০৬:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

একটি ভাইরাস, একটি জাহাজে বাণিজ্য ব্যবস্থা নিয়ে ভাবনার তাগিদ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:২১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মার্চ ২০২১
  • / ৪১৫৫ বার দেখা হয়েছে

ভাইরাস খালি চোখে দেখা যায় না, এর জন্য শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপ দরকার হয়। আর সুয়েজ খাল আটকে রেখেছিল যে দৈত্যাকার জাহাজ, সেটি মোটামুটি মহাকাশ থেকেও দেখা যায়। এ দুটি বস্তু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আজকের বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থা কতটা ঠুনকো, কতটা দুর্বল।

এখনকার ব্যবসায় বিশাল মজুত অথবা অতিরিক্ত দাম দিয়ে যন্ত্রাংশ কেনার ঝক্কি নেই। এর বদলে গড়ে উঠেছে যখন প্রয়োজন তখন পণ্য সরবরাহের এক আধুনিক ব্যবস্থা, যাকে বলা হচ্ছে ‘জাস্ট-ইন-টাইম সিস্টেম’। 

এটি শুরু করেছিল জাপানি গাড়িনির্মাতা জায়ান্ট টয়োটো। পরে তা গোটা বিশ্ব সাদরে গ্রহণ করে। তবে এই ‘জাস্ট-ইন-টাইম’ ব্যবস্থার একটি বড় দুর্বলতা রয়েছে। এর মাত্র একটি সূত্রে (লিংক) বিঘ্ন ঘটলে থমকে যায় গোটা প্রক্রিয়া।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: বিজনেসজার্নালবিজনেসজার্নাল.বিডি

যেমনটা দেখা গেছে সুয়েজ খালে বিশালাকার জাহাজ এভার গিভেন আটকে পড়ার ঘটনায়। এই একটি জাহাজের কারণে টানা এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক পথটি।

ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরের মধ্যে সংযোগকারী সুয়েজ খাল দিয়ে প্রতিদিন এশিয়া-ইউরোপের তেল থেকে শুরু করে প্রায় সবধরনের পণ্য আনা-নেয়া হয়। এটি না থাকলে আফ্রিকা ঘুরে এসব পণ্য গন্তব্যে পৌঁছাতে অন্তত আট দিন বেশি লাগত।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়ান গোল্ডিনের মতে, এ ঘটনা আবারও দেখিয়ে দিয়েছে, এত দীর্ঘ ও জটিল বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর।

তিনি বলেন, সারা বিশ্ব থেকে পণ্য আসছে, সেটা বিষয় না। বিষয় হচ্ছে, পণ্যগুলো সেদিনই পৌঁছাচ্ছে, যেদিন আপনার দরকার।

‘অনভিপ্রেত ঘটনা’
করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারি ইতোমধ্যে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে।

গত বছর সেমিকন্ডাক্টরের অভাবে গাড়ি উৎপাদন বিঘ্নিত হয়েছে। এর মধ্যেই ইলেকট্রনিক পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মহাগুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোচিপের সংকট দেখা গেছে।

চলতি মাসে জাপানি চিপ-নির্মাতা রেনেসাসের একটি কারাখানায় অগ্নিকাণ্ডে সেই ঘাটতি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, পুরোদমে উৎপাদন শুরু করতে তাদের আরও তিন থেকে চার মাস লেগে যেতে পারে।

পরিবর্তন আসন্ন
এখনকার দিনে ভাইরাসজনিত বিধিনিষেধ ও লকডাউনের প্রভাব কাটাতে কারখানার কাছাকাছি এবং একের বেশি সরবরাহকারী দরকারি হয়ে উঠেছে।

অ্যাক্সির প্রধান বাজার বিশেষজ্ঞ স্টিফেন ইনসের মতে, সুয়েজ খাল অবরুদ্ধের মতো অনভিপ্রেত ঘটনাগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমেই কমে আসবে।

তিনি বলেন, প্রযুক্তির হাত ধরে ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব’ আসবে, যার মাধ্যমে অপর্যাপ্ত ও ব্যয়বহুল সরবরাহ ব্যবস্থা দূর হয়ে স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত উৎপাদন পদ্ধতি গড়ে উঠবে।

সূত্র: এএফপি, ইয়াহু নিউজ

বিজনেসজার্নাল/ঢাকা/এনইউ

 

আরও পড়ুন:

শেয়ার করুন

x
English Version

একটি ভাইরাস, একটি জাহাজে বাণিজ্য ব্যবস্থা নিয়ে ভাবনার তাগিদ

আপডেট: ০৭:২১:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ মার্চ ২০২১

ভাইরাস খালি চোখে দেখা যায় না, এর জন্য শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপ দরকার হয়। আর সুয়েজ খাল আটকে রেখেছিল যে দৈত্যাকার জাহাজ, সেটি মোটামুটি মহাকাশ থেকেও দেখা যায়। এ দুটি বস্তু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আজকের বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থা কতটা ঠুনকো, কতটা দুর্বল।

এখনকার ব্যবসায় বিশাল মজুত অথবা অতিরিক্ত দাম দিয়ে যন্ত্রাংশ কেনার ঝক্কি নেই। এর বদলে গড়ে উঠেছে যখন প্রয়োজন তখন পণ্য সরবরাহের এক আধুনিক ব্যবস্থা, যাকে বলা হচ্ছে ‘জাস্ট-ইন-টাইম সিস্টেম’। 

এটি শুরু করেছিল জাপানি গাড়িনির্মাতা জায়ান্ট টয়োটো। পরে তা গোটা বিশ্ব সাদরে গ্রহণ করে। তবে এই ‘জাস্ট-ইন-টাইম’ ব্যবস্থার একটি বড় দুর্বলতা রয়েছে। এর মাত্র একটি সূত্রে (লিংক) বিঘ্ন ঘটলে থমকে যায় গোটা প্রক্রিয়া।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: বিজনেসজার্নালবিজনেসজার্নাল.বিডি

যেমনটা দেখা গেছে সুয়েজ খালে বিশালাকার জাহাজ এভার গিভেন আটকে পড়ার ঘটনায়। এই একটি জাহাজের কারণে টানা এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক পথটি।

ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরের মধ্যে সংযোগকারী সুয়েজ খাল দিয়ে প্রতিদিন এশিয়া-ইউরোপের তেল থেকে শুরু করে প্রায় সবধরনের পণ্য আনা-নেয়া হয়। এটি না থাকলে আফ্রিকা ঘুরে এসব পণ্য গন্তব্যে পৌঁছাতে অন্তত আট দিন বেশি লাগত।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়ান গোল্ডিনের মতে, এ ঘটনা আবারও দেখিয়ে দিয়েছে, এত দীর্ঘ ও জটিল বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর।

তিনি বলেন, সারা বিশ্ব থেকে পণ্য আসছে, সেটা বিষয় না। বিষয় হচ্ছে, পণ্যগুলো সেদিনই পৌঁছাচ্ছে, যেদিন আপনার দরকার।

‘অনভিপ্রেত ঘটনা’
করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারি ইতোমধ্যে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে।

গত বছর সেমিকন্ডাক্টরের অভাবে গাড়ি উৎপাদন বিঘ্নিত হয়েছে। এর মধ্যেই ইলেকট্রনিক পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মহাগুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোচিপের সংকট দেখা গেছে।

চলতি মাসে জাপানি চিপ-নির্মাতা রেনেসাসের একটি কারাখানায় অগ্নিকাণ্ডে সেই ঘাটতি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, পুরোদমে উৎপাদন শুরু করতে তাদের আরও তিন থেকে চার মাস লেগে যেতে পারে।

পরিবর্তন আসন্ন
এখনকার দিনে ভাইরাসজনিত বিধিনিষেধ ও লকডাউনের প্রভাব কাটাতে কারখানার কাছাকাছি এবং একের বেশি সরবরাহকারী দরকারি হয়ে উঠেছে।

অ্যাক্সির প্রধান বাজার বিশেষজ্ঞ স্টিফেন ইনসের মতে, সুয়েজ খাল অবরুদ্ধের মতো অনভিপ্রেত ঘটনাগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমেই কমে আসবে।

তিনি বলেন, প্রযুক্তির হাত ধরে ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব’ আসবে, যার মাধ্যমে অপর্যাপ্ত ও ব্যয়বহুল সরবরাহ ব্যবস্থা দূর হয়ে স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত উৎপাদন পদ্ধতি গড়ে উঠবে।

সূত্র: এএফপি, ইয়াহু নিউজ

বিজনেসজার্নাল/ঢাকা/এনইউ

 

আরও পড়ুন: