০২:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

বন্ডে বিনিয়োগ ঊর্ধ্বসীমা ১ কোটি টাকা পুনর্বিবেচনার দাবি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:৪০:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২১
  • / ৪১৩৫ বার দেখা হয়েছে

বন্ডের বিপরীতে সমন্বিত বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা এক কোটি টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে বিমান বাংলাদেশে প্রবাসীদের মরদেহ বিনা মূল্যে বহন করার সুবিধা পুনঃপ্রবর্তন এবং লেবাননে অবৈধ হয়ে থাকা অসহায় বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে স্বল্পমূল্যে বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সংগঠনটি।

গত বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি রাখেন এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি থাতেইয়ামা কবির, সাধারণ সম্পাদক কাজী সারোয়ার হাবীব, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী এবং অর্থ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুর রহমান।

মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের বিপরীতে সমন্বিত বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা এক কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা নির্ধারণ করেছে। যার ফলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা বন্ড বিধির আলোকে ১৯৮১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪০ বছরে বন্ডে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। প্রবাসীরা তাঁদের কষ্টার্জিত সঞ্চয় থেকে বাংলাদেশে নিশ্চিত বিনিয়োগ মনে করে বন্ড ক্রয় করেন এবং তাঁরা বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না বিধায় বন্ডকে অধিকতর সুরক্ষিত বিনিয়োগ মনে করে থাকেন। এ সিদ্ধান্তের ফলে বিনিয়োগ করা অর্থ বিদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে, যা বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই বন্ডের বিপরীতে সমন্বিত বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা এক কোটি টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনাপূর্বক তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।

মাহতাবুর রহমান আরও বলেন,
বিমান এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ প্রবাসীদের মরদেহ বিনা মূল্যে বহন করার সুবিধা করোনাকালের আগেই স্থগিত ঘোষণা করেছে, যা এখনো কার্যকর রয়েছে। অথচ দীর্ঘদিন চালু থাকা বিনা মূল্যে মরদেহ বহনের এ ব্যবস্থাটি কম আয়ের অসহায় প্রবাসীদের জন্য বড় সহায়ক শক্তি ছিল। বর্তমানে সুযোগটি তুলে নেওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কম আয়ের প্রবাসী ভাইবোনের অনেক মরদেহ জমা পড়ে আছে, যেগুলো আর্থিক সামর্থ্যের অভাবে দেশে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় আগের মতো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মাধ্যমে প্রবাসীর মরদেহ বিনা মূল্যে বহন করার সুবিধা পুনঃপ্রবর্তনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আবেদন রাখছি।’

মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান বলেন, লেবাননে আনুমানিক দেড় লাখ প্রবাসী বাংলাদেশির মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার কাগজপত্রবিহীন (অবৈধ) রয়েছেন। লেবাননে সরকারের দেওয়া সাধারণ ক্ষমার সুযোগে বাংলাদেশ দূতাবাসের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় গত ২৫-২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে কাগজপত্রবিহীন (অবৈধ) বাংলাদেশিদের নাম নিবন্ধন চললেও চার দিনে মাত্র চার হাজার বাংলাদেশি বিমান টিকিটের ৪০০ ডলারের বিনিময়ে নাম নিবন্ধন করতে সক্ষম হন। ধারণা করা হয়েছিল, আনুমানিক ২০ হাজার অবৈধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশি নাম নিবন্ধন করবেন। তবে বিমান টিকিটের ৪০০ ডলার সংগ্রহ করতে না পারায় তাঁরা নাম নিবন্ধন করতে পারেননি।

এই বাস্তবতায় ও মানবিক বিবেচনায় লেবাননে অবৈধ হয়ে থাকা অসহায় বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে স্বল্পমূল্যে বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন সংগঠনের সভাপতি।

শেয়ার করুন

x
English Version

বন্ডে বিনিয়োগ ঊর্ধ্বসীমা ১ কোটি টাকা পুনর্বিবেচনার দাবি

আপডেট: ১২:৪০:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২১

বন্ডের বিপরীতে সমন্বিত বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা এক কোটি টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে বিমান বাংলাদেশে প্রবাসীদের মরদেহ বিনা মূল্যে বহন করার সুবিধা পুনঃপ্রবর্তন এবং লেবাননে অবৈধ হয়ে থাকা অসহায় বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে স্বল্পমূল্যে বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সংগঠনটি।

গত বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি রাখেন এনআরবি সিআইপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি থাতেইয়ামা কবির, সাধারণ সম্পাদক কাজী সারোয়ার হাবীব, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াছিন চৌধুরী এবং অর্থ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুর রহমান।

মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড এবং ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের বিপরীতে সমন্বিত বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা এক কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা নির্ধারণ করেছে। যার ফলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা বন্ড বিধির আলোকে ১৯৮১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪০ বছরে বন্ডে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। প্রবাসীরা তাঁদের কষ্টার্জিত সঞ্চয় থেকে বাংলাদেশে নিশ্চিত বিনিয়োগ মনে করে বন্ড ক্রয় করেন এবং তাঁরা বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না বিধায় বন্ডকে অধিকতর সুরক্ষিত বিনিয়োগ মনে করে থাকেন। এ সিদ্ধান্তের ফলে বিনিয়োগ করা অর্থ বিদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে, যা বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই বন্ডের বিপরীতে সমন্বিত বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা এক কোটি টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনাপূর্বক তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।

মাহতাবুর রহমান আরও বলেন,
বিমান এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ প্রবাসীদের মরদেহ বিনা মূল্যে বহন করার সুবিধা করোনাকালের আগেই স্থগিত ঘোষণা করেছে, যা এখনো কার্যকর রয়েছে। অথচ দীর্ঘদিন চালু থাকা বিনা মূল্যে মরদেহ বহনের এ ব্যবস্থাটি কম আয়ের অসহায় প্রবাসীদের জন্য বড় সহায়ক শক্তি ছিল। বর্তমানে সুযোগটি তুলে নেওয়ায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কম আয়ের প্রবাসী ভাইবোনের অনেক মরদেহ জমা পড়ে আছে, যেগুলো আর্থিক সামর্থ্যের অভাবে দেশে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। এ অবস্থায় আগের মতো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মাধ্যমে প্রবাসীর মরদেহ বিনা মূল্যে বহন করার সুবিধা পুনঃপ্রবর্তনের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আবেদন রাখছি।’

মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান বলেন, লেবাননে আনুমানিক দেড় লাখ প্রবাসী বাংলাদেশির মধ্যে প্রায় ৪০ হাজার কাগজপত্রবিহীন (অবৈধ) রয়েছেন। লেবাননে সরকারের দেওয়া সাধারণ ক্ষমার সুযোগে বাংলাদেশ দূতাবাসের বিশেষ কর্মসূচির আওতায় গত ২৫-২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে কাগজপত্রবিহীন (অবৈধ) বাংলাদেশিদের নাম নিবন্ধন চললেও চার দিনে মাত্র চার হাজার বাংলাদেশি বিমান টিকিটের ৪০০ ডলারের বিনিময়ে নাম নিবন্ধন করতে সক্ষম হন। ধারণা করা হয়েছিল, আনুমানিক ২০ হাজার অবৈধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশি নাম নিবন্ধন করবেন। তবে বিমান টিকিটের ৪০০ ডলার সংগ্রহ করতে না পারায় তাঁরা নাম নিবন্ধন করতে পারেননি।

এই বাস্তবতায় ও মানবিক বিবেচনায় লেবাননে অবৈধ হয়ে থাকা অসহায় বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে স্বল্পমূল্যে বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন সংগঠনের সভাপতি।