০১:০৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোতেই বিনিয়োগকারীদের ‘আস্থা’

মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান:
  • আপডেট: ০৭:৩৫:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১০৬২৮ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা গুজবে কান দিয়ে কিংবা জেনে-বুঝে করেন না বলে বরাবরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বাজার সংশ্লিষ্টদের। তবে গত কয়েকদিনে সেই অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। বর্তমান বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে সচেতনভাবে বিনিয়োগের চেষ্টা করছেন।

গত কয়েকদিনের লেনদেনের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেসব শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত, বেশিরভাগ সেসব শেয়ারেই বিনিয়োগ করছেন তারা। আর যেসব শেয়ার দুর্বল বা বিনিয়োগকারীদের বছর শেষে কোন রিটার্ন দিতে পারছে না, সেসব শেয়ার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য বিশ্লষণে এমন তথ্যই মিলেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট ১৪ কোটি ৮৩ লাখ ২২ হাজার ৪২৭টি শেয়ার ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৬৪ বার হাত বদল হয়েছে। আর আজ (২১ জানুয়ারি) ১৭ কোটি ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৩৮২টি শেয়ার ১ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ বার হাত বদল হয়েছে।

এই সময়ে লেনদেন করা শেয়ারের সংখ্যা বেড়েছে ৩ কোটি ৪ লাখ ১২ হাজার ৯৫৫টি। গত বৃহস্পতিবার ৩৬৩ কোটি ৬৮ লাখ ১ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর আজ তা এসে দাঁড়িয়েছে ৪৯৯ কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এই সময়ে ১৩৫ কোটি ৪৬ লাখ ১৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন বেশি হয়েছে। অর্থাৎ ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪০ কোটি ৩১ লাখ ১১ হাজার টাকা। আর আজ তা এসে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬১ হাজার ৯৫৩ কোটি ২০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে বাজার মূলধন বেড়েছে ৫ হাজার ১২ কোটি ৮৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ ০.৮ শতাংশ বাজার মূলধন বেড়েছে। বৃহস্পতিবার ডিএসই প্রধান সূচক-ডিএসইএক্স ছিল ৫১৩৪ পয়েন্ট। আর আজ তা এসে দাঁড়িয়েছে ৫২২৩ পয়েন্ট। এক্ষেত্রে সূচক বেড়েছে ৮৯ পয়েন্ট। অর্থাৎ ২ শতাংশ সূচক বেড়েছে।

এদিকে, পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, গত কিছুদিন হলো বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক দিক। বিনিয়োগকারীরা বাজারে ভালো মানের শেয়ারে বিনিয়োগ করছেন। বিনিয়োগকারী নতুন করে বিনিয়োগ করছেন। তাদের এই বিনিয়োগের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। বাজার এখনো পুরোপুরি স্থিতিশীল পর্যায়ে যায়নি। তবে তাদের বিনিয়োগের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় লাগবে না।

আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জের মুখে বস্ত্র শিল্প: শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ. হাফিজ বলেন, বর্তমানে বাজারের উন্নয়নে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সচেতনতার পরিচয় দিচ্ছে। এই সচেতনতা তাদের ধরে রাখতে হবে। তাদেরকে ধৈর্য ধরতে হবে। বর্তমানে মার্কেট কিছুটা আপ ট্রেন্ডে রয়েছে। দুই/এক দিনের মধ্যে মার্কেট কারেকশন হতে পারে। সেসময় আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। মার্কেট এভাবে চলতে থাকলে খুব শিগগিরই অনেকটা স্ট্যাবল পর্যায়ে যাবে।

তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় ‘এ’ এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ারের আধিক্য বেশি ছিল। অর্থাৎ এই তালিকায় ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ার ছিল ৬টি এবং ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ার রয়েছে তিনটি। আর ‘এন’ ক্যাটাগরির শেয়ার রয়েছে একটি। আর দর পতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় দেখা যায়, ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৪টি কোম্পানি রয়েছে। ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ার রয়েছে ৪টি এবং ‘এ’ ও ‘এন’ ক্যাটাগরির শেয়ার রয়েছে একটি করে।

এই তালিকা থেকে সহজেই বোঝা যায়, যেসব শেয়ার ফান্ডামেন্টাল, অর্থাৎ গ্রোথ ভালো, সেসব সেসব শেয়ারেই বিনিয়োগ করছেন বিনিয়োগকারীরা। আর যেসব কোম্পানির শেয়ার ফান্ডামেন্টাল না, গ্রোথ নেই বললেই চলে সেসব শেয়ার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তারা।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বিজনেস জার্নালকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের মার্কেট সম্পর্কে আরও সচেতন হতে হবে। আরও দেখে, বুঝে বিনিয়োগ করতে। কয়েক দিন ধরে মার্কেট ভালোর দিকে যাচ্ছে। তবে আগামী ১০ দিন বাজারের এই উত্থান ধরে রাখতে হবে। তাহলে মার্কেট অনেকটা স্থিতিশীল হবে। আর এর জন্য বিনিয়োগকারীদের আরও সচেতন হয়ে বিনিয়োগ করতে হবে।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোতেই বিনিয়োগকারীদের ‘আস্থা’

আপডেট: ০৭:৩৫:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা গুজবে কান দিয়ে কিংবা জেনে-বুঝে করেন না বলে বরাবরই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বাজার সংশ্লিষ্টদের। তবে গত কয়েকদিনে সেই অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। বর্তমান বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে সচেতনভাবে বিনিয়োগের চেষ্টা করছেন।

গত কয়েকদিনের লেনদেনের গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যেসব শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত, বেশিরভাগ সেসব শেয়ারেই বিনিয়োগ করছেন তারা। আর যেসব শেয়ার দুর্বল বা বিনিয়োগকারীদের বছর শেষে কোন রিটার্ন দিতে পারছে না, সেসব শেয়ার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য বিশ্লষণে এমন তথ্যই মিলেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট ১৪ কোটি ৮৩ লাখ ২২ হাজার ৪২৭টি শেয়ার ১ লাখ ২৯ হাজার ৪৬৪ বার হাত বদল হয়েছে। আর আজ (২১ জানুয়ারি) ১৭ কোটি ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ৩৮২টি শেয়ার ১ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ বার হাত বদল হয়েছে।

এই সময়ে লেনদেন করা শেয়ারের সংখ্যা বেড়েছে ৩ কোটি ৪ লাখ ১২ হাজার ৯৫৫টি। গত বৃহস্পতিবার ৩৬৩ কোটি ৬৮ লাখ ১ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর আজ তা এসে দাঁড়িয়েছে ৪৯৯ কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা। এই সময়ে ১৩৫ কোটি ৪৬ লাখ ১৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন বেশি হয়েছে। অর্থাৎ ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৯৪০ কোটি ৩১ লাখ ১১ হাজার টাকা। আর আজ তা এসে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬১ হাজার ৯৫৩ কোটি ২০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এক্ষেত্রে বাজার মূলধন বেড়েছে ৫ হাজার ১২ কোটি ৮৯ লাখ ২৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ ০.৮ শতাংশ বাজার মূলধন বেড়েছে। বৃহস্পতিবার ডিএসই প্রধান সূচক-ডিএসইএক্স ছিল ৫১৩৪ পয়েন্ট। আর আজ তা এসে দাঁড়িয়েছে ৫২২৩ পয়েন্ট। এক্ষেত্রে সূচক বেড়েছে ৮৯ পয়েন্ট। অর্থাৎ ২ শতাংশ সূচক বেড়েছে।

এদিকে, পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, গত কিছুদিন হলো বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এটা বাজারের জন্য ইতিবাচক দিক। বিনিয়োগকারীরা বাজারে ভালো মানের শেয়ারে বিনিয়োগ করছেন। বিনিয়োগকারী নতুন করে বিনিয়োগ করছেন। তাদের এই বিনিয়োগের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। বাজার এখনো পুরোপুরি স্থিতিশীল পর্যায়ে যায়নি। তবে তাদের বিনিয়োগের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে বেশি সময় লাগবে না।

আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জের মুখে বস্ত্র শিল্প: শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা

বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ এ. হাফিজ বলেন, বর্তমানে বাজারের উন্নয়নে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা সচেতনতার পরিচয় দিচ্ছে। এই সচেতনতা তাদের ধরে রাখতে হবে। তাদেরকে ধৈর্য ধরতে হবে। বর্তমানে মার্কেট কিছুটা আপ ট্রেন্ডে রয়েছে। দুই/এক দিনের মধ্যে মার্কেট কারেকশন হতে পারে। সেসময় আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। মার্কেট এভাবে চলতে থাকলে খুব শিগগিরই অনেকটা স্ট্যাবল পর্যায়ে যাবে।

তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় ‘এ’ এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ারের আধিক্য বেশি ছিল। অর্থাৎ এই তালিকায় ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ার ছিল ৬টি এবং ‘এ’ ক্যাটাগরির শেয়ার রয়েছে তিনটি। আর ‘এন’ ক্যাটাগরির শেয়ার রয়েছে একটি। আর দর পতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় দেখা যায়, ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৪টি কোম্পানি রয়েছে। ‘বি’ ক্যাটাগরির শেয়ার রয়েছে ৪টি এবং ‘এ’ ও ‘এন’ ক্যাটাগরির শেয়ার রয়েছে একটি করে।

এই তালিকা থেকে সহজেই বোঝা যায়, যেসব শেয়ার ফান্ডামেন্টাল, অর্থাৎ গ্রোথ ভালো, সেসব সেসব শেয়ারেই বিনিয়োগ করছেন বিনিয়োগকারীরা। আর যেসব কোম্পানির শেয়ার ফান্ডামেন্টাল না, গ্রোথ নেই বললেই চলে সেসব শেয়ার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তারা।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী বিজনেস জার্নালকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের মার্কেট সম্পর্কে আরও সচেতন হতে হবে। আরও দেখে, বুঝে বিনিয়োগ করতে। কয়েক দিন ধরে মার্কেট ভালোর দিকে যাচ্ছে। তবে আগামী ১০ দিন বাজারের এই উত্থান ধরে রাখতে হবে। তাহলে মার্কেট অনেকটা স্থিতিশীল হবে। আর এর জন্য বিনিয়োগকারীদের আরও সচেতন হয়ে বিনিয়োগ করতে হবে।

ঢাকা/টিএ