০৮:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ৩৪ করোনা রোগী

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১১:০৫:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০২০
  • / ৪৭৮৯ বার দেখা হয়েছে

রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ৩৪ করোনা রোগী। তাদের যমদূতের হাত থেকে রক্ষা করতে জীবন বিপন্ন করে লড়াই করে যাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে তাদের প্রাণান্তকর চেষ্টার পরও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগীদের মৃত্যু হচ্ছে!
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। আজ (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত সারাদেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৫২ জনের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যারা মারাত্মক শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তাদের আইসিইউতে ভর্তি করা হচ্ছে। তবে সেখানে বেশির ভাগ রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সম্প্রতি এক প্রেস ব্রিফিংয়েও ‘আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগীদের রিপোর্ট ভালো নয়’ বলে মন্তব্য করেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ৩৪ রোগীর মধ্যে রাজধানীর উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে নয়জন, সরকারি কুর্মিটোলা হাসপাতালে চারজন, বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতাল, উত্তরায় চারজন, রিজেন্ট হাসপাতাল, মিরপুরে তিনজন, যাত্রাবাড়ীর সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে দুজন, রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে (সিপিএইচ) দুজন এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ জন চিকিৎসাধীন।
অধিদফতর সূত্রে আরও জানা যায়, বর্তমানে রাজধানীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সরকারি আটটি হাসপাতালে ১৪৭টি এবং বেসরকারি হাসপাতালে ২১টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে।
সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ২৬টি, আড়াইশ শয্যার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে ১৬টি, বাবুবাজার মহানগর হাসপাতালে পাঁচটি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২ এ ৪৮টি, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১০টি, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতালে পাঁচটি এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৭টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে উত্তরা ও মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতিটিতে তিনটি করে ছয়টি, সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে পাঁচটি, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টিসহ মোট ২১টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে।
সরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে মোট তিন হাজার ১৯০টি এবং বেসরকারি হাসপাতালে ৭৫৪টি। ডায়ালাইসিস মেশিন সরকারি হাসপাতালে রয়েছে ১০১টি, বেসরকারি হাসপাতালে মাত্র একটি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। সেই তুলনায় দেশে আইসিইউ শয্যা পর্যাপ্ত নয়। গত ফেব্রুয়ারি (৮ ফেব্রুয়ারি) মাসে করোনা প্রতিরোধ ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস আক্রান্ত ১৭ হাজার রোগীর একটি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে যে, এ ভাইরাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে শতকরা ৮২ ভাগই মাইল্ড কেস। এর বাইরে শতকরা ১৫ ভাগ সিভিয়ার কেস, যাদের রেসপিরেটরি ডিফিকাল্টি আছে। বাকি তিন ভাগ ক্রিটিক্যাল রোগী, যাদের আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) সাপোর্ট প্রয়োজন।

শেয়ার করুন

x
English Version

আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ৩৪ করোনা রোগী

আপডেট: ১১:০৫:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০২০

রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ৩৪ করোনা রোগী। তাদের যমদূতের হাত থেকে রক্ষা করতে জীবন বিপন্ন করে লড়াই করে যাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। তবে তাদের প্রাণান্তকর চেষ্টার পরও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগীদের মৃত্যু হচ্ছে!
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। আজ (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত সারাদেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৫২ জনের।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে যারা মারাত্মক শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তাদের আইসিইউতে ভর্তি করা হচ্ছে। তবে সেখানে বেশির ভাগ রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সম্প্রতি এক প্রেস ব্রিফিংয়েও ‘আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগীদের রিপোর্ট ভালো নয়’ বলে মন্তব্য করেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ৩৪ রোগীর মধ্যে রাজধানীর উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে নয়জন, সরকারি কুর্মিটোলা হাসপাতালে চারজন, বেসরকারি রিজেন্ট হাসপাতাল, উত্তরায় চারজন, রিজেন্ট হাসপাতাল, মিরপুরে তিনজন, যাত্রাবাড়ীর সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে দুজন, রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে (সিপিএইচ) দুজন এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ জন চিকিৎসাধীন।
অধিদফতর সূত্রে আরও জানা যায়, বর্তমানে রাজধানীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য সরকারি আটটি হাসপাতালে ১৪৭টি এবং বেসরকারি হাসপাতালে ২১টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে।
সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে উত্তরার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ২৬টি, আড়াইশ শয্যার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালে ১৬টি, বাবুবাজার মহানগর হাসপাতালে পাঁচটি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২ এ ৪৮টি, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ১০টি, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতালে পাঁচটি এবং কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৭টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে উত্তরা ও মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতিটিতে তিনটি করে ছয়টি, সাজেদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে পাঁচটি, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টিসহ মোট ২১টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে।
সরকারি হাসপাতালে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে মোট তিন হাজার ১৯০টি এবং বেসরকারি হাসপাতালে ৭৫৪টি। ডায়ালাইসিস মেশিন সরকারি হাসপাতালে রয়েছে ১০১টি, বেসরকারি হাসপাতালে মাত্র একটি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। সেই তুলনায় দেশে আইসিইউ শয্যা পর্যাপ্ত নয়। গত ফেব্রুয়ারি (৮ ফেব্রুয়ারি) মাসে করোনা প্রতিরোধ ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এক সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাস আক্রান্ত ১৭ হাজার রোগীর একটি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে যে, এ ভাইরাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে শতকরা ৮২ ভাগই মাইল্ড কেস। এর বাইরে শতকরা ১৫ ভাগ সিভিয়ার কেস, যাদের রেসপিরেটরি ডিফিকাল্টি আছে। বাকি তিন ভাগ ক্রিটিক্যাল রোগী, যাদের আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) সাপোর্ট প্রয়োজন।