০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

৬০ কোম্পানির কাছে মূলধন বৃদ্ধির রূপরেখা চাইল বিএসইসি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
  • / ১০৬৮২ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৬০টি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন এখনও ৩০ কোটি টাকার নিচে থাকায় তাদের কাছে মূলধন বৃদ্ধির স্পষ্ট রূপরেখা চেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ঈদুল আজহার ছুটির আগেই এসব কোম্পানিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।  বিএসইসির সূত্রে জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্তি বিধি অনুযায়ী, প্রধান বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকতে হলে কোম্পানির ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে ৩০ কোটি টাকা। এই শর্ত পূরণে দীর্ঘদিন ধরেই বেশ কিছু কোম্পানি ব্যর্থ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এবার কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছে বিএসইসি।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগেও আমরা কোম্পানিগুলোকে সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু বেশিরভাগই মূলধন বাড়ায়নি। এবার আমরা কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি। যারা শর্ত পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের SME বা অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (ATB) স্থানান্তরের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি কোম্পানিকে তাদের নিজ নিজ রূপরেখা অনুযায়ী সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। সেই সময়ের মধ্যে কী অগ্রগতি হয়েছে, তা পর্যবেক্ষণ করে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।

সূত্র জানায়, এসব কোম্পানির মধ্যে ১১টির মূলধন এখনও ৫ কোটির নিচে, ১৫টি কোম্পানি ১০ কোটির নিচে, ২১টি কোম্পানি ২০ কোটির নিচে এবং বাকি কোম্পানিগুলোর মূলধন ৩০ কোটির নিচে রয়েছে। কয়েকটি কোম্পানি ব্যবসায়িকভাবে ভালো করলেও, অনেক কোম্পানির আর্থিক অবস্থা দুর্বল—কিছু কোম্পানির কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, আবার কিছু কোম্পানি ধারাবাহিকভাবে লোকসান করছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা মনে করে, পরিশোধিত মূলধন কম হলে সেই কোম্পানির শেয়ারে অস্বাভাবিক ওঠানামার ঝুঁকি বেশি থাকে। এটি বাজারে কারসাজির সুযোগ তৈরি করে, যা বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। তাছাড়া, কিছু কোম্পানির শেয়ারের দর অপ্রাসঙ্গিকভাবে বেড়ে গেছে—যা বাজারের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করে।

আরও পড়ুন: ৯ ব্রোকারেজ হাউজ-মার্চেন্ট ব্যাংকের অনিয়ম তদন্তে বিএসইসির কমিটি

বিএসইসির পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানো চলবে না। রিয়েল ফান্ড বা প্রকৃত মূলধন সংগ্রহের মাধ্যমেই এই শর্ত পূরণ করতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালেও বিএসইসি একই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিল এবং ৬৪টি কোম্পানিকে রূপরেখা দিতে বলেছিল। সেবার একটি কমিটিও গঠন করা হয়, যারা এসব কোম্পানির সার্বিক অবস্থা মূল্যায়ন করেছিল।

এবারের উদ্যোগে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আরও কঠোর হচ্ছে। কারণ, তারা বিশ্বাস করে যে বাজারে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে কম মূলধনের কোম্পানিকে আর ছাড় দেওয়া যাবে না।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

৬০ কোম্পানির কাছে মূলধন বৃদ্ধির রূপরেখা চাইল বিএসইসি

আপডেট: ১১:০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৬০টি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন এখনও ৩০ কোটি টাকার নিচে থাকায় তাদের কাছে মূলধন বৃদ্ধির স্পষ্ট রূপরেখা চেয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ঈদুল আজহার ছুটির আগেই এসব কোম্পানিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।  বিএসইসির সূত্রে জানা গেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্তি বিধি অনুযায়ী, প্রধান বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকতে হলে কোম্পানির ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে ৩০ কোটি টাকা। এই শর্ত পূরণে দীর্ঘদিন ধরেই বেশ কিছু কোম্পানি ব্যর্থ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে এবার কঠোর মনোভাব দেখাচ্ছে বিএসইসি।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগেও আমরা কোম্পানিগুলোকে সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু বেশিরভাগই মূলধন বাড়ায়নি। এবার আমরা কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি। যারা শর্ত পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের SME বা অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ডে (ATB) স্থানান্তরের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিটি কোম্পানিকে তাদের নিজ নিজ রূপরেখা অনুযায়ী সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। সেই সময়ের মধ্যে কী অগ্রগতি হয়েছে, তা পর্যবেক্ষণ করে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।

সূত্র জানায়, এসব কোম্পানির মধ্যে ১১টির মূলধন এখনও ৫ কোটির নিচে, ১৫টি কোম্পানি ১০ কোটির নিচে, ২১টি কোম্পানি ২০ কোটির নিচে এবং বাকি কোম্পানিগুলোর মূলধন ৩০ কোটির নিচে রয়েছে। কয়েকটি কোম্পানি ব্যবসায়িকভাবে ভালো করলেও, অনেক কোম্পানির আর্থিক অবস্থা দুর্বল—কিছু কোম্পানির কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, আবার কিছু কোম্পানি ধারাবাহিকভাবে লোকসান করছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা মনে করে, পরিশোধিত মূলধন কম হলে সেই কোম্পানির শেয়ারে অস্বাভাবিক ওঠানামার ঝুঁকি বেশি থাকে। এটি বাজারে কারসাজির সুযোগ তৈরি করে, যা বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। তাছাড়া, কিছু কোম্পানির শেয়ারের দর অপ্রাসঙ্গিকভাবে বেড়ে গেছে—যা বাজারের স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করে।

আরও পড়ুন: ৯ ব্রোকারেজ হাউজ-মার্চেন্ট ব্যাংকের অনিয়ম তদন্তে বিএসইসির কমিটি

বিএসইসির পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানো চলবে না। রিয়েল ফান্ড বা প্রকৃত মূলধন সংগ্রহের মাধ্যমেই এই শর্ত পূরণ করতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালেও বিএসইসি একই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিল এবং ৬৪টি কোম্পানিকে রূপরেখা দিতে বলেছিল। সেবার একটি কমিটিও গঠন করা হয়, যারা এসব কোম্পানির সার্বিক অবস্থা মূল্যায়ন করেছিল।

এবারের উদ্যোগে নিয়ন্ত্রক সংস্থা আরও কঠোর হচ্ছে। কারণ, তারা বিশ্বাস করে যে বাজারে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে কম মূলধনের কোম্পানিকে আর ছাড় দেওয়া যাবে না।

ঢাকা/এসএইচ