০৭:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

শীর্ষ গ্রাহকদের নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ৩৮ ব্যাংক

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:৫৩:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০২০
  • / ৪১৬৭ বার দেখা হয়েছে

শীর্ষ ১০ গ্রাহক খেলাপিতে পরিণত হলে মূলধন পর্যাপ্ততায় ব্যর্থ হবে দেশের ৩৮টি ব্যাংক। আর সাত গ্রাহকের ক্ষেত্রে মূলধন ঘাটতিতে পড়বে ৩৫ ব্যাংক। ফলে শীর্ষ গ্রাহকদের নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে দেশের অধিকাংশ ব্যাংক।

কারণ শীর্ষ গ্রাহকরা খেলাপিতে পরিণত হলে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। এর ফলে যে পরিমাণ ক্ষতি হবে তার মাধ্যমে অচল হয়ে পড়বে দেশের ব্যাংকিং সেক্টর।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রকাশিত ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের অশ্রেণিকৃত বা নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে দশমিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। নিম্নমান বা সাব-স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ প্রভিশন, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ মানের ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়।

দেশের শীর্ষ ১০ গ্রাহক মন্দ মানের খেলাপিতে পরিণত হলে তাদের প্রভিশন বাবদ যে টাকা সংরক্ষণ করতে হবে তার মাধ্যমে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়বে ব্যাংকিং খাত। মূলধন ঘাটতিতে পড়বে প্রায় ৩৮টি ব্যাংক।

ব্যাংকিংয়ের ভাষায় সামগ্রিক মূলধন পর্যাপ্ততার হারকে ক্যাপিটাল টু রিক্স ওয়েটেড অ্যাসেটস রেশিও (সিআরএআর) বলা হয়। আন্তর্জাতিক নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলোকে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকার বেশি পরিমাণ মূলধন রাখতে হয়।

কোনো ব্যাংক এই পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে মূলধন ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের জোগান দেয়া অর্থ ও মুনাফার একটি অংশ মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। কোনো ব্যাংক মূলধন ঘাটতি রেখে তার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারে না।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, শীর্ষ পাঁচ ব্যাংকের কাছে মোট খেলাপি ঋণের ৪৩ শতাংশ সীমাবদ্ধ। শীর্ষ ১০ ব্যাংকের হিসাবে এই সীমাবদ্ধতার পরিমাণ আরও বেশি, শতকরা হিসাবে যার পরিমাণ ৬৩ ভাগ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ৯৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। হিসাব অনুযায়ী তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন হাজার ৬০৬ কোটি টাকা।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে ১০ লাখ ১১ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ছিল ৯৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ।

শেয়ার করুন

x
English Version

শীর্ষ গ্রাহকদের নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ৩৮ ব্যাংক

আপডেট: ০৪:৫৩:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০২০

শীর্ষ ১০ গ্রাহক খেলাপিতে পরিণত হলে মূলধন পর্যাপ্ততায় ব্যর্থ হবে দেশের ৩৮টি ব্যাংক। আর সাত গ্রাহকের ক্ষেত্রে মূলধন ঘাটতিতে পড়বে ৩৫ ব্যাংক। ফলে শীর্ষ গ্রাহকদের নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে দেশের অধিকাংশ ব্যাংক।

কারণ শীর্ষ গ্রাহকরা খেলাপিতে পরিণত হলে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হবে। এর ফলে যে পরিমাণ ক্ষতি হবে তার মাধ্যমে অচল হয়ে পড়বে দেশের ব্যাংকিং সেক্টর।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রকাশিত ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি অ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের অশ্রেণিকৃত বা নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে দশমিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। নিম্নমান বা সাব-স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ প্রভিশন, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ মানের ঋণের বিপরীতে শতভাগ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়।

দেশের শীর্ষ ১০ গ্রাহক মন্দ মানের খেলাপিতে পরিণত হলে তাদের প্রভিশন বাবদ যে টাকা সংরক্ষণ করতে হবে তার মাধ্যমে বিশাল ক্ষতির মুখে পড়বে ব্যাংকিং খাত। মূলধন ঘাটতিতে পড়বে প্রায় ৩৮টি ব্যাংক।

ব্যাংকিংয়ের ভাষায় সামগ্রিক মূলধন পর্যাপ্ততার হারকে ক্যাপিটাল টু রিক্স ওয়েটেড অ্যাসেটস রেশিও (সিআরএআর) বলা হয়। আন্তর্জাতিক নীতিমালার আলোকে ব্যাংকগুলোকে মূলধন সংরক্ষণ করতে হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ব্যাসেল-৩ নীতিমালার আলোকে ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ অথবা ৪০০ কোটি টাকার বেশি পরিমাণ মূলধন রাখতে হয়।

কোনো ব্যাংক এই পরিমাণ অর্থ সংরক্ষণে ব্যর্থ হলে মূলধন ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের জোগান দেয়া অর্থ ও মুনাফার একটি অংশ মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়। কোনো ব্যাংক মূলধন ঘাটতি রেখে তার শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ দিতে পারে না।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, শীর্ষ পাঁচ ব্যাংকের কাছে মোট খেলাপি ঋণের ৪৩ শতাংশ সীমাবদ্ধ। শীর্ষ ১০ ব্যাংকের হিসাবে এই সীমাবদ্ধতার পরিমাণ আরও বেশি, শতকরা হিসাবে যার পরিমাণ ৬৩ ভাগ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ৯৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। হিসাব অনুযায়ী তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে তিন হাজার ৬০৬ কোটি টাকা।

এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে ১০ লাখ ১১ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ছিল ৯৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা বা ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ।