো? এমনটিও ভাববেন না।’’

এর আগে, গত সোমবার বিধানসভায় দেওয়া ভাষণে মমতা বলেছিলেন, ‘‘যদি বাংলাদেশে ভারতীয়রা আক্রান্ত হন, তবে আমরা তা সহ্য করব না। আমরা তাদের সেখান থেকে ফিরিয়ে আনতে পারি।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পরিবার, সম্পত্তি এবং প্রিয় মানুষেরা বাংলাদেশে আছেন। ভারত সরকার এই বিষয়ে যে অবস্থান নেবে, আমরা তা মেনে নেব। কিন্তু বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে ধর্মীয় কারণে কেউ অত্যাচারিত হলে আমরা তার নিন্দা জানাই। আমরা এই বিষয়ে ভারত সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানাই।’’

সূত্র: এনডিটিভি।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

x

‘কলকাতা দখল’ মন্তব্য নিয়ে মমতা বললেন, আমরা ললিপপ চুষব?

আপডেট: ০৬:১৮:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

নয়াদিল্লি এবং ঢাকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মাঝে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক নেতাদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে রাজ্যের শান্তি-শৃঙ্খলাকে প্রভাবিত করে এমন কোনও উসকানিমূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সোমবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় দেওয়া বক্তৃতায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার সময় এই আহ্বান জানান তিনি। রাজ্যের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেত্রী বলেন, ‘‘প্রতিবেশী বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের ঘটনায় সবাই উদ্বিগ্ন।’’

‘‘হিন্দু, মুসলিম, শিখ বা খ্রিস্টানরা দাঙ্গা শুরু করেন না। সমাজ-বিরোধীরা দাঙ্গা শুরু করেন। আমাদের এমন কোনও মন্তব্য করা উচিত নয়; যা বাংলায় খারাপ পরিস্থিতি তৈরি করে। তবে আমি খুশি যে,  বাংলাদেশে নিপীড়নের ঘটনায় এখানে হিন্দু এবং সংখ্যালঘু মুসলিম—উভয়ই প্রতিবাদ করছে। এটা আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ।’’

তিনি বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু নেতারা সমাবেশ করতে চেয়েছিলেন। আমি তাদের নিষেধ করেছি। অনেক মানুষ এটিকে সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করছে। তারা আরেকটি দাঙ্গা শুরু করতে চায়। আমরা দাঙ্গা চাই না। আমরা শান্তি চাই। হিন্দু-মুসলিম এবং শিখ ও খ্রিস্টানদের রক্ত একই।’’

আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়া বন্ধের ঘোষণা ট্রাম্পের

তিনি ভারতীয় গণমাধ্যমের একাংশকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন। মমতা বলেন, এটি উত্তরপ্রদেশ বা রাজস্থান নয় যে, আমরা আপনাকে নিষিদ্ধ অথবা গ্রেপ্তার করব। তবে আমি আপনাদের অনুরোধ জানাই। অনেক ভুয়া ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটি রাজনৈতিক দল আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করছে। উভয় সম্প্রদায়কেই এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

বিধানসভায় দেওয়া বক্তৃতায় মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যারা বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে রাজনীতি করার কথা ভাবছেন, তাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে এটি আপনার রাজ্য এবং আপনার বন্ধুদেরও ক্ষতি করবে।’’

পশ্চিমবঙ্গের এই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে অনেকেই সীমান্ত পেরিয়ে এই রাজ্যে ঢুকতে চান। বিএসএফ দেখছে। আমরা এই বিষয়ে মন্তব্য করব না। যাদের টাকা আছে তারা বিমানে বা ট্রেনে আসছেন। কিন্তু গরীবরা আসতে পারছেন না। আমরা সীমান্ত দেখভাল করি না। এটা কেন্দ্রের বিষয়। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনও বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না।’’

তিনি বলেন, ‘‘চলুন আমরা সীমান্তের ওপারের বাঙালিদের জাতীয়তা, মমতা ও স্নেহের অনুভূতি দেখাই।’’ এ সময় বাংলাদেশের কিছু ব্যক্তির কলকাতা দখল করে নেওয়ার বিষয়ে করা সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের বিষয়েও কথা বলেছেন মমতা।

তৃণমূল কংগ্রেসের এই প্রধান বলেন, ‘‘আপনারা বাংলা, বিহার এবং ওড়িশা দখল করবেন আর আমরা ললিপপ চুষবো? এমনটিও ভাববেন না।’’

এর আগে, গত সোমবার বিধানসভায় দেওয়া ভাষণে মমতা বলেছিলেন, ‘‘যদি বাংলাদেশে ভারতীয়রা আক্রান্ত হন, তবে আমরা তা সহ্য করব না। আমরা তাদের সেখান থেকে ফিরিয়ে আনতে পারি।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পরিবার, সম্পত্তি এবং প্রিয় মানুষেরা বাংলাদেশে আছেন। ভারত সরকার এই বিষয়ে যে অবস্থান নেবে, আমরা তা মেনে নেব। কিন্তু বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে ধর্মীয় কারণে কেউ অত্যাচারিত হলে আমরা তার নিন্দা জানাই। আমরা এই বিষয়ে ভারত সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার আহ্বান জানাই।’’

সূত্র: এনডিটিভি।

ঢাকা/এসএইচ