০৬:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

জেনে নিন কখন বিক্রি করবেন হাতে থাকা শেয়ার!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:১৩:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল ২০২১
  • / ৪৮৭১ বার দেখা হয়েছে

বিজনেস জার্নাল ডেস্কঃ থিওরিটিক্যাল ভাবে বললে, স্টক এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের সক্ষমতা বিনিয়োগকারীর দুটি প্রধান সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল: সঠিক সময় ক্রয় এবং সঠিক সময় বিক্রয় করা। লাভ করতে হলে আপনাকে এই দুটি সিদ্ধান্তই সঠিকভাবে গ্রহন করতে হবে। যে কোনও বিনিয়োগের রিটার্ন প্রথমে ক্রয়ের দামের উপরেই নির্ধারিত হয়।

অনেকেই তর্ক করতে পারে লাভ অথবা ক্ষতি উভয়ই ক্রয়ের সময় নির্ধারিত হয়, যা ক্রেতা বিক্রয় হওয়ার আগে জানে না। তবে সঠিক মূল্যে ক্রয় কারাই মূলত চূড়ান্ত মুনাফা নির্ধারণ করে এবং সঠিক মূল্যে বিক্রয়ই মুনাফার নিশ্চয়তা প্রদান করে। যদি সঠিক সময়ে বিক্রয় না করা যায় তবে সঠিক সময় ক্রয় করা বৃথা হয়ে যায়।
​অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হয়, কখনো কখনো মানুষেরে অতিমুনাফার সহজাত লোভ এর প্রধান কারন হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে কিছু কৌশল আছে যা বিশ্লেষণ করে সঠিক বিক্রয়ের সময় (বা বিক্রয় না করার সময়) নির্ধারণ করা যায়। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, অনেকেই সিদ্ধান্ত গ্রহন এর প্রক্রিয়ার চেয়ে মানসিক আবেগ কে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন!

– যখন বিনিয়োগের প্রশ্ন আসে, সেক্ষেত্রে স্টক ক্রয়ের সিধান্ত অপেক্ষা কৃত সহজ বিক্রয়ের উপযুক্ত সময় জানার চেয়ে।

– সাধারণত, দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের বিক্রি করার জন্য তিনটি প্রাথমিক কারণ রয়েছে: ক্রয়টি ভুল ছিল, দাম নাটকীয়ভাবে বেড়েছিল বা বর্তমান মূল্য আর এর ফান্ডামেন্টাল সমর্থন করে না।

– অনেক সময় আমরা ইমোশান দিয়ে সিধান্ত নিয়ে থাকি, কিন্তু এটা যুক্তি যুক্ত নয়।আমদের ডাটা অ্যানালাইসিস করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সঠিক সময়ে শেয়ার সেল কারা কঠিন হতে পারে-

এখানে একটি অতি-সাধারণ পরিস্থিতির বর্ননা করা হলো: আপনি একটি শেয়ার ৩০ টাকায় বিক্রয়ের জন্য ২৫ টাকায় কিনবেন। যখন আপনার শেয়ারটির মূল্য ৩০ টাকায় পৌছাবে তখন আপনি আরো মুনাফার জন্য সেটা বিক্রয় না করে রেখে দিবেন। এবার যখন শেয়ারটি ৩২ টাকায় পৌছাবে তখন আপনার মধ্যে আরও মুনাফার প্রলোভন কাজ করবে। হঠাৎ আপনার শেয়ারের মূল্য ২৯ টাকায় নেমে গেছে, তখন আপনি নিজেকে বলবেন আরও একটু অপেক্ষা করি ৩০ টাকায় না পৌঁছানো পর্যন্ত। কিন্তু সেটা যখন হবেনা আপনি হতাসাগ্রস্থ হয়ে সেই শেয়ার ২৩ টাকায় বিক্রয় করে দিবেন।

এই প্রেক্ষাপটকে বলা যেতে পারে, আপনার লোভ বা ইমোসান যা আপনার যুক্তিযুক্ত চিন্তা ভাবনাকেও পাশ কাটিয়ে গিয়েছে। সর্বোপরি আপনি আপনার শেয়ারে ২ টাকা লোকসান করলেন কিন্তু এখানে আপনি অনায়াসে ৭ টাকা লাভ করতে পারতেন।

যে কারনে শেয়ার কেনা সেটা বাস্তবায়ন নাও হতে পারে-

সম্ভবত কোন স্টক কেনার আগে আপনি কিছু গবেষণা করে থাকেন। পরে আপনি সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে, আপনি বিশ্লেষণে কিছু ভুল করেছেন এবং আপনি উপলব্ধি করলেন আপনার বিনিয়োগটি উপযুক্ত বিনিয়োগ নয়। আপনার শেয়ারটি বিক্রয় করা উচিত, যদি সেই স্টকে আপনার লোকসানও হয়, কারন আপনি যে কারনে শেয়ার ক্রয় করেছিলেন সেটা আর বাস্তবায়ন যোগ্য নয়।

সফল বিনিয়োগ নির্ভর করবে আপনার ডেটা এবং বিশ্লেষণের উপর, কোনো ভাবেই জনাব এর আবেগ এর উপর নয়! যদি সেই বিশ্লেষণ কোনও কারণে ত্রুটিযুক্ত হয়ে থাকে তবে স্টকটি বিক্রি করে এগিয়ে যান।

স্টক বিক্রয়য়ের পরে সেটার দাম আবার বেড়েও যেতে পারে, তখন হয়ত আপনি অনুসুচনা করবেন। কিন্তু আপনি যে ১০% লসে বিক্রয় করেছেন সেটাই আপনার স্মার্ট বিনিয়োগ কারন সেটা ১০% এর বেশিও হতে পারত।

স্টক সেল করুন যখন সেটা বেড়ে যাবে-

এটা অনেক সময় সম্ভব যে, আপনি কোন শেয়ার কেনা মাত্রই অল্প সময়ে নাটকীয় ভাবে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। স্টক যদি হঠাৎ বেড়ে যায় তবে মোটেই ভাবা উচিত নয়, তখন আপনি মার্কেটের থেকে স্মার্ট হয়ে যাবেন। আপনার শেয়ার বিক্রয় করে দেওয়াই উত্তম।

একটি কম দামের শেয়ারের খুব দ্রুত মূল্য বাড়ে ব্যায় বহুল শেয়ারে পরিণত হতে পারে। আপনি আপনার মুনাফা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন। আরও ভালো হয় যদি শেয়ারটি মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে কমে তবে আপনি আবার এটি কেনার জন্য বিবেচনা করতে পারেন। যদি শেয়ার মূল্য বাড়তে থাকে, প্রবাদ অনুযায়ী “No one goes broke booking a profit.” অর্থাৎ আপনার কাছে যদি শেয়ার থাকে তবে বেশি সময় অপেক্ষা না করে পুরো শেয়ার অথবা পুরোটা বিক্রয় করতে শুরু করুন।

কখনও কখনও, একটি ভাল সুযোগও আসে-

সুযোগ ব্যয় হল, কোন একটি সুযোগ গ্রহণের জন্য অন্য আরেকটি সুযোগকে হাত ছাড়া করা। কোন নতুন স্টক ক্রয়ের আগে , বর্তমানে ধারনকৃত স্টক এর মুনাফা কেমন হতে পারে সেটা বিবেচনা করতে হবে। যদি আপনার বিকল্পটি আপনার জন্য ভালো হয় তবে বর্তমানটি বিক্রি করে বিকল্পটি ক্রয় করাই উত্তম।

বটম লাইন-

মুনাফা অর্জিত কোন বিক্রয় নিঃসন্দেহে একটি উত্তম বিক্রয়, বিশেষত যদি এর পিছনে যুক্তিটি যথাযথ হয়। যদি কোন বিক্রয়ে লোকসান হয়েও থাকে, কিন্তু সেটা কেন হয়েছে সেটা যদি বোধগম্য হয় সেটাও ভালো বিক্রয়ের জন্য বিবেচিত হবে।

ডাটা বিশ্লেষণের এর পরিবর্তে, কোনো ক্রয়-বিক্রয় যদি আবেগ দ্বারা নির্ধারিত হয়, তখন সেটি একটি দুর্বল সিদ্ধান্ত বলে বিবেচিত হবে।

তথ্যসূত্রঃ মিডওয়ে সিকিউরিটিজ

শেয়ার করুন

x
English Version

জেনে নিন কখন বিক্রি করবেন হাতে থাকা শেয়ার!

আপডেট: ০৭:১৩:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল ২০২১

বিজনেস জার্নাল ডেস্কঃ থিওরিটিক্যাল ভাবে বললে, স্টক এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের সক্ষমতা বিনিয়োগকারীর দুটি প্রধান সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল: সঠিক সময় ক্রয় এবং সঠিক সময় বিক্রয় করা। লাভ করতে হলে আপনাকে এই দুটি সিদ্ধান্তই সঠিকভাবে গ্রহন করতে হবে। যে কোনও বিনিয়োগের রিটার্ন প্রথমে ক্রয়ের দামের উপরেই নির্ধারিত হয়।

অনেকেই তর্ক করতে পারে লাভ অথবা ক্ষতি উভয়ই ক্রয়ের সময় নির্ধারিত হয়, যা ক্রেতা বিক্রয় হওয়ার আগে জানে না। তবে সঠিক মূল্যে ক্রয় কারাই মূলত চূড়ান্ত মুনাফা নির্ধারণ করে এবং সঠিক মূল্যে বিক্রয়ই মুনাফার নিশ্চয়তা প্রদান করে। যদি সঠিক সময়ে বিক্রয় না করা যায় তবে সঠিক সময় ক্রয় করা বৃথা হয়ে যায়।
​অনেক বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হয়, কখনো কখনো মানুষেরে অতিমুনাফার সহজাত লোভ এর প্রধান কারন হিসেবে বিবেচিত হয়। তবে কিছু কৌশল আছে যা বিশ্লেষণ করে সঠিক বিক্রয়ের সময় (বা বিক্রয় না করার সময়) নির্ধারণ করা যায়। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, অনেকেই সিদ্ধান্ত গ্রহন এর প্রক্রিয়ার চেয়ে মানসিক আবেগ কে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন!

– যখন বিনিয়োগের প্রশ্ন আসে, সেক্ষেত্রে স্টক ক্রয়ের সিধান্ত অপেক্ষা কৃত সহজ বিক্রয়ের উপযুক্ত সময় জানার চেয়ে।

– সাধারণত, দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগকারীদের বিক্রি করার জন্য তিনটি প্রাথমিক কারণ রয়েছে: ক্রয়টি ভুল ছিল, দাম নাটকীয়ভাবে বেড়েছিল বা বর্তমান মূল্য আর এর ফান্ডামেন্টাল সমর্থন করে না।

– অনেক সময় আমরা ইমোশান দিয়ে সিধান্ত নিয়ে থাকি, কিন্তু এটা যুক্তি যুক্ত নয়।আমদের ডাটা অ্যানালাইসিস করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

সঠিক সময়ে শেয়ার সেল কারা কঠিন হতে পারে-

এখানে একটি অতি-সাধারণ পরিস্থিতির বর্ননা করা হলো: আপনি একটি শেয়ার ৩০ টাকায় বিক্রয়ের জন্য ২৫ টাকায় কিনবেন। যখন আপনার শেয়ারটির মূল্য ৩০ টাকায় পৌছাবে তখন আপনি আরো মুনাফার জন্য সেটা বিক্রয় না করে রেখে দিবেন। এবার যখন শেয়ারটি ৩২ টাকায় পৌছাবে তখন আপনার মধ্যে আরও মুনাফার প্রলোভন কাজ করবে। হঠাৎ আপনার শেয়ারের মূল্য ২৯ টাকায় নেমে গেছে, তখন আপনি নিজেকে বলবেন আরও একটু অপেক্ষা করি ৩০ টাকায় না পৌঁছানো পর্যন্ত। কিন্তু সেটা যখন হবেনা আপনি হতাসাগ্রস্থ হয়ে সেই শেয়ার ২৩ টাকায় বিক্রয় করে দিবেন।

এই প্রেক্ষাপটকে বলা যেতে পারে, আপনার লোভ বা ইমোসান যা আপনার যুক্তিযুক্ত চিন্তা ভাবনাকেও পাশ কাটিয়ে গিয়েছে। সর্বোপরি আপনি আপনার শেয়ারে ২ টাকা লোকসান করলেন কিন্তু এখানে আপনি অনায়াসে ৭ টাকা লাভ করতে পারতেন।

যে কারনে শেয়ার কেনা সেটা বাস্তবায়ন নাও হতে পারে-

সম্ভবত কোন স্টক কেনার আগে আপনি কিছু গবেষণা করে থাকেন। পরে আপনি সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন যে, আপনি বিশ্লেষণে কিছু ভুল করেছেন এবং আপনি উপলব্ধি করলেন আপনার বিনিয়োগটি উপযুক্ত বিনিয়োগ নয়। আপনার শেয়ারটি বিক্রয় করা উচিত, যদি সেই স্টকে আপনার লোকসানও হয়, কারন আপনি যে কারনে শেয়ার ক্রয় করেছিলেন সেটা আর বাস্তবায়ন যোগ্য নয়।

সফল বিনিয়োগ নির্ভর করবে আপনার ডেটা এবং বিশ্লেষণের উপর, কোনো ভাবেই জনাব এর আবেগ এর উপর নয়! যদি সেই বিশ্লেষণ কোনও কারণে ত্রুটিযুক্ত হয়ে থাকে তবে স্টকটি বিক্রি করে এগিয়ে যান।

স্টক বিক্রয়য়ের পরে সেটার দাম আবার বেড়েও যেতে পারে, তখন হয়ত আপনি অনুসুচনা করবেন। কিন্তু আপনি যে ১০% লসে বিক্রয় করেছেন সেটাই আপনার স্মার্ট বিনিয়োগ কারন সেটা ১০% এর বেশিও হতে পারত।

স্টক সেল করুন যখন সেটা বেড়ে যাবে-

এটা অনেক সময় সম্ভব যে, আপনি কোন শেয়ার কেনা মাত্রই অল্প সময়ে নাটকীয় ভাবে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। স্টক যদি হঠাৎ বেড়ে যায় তবে মোটেই ভাবা উচিত নয়, তখন আপনি মার্কেটের থেকে স্মার্ট হয়ে যাবেন। আপনার শেয়ার বিক্রয় করে দেওয়াই উত্তম।

একটি কম দামের শেয়ারের খুব দ্রুত মূল্য বাড়ে ব্যায় বহুল শেয়ারে পরিণত হতে পারে। আপনি আপনার মুনাফা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন। আরও ভালো হয় যদি শেয়ারটি মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে কমে তবে আপনি আবার এটি কেনার জন্য বিবেচনা করতে পারেন। যদি শেয়ার মূল্য বাড়তে থাকে, প্রবাদ অনুযায়ী “No one goes broke booking a profit.” অর্থাৎ আপনার কাছে যদি শেয়ার থাকে তবে বেশি সময় অপেক্ষা না করে পুরো শেয়ার অথবা পুরোটা বিক্রয় করতে শুরু করুন।

কখনও কখনও, একটি ভাল সুযোগও আসে-

সুযোগ ব্যয় হল, কোন একটি সুযোগ গ্রহণের জন্য অন্য আরেকটি সুযোগকে হাত ছাড়া করা। কোন নতুন স্টক ক্রয়ের আগে , বর্তমানে ধারনকৃত স্টক এর মুনাফা কেমন হতে পারে সেটা বিবেচনা করতে হবে। যদি আপনার বিকল্পটি আপনার জন্য ভালো হয় তবে বর্তমানটি বিক্রি করে বিকল্পটি ক্রয় করাই উত্তম।

বটম লাইন-

মুনাফা অর্জিত কোন বিক্রয় নিঃসন্দেহে একটি উত্তম বিক্রয়, বিশেষত যদি এর পিছনে যুক্তিটি যথাযথ হয়। যদি কোন বিক্রয়ে লোকসান হয়েও থাকে, কিন্তু সেটা কেন হয়েছে সেটা যদি বোধগম্য হয় সেটাও ভালো বিক্রয়ের জন্য বিবেচিত হবে।

ডাটা বিশ্লেষণের এর পরিবর্তে, কোনো ক্রয়-বিক্রয় যদি আবেগ দ্বারা নির্ধারিত হয়, তখন সেটি একটি দুর্বল সিদ্ধান্ত বলে বিবেচিত হবে।

তথ্যসূত্রঃ মিডওয়ে সিকিউরিটিজ