০৫:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

টাকার নকশায় থাকছে না মুজিব, যুক্ত হচ্ছে জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:৪২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১০২৭৫ বার দেখা হয়েছে

টাকার নকশা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ যাচ্ছে। তাঁর পরিবর্তে যুক্ত হতে যাচ্ছে জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন নোট ছাপানোর জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে টাঁকশাল। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে বাজারে আসবে নতুন এসব নোট।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, নতুন নোটে থাকবে না শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। এর পরিবর্তে যুক্ত হবে ধর্মীয় স্থাপনা, বাঙালি ঐতিহ্যসহ ‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি’। আপাতত ২০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের নকশা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান নকশা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে চারটি নোটের নকশায় পরিবর্তন করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে দেশের সব ধরনের ব্যাংক নোটের নকশা পরিবর্তন করা হবে। অবশ্য নকশা পরিবর্তন না হওয়ায় সরকার পরিবর্তনের পর থেকে বেশির ভাগ নোট ছাপানো বন্ধ রেখেছে টাঁকশাল।

জানা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ নতুন নোটের বিস্তারিত নকশার প্রস্তাব জমা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। তবে নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে মূল সুপারিশ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ও নকশা উপদেষ্টা কমিটি। এ কমিটিতে চিত্রশিল্পীরাও রয়েছেন। তাঁরা টাকার নকশা চূড়ান্ত করে সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠালে তা অনুমোদন দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নতুন নকশায় টাকা ছাপার বিষয়ে সরকারের অনুমোদন পাওয়া গেছে। এখন বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। আশা করছি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসতে পারে নতুন নকশার টাকা।’

আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি না কমা পর্যন্ত নীতি সুদহার উপরে রাখতে বলেছে আইএমএফ

বাংলাদেশে মুদ্রা ছাপানোর কাজটি করে দ্য সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড, যা টাঁকশাল নামে পরিচিত। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা পেলেও ১৯৮৮ সালের জুনে এক টাকা ছাপানোর মধ্য দিয়ে এই প্রেসে নোট ছাপানো শুরু হয়। নোট ছাপানোর আগে তার নকশা অনুমোদন করে সরকার। চিত্রশিল্পীদের দিয়ে নোটের নকশা চূড়ান্ত করা হয়। নকশা চূড়ান্ত হলে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে কাগজ, কালি ও প্লেট তৈরি করা হয়। নকশা অনুযায়ী বিদেশ থেকে প্লেট তৈরি করে আনার পর ছাপার কাজটি করে টাঁকশাল। তবে ধাতব মুদ্রাগুলো বিদেশ থেকে আনা হয়।

টাঁকশালের এক কর্মকর্তা জানান, চলতি মাসেই টেন্ডার আহ্বান করা হবে। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে ছাপার কাজ শুরু হবে। নতুন টাকা আগামী জুনের আগেই বাজারে আসবে।

বর্তমানে ১, ২, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার ১০টি কাগুজে নোট বাজারে রয়েছে। এর মধ্যে ২ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত সব কাগুজে নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি আছে। কোনো কোনো নোটের দুই পাশে শেখ মুজিবের ছবি রয়েছে। এ ছাড়া ধাতব মুদ্রা গুলোতেও তার ছবি আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে নতুন নোট ছাপতে। তার আগের অর্থবছরে খরচ ছিল ৩৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। সবশেষ নতুন নকশায় ২০০ টাকার নোট চালু হয় ২০২০ সালে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

x

টাকার নকশায় থাকছে না মুজিব, যুক্ত হচ্ছে জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি

আপডেট: ১১:৪২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

টাকার নকশা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ যাচ্ছে। তাঁর পরিবর্তে যুক্ত হতে যাচ্ছে জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন নোট ছাপানোর জন্য কার্যক্রম শুরু করেছে টাঁকশাল। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৬ মাসের মধ্যে বাজারে আসবে নতুন এসব নোট।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

জানা গেছে, নতুন নোটে থাকবে না শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। এর পরিবর্তে যুক্ত হবে ধর্মীয় স্থাপনা, বাঙালি ঐতিহ্যসহ ‘জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি’। আপাতত ২০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের নকশা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান নকশা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে চারটি নোটের নকশায় পরিবর্তন করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে দেশের সব ধরনের ব্যাংক নোটের নকশা পরিবর্তন করা হবে। অবশ্য নকশা পরিবর্তন না হওয়ায় সরকার পরিবর্তনের পর থেকে বেশির ভাগ নোট ছাপানো বন্ধ রেখেছে টাঁকশাল।

জানা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ নতুন নোটের বিস্তারিত নকশার প্রস্তাব জমা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। তবে নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে মূল সুপারিশ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ও নকশা উপদেষ্টা কমিটি। এ কমিটিতে চিত্রশিল্পীরাও রয়েছেন। তাঁরা টাকার নকশা চূড়ান্ত করে সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠালে তা অনুমোদন দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নতুন নকশায় টাকা ছাপার বিষয়ে সরকারের অনুমোদন পাওয়া গেছে। এখন বাকি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। আশা করছি, আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসতে পারে নতুন নকশার টাকা।’

আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি না কমা পর্যন্ত নীতি সুদহার উপরে রাখতে বলেছে আইএমএফ

বাংলাদেশে মুদ্রা ছাপানোর কাজটি করে দ্য সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড, যা টাঁকশাল নামে পরিচিত। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠা পেলেও ১৯৮৮ সালের জুনে এক টাকা ছাপানোর মধ্য দিয়ে এই প্রেসে নোট ছাপানো শুরু হয়। নোট ছাপানোর আগে তার নকশা অনুমোদন করে সরকার। চিত্রশিল্পীদের দিয়ে নোটের নকশা চূড়ান্ত করা হয়। নকশা চূড়ান্ত হলে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে কাগজ, কালি ও প্লেট তৈরি করা হয়। নকশা অনুযায়ী বিদেশ থেকে প্লেট তৈরি করে আনার পর ছাপার কাজটি করে টাঁকশাল। তবে ধাতব মুদ্রাগুলো বিদেশ থেকে আনা হয়।

টাঁকশালের এক কর্মকর্তা জানান, চলতি মাসেই টেন্ডার আহ্বান করা হবে। এ প্রক্রিয়া শেষ হলে ছাপার কাজ শুরু হবে। নতুন টাকা আগামী জুনের আগেই বাজারে আসবে।

বর্তমানে ১, ২, ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার ১০টি কাগুজে নোট বাজারে রয়েছে। এর মধ্যে ২ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত সব কাগুজে নোটে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি আছে। কোনো কোনো নোটের দুই পাশে শেখ মুজিবের ছবি রয়েছে। এ ছাড়া ধাতব মুদ্রা গুলোতেও তার ছবি আছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে নতুন নোট ছাপতে। তার আগের অর্থবছরে খরচ ছিল ৩৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। সবশেষ নতুন নকশায় ২০০ টাকার নোট চালু হয় ২০২০ সালে।

ঢাকা/এসএইচ