০৩:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে শুধু একদিকে ফোকাস দিলে হবে না: রাজিব আহসান

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:৪১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • / ১২১৪১ বার দেখা হয়েছে

গ্রীণল্যান্ড ইক্যুইটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. রাজিব আহসান। সম্প্রতি তিনি পুঁজিবাজারের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন বিজনেস জার্নালের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-

বিজনেস জার্নাল: বালাদেশের পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অবস্থাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? বাজারে পতনের প্রধান কারণগুলো কী?

এম. রাজিব আহসান: বর্তমানে পুঁজিবাজারের অবস্থা খুবই করুন। আস্থাহীনতার কারণে বড়, মাঝারি, ছোট বিনিয়োগকারীরা সাইড লাইনে বসে আছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিযোগকারীরাও বিনিয়োগ করছে না। আমাদের ধারণা ছিল গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাজারের উন্নতি ঘটবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা সেটি দেখতে পারছি না।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ে বিনিযোগকারীদের মাঝে হিউজ ল্যাক অব কনফিডেন্স (প্রচুর আস্থাহীনতা) রয়েছে। এছাড়াও অনেক পলিসিজ রয়েছে, যেগুলো সময়ের সাথে সাথে রিস্ট্র্যকচার করা হয়নি, মার্জিন লোন অ্যাক্ট রিভিউ করা ‍হয়নি, গত কমিশন বাজে বাজে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বাজারে নিয়ে এসেছে, ফ্লোর প্রাইজ দিয়ে মার্কেটটাকে(বাজার) শেষ করে দিয়ে গেছে। এসমস্ত কারণে বর্তমানে বাজারের পতন বিদ্যমান রয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিজনেস জার্নাল: বর্তমান বাজারে শেয়ারের মূল্যায়ন কি সঠিকভাবে হচ্ছে, নাকি আন্ডারভ্যালু শেয়ারের সংখ্যা বেশি?

এম. রাজিব আহসান: বর্তমানে আন্ডারভ্যালুড শেয়ারের সংখ্যা বেশি। অনেক ব্লু চিপ কোম্পানি রয়েছে যেগুলো আন্ডার ভ্যালুড অবস্থায় রয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টর ও মাল্টিন্যাশনাল বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ার আন্ডারভ্যালুড অবস্থায় রয়েছে, যাদের পিই রেশিও অনেক কম। এসমস্ত শেয়ারে বিনিযোগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে বিনিযোগ করে সহজেই লাভবান হতে পারবেন। আবার কিছু শেয়ার ম্যানুপুলেট করে ওভারভ্যালুড করা হয়েছে। এসমস্ত শেয়ারে বিনিযোগের ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত বিনিযোগকারীদের।

বিজনেস জার্নাল: সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সামনে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী এবং এর থেকে উত্তরণের উপায় কী?

এম. রাজিব আহসান: ৫ আগস্টের পর মানি মার্কেটের ব্যাংকিং সেক্টর ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান সরকার এব্যাপারে ফ্যান্টাস্টিক কাজ করেছে। কিন্তু ব্যাংকিং সেক্টরকে যেভাবে উন্নয়ন করা হয়েছে, সেভাবে ক্যাপিটাল মার্কেটের উন্নয়ন করা হয়নি।

বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাজার ম্যানুপুলেটরদের ধরা বা তাদের শাস্তি দিলেই শুধু হবে না। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে টাস্কফোর্স যেসমস্ত রিকমেন্ডেশন দিয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন করতে হবে। কিভাবে ভালো মানের আইপিও বাজারে আনা যায়, লোকাল ইনভেস্টর ও ফরেন ইনভেস্টরদের কিভাবে অ্যাট্র্যাক্ট (আকর্ষণ) করা যা সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।

বিজনেস জার্নাল: বিএসইসির নতুন কমিশন বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বাজার উন্নয়ন বা স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখতে পারছে কী? কোনো নীতিগত পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে কী?

এম. রাজিব আহসান: আমার মনে হয় যেভাবে বর্তমান কমিশন কাজ শুরু করেছিল, সেভাবে এখন করতে পারছে না। তাদের উচিত শুধু একদিকে ফোকাস না করে সবদিকে ফোকাস দেওয়া। যেন বাজারে বিনিযোগকারীদের আস্থাটা ফিরিয়ে আনতে পারি।

তিনি বলেন, বর্তমানে ৬০টি মার্চেন্ট ব্যাংক রয়েছে। তারা কেন ভালো মানের আইপিও আনতে পারছে না। কোম্পানিগুলো কেন প্রাইস সেনসিটিভ ইনফরমেশনগুলো (পিএসআই) সঠিক সময়ে দিচ্ছে না-এসব দিকে কমিশনের ফোকাস দেওয়া উচিত। টাস্টফোর্স যেসমস্ত রিফর্ম করেছে, সেগুলোর বাস্তবায়নের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত বর্তমান কমিশনের।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন। বিনিয়োগকারীদের এই আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

এম. রাজিব আহসান: ভালো মানের কোম্পানি আনতে টপ ১০০ কোম্পানি নিয়ে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়েও কাজ করতে হবে। তারা যেন এই মার্কেটে খুব সহজেই তালিকাভুক্ত হয়, সেব্যাপারে কাজ করতে হবে। আমাদের বন্ড মার্কেট সেভাবে এখনও গড়ে উঠেনি। তাই বন্ড মার্কেট নিয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে মার্কেটের ডেপথ (গভীরতা) বাড়বে। বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বাড়বে।

বিজনেস জার্নাল: স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর জন্য ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট কতটুকু কাজে এসেছে? ডিএসই, সিএসই ও বাজারের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আইনটি কি রিভিউ করা উচিত?

এম. রাজিব আহসান: ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হয়নি। স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর স্ট্রেটেজি পার্টনার (কৌশলগত বিনিয়োগকারী) পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারেনি। তাদের এক্সপার্টিজরা বাজারের উন্নয়নে কাজ করেনি অথবা তাদের জ্ঞান আমরা নিতে পারিনি। তাই ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট অবশ্যই রিভিউ করা উচিত।

বিজনেস জার্নাল: বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর ব্যবসায়িক অবস্থা কেমন? ইদানিং শোনা যাচ্ছে বেশকিছু সিকিউরিটিজ হাউসে কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে, এর কারণ কী?

এম. রাজিব আহসান: বর্তমানে সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর অবস্থা খুবই বাজে। অন্য জায়গা থেকে ফান্ড এনে অফিস পরিচালনা করতে হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-বোনাস দিতে হচ্ছে। অনেকেই কিছু কিছু ব্র্যাঞ্চ বন্ধ করে দিয়েছে। বাজারের পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক না হয়, তবে অনেক ব্রোকারেজ হাউস বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে অনেকে বেকার হয়ে পড়বেন। তাই খুব দ্রুত বাজারকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, ব্রোকারেজ হাউজগুলো আর কতদিন অন্য জায়গা থেকে ফান্ড এনে তাদের অফিস পরিচালনা করবে। এটারওতো শেষ থাকা উচিত। এই পরিস্থিতিতে অনেক হাউজে কর্মী ছাটাই হওয়াটাই স্বাভাবিক।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক আইপিওগুলো বাজারে কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে? বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুযোগ কী?

এম. রাজিব আহসান: অতিতে যেসমস্ত আইপিও বাজারে এসেছে সেগুলোর মান ভালো ছিল না। এগুলোর এপ্রুভালের ওয়েটাও ভালো ছিল না। আগে স্টক এক্সচেঞ্জগুলো যেকোনো আইপিও অ্যাপ্রুভ করার পর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অ্যাপ্রুভ করতো। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর সেই ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে কমিশন। এখন আইপিও অ্যাপ্রুভালের ক্ষেত্রে শতভাগ ক্ষমতা কমিশনের হাতে। আমরা বলেছি আবার যেন আইপিও অ্যাপ্রুভালের ক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে ক্ষমতায়ন করা হয়। স্টক এক্সচেঞ্জগুলো অ্যাপ্রুভ করার পর যেন কমিশন আইপিও’র অনুমোদন দেয়। এতে করে বাজারে ভালো মানের আইপিও আসার সম্ভাবনা থাকবে।

তিনি বলেন, প্রাইমারি মার্কেটে অল্প দামে আইপিও’র শেয়ার পেয়ে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। এরপর সেকেন্ডারি মার্কেটে শেয়ারের দাম বেড়ে যায়। এতে করে সহজেই লাভবান হতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু মার্কেট থেকে কখন বের হতে হবে সেবিষয়টি তাদের বুঝতে হবে। মার্কেটে ঢোকা ও বের হওয়া দুটোর সময়ই বুঝতে হবে এবং সে অনুযায়ি বিনিযোগ করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কতটা আকর্ষণীয়? এই বিনিয়োগ বাড়ানেরা জন্য কী উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে?

এম. রাজিব আহসান: আমাদের পুঁজিবাজার বিদেশিদের জন্য আকর্ষণীয় না। তাদেরকে আমরা যে ট্যাক্স ইনসেনটিভ দিচ্ছি সেটা ফেবারেবল না অন্য দেশের তুলনায়। পাশাপাশি তারা  বিনিয়োগ করলে ভালোভাবে তারা এক্সিট (বাহির) হতে পারে না। তাহলে তারা কেন আমাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে। তাদের বিনিয়োগ যাতে সহজে আসে এবং তারা যাতে সহজে মার্কেট থেকে বেরিয়ে যেতে পারে, সেবিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। তারা যাতে আরও বেশি ট্যাক্স ইনসেনটিভ পায় সেবিষয়দি দেখতে হবে। তাদের জন্য কমফোর্টেবল বিনিয়োগবান্ধব পলিসি তৈরি করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনগুলি কিভাবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করছে?

এম. রাজিব আহসান: বর্তমান সরকার মূল্যস্ফীতি দারুনভাবে ট্যাকেল করেছে। যার ফরে ইনফ্লেশন বা মূল্যস্ফীতি খুব একটা বাড়েনি। আন্ডার কন্ট্রোল আছে। তবে বৈশ্বিক যে অস্থিরতাগুলো রয়েছে সেগুলোতো আমাদের ইকোনোমিতে প্রভাব ফেলেছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারেও পড়ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্প ক্ষমতায় আসার পর আমদানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের পণ্যে অতিরিক্ত ট্যাক্স আরোপ করেছে। এতে করে আমাদের দেশের বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য রপ্তানি বা এক্সপোর্টে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, যার নেগেটিভ প্রভাব আমাদের পুঁজিবাজারেও পড়ছে। শেয়ারের মূল্য কমে যাচ্ছে। কারণ আমরা গ্লোবাল বা বিশ্বায়নের বাহিরে না।

বিজনেস জার্নাল: নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য এই বাজারে প্রবেশের উপযুক্ত সময় কী এবং তাদের কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

এম. রাজিব আহসান: আসলে বিনিয়োগে খারাপ বলে কিছু নেই। তবে বোঝার বিষয় রয়েছে। লো প্রাইসে কিনে হাই প্রাইসে বিক্রি করাই উত্তম। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের বিনিযোগকারীলা হাই প্রাইসে কিনে লো প্রাইসে বিক্রি করে মার্কেট থেকে চলে যায়। এতে করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাদেরকে বুঝতে হবে। শেয়ারের পিই রেশিও, এনএভি ক্যালকুলেট করে বিনিযোগ করতে হবে। পাশাপাশি সেক্টর, কোম্পানি ফান্ডামেন্টাল কিনা এবং কোম্পানির বোর্ডে কারা আছে, এসব দেখে বিনিয়োগ করা উচিত।

আরও পড়ুন: শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আরও কিছু সময়ের প্রয়োজন: শাকিল রিজভী

বিজনেস জার্নাল: দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য বর্তমান বাজারে কী সম্ভাবনা রয়েছে? বিনিয়োগকারীরো কীভাবে একটি স্থায়ী কৌশল তৈরি করতে পারে?

এম. রাজিব আহসান: অনেক ব্লু চিপ কোম্পানি রয়েছে, যেগুলো আন্ডারভ্যালুড অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে সেগুলোতে যদি এখন বিনিয়োগ করা যায় তবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়ৈছে।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের বিনিযোগের ক্ষেত্রে পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন করতে হবে। যেকোনো একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা ঠিক হবে না। অনেক বড় বড় বিনিয়োগকারী রয়েছে যারা একটি কোম্পানিতে পোর্টফোলিও সমস্ত অর্থ বিনিযোগ করে ফেলে। এটা ঠিক না। বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

এছাড়াও পুঁজিবাজার সম্পর্কে রাজিব আহসান বলেন, আইপিও ও মার্জিন লোন আইন রিফর্ম করতে হবে। বিনিযোগকারীদের আইটি বেসড হতে হবে। জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেক দিয়ে বিনিয়োগ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতে হবে। গ্যাম্বলিং সেন্ট্রক মাইন্ড পরিবর্তন করতে হবে।

তিনি বলেন, গত ৮ মাসে একটি আইপিও আসেনি। এটা দুঃখজনক। ভালো মানের আইপিও নিয়ে আসতে হবে। সম্প্রতি বিডা রাজধানীতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে মেলার আয়োজন করেছিল। কিন্তু সেই মেলায় ক্যাপিটাল মার্কেট নিয়ে কোনো আলাদা সেশন করা হয়নি। ভবিষ্যতে যাতে এরকমটি না হয় সেবিষয়য়ে বিডাকে সজাগ থাকতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিনিযোগকারীদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতেন

এম. রাজিব আহসান: বিনিযোগকারীদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। রিফর্মসগুলো যদি ঠিকমতো হয়ে যায়, ভালো মানের কোম্পানি যদি বাজারে আমরা আনতে পারি, দেশি-বিদেশি বিনিযোগকারীদের যদি আমরা আকৃ্ষ্ট করতে পারি তবে, অবশ্যই এই মার্কেট ঘুরে দাঁড়াবে। তাই বিনিয়োগকারীদের ধের্য ধারন করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিজনেস জার্নালকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অস্যখ্য ধন্যবাদ।

এম. রাজিব আহসান: আপনাকেও ধন্যবাদ

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে শুধু একদিকে ফোকাস দিলে হবে না: রাজিব আহসান

আপডেট: ১২:৪১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

গ্রীণল্যান্ড ইক্যুইটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. রাজিব আহসান। সম্প্রতি তিনি পুঁজিবাজারের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন বিজনেস জার্নালের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-

বিজনেস জার্নাল: বালাদেশের পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অবস্থাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? বাজারে পতনের প্রধান কারণগুলো কী?

এম. রাজিব আহসান: বর্তমানে পুঁজিবাজারের অবস্থা খুবই করুন। আস্থাহীনতার কারণে বড়, মাঝারি, ছোট বিনিয়োগকারীরা সাইড লাইনে বসে আছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিযোগকারীরাও বিনিয়োগ করছে না। আমাদের ধারণা ছিল গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাজারের উন্নতি ঘটবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমরা সেটি দেখতে পারছি না।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজার নিয়ে বিনিযোগকারীদের মাঝে হিউজ ল্যাক অব কনফিডেন্স (প্রচুর আস্থাহীনতা) রয়েছে। এছাড়াও অনেক পলিসিজ রয়েছে, যেগুলো সময়ের সাথে সাথে রিস্ট্র্যকচার করা হয়নি, মার্জিন লোন অ্যাক্ট রিভিউ করা ‍হয়নি, গত কমিশন বাজে বাজে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বাজারে নিয়ে এসেছে, ফ্লোর প্রাইজ দিয়ে মার্কেটটাকে(বাজার) শেষ করে দিয়ে গেছে। এসমস্ত কারণে বর্তমানে বাজারের পতন বিদ্যমান রয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিজনেস জার্নাল: বর্তমান বাজারে শেয়ারের মূল্যায়ন কি সঠিকভাবে হচ্ছে, নাকি আন্ডারভ্যালু শেয়ারের সংখ্যা বেশি?

এম. রাজিব আহসান: বর্তমানে আন্ডারভ্যালুড শেয়ারের সংখ্যা বেশি। অনেক ব্লু চিপ কোম্পানি রয়েছে যেগুলো আন্ডার ভ্যালুড অবস্থায় রয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টর ও মাল্টিন্যাশনাল বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ার আন্ডারভ্যালুড অবস্থায় রয়েছে, যাদের পিই রেশিও অনেক কম। এসমস্ত শেয়ারে বিনিযোগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে বিনিযোগ করে সহজেই লাভবান হতে পারবেন। আবার কিছু শেয়ার ম্যানুপুলেট করে ওভারভ্যালুড করা হয়েছে। এসমস্ত শেয়ারে বিনিযোগের ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত বিনিযোগকারীদের।

বিজনেস জার্নাল: সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সামনে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী এবং এর থেকে উত্তরণের উপায় কী?

এম. রাজিব আহসান: ৫ আগস্টের পর মানি মার্কেটের ব্যাংকিং সেক্টর ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান সরকার এব্যাপারে ফ্যান্টাস্টিক কাজ করেছে। কিন্তু ব্যাংকিং সেক্টরকে যেভাবে উন্নয়ন করা হয়েছে, সেভাবে ক্যাপিটাল মার্কেটের উন্নয়ন করা হয়নি।

বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাজার ম্যানুপুলেটরদের ধরা বা তাদের শাস্তি দিলেই শুধু হবে না। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে টাস্কফোর্স যেসমস্ত রিকমেন্ডেশন দিয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন করতে হবে। কিভাবে ভালো মানের আইপিও বাজারে আনা যায়, লোকাল ইনভেস্টর ও ফরেন ইনভেস্টরদের কিভাবে অ্যাট্র্যাক্ট (আকর্ষণ) করা যা সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।

বিজনেস জার্নাল: বিএসইসির নতুন কমিশন বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বাজার উন্নয়ন বা স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখতে পারছে কী? কোনো নীতিগত পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে কী?

এম. রাজিব আহসান: আমার মনে হয় যেভাবে বর্তমান কমিশন কাজ শুরু করেছিল, সেভাবে এখন করতে পারছে না। তাদের উচিত শুধু একদিকে ফোকাস না করে সবদিকে ফোকাস দেওয়া। যেন বাজারে বিনিযোগকারীদের আস্থাটা ফিরিয়ে আনতে পারি।

তিনি বলেন, বর্তমানে ৬০টি মার্চেন্ট ব্যাংক রয়েছে। তারা কেন ভালো মানের আইপিও আনতে পারছে না। কোম্পানিগুলো কেন প্রাইস সেনসিটিভ ইনফরমেশনগুলো (পিএসআই) সঠিক সময়ে দিচ্ছে না-এসব দিকে কমিশনের ফোকাস দেওয়া উচিত। টাস্টফোর্স যেসমস্ত রিফর্ম করেছে, সেগুলোর বাস্তবায়নের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত বর্তমান কমিশনের।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন। বিনিয়োগকারীদের এই আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

এম. রাজিব আহসান: ভালো মানের কোম্পানি আনতে টপ ১০০ কোম্পানি নিয়ে কাজ করতে হবে। পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়েও কাজ করতে হবে। তারা যেন এই মার্কেটে খুব সহজেই তালিকাভুক্ত হয়, সেব্যাপারে কাজ করতে হবে। আমাদের বন্ড মার্কেট সেভাবে এখনও গড়ে উঠেনি। তাই বন্ড মার্কেট নিয়ে কাজ করতে হবে। তাহলে মার্কেটের ডেপথ (গভীরতা) বাড়বে। বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বাড়বে।

বিজনেস জার্নাল: স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর জন্য ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট কতটুকু কাজে এসেছে? ডিএসই, সিএসই ও বাজারের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আইনটি কি রিভিউ করা উচিত?

এম. রাজিব আহসান: ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হয়নি। স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর স্ট্রেটেজি পার্টনার (কৌশলগত বিনিয়োগকারী) পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারেনি। তাদের এক্সপার্টিজরা বাজারের উন্নয়নে কাজ করেনি অথবা তাদের জ্ঞান আমরা নিতে পারিনি। তাই ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট অবশ্যই রিভিউ করা উচিত।

বিজনেস জার্নাল: বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর ব্যবসায়িক অবস্থা কেমন? ইদানিং শোনা যাচ্ছে বেশকিছু সিকিউরিটিজ হাউসে কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে, এর কারণ কী?

এম. রাজিব আহসান: বর্তমানে সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর অবস্থা খুবই বাজে। অন্য জায়গা থেকে ফান্ড এনে অফিস পরিচালনা করতে হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-বোনাস দিতে হচ্ছে। অনেকেই কিছু কিছু ব্র্যাঞ্চ বন্ধ করে দিয়েছে। বাজারের পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক না হয়, তবে অনেক ব্রোকারেজ হাউস বন্ধ হয়ে যাবে। এতে করে অনেকে বেকার হয়ে পড়বেন। তাই খুব দ্রুত বাজারকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, ব্রোকারেজ হাউজগুলো আর কতদিন অন্য জায়গা থেকে ফান্ড এনে তাদের অফিস পরিচালনা করবে। এটারওতো শেষ থাকা উচিত। এই পরিস্থিতিতে অনেক হাউজে কর্মী ছাটাই হওয়াটাই স্বাভাবিক।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক আইপিওগুলো বাজারে কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে? বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুযোগ কী?

এম. রাজিব আহসান: অতিতে যেসমস্ত আইপিও বাজারে এসেছে সেগুলোর মান ভালো ছিল না। এগুলোর এপ্রুভালের ওয়েটাও ভালো ছিল না। আগে স্টক এক্সচেঞ্জগুলো যেকোনো আইপিও অ্যাপ্রুভ করার পর বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) অ্যাপ্রুভ করতো। কিন্তু স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর সেই ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে কমিশন। এখন আইপিও অ্যাপ্রুভালের ক্ষেত্রে শতভাগ ক্ষমতা কমিশনের হাতে। আমরা বলেছি আবার যেন আইপিও অ্যাপ্রুভালের ক্ষেত্রে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে ক্ষমতায়ন করা হয়। স্টক এক্সচেঞ্জগুলো অ্যাপ্রুভ করার পর যেন কমিশন আইপিও’র অনুমোদন দেয়। এতে করে বাজারে ভালো মানের আইপিও আসার সম্ভাবনা থাকবে।

তিনি বলেন, প্রাইমারি মার্কেটে অল্প দামে আইপিও’র শেয়ার পেয়ে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। এরপর সেকেন্ডারি মার্কেটে শেয়ারের দাম বেড়ে যায়। এতে করে সহজেই লাভবান হতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু মার্কেট থেকে কখন বের হতে হবে সেবিষয়টি তাদের বুঝতে হবে। মার্কেটে ঢোকা ও বের হওয়া দুটোর সময়ই বুঝতে হবে এবং সে অনুযায়ি বিনিযোগ করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কতটা আকর্ষণীয়? এই বিনিয়োগ বাড়ানেরা জন্য কী উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে?

এম. রাজিব আহসান: আমাদের পুঁজিবাজার বিদেশিদের জন্য আকর্ষণীয় না। তাদেরকে আমরা যে ট্যাক্স ইনসেনটিভ দিচ্ছি সেটা ফেবারেবল না অন্য দেশের তুলনায়। পাশাপাশি তারা  বিনিয়োগ করলে ভালোভাবে তারা এক্সিট (বাহির) হতে পারে না। তাহলে তারা কেন আমাদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করবে। তাদের বিনিয়োগ যাতে সহজে আসে এবং তারা যাতে সহজে মার্কেট থেকে বেরিয়ে যেতে পারে, সেবিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে। তারা যাতে আরও বেশি ট্যাক্স ইনসেনটিভ পায় সেবিষয়দি দেখতে হবে। তাদের জন্য কমফোর্টেবল বিনিয়োগবান্ধব পলিসি তৈরি করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনগুলি কিভাবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করছে?

এম. রাজিব আহসান: বর্তমান সরকার মূল্যস্ফীতি দারুনভাবে ট্যাকেল করেছে। যার ফরে ইনফ্লেশন বা মূল্যস্ফীতি খুব একটা বাড়েনি। আন্ডার কন্ট্রোল আছে। তবে বৈশ্বিক যে অস্থিরতাগুলো রয়েছে সেগুলোতো আমাদের ইকোনোমিতে প্রভাব ফেলেছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারেও পড়ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্প ক্ষমতায় আসার পর আমদানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের পণ্যে অতিরিক্ত ট্যাক্স আরোপ করেছে। এতে করে আমাদের দেশের বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য রপ্তানি বা এক্সপোর্টে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, যার নেগেটিভ প্রভাব আমাদের পুঁজিবাজারেও পড়ছে। শেয়ারের মূল্য কমে যাচ্ছে। কারণ আমরা গ্লোবাল বা বিশ্বায়নের বাহিরে না।

বিজনেস জার্নাল: নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য এই বাজারে প্রবেশের উপযুক্ত সময় কী এবং তাদের কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

এম. রাজিব আহসান: আসলে বিনিয়োগে খারাপ বলে কিছু নেই। তবে বোঝার বিষয় রয়েছে। লো প্রাইসে কিনে হাই প্রাইসে বিক্রি করাই উত্তম। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের বিনিযোগকারীলা হাই প্রাইসে কিনে লো প্রাইসে বিক্রি করে মার্কেট থেকে চলে যায়। এতে করে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। তাদেরকে বুঝতে হবে। শেয়ারের পিই রেশিও, এনএভি ক্যালকুলেট করে বিনিযোগ করতে হবে। পাশাপাশি সেক্টর, কোম্পানি ফান্ডামেন্টাল কিনা এবং কোম্পানির বোর্ডে কারা আছে, এসব দেখে বিনিয়োগ করা উচিত।

আরও পড়ুন: শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আরও কিছু সময়ের প্রয়োজন: শাকিল রিজভী

বিজনেস জার্নাল: দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য বর্তমান বাজারে কী সম্ভাবনা রয়েছে? বিনিয়োগকারীরো কীভাবে একটি স্থায়ী কৌশল তৈরি করতে পারে?

এম. রাজিব আহসান: অনেক ব্লু চিপ কোম্পানি রয়েছে, যেগুলো আন্ডারভ্যালুড অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে সেগুলোতে যদি এখন বিনিয়োগ করা যায় তবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়ৈছে।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের বিনিযোগের ক্ষেত্রে পোর্টফোলিও ডাইভারসিফিকেশন করতে হবে। যেকোনো একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা ঠিক হবে না। অনেক বড় বড় বিনিয়োগকারী রয়েছে যারা একটি কোম্পানিতে পোর্টফোলিও সমস্ত অর্থ বিনিযোগ করে ফেলে। এটা ঠিক না। বিভিন্ন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

এছাড়াও পুঁজিবাজার সম্পর্কে রাজিব আহসান বলেন, আইপিও ও মার্জিন লোন আইন রিফর্ম করতে হবে। বিনিযোগকারীদের আইটি বেসড হতে হবে। জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেক দিয়ে বিনিয়োগ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ করতে হবে। গ্যাম্বলিং সেন্ট্রক মাইন্ড পরিবর্তন করতে হবে।

তিনি বলেন, গত ৮ মাসে একটি আইপিও আসেনি। এটা দুঃখজনক। ভালো মানের আইপিও নিয়ে আসতে হবে। সম্প্রতি বিডা রাজধানীতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে মেলার আয়োজন করেছিল। কিন্তু সেই মেলায় ক্যাপিটাল মার্কেট নিয়ে কোনো আলাদা সেশন করা হয়নি। ভবিষ্যতে যাতে এরকমটি না হয় সেবিষয়য়ে বিডাকে সজাগ থাকতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিনিযোগকারীদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতেন

এম. রাজিব আহসান: বিনিযোগকারীদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। রিফর্মসগুলো যদি ঠিকমতো হয়ে যায়, ভালো মানের কোম্পানি যদি বাজারে আমরা আনতে পারি, দেশি-বিদেশি বিনিযোগকারীদের যদি আমরা আকৃ্ষ্ট করতে পারি তবে, অবশ্যই এই মার্কেট ঘুরে দাঁড়াবে। তাই বিনিয়োগকারীদের ধের্য ধারন করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিজনেস জার্নালকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অস্যখ্য ধন্যবাদ।

এম. রাজিব আহসান: আপনাকেও ধন্যবাদ

ঢাকা/টিএ