১১:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা পরিকল্পনা উপদেষ্টার

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১০৫৮২ বার দেখা হয়েছে

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার কমেছে। অন্যদিকে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমেছে। এতে করে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে। আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

উপদেষ্টা জানান, বাজেটে এডিপি বাস্তবায়নের হার খুবই কম। এতদিন দুর্নীতি রোধকল্পে কাজ করলেও এখন এডিপি বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হবে। ডিসেম্বরে সংশোধিত বাজেটে এডিপির আকার ছোট করা হবে। কারণ অনেক প্রকল্প বাদ দেয়া হয়েছে, বিশেষ করে যেসব প্রকল্প রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

অপচয় রোধ করতে গিয়ে এডিপি বাস্তবায়ন ধীর গতিতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেগুলোকে ভালো প্রকল্প মনে হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে নীতি সমন্বয়ের সময় এসেছে। যেসব প্রকল্পকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। এতে করে পিছিয়ে পড়া এডিপি অনেকটা শুধরে নেয়া যাবে।

বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের সমস্যা আছে বলেও জানান ড. ওয়াহিদউদ্দিন। তিনি বলেন, এ খাতে মানুষের বিনিয়োগের আগ্রহ নেই বললেই চলে। বিশেষ করে সুদের হার বাড়ানোর ফলে অর্থ লগ্নিতে আগ্রহ কমছে।

তিনি বলেন, অনেক প্রকল্প পরিচালক হয় পদত্যাগ করেছে, না হয় তারা পালিয়ে গেছে। তাই প্রকল্প চালাতে নতুন পরিচালক নিয়োগ দিতে হয়েছে। বিশেষ করে মাতারবাড়ি প্রকল্প পরিচালক পালিয়ে যাওয়ার আগে অনেক সরকারি সম্পদ বিক্রি করে গেছেন। তাকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মন্ত্রণালয়গুলো এখনো আগের মতো সচল হয়নি জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রকল্প কমাচ্ছি, কারণ নতুন প্রকল্প ব্যয় থেকে সুফলের সম্ভাবনা যাচাই করা হচ্ছে। এছাড়া উদ্ভাবনী নানা প্রকল্প নিয়ে কাজ চলছে।

আরও পড়ুন: মুখ থুবড়ে পড়েছে এডিপি বাস্তবায়ন, একযুগে সর্বনিম্ন

রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান ড. ওয়াহিদউদ্দিন। তিনি বলেন, মূলত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। রূপপুর প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। বাকিটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকল্পে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে, পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও একনেকের চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় প্রায় ৫ হাজার ৯১৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ৫টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৯৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড নেটওয়ার্কের পরিবর্ধন এবং ক্ষমতাবর্ধন’ প্রকল্প; শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘যুব উদ্যোক্তাদের উন্নীত করার জন্য বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘মোংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রাম পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প (ক্যাচমেন্ট-২ ও ৪)’ প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রজেক্ট (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

এছাড়া ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে ২টি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা পরিকল্পনা উপদেষ্টার

আপডেট: ০৩:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের হার কমেছে। অন্যদিকে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমেছে। এতে করে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে। আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

উপদেষ্টা জানান, বাজেটে এডিপি বাস্তবায়নের হার খুবই কম। এতদিন দুর্নীতি রোধকল্পে কাজ করলেও এখন এডিপি বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হবে। ডিসেম্বরে সংশোধিত বাজেটে এডিপির আকার ছোট করা হবে। কারণ অনেক প্রকল্প বাদ দেয়া হয়েছে, বিশেষ করে যেসব প্রকল্প রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

অপচয় রোধ করতে গিয়ে এডিপি বাস্তবায়ন ধীর গতিতে হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, যেগুলোকে ভালো প্রকল্প মনে হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে নীতি সমন্বয়ের সময় এসেছে। যেসব প্রকল্পকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। এতে করে পিছিয়ে পড়া এডিপি অনেকটা শুধরে নেয়া যাবে।

বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের সমস্যা আছে বলেও জানান ড. ওয়াহিদউদ্দিন। তিনি বলেন, এ খাতে মানুষের বিনিয়োগের আগ্রহ নেই বললেই চলে। বিশেষ করে সুদের হার বাড়ানোর ফলে অর্থ লগ্নিতে আগ্রহ কমছে।

তিনি বলেন, অনেক প্রকল্প পরিচালক হয় পদত্যাগ করেছে, না হয় তারা পালিয়ে গেছে। তাই প্রকল্প চালাতে নতুন পরিচালক নিয়োগ দিতে হয়েছে। বিশেষ করে মাতারবাড়ি প্রকল্প পরিচালক পালিয়ে যাওয়ার আগে অনেক সরকারি সম্পদ বিক্রি করে গেছেন। তাকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মন্ত্রণালয়গুলো এখনো আগের মতো সচল হয়নি জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রকল্প কমাচ্ছি, কারণ নতুন প্রকল্প ব্যয় থেকে সুফলের সম্ভাবনা যাচাই করা হচ্ছে। এছাড়া উদ্ভাবনী নানা প্রকল্প নিয়ে কাজ চলছে।

আরও পড়ুন: মুখ থুবড়ে পড়েছে এডিপি বাস্তবায়ন, একযুগে সর্বনিম্ন

রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান ড. ওয়াহিদউদ্দিন। তিনি বলেন, মূলত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। রূপপুর প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। বাকিটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকল্পে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এদিকে, পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও একনেকের চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় প্রায় ৫ হাজার ৯১৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ৫টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৯৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ৪ হাজার ৭৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড নেটওয়ার্কের পরিবর্ধন এবং ক্ষমতাবর্ধন’ প্রকল্প; শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘যুব উদ্যোক্তাদের উন্নীত করার জন্য বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্প; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘মোংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিঃসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্প; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রাম পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প (ক্যাচমেন্ট-২ ও ৪)’ প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ‘ইমার্জেন্সি মাল্টি-সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রজেক্ট (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প।

এছাড়া ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে ২টি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

ঢাকা/এসএইচ