০৩:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

জুলাইয়ে ব্যাংকে আমানত কমেছে ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৯:৩০:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১০৬৯০ বার দেখা হয়েছে

ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট ও অস্থিরতায় জুলাই মাসে দেশের ব্যাংকিং খাতে আমানত কমেছে ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা। কারণ অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে হাতের কাছে নগদ অর্থ রাখতে চাওয়ায় আমানত কমার সঙ্গে সঙ্গে জুলাইয়ে মানুষের হাতে থাকা অর্থের পরিমাণও বেড়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, জুলাইয়ে মোট আমানত কমে দাঁড়িয়েছে ১৭.৪২ লাখ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ০.৪৭ শতাংশ কম। গতবছরের একই মাসের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে আমানতের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭.৯১ শতাংশ, যা গত ১৬ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এরচেয়ে কম ৭.৫৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২০২৩ সালের মার্চে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুলাই শেষে ব্যাংকের বাইরে বা মানুষের হাতে থাকা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২.৯১ লাখ কোটি টাকা। জুনের তুলনায় এটি ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা বেশি। গত বছরের জুলাই মাস মানুষের হাতে ২.৬৬ লাখ কোটি টাকা ছিল।

অর্থনীতিবিদদের মতে, টাকা ব্যাংকে থাকলে সেটি যে গতিতে আমানত ও ঋণ তৈরি করতে পারে, ব্যাংকের বাইরে মানুষের হাতে থাকলে এর গতি অনেক কম হয়। ফলে ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ বাড়তে থাকা অর্থনীতির জন্য ভালো নয়।

আরও পড়ুন: সালমান এফ রহমান ও এস আলমের বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে বিএসইসি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, জুলাই মাসে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা এবং মূল্যস্ফীতি থাকার কারণে মানুষ হাতে নগদ টাকা রাখতে চেয়েছে। তবে আগস্টে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, জুলাই মাসের বেশিরভাগ দিন দেশে অস্থিরতা বিরাজ করা, ইন্টারনেট ব্লকেজ এবং সাধারণ ছুটির কারণে ব্যাংক বন্ধ থাকা। এছাড়া বেশ কিছু ব্যাংক থেকে অনিয়ম করে ঋণ বের করে নেওয়ার মতো নেতিবাচক খবর প্রকাশিত হওয়ায় গ্রাহকদের একটা আস্থাহীনতাও তৈরি হয়েছে।

তারা জানান, জুলাই মাসে এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা সম্ভব হলেও আমানত সেভাবে বাড়েনি। সিস্টেম থেকে আমানত যেটা বের হয়েছিল, সেটা ব্যাংকে ফেরার গতিও কমেছে।

তবে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতি ভালোর দিকে যেতে শুরু করেছে মন্তব্য করে এই তারা বলেন, ব্যাংক খাতে গ্রাহকের আস্থা ফেরানোর দিকে নজর দিতে হবে। ইতিমধ্যে রেমিট্যান্স বাড়ার মতো কিছু পজিটিভ সিগন্যাল আমরা দেখতে পাচ্ছি। একইসঙ্গে গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩০ হাজার কোটি টাকা ফিরে এসেছে। আমরা আশা করছি পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশের মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ের রেকর্ড ১১.৬৬ শতাংশ থেকে কমে আগস্টে ১০.৪৯ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি কমেছে ১.১৭ শতাংশীয় পয়েন্ট।

শেয়ার করুন

x

জুলাইয়ে ব্যাংকে আমানত কমেছে ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা

আপডেট: ০৯:৩০:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট ও অস্থিরতায় জুলাই মাসে দেশের ব্যাংকিং খাতে আমানত কমেছে ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা। কারণ অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে হাতের কাছে নগদ অর্থ রাখতে চাওয়ায় আমানত কমার সঙ্গে সঙ্গে জুলাইয়ে মানুষের হাতে থাকা অর্থের পরিমাণও বেড়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, জুলাইয়ে মোট আমানত কমে দাঁড়িয়েছে ১৭.৪২ লাখ কোটি টাকা, যা আগের মাসের চেয়ে ০.৪৭ শতাংশ কম। গতবছরের একই মাসের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে আমানতের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭.৯১ শতাংশ, যা গত ১৬ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এরচেয়ে কম ৭.৫৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২০২৩ সালের মার্চে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুলাই শেষে ব্যাংকের বাইরে বা মানুষের হাতে থাকা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২.৯১ লাখ কোটি টাকা। জুনের তুলনায় এটি ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা বেশি। গত বছরের জুলাই মাস মানুষের হাতে ২.৬৬ লাখ কোটি টাকা ছিল।

অর্থনীতিবিদদের মতে, টাকা ব্যাংকে থাকলে সেটি যে গতিতে আমানত ও ঋণ তৈরি করতে পারে, ব্যাংকের বাইরে মানুষের হাতে থাকলে এর গতি অনেক কম হয়। ফলে ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকার পরিমাণ বাড়তে থাকা অর্থনীতির জন্য ভালো নয়।

আরও পড়ুন: সালমান এফ রহমান ও এস আলমের বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে বিএসইসি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, জুলাই মাসে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা এবং মূল্যস্ফীতি থাকার কারণে মানুষ হাতে নগদ টাকা রাখতে চেয়েছে। তবে আগস্টে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, জুলাই মাসের বেশিরভাগ দিন দেশে অস্থিরতা বিরাজ করা, ইন্টারনেট ব্লকেজ এবং সাধারণ ছুটির কারণে ব্যাংক বন্ধ থাকা। এছাড়া বেশ কিছু ব্যাংক থেকে অনিয়ম করে ঋণ বের করে নেওয়ার মতো নেতিবাচক খবর প্রকাশিত হওয়ায় গ্রাহকদের একটা আস্থাহীনতাও তৈরি হয়েছে।

তারা জানান, জুলাই মাসে এক অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা সম্ভব হলেও আমানত সেভাবে বাড়েনি। সিস্টেম থেকে আমানত যেটা বের হয়েছিল, সেটা ব্যাংকে ফেরার গতিও কমেছে।

তবে আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে পরিস্থিতি ভালোর দিকে যেতে শুরু করেছে মন্তব্য করে এই তারা বলেন, ব্যাংক খাতে গ্রাহকের আস্থা ফেরানোর দিকে নজর দিতে হবে। ইতিমধ্যে রেমিট্যান্স বাড়ার মতো কিছু পজিটিভ সিগন্যাল আমরা দেখতে পাচ্ছি। একইসঙ্গে গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩০ হাজার কোটি টাকা ফিরে এসেছে। আমরা আশা করছি পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশের মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ের রেকর্ড ১১.৬৬ শতাংশ থেকে কমে আগস্টে ১০.৪৯ শতাংশে নেমে এসেছে। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি কমেছে ১.১৭ শতাংশীয় পয়েন্ট।