০৭:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

অমর একুশে বইমেলা শেষ হচ্ছে আজ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:২২:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪
  • / ১০৩০৫ বার দেখা হয়েছে

অমর একুশে বইমেলার পর্দা নামছে আজ ২ মার্চ (শনিবার)। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বইমেলা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অনুমোদনক্রমে মেলার সময় বাড়ানো হয় আরও দুই দিন। সে হিসেবে আজ শেষ হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এবারের বইমেলার জন্য বড় আশীর্বাদ হয়ে এসেছে মেট্রোরেল। যার কারণে অন্য বছরের তুলনায় এবার মেলায় বেড়েছে মানুষের সমাগম। কারণ মেট্রারেলের কল্যাণে রাজধানীর উত্তরাসহ নানান জায়গায় থেকে মেলায় মানুষ এসেছে। সেটা অন্য সময় যানজটের ভয়ের কারণে মানুষ মেলায় আসতো না সাধারণত। যার ফলে, এবার মেলায় বিক্রি বেড়েছে অন্যান্য বছরের তুলনায় কয়েকগুণ।

বৈশ্বিক করোনা মহামারি ও যানজট এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে গত কয়েক বছর বইমেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের যে ভাটা পড়েছিল এবার মেট্রোরেলের কল্যাণে সেটি লাঘব হয়েছে। শুরু থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জমজমাট উপস্থিতিতে সরগরম ছিল বইমেলার প্রতিটি দিন।

বইমেলা ২৮ দিনের হলেও প্রতি চার বছর পর লিপ ইয়ারের কারণে হয় ২৯ দিনের। তবে এবার ২৯তম দিনটি বৃহস্পতিবার হওয়ায় প্রকাশকদের দাবি ছিল মেলার সময় বাড়িয়ে শুক্রবার-শনিবারেও যেন নেওয়া হয়।

তবে মেলার যে সময় বাড়ানো হয়েছে, সে অনুযায়ী খুব কমই বই বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশক এবং বিক্রয়কর্মীরা। তারা মনে করছেন, বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড পাঠকদের মনে দাগ কেটেছে। তাই মেলায় ভিড়-বিক্রি কম। শুক্রবার (১ মার্চ) মেলায় ভিড় বিক্রি কম দেখা গেলেও তার আগের দিন বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

এবারের বইমেলা নিয়ে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের প্রকাশক আদিত্য অন্তর বলেন, এবছর যেহেতু বৃহস্পতিবার দিন মেলা শেষ হওয়ার তারিখ ছিল, তাই শুরু থেকেই প্রকাশক ও পাঠকদের প্রত্যাশা ছিল যেন সময় দুই দিন বাড়ানো হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সময় বৃদ্ধি করেছে। এটি আমাদের জন্য খুবই ভালো হয়েছে।

এ বছরের বইমেলায় বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্ট কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবছর বইয়ের বেচাকেনা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। কারণ, গত কয়েক বছর ধরেই অর্থাৎ করোনার পর থেকে বইমেলা ওইভাবে জমে উঠেনি। সেই বিবেচনায় এবছর শুরু থেকেই বইমেলা জমজমাট। আর বইয়ের প্রতিও মানুষের আগ্রহ রয়েছে। যার কারণে শুরু থেকেই পাঠক ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন কেউ যদি বলে থাকেন যে, এই বছর বইমেলায় বিক্রি কম হয়েছে, তাহলে আমি বলব তাদের বিক্রি করার মতো বইয়ের অভাব রয়েছে। খেয়াল করে দেখবেন, অন্যান্য বছর যেখানে মেলা শুরুর এক সপ্তাহ কিংবা দশ দিন পর বিক্রি শুরু হতো সেখানে এ বছর শুরু থেকেই বিক্রি শুরু হয়েছে।

তবে অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, শুক্রবার অনুযায়ী পাঠক এবং ক্রেতা বেশি হওয়ার কথা ছিল। আমরাও সে রকম প্রত্যাশা করে মেলা দুই দিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলাম। আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে কিন্তু বৃহস্পতিবার বেইলি রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেকের মনে প্রভাব বিস্তার করেছে। কারণ এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে অনেকেই বাসা থেকে বের হতে চান না। অনেকের আবার মন খারাপ থাকে। সেজন্য হয়তো মেলায় পাঠকের সংখ্যায় একটু প্রভাব পড়েছে।

মেলার সময় বৃদ্ধি ও বই বিক্রি নিয়ে ভিন্ন কথা বলছেন তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি কাউসার হোসেন। তিনি বলেন, বেচাবিক্রি শুক্র-শনিবারের মতো হচ্ছেই না, নরমাল দিনের মতোও হচ্ছে না। অনেকেই হয়তো জানেন না মেলা দুই দিন বেড়েছে। আবার এটাও হতে পারে, যারা বই কেনার তারা ২৯ তারিখের মধ্যেই কিনে ফেলেছেন।

আরও পড়ুন: যেসব এলাকায় আট ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না আজ

ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি হাসেম আলী বলেন, বেচাবিক্রি নেই বললেই চলে। মালিক পক্ষ যে প্রত্যাশা নিয়ে মেলা দুই দিন বাড়িয়েছে, তার ধারেকাছেও নেই বেচাবিক্রি। অর্ধেকেরও কম হবে বলে মনে হচ্ছে। তবে মেলার ১৫-১৬তম দিন থেকে যদি মেলা বাড়ার ঘোষণা আসত হয়তো প্রতি শুক্র-শনিবারের মতোই আজকে বিক্রি হতো।

সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান

আজ শনিবার অমর একুশে বইমেলার সমাপনী দিন। মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত। বিকেল পাঁচটায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা ভাষণ প্রদান করবেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’-এর সদস্য-সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করা হবে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

x

অমর একুশে বইমেলা শেষ হচ্ছে আজ

আপডেট: ১০:২২:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪

অমর একুশে বইমেলার পর্দা নামছে আজ ২ মার্চ (শনিবার)। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বইমেলা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অনুমোদনক্রমে মেলার সময় বাড়ানো হয় আরও দুই দিন। সে হিসেবে আজ শেষ হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এবারের বইমেলার জন্য বড় আশীর্বাদ হয়ে এসেছে মেট্রোরেল। যার কারণে অন্য বছরের তুলনায় এবার মেলায় বেড়েছে মানুষের সমাগম। কারণ মেট্রারেলের কল্যাণে রাজধানীর উত্তরাসহ নানান জায়গায় থেকে মেলায় মানুষ এসেছে। সেটা অন্য সময় যানজটের ভয়ের কারণে মানুষ মেলায় আসতো না সাধারণত। যার ফলে, এবার মেলায় বিক্রি বেড়েছে অন্যান্য বছরের তুলনায় কয়েকগুণ।

বৈশ্বিক করোনা মহামারি ও যানজট এবং অর্থনৈতিক মন্দার কারণে গত কয়েক বছর বইমেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের যে ভাটা পড়েছিল এবার মেট্রোরেলের কল্যাণে সেটি লাঘব হয়েছে। শুরু থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জমজমাট উপস্থিতিতে সরগরম ছিল বইমেলার প্রতিটি দিন।

বইমেলা ২৮ দিনের হলেও প্রতি চার বছর পর লিপ ইয়ারের কারণে হয় ২৯ দিনের। তবে এবার ২৯তম দিনটি বৃহস্পতিবার হওয়ায় প্রকাশকদের দাবি ছিল মেলার সময় বাড়িয়ে শুক্রবার-শনিবারেও যেন নেওয়া হয়।

তবে মেলার যে সময় বাড়ানো হয়েছে, সে অনুযায়ী খুব কমই বই বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশক এবং বিক্রয়কর্মীরা। তারা মনে করছেন, বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ড পাঠকদের মনে দাগ কেটেছে। তাই মেলায় ভিড়-বিক্রি কম। শুক্রবার (১ মার্চ) মেলায় ভিড় বিক্রি কম দেখা গেলেও তার আগের দিন বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

এবারের বইমেলা নিয়ে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের প্রকাশক আদিত্য অন্তর বলেন, এবছর যেহেতু বৃহস্পতিবার দিন মেলা শেষ হওয়ার তারিখ ছিল, তাই শুরু থেকেই প্রকাশক ও পাঠকদের প্রত্যাশা ছিল যেন সময় দুই দিন বাড়ানো হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সময় বৃদ্ধি করেছে। এটি আমাদের জন্য খুবই ভালো হয়েছে।

এ বছরের বইমেলায় বিক্রি নিয়ে সন্তুষ্ট কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবছর বইয়ের বেচাকেনা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। কারণ, গত কয়েক বছর ধরেই অর্থাৎ করোনার পর থেকে বইমেলা ওইভাবে জমে উঠেনি। সেই বিবেচনায় এবছর শুরু থেকেই বইমেলা জমজমাট। আর বইয়ের প্রতিও মানুষের আগ্রহ রয়েছে। যার কারণে শুরু থেকেই পাঠক ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন কেউ যদি বলে থাকেন যে, এই বছর বইমেলায় বিক্রি কম হয়েছে, তাহলে আমি বলব তাদের বিক্রি করার মতো বইয়ের অভাব রয়েছে। খেয়াল করে দেখবেন, অন্যান্য বছর যেখানে মেলা শুরুর এক সপ্তাহ কিংবা দশ দিন পর বিক্রি শুরু হতো সেখানে এ বছর শুরু থেকেই বিক্রি শুরু হয়েছে।

তবে অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, শুক্রবার অনুযায়ী পাঠক এবং ক্রেতা বেশি হওয়ার কথা ছিল। আমরাও সে রকম প্রত্যাশা করে মেলা দুই দিন বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলাম। আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে কিন্তু বৃহস্পতিবার বেইলি রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অনেকের মনে প্রভাব বিস্তার করেছে। কারণ এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে অনেকেই বাসা থেকে বের হতে চান না। অনেকের আবার মন খারাপ থাকে। সেজন্য হয়তো মেলায় পাঠকের সংখ্যায় একটু প্রভাব পড়েছে।

মেলার সময় বৃদ্ধি ও বই বিক্রি নিয়ে ভিন্ন কথা বলছেন তাম্রলিপি প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি কাউসার হোসেন। তিনি বলেন, বেচাবিক্রি শুক্র-শনিবারের মতো হচ্ছেই না, নরমাল দিনের মতোও হচ্ছে না। অনেকেই হয়তো জানেন না মেলা দুই দিন বেড়েছে। আবার এটাও হতে পারে, যারা বই কেনার তারা ২৯ তারিখের মধ্যেই কিনে ফেলেছেন।

আরও পড়ুন: যেসব এলাকায় আট ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না আজ

ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি হাসেম আলী বলেন, বেচাবিক্রি নেই বললেই চলে। মালিক পক্ষ যে প্রত্যাশা নিয়ে মেলা দুই দিন বাড়িয়েছে, তার ধারেকাছেও নেই বেচাবিক্রি। অর্ধেকেরও কম হবে বলে মনে হচ্ছে। তবে মেলার ১৫-১৬তম দিন থেকে যদি মেলা বাড়ার ঘোষণা আসত হয়তো প্রতি শুক্র-শনিবারের মতোই আজকে বিক্রি হতো।

সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান

আজ শনিবার অমর একুশে বইমেলার সমাপনী দিন। মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত। বিকেল পাঁচটায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা ভাষণ প্রদান করবেন একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’-এর সদস্য-সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার প্রদান করা হবে।

ঢাকা/এসএইচ