বছরে ৭০০ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে: ড. ফরাসউদ্দিন
- আপডেট: ১১:২৪:২৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ মে ২০২৩
- / ১০৩৮২ বার দেখা হয়েছে
বাংলাদেশ থেকে বছরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে কারও কোনও কথা নেই। খেলাপি ঋণ বাড়ছে। ঋণখেলাপিদের আরও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৯ মে) শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সম্পাদিত ‘দেশ রূপান্তরের কারিগর শেখ হাসিনা’ বইয়ের গ্রন্থ পরিচিতি ও প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
প্রকাশনা উৎসবে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। পরে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন, ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক আব্দুল বায়েস, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মঞ্জুরুল আহেমেদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নূরুল হুদা ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধূরী।
বৈষম্য ব্যাপক হারে বাড়ছে উল্লেখ করে ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে অনেক ভালো করছে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যক্তিপর্যায়ে আমলে না নেওয়া হলে এই অর্জন কাজে আসবে না। কাজেই সামষ্টিক অগ্রগতির পাশাপাশি ব্যক্তিপর্যায় উন্নয়নের কথা ভাবতে হবে। এ ছাড়া বছরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে কারও কোনও কথা নেই। খেলাপি ঋণ বাড়ছে। ঋণখেলাপিদের আরও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এটা জাতির পিতার সমতাভিত্তিক বাংলাদেশ নীতির পরিপন্থি।
বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা একে অন্যের পরিপূরক উল্লেখ করে সাবেক গভর্নর বলেন, বঙ্গবন্ধু যেসব কাজ শুরু করেছিলেন, শেখ হাসিনা সেসব বাস্তবায়ন করছেন। প্রধানমন্ত্রী আইএমএফসহ সুশীল সমাজের নানা চাপেও কৃষি ভর্তুকি থেকে সরে আসেননি। আওয়ামী লীগ মোড়লদের ফাটাফাটিতে ভারসাম্য রক্ষার কঠিন কাজটি করছেন শেখ হাসিনা। তবে তিনি সহকর্মী নিয়োগে তার পিতার মতোই অনেক ক্ষেত্রে শুদ্ধ সিদ্ধান্ত নেন না। আবার কোনও কোনও ক্ষেত্রে কিছু সঠিক সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। যেমন ড. দীপু মনিকে (শিক্ষামন্ত্রী) ওই সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী করেছেন। ফলে সমুদ্রসীমা জয়ের ক্ষেত্রে তার ব্যাপক ভূমিকা ছিল।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্য কমাতে কর জিডিপির অনুপাত বাড়াতে হবে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ কার্যকর করতে হবে। বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দিতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্পে সময় বেশি লাগলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো জরিমানার ব্যবস্থা চালু করতে হবে। গরিব মানুষের টাকা দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখন কোনও কোনও ক্ষেত্রে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন ধীরগতি করে অন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা দরকার। সমবায় পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে হবে। সেটি না হলে মধ্যস্বত্বভোগীরা অনেক ক্ষেত্রে পিঁপড়ার মতো খেয়ে ফেলবে। বিদেশি ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
ড. মসিউর রহমান বলেন, খাদ্যনিরাপত্তা খুবই জরুরি। এ ক্ষেত্রে বিদেশের ওপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, চীন অনেক উন্নতি করেছে কিন্তু ভোটের অধিকার না থাকলে সেগুলো পাথরের মতো শুষ্ক মনে হয়। কাজেই সামাজিক অগ্রগতির সঙ্গে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হওয়ায় মানুষ বেশি টাকা দিয়েও শিক্ষা গ্রহণ করতে আগ্রহী, এটা প্রমাণিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সাগরে গভীর নিম্নচাপ, চার বন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত
‘দেশ রূপান্তরের কারিগর শেখ হাসিনা’ বইয়ের সম্পাদক ড. শামসুল আলম বলেন, বইটি কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে লেখা নয়। এখানে যারা লিখেছেন, তারা সবাই তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বাস্তবতার প্রেক্ষাপটেই লিখেছেন। এখানে কাউকে খুশি করার জন্য কিংবা দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা স্থান দেওয়া হয়নি। নিরপেক্ষতা বজায় রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
ব্র্যাকের গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক আব্দুল বায়েস বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তবতা। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। সেটিও বাস্তব হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের মতোই স্মার্ট বাংলাদেশ সমাজকে বদলে দেবে।
ঢাকা/এসএ