০৬:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশের স্টক এক্সচেঞ্জগুলো ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত না: মো. সাইফুদ্দিন

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৩০:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / ১০৯১৫ বার দেখা হয়েছে

আইডিএলসি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুদ্দিন।  বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিষয়ে তাঁর রয়েছে বিস্তর অভিজ্ঞতা। সম্প্রতি অনলাইন নিউজপোর্টাল বিজনেস জার্নালের সাথে পুঁজিবাজারের নানা বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিজনেস জার্নাল: বালাদেশের পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অবস্থাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? বাজারে পতনের প্রধান কারণগুলো কী?

মো. সাইফুদ্দিন: ২০১০ সালের পর থেকে দুই বছর (২০১৭ ও ২০২১) মার্কেট মোটামুটি ভালো অবস্থায় ছিল। বাকি সময়গুলোতে মার্কেট মোটেই ভালো অবস্থায় ছিল না। গত ১৫/১৬ বছরে বাজে বাজে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বাজারে এসেছে, গুড গভর্ন্যান্স ছিল না। সাম্প্রতিক সময়ে হাই ইনফ্লেশন, ইন্টারেস্ট রেট, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্যাপিটাল মার্কেট (পুঁজিবাজার) থেকে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান মার্কেট বিনিয়োগের জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত। দীর্ঘমেয়াদে বিনিযোগ করে বিনিযোগকারীরা খুব সহজেই এই মার্কেট থেকে লাভবান হতে পারবেন।

বিজনেস জার্নাল: বর্তমান বাজারে শেয়ারের মূল্যায়ন কি সঠিকভাবে হচ্ছে, নাকি আন্ডারভ্যালু শেয়ারের সংখ্যা বেশি?  

মো. সাইফুদ্দিন: বর্তমানে আন্ডারভ্যালু শেয়ারের সংখ্যাই বেশি রয়েছে মার্কেটে। বিনিয়োগের জন্য যথেষ্ট লুক্রেটিভ। এটা ঠিক যে বিভিন্ন অনিশ্চয়তা রয়েছে। আগামী এক বছরে মার্কেটের আউটলুকটা আমরা বুঝতে পারছি না। কিন্তু কেউ যদি দুই বছরের কথা চিন্তা করে মার্কেটে বিনিয়োগ করে তবে, লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান বহু ব্লু চিপস শেয়ার রয়েছে। যেগুলো আন্ডারভ্যালু অবস্থায় রয়েছে। এগুলোতে সহজেই বিনিয়োগ করতে পারেন বিনিয়োগকারীরা।

বিজনেস জার্নাল: সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সামনে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী এবং এর থেকে উত্তরণের উপায় কী?

মো. সাইফুদ্দিন: এখন প্রত্যেকের জন্যই চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিনিয়োগকারী, ইন্টারমিডিয়ারিজ (মধ্যস্থতাকারী), রেগুলেটরি বডিস থেকে শুরু করে প্রত্যেকেই চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। হাই এক্সপেকটেশনের আশায় মার্জিন লোন নিয়ে বিনিয়োগ করেন অনেক বিনিয়োগকারী। এটা তাদের জন্য মোটেই ভালো কিছু বয়ে আনে না।

তিনি বলেন, অনেক বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে লিকুইডিটি ক্রাইসিসের মধ্যে রয়েছেন। এই অবস্থায় তাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। মার্কেট একটা সময় ঘুরে দাঁড়াবে।

চ্যালেঞ্জগুলো থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে তিনি বলেন, মার্কেটে রিটার্নের রিফ্লেকশন থাকতে হবে। বিনিয়োগকারীরা যেন খুব সহজেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বিনিয়োগ করতে পারে, সেই ওয়েটা থাকতে হবে এবং তাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা থাকতে হবে। ভালো মানের কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। গভর্ন্যান্স থাকতে হবে। ইনসাইডার ট্রেডিং বা ম্যানুপুলেশন যেনো না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রেগুলেটরি বডিস ও ইন্টারমেডিয়ারিসের মধ্যে গুড গভর্ন্যান্স থাকতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিএসইসির নতুন কমিশন বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বাজার উন্নয়ন বা স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখতে পারছে কী? কোনো নীতিগত পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে কী?

মো. সাইফুদ্দিন: পুঁজিবাজারে যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো আসলে গত ৮ মাসের বা ১৫ বছরের নয়। তারও আগে থেকেই পুঁজিবাজারে এসব সমস্যা রয়েছে, যেগুলো এখনও বিদ্যমান। এইগুলো ফিগার আউট করার বিষয় রয়েছে এবং সেগুলো করাও কিন্তু চ্যালেঞ্জিং। নতুন কমিশনের সেগুলো বোঝার বিষয় রয়েছে। টাস্কফোর্স সংস্কারের জন্য কিছু কিছু বিষয় উপস্থাপন করছে। মার্কেট ভালো বা খারাপ হওয়া কিন্তু কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। তারা হচ্ছে রেফারি। পুঁজিবাজারের উত্থান/পতন দেশের অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। কমিশন শুধুমাত্র রেফারি। পলিসিগুলো ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটি দেখার দায়িত্ব কমিশনের।

তবে আমাদের কমিশন রেগুলেটরি বডির মতো আচরণ করেনি। তারা স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর অনেক ক্ষমতা নিজেদের কাছে নিয়েছে, যেগুলো তাদের নেওয়া উচিত হয়নি। মার্কেটের প্রায় সবকিছুতেই তারা নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করেছে। যে কারণে মার্কেটের উত্থান হলে যেমন কমিশন বাহবা পায়, ঠিক তেমনি মার্কেট নিম্নমুখী হলেও কমিশন দায়ি হয়। এগুলোর পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। গভর্ন্যান্সের জায়গাগুলো ঠিক করতে হবে কমিশনকে। আইপিও পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা নিয়ে আসতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন। বিনিয়োগকারীদের এই আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

মো. সাইফুদ্দিন: হাই ইনফ্লেশন ও গুড গভর্ন্যান্স না থাকার কারণে মার্কেটের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বহির্বিশ্বে নতুন করে বিভিন্ন দেশের ওপর করারোপ, এই বাজার থেকে বিনিয়োগকারীদের মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করছে। তবে এখন ইনফ্লেশন কিছুটা কমেছে। রেমিটেন্স বাড়ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতাও একটা সময়ে কেটে যাবে। তখন মার্কেট ভালো হবে।

বিজনেস জার্নাল: স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর জন্য ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট কতটুকু কাজে এসেছে? ডিএসই, সিএসই ও বাজারের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আইনটি কি রিভিউ করা উচিত?

মো. সাইফুদ্দিন: স্টক এক্সচেঞ্জ পেছনে চলে গেছে। ভবিষ্যতের জন্য স্টক এক্সচেঞ্জগুলো প্রস্তুত না। আমাদের সরকার বা কমিশন কখনই স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে গুরুত্ব দেয়নি। সমস্ত ক্ষমতা কমিশন কুক্ষিগত করে নিয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জগুলো অপারেটিং এজেন্সি হিসেবে তাদের ক্ষমতা এক্সারসাইজ করতে পারেনি। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট এবং ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম হওয়ার কারণে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর বোর্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেছে কমিশন। তাই সময় এসেছে ডিমিউচুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট এবং স্কিম রিভিউ করে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে স্ব-নির্ভরশীল করা। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্টটির বয়স ১৩ বছর হয়ে গিয়েছে। যখন অ্যাক্টটি হয় তখন ৫ বছর পর পর রিভিউ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি হয়নি।

বিজনেস জার্নাল: বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর ব্যবসায়িক অবস্থা কেমন? ইদানিং শোনা যাচ্ছে বেশকিছু সিকিউরিটিজ হাউসে কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে, এর কারণ কী?

মো. সাইফুদ্দিন: সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর ব্যবসা মোটেই ভালো অবস্থায় নেই। এতো অল্প টাকার ট্রেড করে সিকিউরিটিজ হাউজগুলো টিকে থাকা মুশকিল হয়ে গেছে। গত ১৫/১৬ বছরের মধ্যে দুই/তিন বছর ছাড়া ট্রেডিং থেকে তেমন আয় করতে পারেনি ব্রোকারেজ হাউজগুলো অন্য জায়গার বিনিয়োগ থেকে আয় করে সিকিউরিটিজ হাউজগুলো পরিচালনা করছে মালিকরা।

তিনি বলেন, হাউজ চালাতে না পারলে কর্মী ছাটাই হবে, এটাই স্বাভাবিক। এটা হেলদি প্রাকটিস। এটাই হওয়া উচিত। মালিকরা কতদিন ভর্তুকি দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করবে। ব্যবসা পরিচালনা করতে না পারলে কর্মী ছাটাই হবে। অনেক ব্রাঞ্চ বন্ধ হয়ে যাবে। এমনকি অনেক হাউজও বন্ধ হয়ে যাবে।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক আইপিওগুলো বাজারে কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে? বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুযোগ কী?

মো. সাইফুদ্দিন: গত ১৫/১৬ বছরে যতগুলো কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। ভালো আইপিও আসতে হবে। হাই ইনসেনটিভ নিয়ে অনেক কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এতে করে  মার্কেটের জন্য ক্ষতি হয়েছে। আইপিও সিস্টেমে পুরোপুরি স্বচ্ছতা নিয়ে আসতে হবে। ভ্যালুয়েশনটা সঠিকভাবে বাজার নির্ভর হতে হবে। কোনো ধরনের ম্যানুপুলেশন যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন, আইপিও শুধু বিনিয়োগ না। এখানে স্পেকুলেশন থাকতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কতোটা আকর্ষণীয়? এই বিনিয়োগ বাড়ানেরা জন্য কী উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে?

মো. সাইফুদ্দিন:  বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আমাদের পুঁজিবাজার মোটেও আকর্ষণীয় নয়। একটি দেশের পুঁজিবাজারের লিকুইডিটি কোন পর্যায়ে রয়েছে, গুড গভর্ন্যান্স রয়েছে কি না, বাজার থেকে সহজেই বের হওয়া যাবে কি না, এসব বিষয়ে আমাদের পুঁজিবাজারে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। গত কমিশনের আমলে দুই বছর বাজারে ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়েছিল, যা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করেছে।

তিনি বলেন, বাজারের পটেনশিয়াল না থাকলে তাদের (বিদেশিদের) ডেকেও আনা যাবে না। আবার পটেনশিয়াল থাকলে তারা নিজেরাই বিনিয়োগ করবে, ডাকতেও হবে না । ইউনিভার বাংলাদেশ লিস্টেড না। এই কোম্পানিকে লিস্টেড করা উচিত। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ইউনিলিভারের মতো দেশি-বিদেশি ভালো ভালো কোম্পানিগুলোকে লিস্টেড করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনগুলি কিভাবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করছে?

মো. সাইফুদ্দিন: মূল্যস্ফীতি দেশের পুঁজিবাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মূল্যস্ফীতি বাড়লে মানুষ পুঁজিবাজার বিমুখ হয়। তারা ফিক্সড ইনকামের দিকে যায়। সম্প্রতি আমেরিকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যে নতুন করে ট্যারিফ বসিয়েছে। এতে করে আমেরিকার বাজারে বিভিন্ন দেশের পণ্য কোন দামে যাবে তা নতুন করে নির্ধারণ হবে। এই প্রতিযোগিতা ফেস করেই টিকে থাকতে হবে বাংলাদেশকে।

বিজনেস জার্নাল: নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য এই বাজারে প্রবেশের উপযুক্ত সময় কখন এবং তাদের কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

মো. সাইফুদ্দিন: মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য এখনই সময়। তবে সাবধানতা অবলম্বন করে বিনিয়োগ করতে হবে। বাংলাদেশের গামেন্টস, রেমিট্যান্স বেশ শক্তিশালি। এগুলো এখনও হারিয়ে যায়নি। আগামী দুই বছর ধৈর্য ধরতে। এরপর মার্কেট অবশ্যই ভালো হবে।

তিনি বলেন, প্রত্যেকদিন ট্রেডিং করতে গেলে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কিন্তু লো মার্কেটে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগে সাবধানতার তেমন প্রয়োজন নেই। শুধু বিনিযোগের পর ধৈর্য ধারণ করে ভালো সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর দীর্ঘমেয়াদে ম্যাক্রো ফ্যাক্টরগুলো খেয়াল রাখতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য বর্তমান বাজারে কী সম্ভাবনা রয়েছে? বিনিয়োগকারীরা কীভাবে একটি স্থায়ী কৌশল তৈরি করতে পারে?

মো. সাইফুদ্দিন:  বর্তমানে অনেক ভালো ভালো কোম্পানি রয়েছে, যেগুলোর শেয়ার দর অনেক কম, সেগুলোতে বিনিয়োগ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে বিনিযোগ করলে এসব থেকে লাভবান হওয়া সম্ভব।

তিনি বলেন, সাধারণ কমনসেন্স প্রয়োগ করে বিনিয়োগ করতে হবে। সেখান থেকে রিটার্ন কি রকম পাওয়া যাবে। সেটি খেয়াল রাখতে হবে। শর্ট টার্মে বিনিয়োগে ঝুঁকি বেশি, লং টার্মে ঝুঁকি কম। ভেবে চিন্তে বিনিয়োগ করতে হবে।

আরও পড়ুন: শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আরও কিছু সময়ের প্রয়োজন: শাকিল রিজভী

বিজনেস জার্নাল: বিনিযোগকারীদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতেন

মো. সাইফুদ্দিন: স্টক মার্কেটের পটেনশিয়াল রয়েছে। ভালো ভালো কোম্পানি রয়েছে, যেগুলো আন্ডার ভ্যালুড অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের চিন্তা করতে হবে। শর্ট টার্মে বিনিয়োগে সতর্কতা থাকতে হবে। মার্জিন লোন কোন ইনভেস্টমেন্ট প্রডাক্ট না। এটা একটি ট্রেডিং টুল। ফান্ডামেন্টাল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিজনেস জার্নালকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অস্যখ্য ধন্যবাদ।

মো. সাইফুদ্দিন: আপনাকেও ধন্যবাদ

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

বাংলাদেশের স্টক এক্সচেঞ্জগুলো ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত না: মো. সাইফুদ্দিন

আপডেট: ১০:৩০:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

আইডিএলসি সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুদ্দিন।  বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিষয়ে তাঁর রয়েছে বিস্তর অভিজ্ঞতা। সম্প্রতি অনলাইন নিউজপোর্টাল বিজনেস জার্নালের সাথে পুঁজিবাজারের নানা বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান। পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বিজনেস জার্নাল: বালাদেশের পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অবস্থাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? বাজারে পতনের প্রধান কারণগুলো কী?

মো. সাইফুদ্দিন: ২০১০ সালের পর থেকে দুই বছর (২০১৭ ও ২০২১) মার্কেট মোটামুটি ভালো অবস্থায় ছিল। বাকি সময়গুলোতে মার্কেট মোটেই ভালো অবস্থায় ছিল না। গত ১৫/১৬ বছরে বাজে বাজে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বাজারে এসেছে, গুড গভর্ন্যান্স ছিল না। সাম্প্রতিক সময়ে হাই ইনফ্লেশন, ইন্টারেস্ট রেট, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ক্যাপিটাল মার্কেট (পুঁজিবাজার) থেকে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান মার্কেট বিনিয়োগের জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত। দীর্ঘমেয়াদে বিনিযোগ করে বিনিযোগকারীরা খুব সহজেই এই মার্কেট থেকে লাভবান হতে পারবেন।

বিজনেস জার্নাল: বর্তমান বাজারে শেয়ারের মূল্যায়ন কি সঠিকভাবে হচ্ছে, নাকি আন্ডারভ্যালু শেয়ারের সংখ্যা বেশি?  

মো. সাইফুদ্দিন: বর্তমানে আন্ডারভ্যালু শেয়ারের সংখ্যাই বেশি রয়েছে মার্কেটে। বিনিয়োগের জন্য যথেষ্ট লুক্রেটিভ। এটা ঠিক যে বিভিন্ন অনিশ্চয়তা রয়েছে। আগামী এক বছরে মার্কেটের আউটলুকটা আমরা বুঝতে পারছি না। কিন্তু কেউ যদি দুই বছরের কথা চিন্তা করে মার্কেটে বিনিয়োগ করে তবে, লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান বহু ব্লু চিপস শেয়ার রয়েছে। যেগুলো আন্ডারভ্যালু অবস্থায় রয়েছে। এগুলোতে সহজেই বিনিয়োগ করতে পারেন বিনিয়োগকারীরা।

বিজনেস জার্নাল: সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সামনে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী এবং এর থেকে উত্তরণের উপায় কী?

মো. সাইফুদ্দিন: এখন প্রত্যেকের জন্যই চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিনিয়োগকারী, ইন্টারমিডিয়ারিজ (মধ্যস্থতাকারী), রেগুলেটরি বডিস থেকে শুরু করে প্রত্যেকেই চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। হাই এক্সপেকটেশনের আশায় মার্জিন লোন নিয়ে বিনিয়োগ করেন অনেক বিনিয়োগকারী। এটা তাদের জন্য মোটেই ভালো কিছু বয়ে আনে না।

তিনি বলেন, অনেক বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে লিকুইডিটি ক্রাইসিসের মধ্যে রয়েছেন। এই অবস্থায় তাদের ধৈর্য ধারণ করতে হবে। মার্কেট একটা সময় ঘুরে দাঁড়াবে।

চ্যালেঞ্জগুলো থেকে উত্তরণের উপায় হিসেবে তিনি বলেন, মার্কেটে রিটার্নের রিফ্লেকশন থাকতে হবে। বিনিয়োগকারীরা যেন খুব সহজেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বিনিয়োগ করতে পারে, সেই ওয়েটা থাকতে হবে এবং তাদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা থাকতে হবে। ভালো মানের কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। গভর্ন্যান্স থাকতে হবে। ইনসাইডার ট্রেডিং বা ম্যানুপুলেশন যেনো না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রেগুলেটরি বডিস ও ইন্টারমেডিয়ারিসের মধ্যে গুড গভর্ন্যান্স থাকতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিএসইসির নতুন কমিশন বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি বাজার উন্নয়ন বা স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখতে পারছে কী? কোনো নীতিগত পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে কী?

মো. সাইফুদ্দিন: পুঁজিবাজারে যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো আসলে গত ৮ মাসের বা ১৫ বছরের নয়। তারও আগে থেকেই পুঁজিবাজারে এসব সমস্যা রয়েছে, যেগুলো এখনও বিদ্যমান। এইগুলো ফিগার আউট করার বিষয় রয়েছে এবং সেগুলো করাও কিন্তু চ্যালেঞ্জিং। নতুন কমিশনের সেগুলো বোঝার বিষয় রয়েছে। টাস্কফোর্স সংস্কারের জন্য কিছু কিছু বিষয় উপস্থাপন করছে। মার্কেট ভালো বা খারাপ হওয়া কিন্তু কমিশনের ওপর নির্ভর করে না। তারা হচ্ছে রেফারি। পুঁজিবাজারের উত্থান/পতন দেশের অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। কমিশন শুধুমাত্র রেফারি। পলিসিগুলো ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা সেটি দেখার দায়িত্ব কমিশনের।

তবে আমাদের কমিশন রেগুলেটরি বডির মতো আচরণ করেনি। তারা স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর অনেক ক্ষমতা নিজেদের কাছে নিয়েছে, যেগুলো তাদের নেওয়া উচিত হয়নি। মার্কেটের প্রায় সবকিছুতেই তারা নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করেছে। যে কারণে মার্কেটের উত্থান হলে যেমন কমিশন বাহবা পায়, ঠিক তেমনি মার্কেট নিম্নমুখী হলেও কমিশন দায়ি হয়। এগুলোর পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। গভর্ন্যান্সের জায়গাগুলো ঠিক করতে হবে কমিশনকে। আইপিও পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা নিয়ে আসতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন। বিনিয়োগকারীদের এই আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

মো. সাইফুদ্দিন: হাই ইনফ্লেশন ও গুড গভর্ন্যান্স না থাকার কারণে মার্কেটের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বহির্বিশ্বে নতুন করে বিভিন্ন দেশের ওপর করারোপ, এই বাজার থেকে বিনিয়োগকারীদের মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করছে। তবে এখন ইনফ্লেশন কিছুটা কমেছে। রেমিটেন্স বাড়ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতাও একটা সময়ে কেটে যাবে। তখন মার্কেট ভালো হবে।

বিজনেস জার্নাল: স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর জন্য ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট কতটুকু কাজে এসেছে? ডিএসই, সিএসই ও বাজারের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আইনটি কি রিভিউ করা উচিত?

মো. সাইফুদ্দিন: স্টক এক্সচেঞ্জ পেছনে চলে গেছে। ভবিষ্যতের জন্য স্টক এক্সচেঞ্জগুলো প্রস্তুত না। আমাদের সরকার বা কমিশন কখনই স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে গুরুত্ব দেয়নি। সমস্ত ক্ষমতা কমিশন কুক্ষিগত করে নিয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জগুলো অপারেটিং এজেন্সি হিসেবে তাদের ক্ষমতা এক্সারসাইজ করতে পারেনি। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট এবং ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম হওয়ার কারণে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর বোর্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফেলেছে কমিশন। তাই সময় এসেছে ডিমিউচুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট এবং স্কিম রিভিউ করে স্টক এক্সচেঞ্জগুলোকে স্ব-নির্ভরশীল করা। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্টটির বয়স ১৩ বছর হয়ে গিয়েছে। যখন অ্যাক্টটি হয় তখন ৫ বছর পর পর রিভিউ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি হয়নি।

বিজনেস জার্নাল: বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর ব্যবসায়িক অবস্থা কেমন? ইদানিং শোনা যাচ্ছে বেশকিছু সিকিউরিটিজ হাউসে কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে, এর কারণ কী?

মো. সাইফুদ্দিন: সিকিউরিটিজ হাউজগুলোর ব্যবসা মোটেই ভালো অবস্থায় নেই। এতো অল্প টাকার ট্রেড করে সিকিউরিটিজ হাউজগুলো টিকে থাকা মুশকিল হয়ে গেছে। গত ১৫/১৬ বছরের মধ্যে দুই/তিন বছর ছাড়া ট্রেডিং থেকে তেমন আয় করতে পারেনি ব্রোকারেজ হাউজগুলো অন্য জায়গার বিনিয়োগ থেকে আয় করে সিকিউরিটিজ হাউজগুলো পরিচালনা করছে মালিকরা।

তিনি বলেন, হাউজ চালাতে না পারলে কর্মী ছাটাই হবে, এটাই স্বাভাবিক। এটা হেলদি প্রাকটিস। এটাই হওয়া উচিত। মালিকরা কতদিন ভর্তুকি দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করবে। ব্যবসা পরিচালনা করতে না পারলে কর্মী ছাটাই হবে। অনেক ব্রাঞ্চ বন্ধ হয়ে যাবে। এমনকি অনেক হাউজও বন্ধ হয়ে যাবে।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক আইপিওগুলো বাজারে কী ধরনের প্রভাব ফেলেছে? বিনিয়োগকারীদের জন্য আইপিওতে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুযোগ কী?

মো. সাইফুদ্দিন: গত ১৫/১৬ বছরে যতগুলো কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই খারাপ অবস্থায় রয়েছে। ভালো আইপিও আসতে হবে। হাই ইনসেনটিভ নিয়ে অনেক কোম্পানি বাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এতে করে  মার্কেটের জন্য ক্ষতি হয়েছে। আইপিও সিস্টেমে পুরোপুরি স্বচ্ছতা নিয়ে আসতে হবে। ভ্যালুয়েশনটা সঠিকভাবে বাজার নির্ভর হতে হবে। কোনো ধরনের ম্যানুপুলেশন যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন, আইপিও শুধু বিনিয়োগ না। এখানে স্পেকুলেশন থাকতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কতোটা আকর্ষণীয়? এই বিনিয়োগ বাড়ানেরা জন্য কী উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে?

মো. সাইফুদ্দিন:  বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আমাদের পুঁজিবাজার মোটেও আকর্ষণীয় নয়। একটি দেশের পুঁজিবাজারের লিকুইডিটি কোন পর্যায়ে রয়েছে, গুড গভর্ন্যান্স রয়েছে কি না, বাজার থেকে সহজেই বের হওয়া যাবে কি না, এসব বিষয়ে আমাদের পুঁজিবাজারে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। গত কমিশনের আমলে দুই বছর বাজারে ফ্লোর প্রাইস দেওয়া হয়েছিল, যা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করেছে।

তিনি বলেন, বাজারের পটেনশিয়াল না থাকলে তাদের (বিদেশিদের) ডেকেও আনা যাবে না। আবার পটেনশিয়াল থাকলে তারা নিজেরাই বিনিয়োগ করবে, ডাকতেও হবে না । ইউনিভার বাংলাদেশ লিস্টেড না। এই কোম্পানিকে লিস্টেড করা উচিত। বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ইউনিলিভারের মতো দেশি-বিদেশি ভালো ভালো কোম্পানিগুলোকে লিস্টেড করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনগুলি কিভাবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করছে?

মো. সাইফুদ্দিন: মূল্যস্ফীতি দেশের পুঁজিবাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মূল্যস্ফীতি বাড়লে মানুষ পুঁজিবাজার বিমুখ হয়। তারা ফিক্সড ইনকামের দিকে যায়। সম্প্রতি আমেরিকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পণ্যে নতুন করে ট্যারিফ বসিয়েছে। এতে করে আমেরিকার বাজারে বিভিন্ন দেশের পণ্য কোন দামে যাবে তা নতুন করে নির্ধারণ হবে। এই প্রতিযোগিতা ফেস করেই টিকে থাকতে হবে বাংলাদেশকে।

বিজনেস জার্নাল: নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য এই বাজারে প্রবেশের উপযুক্ত সময় কখন এবং তাদের কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

মো. সাইফুদ্দিন: মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য এখনই সময়। তবে সাবধানতা অবলম্বন করে বিনিয়োগ করতে হবে। বাংলাদেশের গামেন্টস, রেমিট্যান্স বেশ শক্তিশালি। এগুলো এখনও হারিয়ে যায়নি। আগামী দুই বছর ধৈর্য ধরতে। এরপর মার্কেট অবশ্যই ভালো হবে।

তিনি বলেন, প্রত্যেকদিন ট্রেডিং করতে গেলে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কিন্তু লো মার্কেটে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগে সাবধানতার তেমন প্রয়োজন নেই। শুধু বিনিযোগের পর ধৈর্য ধারণ করে ভালো সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আর দীর্ঘমেয়াদে ম্যাক্রো ফ্যাক্টরগুলো খেয়াল রাখতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য বর্তমান বাজারে কী সম্ভাবনা রয়েছে? বিনিয়োগকারীরা কীভাবে একটি স্থায়ী কৌশল তৈরি করতে পারে?

মো. সাইফুদ্দিন:  বর্তমানে অনেক ভালো ভালো কোম্পানি রয়েছে, যেগুলোর শেয়ার দর অনেক কম, সেগুলোতে বিনিয়োগ করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে বিনিযোগ করলে এসব থেকে লাভবান হওয়া সম্ভব।

তিনি বলেন, সাধারণ কমনসেন্স প্রয়োগ করে বিনিয়োগ করতে হবে। সেখান থেকে রিটার্ন কি রকম পাওয়া যাবে। সেটি খেয়াল রাখতে হবে। শর্ট টার্মে বিনিয়োগে ঝুঁকি বেশি, লং টার্মে ঝুঁকি কম। ভেবে চিন্তে বিনিয়োগ করতে হবে।

আরও পড়ুন: শেয়ারবাজারের উন্নয়নে আরও কিছু সময়ের প্রয়োজন: শাকিল রিজভী

বিজনেস জার্নাল: বিনিযোগকারীদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতেন

মো. সাইফুদ্দিন: স্টক মার্কেটের পটেনশিয়াল রয়েছে। ভালো ভালো কোম্পানি রয়েছে, যেগুলো আন্ডার ভ্যালুড অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের চিন্তা করতে হবে। শর্ট টার্মে বিনিয়োগে সতর্কতা থাকতে হবে। মার্জিন লোন কোন ইনভেস্টমেন্ট প্রডাক্ট না। এটা একটি ট্রেডিং টুল। ফান্ডামেন্টাল কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিজনেস জার্নালকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অস্যখ্য ধন্যবাদ।

মো. সাইফুদ্দিন: আপনাকেও ধন্যবাদ

ঢাকা/টিএ