১২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

সাত বছরে খেলাপি ঋণ বেড়ে তিনগুণ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:১০:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১০৩৭৮ বার দেখা হয়েছে

গত ৭ বছরে দেশের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে তিনগুণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র ধরা পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জুন শেষে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। সাত বছরে তা এক লাখ ৩৭ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা বেড়ে দুই লাখ ১১ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

খাত হিসাবে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। এরপরই রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। আর তুলনা কম খেলাপি ঋণ বিদেশি ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য মতে, ২০২৪ সালে ১ জুলাই বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৯ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা। সাত বছরে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৬৮ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ বা ২১৫ শতাংশ।

সাত বছর আগে বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ছিল ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বর্তমানে খেলাপি ঋণের হার ৮ শতাংশ।

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে পাঁচটি ব্যাংকের অবস্থা খুবই খারাপ। যাদের খেলাপি ঋণের হার ৩০ থেকে ৮৯ শতাংশ পর্যন্ত। এর মধ্যে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল, এখনো খারাপ। বাকি চারটি ব্যাংকের অবস্থাও খারাপ হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়ার কারণে খেলাপি হয়েছে এসব ঋণ। ক্ষেত্র বিশেষে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে আরও খারাপ হয়েছে।

আরও পড়ুন: ব্যাংক খাতে আস্থা ফেরাতে সময় লাগবে: বিএবি

বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ দুই হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। সাত বছর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৪ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা।

সাত বছর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের হার ছিল ২৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। বর্তমানে এ হার ৩২ দশকিক ৭৭ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার বেশি। এর মধ্যে তিনটির ৪০ শতাংশ আর একটি খেলাপির হার ৩০ শতাংশ। সাত বছর আগেও এমন অবস্থা ছিল না রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর।

রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কিছুটা কমেছে গত সাত বছরে। দেশে কর্মরত বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার কম। এসব ব্যাংক নীতি কঠোরভাবে পরিপালন করার কারণে ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।

তথ্যে দেখা যায়, বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। সাত বছর আগে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার প্রায় একই ছিল। ব্যাংকেরগুলোর ঋণ বিতরণের পাশাপাশি খেলাপি ঋণের হার একই হারে বৃদ্ধির কারণে পরিমাণ বাড়লেও খেলাপির হার বাড়েনি।

বর্তমানে বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ তিন হাজার ২৩০ কোটি টাকা। যা সাত বছর আগে ছিল দুই হাজার ৩২১ কোটি। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাবিস্তানের বিতরণ করা ঋণের প্রায় পুরোটাই খেলাপি। অন্যদিকে কমার্শিয়াল ব্যাংক সিলনের খেলাপি ঋণের হার এক শতাংশ।

ঢাকা/এসএইচ

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

সাত বছরে খেলাপি ঋণ বেড়ে তিনগুণ

আপডেট: ০২:১০:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

গত ৭ বছরে দেশের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে তিনগুণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র ধরা পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের জুন শেষে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। সাত বছরে তা এক লাখ ৩৭ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা বেড়ে দুই লাখ ১১ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

খাত হিসাবে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। এরপরই রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। আর তুলনা কম খেলাপি ঋণ বিদেশি ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য মতে, ২০২৪ সালে ১ জুলাই বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৯ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের জুলাই মাসে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩১ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা। সাত বছরে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৬৮ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ বা ২১৫ শতাংশ।

সাত বছর আগে বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ছিল ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বর্তমানে খেলাপি ঋণের হার ৮ শতাংশ।

বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে পাঁচটি ব্যাংকের অবস্থা খুবই খারাপ। যাদের খেলাপি ঋণের হার ৩০ থেকে ৮৯ শতাংশ পর্যন্ত। এর মধ্যে আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল, এখনো খারাপ। বাকি চারটি ব্যাংকের অবস্থাও খারাপ হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়ার কারণে খেলাপি হয়েছে এসব ঋণ। ক্ষেত্র বিশেষে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে আরও খারাপ হয়েছে।

আরও পড়ুন: ব্যাংক খাতে আস্থা ফেরাতে সময় লাগবে: বিএবি

বর্তমানে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ এক লাখ দুই হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। সাত বছর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৪ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা।

সাত বছর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের হার ছিল ২৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। বর্তমানে এ হার ৩২ দশকিক ৭৭ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার বেশি। এর মধ্যে তিনটির ৪০ শতাংশ আর একটি খেলাপির হার ৩০ শতাংশ। সাত বছর আগেও এমন অবস্থা ছিল না রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর।

রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কিছুটা কমেছে গত সাত বছরে। দেশে কর্মরত বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার কম। এসব ব্যাংক নীতি কঠোরভাবে পরিপালন করার কারণে ঋণ খেলাপি হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।

তথ্যে দেখা যায়, বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। সাত বছর আগে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার প্রায় একই ছিল। ব্যাংকেরগুলোর ঋণ বিতরণের পাশাপাশি খেলাপি ঋণের হার একই হারে বৃদ্ধির কারণে পরিমাণ বাড়লেও খেলাপির হার বাড়েনি।

বর্তমানে বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ তিন হাজার ২৩০ কোটি টাকা। যা সাত বছর আগে ছিল দুই হাজার ৩২১ কোটি। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাবিস্তানের বিতরণ করা ঋণের প্রায় পুরোটাই খেলাপি। অন্যদিকে কমার্শিয়াল ব্যাংক সিলনের খেলাপি ঋণের হার এক শতাংশ।

ঢাকা/এসএইচ