কোটার বিষয়ে আদালতকে পাশ কাটিয়ে কিছুই করবে না সরকার: আইনমন্ত্রী

- আপডেট: ০৭:১৮:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪
- / ১০৩১৮ বার দেখা হয়েছে
কোটা সংস্কারের বিষয়ে সরকার সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে কিছুই করবে না বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
প্রশ্ন উঠেছে কোটা আদালতের বিষয় নয়, সরকারের বিষয়- এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আদালতে যখন একটি বিষয় যায়, তখন সরকার অপেক্ষা করে আদালত কী বলে, তারপর সরকারের পদক্ষেপ নেওয়ার সময় হয়। তাই কোটার বিষয়ে সরকার আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। সরকার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতকে সম্মান করবে। কোটার বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালত যে রায় দিবে সরকার সেটা বিবেচনা করবে। সেটা প্রতিপালন করার চেষ্টা করবে। সরকার কোটার বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতকে পাশ কাটিয়ে কিছুই করবে না।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিচারহীনতায় বাংলাদেশ : বেআইনি আইন ইনডেমনিটি ও কারারুদ্ধ জননেত্রী’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরাম।
সেমিনারে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করেন। এরপর ৭ থেকে ৮ জন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হাইকোর্টে মামলা করেন। আজ যারা কোটা আন্দোলন করছেন, তারা তো হাইকোর্টে যাননি। হঠাৎ একদিন যখন হাইকোর্টের রায়ের কথা পত্রিকায় বের হয়েছে, তখন তারা আন্দোলনে নেমে পড়েছেন। পরে তারা হাইকোর্টে না গিয়ে রাস্তায় আন্দোলনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি বলেন, স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদকারী ছাত্রছাত্রীরা চাইলে আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের বক্তব্য আদালতের সামনে তুলে ধরতে পারেন। আদালত মূল দরখাস্ত বিবেচনা, নিষ্পত্তিকালে তাদের বক্তব্য বিবেচনায় নেবেন। সর্বোচ্চ আদালত তাদের এ আশ্বাস পর্যন্ত দিয়েছেন। তারপরও এ আন্দোলন করার কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে? আন্দোলনের যে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে, এর প্রয়োজনীয়তা থাকে?
আইনমন্ত্রী বলেন, আজকে ইনডেমনিটি আইনের ধারাবাহিকতায় আমরা কিন্তু এখন ছাত্রদের মুখে স্লোগানের কথা শুনছি। যারা আন্দোলন করছেন, তারা যদি- আমি কে, তুমি কে, আমরা বাঙালি, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান- বলতেন তাহলে আমি অবশ্যই বলতাম তারা সঠিক পথে আছেন।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলনে এখন যারা রয়েছে তারা রাজাকারের প্রেতাত্মা: সাদ্দাম
তিনি বলেন, যৌক্তিক কথা জননেত্রী শেখ হাসিনা শুনবে। জনগণের জন্য সেটা ভালো হয়, সেটা প্রধানমন্ত্রী করবেন। কিন্তু তার সরকার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হবে না। সেই আদর্শ হলো- বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কেউ নষ্ট করতে পারবে না। বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ অসম্মান করতে পারবে না। আমাদের এই চেতনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এই চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ এবং একটি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত দেশ হিসেবে পরিচিত করার সংগ্রামে লিপ্ত হতে হবে।
আনিসুল হক বলেন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাংলাদেশে বিচারহীনতার জন্ম দিয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট করে দেওয়ার হাতিয়ার হয়েছিল। এই অধ্যাদেশ জন্ম দিয়েছিল বাংলাদেশে রাজাকার, আল-বদর এবং নিজামী মুজাহিদরাই থাকবে, মুক্তিযোদ্ধারা থাকবে না। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাংলাদেশের অনেক ক্ষতি করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালের ১২ই নভেম্বর এই অর্ডিন্যান্স বাতিল করে প্রমাণ করে দেন যে, বাংলাদেশের জনগণ এই অর্ডিন্যান্স সহ্য করবে না।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সংসদ সদস্য তারানা হালিম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, বঙ্গবন্ধু গবেষক মো. হাফিজুর রহমান, সাংবাদিক নেতা মানিক লাল ঘোষ প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস।
ঢাকা/এসএইচ