০৮:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আমরা ইনভেস্টর তৈরি করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছি: মোহাম্মদ এ হাফিজ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:০০:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫
  • / ১১১৭৭ বার দেখা হয়েছে

স্টক অ্যান্ড বন্ড লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ এ. হাফিজ, পুঁজিবাজার নিয়ে যার রয়েছে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা। সম্প্রতি তিনি পুঁজিবাজারের উত্থান, পতন ও এর উন্নয়নে করণীয়সহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বিজনেস জার্নালের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান। বিজনেস জার্নাল পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হলো।

বিজনেস জার্নাল: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অবস্থাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? বাজারে পতনের প্রধান কারণগুলো কি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বর্তমানে পুঁজিবাজার ভালো অবস্থায় নেই। এই বাজারের বয়স ৫০ বছরের উপরে হয়েছে। কিন্তু এতোদিনও পুঁজিবাজার তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। এর জন্য আমরা নিজেরা দায়ী। গত কিছুদিন ধরে বাজার কিছুটা ভালো হচ্ছে। কিন্তু এই ভালো কতোদিন স্থিতিশীল থাকবে? যেকোনো সময় এই ভালোটা ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে বাজারের পতন হয়ে থাকে। লিকুইডিটি ক্রাইসিস (তারল্য সংকট), দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকসহ সামগ্রিক প্রেক্ষাপট খারাপ থাকলে এবং বহির্বিশ্বে নানা সংকটের  কারণে পুঁজিবাজার তার গতিশীলতা হারিয়ে ফেলে। এছাড়াও না জেনে, বুঝে বিনিয়োগ করার কারণেও পুঁজিবাজারের পতন হয়। কারণ একটার সঙ্গে আরেকটা জড়িত।

বিজনেস জার্নাল: বর্তমান বাজারে শেয়ারের মূল্যায়ন কি সঠিকভাবে হচ্ছে, নাকি আন্ডারভ্যালু শেয়ারের সংখ্যা বেশি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: শেয়ারের মূল্যায়ন আসলে সঠিকভাবে হচ্ছে না। না বুঝে অনেকেই বিনিয়োগ করছে। কোনো শেয়ারে বিনিয়োগ করতে হলে, সেই শেয়ারের প্রাইস আর্নিংস (পিই) রেশিও, শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস), প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি), উৎপাদন, মোট সম্পদ দেখে বিনিয়োগ করা উচিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিনিয়োগকারীরা এসব কিছু দেখে বিনিয়োগ করছে না। শেয়ারের মূল্যায়নও সঠিকভাবে হচ্ছে না। বাজারে আন্ডারভ্যালু শেয়ারের সংখ্যাই আমার কাছে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে।

বিজনেস জার্নাল: সাধারণত বিনিয়োগকারীদের সামনে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কি?, এর থেকে উত্তরণের উপায় কি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বর্তমান বাজারে বলতে গেলে সবাই ট্রেডার। আমরা দীর্ঘদিনও বিনিয়োগকারী তৈরি করতে পারিনি। এটা আমাদের ব্যর্থতা। বিনিয়োগ করার পর ২/৩ দিন চলে গেলেই আমরা লাভ, লোকসানের খাতা খুলে বসি। অথচ পুঁজিবাজার মানেই দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ, এই বিষয়টি আমরা মাথায় রাখতে চাই না। না জেনে, বুঝে বিনিয়োগ করাটাই বিনিয়োগকারীদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাদেরকে জেনে, বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে। কোম্পানি সম্পর্কে অ্যানালাইসিস করে বিনিয়োগ করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান কমিশন বাজার উন্নয়ন বা স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখতে পারছে কি? কোনো নীতিগত পরিবর্তন প্রয়োজন কি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বিএসইসি হচ্ছে ক্যাপিটাল মার্কেটের রেগুলেটর, অভিভাবক। বর্তমান কমিশন মার্কেট গ্যাম্বলারদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এটাকে আমি সাধুবাদ জানাই। কমিশনের কিছু পদক্ষেপের কারণে মার্কেট কিছুটা ভালো হচ্ছে। তবে দেশের পুঁজিবাজার খুবই সেনসিটিভ জায়গা। এই মার্কেটের উন্নয়নে কমিশনকে আরও ধীরস্থীরভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তিনি বলেন,  বাজারের উন্নয়নে নীতিগত অনেক পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, সব সময় বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। অথচ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারে ভুল নীতি প্রনয়ণ করে বসে আছে মার্কেটের অভিভাবকরা। বর্তমান নীতিতে বলা আছে, কোনো বিদেশি কোম্পানি সরাসরি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারবে না। এটা সম্পূর্ণ ভুল নীতি। তাদেরকে দ্রুত সহজ পন্থায় বাজারে তালিকাভুক্তির সুযোগ করে দিতে হবে। বাজারের নীতি প্রণয়নকারীরা যদি মার্কেট সম্পর্কে সামান্য ধারনা না রাখেন, তাহলে উন্নয়ন হবে কিভাবে। এই বিষয়গুলো আমাদের সংশোধন হওয়া দরকার।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন। বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: আস্থার ঘাটতি তো আছেই। বিনিয়োগকারীদের মাঝে কখনও আস্থা ফিরে আসে, আবার কখনও চলে যায়। এভাবে দীর্ঘমেয়াদে লাভবানও যেমন হওয়া যায় না, তেমনি বাজারেরও উন্নয়ন হয় না। আস্থা ধরে রাখতে হবে। মার্কেট কখনও সিঙ্গেল লাইনে চলে না। এর আপস অ্যান্ড ডাউন থাকবেই। ডাউন হলেও আস্থা ধরে রাখতে হবে বিনিয়োগকারীদের। আর যারা পলিসি সাপোর্ট মেকার, তারা দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা না করেই পলিসি তৈরি করেন এবং তা প্রয়োগ করেন। এটাও ঠিক না।

বিজনেস জার্নাল:  স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর জন্য ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট কতটুকু কাজে এসেছে? ডিএসই, সিএসই এবং বাজারের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আইনটি কি রিভিউ করা উচিত?

আরও পড়ুন: বিএসইসি ও ডিএসই’র সার্ভিল্যান্সের ‘নাকের ডগায়’ চলছে কারসাজি! 

মোহাম্মদ এ হাফিজ: স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর জন্য যখন ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট হলো তখন আমরা বেশ কম্ফোর্ট ছিল। কিন্তু আমরা পরবর্তীতে দেখলাম ধীরে ধীরে গ্যাম্বলারদের তৎপরতা বেড়ে গেলো। তারা কৃত্রিম উপায়ে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে মার্কেট থেকে টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে, অন্য দিকে তাদের খপ্পরে পড়ে বিনিয়োগকারীরা সর্বশান্ত হচ্ছেন। অথেনটিকভাবে শেয়ারের দাম বাড়তে পারে। কিন্তু কৃত্রিম উপায়ে শেয়ারের দাম বাড়ানো হলে, তার নেগেটিভ (নেতিবাচক) প্রভাব বাজারে পড়বে। এই অ্যাক্টের অবশ্যই রিভিউ এর প্রয়োজন রয়েছে। এই মার্কেটকে ব্রোকারেজ হাউজগুলো চিনিয়েছে। অথচ পলিসি ম্যাকিংয়ে তাদের কোনো প্রতিনিধি নেই। এটাতো হতে পারে না। ইনডিপেনডেন্ট ডাইরেক্টররা (স্বতন্ত্র পরিচালক) একটি সিদ্ধান্ত দিচ্ছে আমরা তা মেনে নিচ্ছি। এভাবে চলতে পারে না।

বিজনেস জার্নাল: বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্রোকারেজ হাউজগুলো ব্যবসায়িক অবস্থা কেমন? ইদানিং শোনা যাচ্ছে বেশকিছু সিকিউরিটিজ হাউসে কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে, এর কারণ কি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ:  বর্তমানে প্রেক্ষাপটে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। অনেক হাউজ রয়েছে, যাদের যেপরিমাণ ট্রেড (লেনদেন) হওয়া দরকার সে পরিমাণ হচ্ছে না। ফলে অনেকেই কর্মীদের বেতন কমিয়ে দিচ্ছেন। অফিসের খরচ কমাচ্ছেন। আবার অনেকেই কর্মী ছাটাই করছেন। মার্কেটের লেনদেন ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে হচ্ছে, যা অতি নগন্য। এরমধ্যে আবার নতুন ব্রোকারেজ হাউজের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। যাদেরকে নতুন করে লাইসেন্স দেওয়া হলো, তারা কি ভালো আছে? তারাও ভালো নেই। পুঁজিবাজারের লেনদেন এরকম থাকলে অনেক ব্রোকারেজ হাউজ বন্ধ হয়ে যাবে।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক আইপিওগুলো বাজারে কি ধরনের প্রভাব ফেলেছে? বিনিযোগকারীদের জন্য আইপিওতে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুযোগ কি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ:  অতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে যেসমস্ত কোম্পানি পুঁজিবাজারে এসেছে তাদের অধিকাংশের পারফর্মেন্স ভালো না। অনেকে ভালো ইপিএস দেখিয়ে বাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই, তাদের পারফর্মেন্স খারাপ হয়ে গেছে। তারা বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না। অথচ যখন তারা পুঁজিবাজারে আসার জন্য আবেদন করলো, তখনই যদি তাদের আর্থিক অবস্থা ভালোভাবে দেখা হতো, তাহলে তারা আসতে পারতো না। যাদের হাত দিয়ে এসমস্ত খারাপ আইপিও বাজারে এসেছে, এর দায় তাদের নিতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কতটা আকর্ষনীয়? এই বিনিযোগ বাড়ানোর জন্য কি উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: আমাদের পুঁজিবাজার আইন প্রনেতারা বিদেশি কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত হতে দিচ্ছে না। তাদেরকে সহজভাবে তালিকাভুক্তির সুযোগ করে দিতে হবে। শুধু মুখে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা আমাদের বোদ্ধারা বলছেন, কিন্তু এটি নিয়ে আসতে যেধরনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত, তা নিচ্ছেন না। পৃথিবীর আমেরিকা, চিনসহ বহু দেশ তাদের পুঁজিবাজারে বিদেশি কোম্পানিকে খুব সহজভাবে তালিকাভুক্তির সুযোগ করে দিচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদের তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া কঠিন করে রেখেছি। এভাবে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। তাদের নিজের দেশের ব্যবসায়িক পারফর্মেন্স দেখে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির সুযোগ করে দিতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনগুলি কিভাবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করছে?

মোহাম্মদ এ হাফিজ:  গত কিছুদিন আগে আমাদের মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে গিয়েছিল। যার নেতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়েছিল। তবে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে। আশা করি এখন মার্কেট ভালো হবে। আর বৈশ্বিক নানা সংকটের কারণে আমাদের পুঁজিবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় আগুন লাগে, সেই ভয়ে আমাদের এখানকার বিনিযোগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এটা এক ধরনের বোকামি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। আমাদের দেশের অর্থনীতি এতোই ছোট যে, বিশ্বের এসমস্ত অস্থিরতাগুলো, পুঁজিবাজারে বাহ্যিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার কথা না। কিন্তু মনস্তাত্বিকভবে বিনিয়োগকারীরা নিজেরা আতঙ্কিত হচ্ছেন, যার প্রভাব পড়ছে বাাজরে।

বিজনেস জার্নাল: নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য এই বাজারে প্রবেশের উপযুক্ত সময় কখন এবং তাদের কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বাজার যখন ঊর্ধ্বমুখি থাকে বিনিয়োগকারীরা তখনই বিনিযোগ করেন, এটা তাদের ভুল পলিসি। বাজার যখন নিম্নগামী থাকবে, শেয়ারের দাম কম থাকবে, তখনই বিনিয়োগ করা উচিত। দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে হবে। ইউ হ্যাভ টুবি এ ইনভেস্টর, নট ট্রেডার। যারা সত্যিকার অর্থে ইনভেস্টর বা বিনিয়োগকারী তারা কখনই লোকসান করে না। তারা প্রফিট (মুনাফা) নিয়ে বের হয়ে যায়। সময় দিতে হবে। তবে দেখে, বুঝে, জেনে বিনিয়োগ করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য বর্তমান বাজারে কি সম্ভাবনা রয়েছে?  বিনিয়োগ কারীরা কিভাবে একটি স্থায়ী কৌশল তৈরি করতে পারে?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বিনিয়োগ আসলে দীর্ঘমেয়াদে করা উচিত। অনেক কোম্পানির পিই রেশিও অনেক কম। সেগুলোতে বিনিযোগ করে বসে থাকা উচিত। অনেক ব্যাংক এক সময় মাত্র ৬ শতাংশ ইন্টারেস্ট দিতো। সে তুলনায় পুঁজিবাজার থেকেতো ১০ থেকে ১২ শতাংশ মুনাফা সহজেই করা যায়। কিন্তু সংসার খরচের টাকা বিনিয়োগ করে যদি তিন দিন ট্রেড করে শেয়ার সেল (বিক্রি) করেন, তাহলেতো হবে না।

বিজনেস জার্নাল: বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতেন

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বিনিয়োগকারীরা অনেক কষ্টের টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেন। তারা আমার ভাই। আমার একটি স্লোগান রয়েছে বাই দ্যা কোম্পানি, নট শেয়ারস। আপনারা কোম্পানি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে বিনিয়োগ করেন। লাভবান হবেন, ক্ষতিগ্র্স্ত হবেন না।

ঢাকা/টিএ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

আমরা ইনভেস্টর তৈরি করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছি: মোহাম্মদ এ হাফিজ

আপডেট: ১২:০০:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

স্টক অ্যান্ড বন্ড লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ এ. হাফিজ, পুঁজিবাজার নিয়ে যার রয়েছে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা। সম্প্রতি তিনি পুঁজিবাজারের উত্থান, পতন ও এর উন্নয়নে করণীয়সহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বিজনেস জার্নালের সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান। বিজনেস জার্নাল পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হলো।

বিজনেস জার্নাল: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক অবস্থাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন? বাজারে পতনের প্রধান কারণগুলো কি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বর্তমানে পুঁজিবাজার ভালো অবস্থায় নেই। এই বাজারের বয়স ৫০ বছরের উপরে হয়েছে। কিন্তু এতোদিনও পুঁজিবাজার তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। এর জন্য আমরা নিজেরা দায়ী। গত কিছুদিন ধরে বাজার কিছুটা ভালো হচ্ছে। কিন্তু এই ভালো কতোদিন স্থিতিশীল থাকবে? যেকোনো সময় এই ভালোটা ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে। বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে বাজারের পতন হয়ে থাকে। লিকুইডিটি ক্রাইসিস (তারল্য সংকট), দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকসহ সামগ্রিক প্রেক্ষাপট খারাপ থাকলে এবং বহির্বিশ্বে নানা সংকটের  কারণে পুঁজিবাজার তার গতিশীলতা হারিয়ে ফেলে। এছাড়াও না জেনে, বুঝে বিনিয়োগ করার কারণেও পুঁজিবাজারের পতন হয়। কারণ একটার সঙ্গে আরেকটা জড়িত।

বিজনেস জার্নাল: বর্তমান বাজারে শেয়ারের মূল্যায়ন কি সঠিকভাবে হচ্ছে, নাকি আন্ডারভ্যালু শেয়ারের সংখ্যা বেশি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: শেয়ারের মূল্যায়ন আসলে সঠিকভাবে হচ্ছে না। না বুঝে অনেকেই বিনিয়োগ করছে। কোনো শেয়ারে বিনিয়োগ করতে হলে, সেই শেয়ারের প্রাইস আর্নিংস (পিই) রেশিও, শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস), প্রকৃত সম্পদ মূল্য (এনএভি), উৎপাদন, মোট সম্পদ দেখে বিনিয়োগ করা উচিত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিনিয়োগকারীরা এসব কিছু দেখে বিনিয়োগ করছে না। শেয়ারের মূল্যায়নও সঠিকভাবে হচ্ছে না। বাজারে আন্ডারভ্যালু শেয়ারের সংখ্যাই আমার কাছে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে।

বিজনেস জার্নাল: সাধারণত বিনিয়োগকারীদের সামনে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কি?, এর থেকে উত্তরণের উপায় কি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বর্তমান বাজারে বলতে গেলে সবাই ট্রেডার। আমরা দীর্ঘদিনও বিনিয়োগকারী তৈরি করতে পারিনি। এটা আমাদের ব্যর্থতা। বিনিয়োগ করার পর ২/৩ দিন চলে গেলেই আমরা লাভ, লোকসানের খাতা খুলে বসি। অথচ পুঁজিবাজার মানেই দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ, এই বিষয়টি আমরা মাথায় রাখতে চাই না। না জেনে, বুঝে বিনিয়োগ করাটাই বিনিয়োগকারীদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তাদেরকে জেনে, বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে। কোম্পানি সম্পর্কে অ্যানালাইসিস করে বিনিয়োগ করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান কমিশন বাজার উন্নয়ন বা স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখতে পারছে কি? কোনো নীতিগত পরিবর্তন প্রয়োজন কি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বিএসইসি হচ্ছে ক্যাপিটাল মার্কেটের রেগুলেটর, অভিভাবক। বর্তমান কমিশন মার্কেট গ্যাম্বলারদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এটাকে আমি সাধুবাদ জানাই। কমিশনের কিছু পদক্ষেপের কারণে মার্কেট কিছুটা ভালো হচ্ছে। তবে দেশের পুঁজিবাজার খুবই সেনসিটিভ জায়গা। এই মার্কেটের উন্নয়নে কমিশনকে আরও ধীরস্থীরভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তিনি বলেন,  বাজারের উন্নয়নে নীতিগত অনেক পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, সব সময় বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে। অথচ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারে ভুল নীতি প্রনয়ণ করে বসে আছে মার্কেটের অভিভাবকরা। বর্তমান নীতিতে বলা আছে, কোনো বিদেশি কোম্পানি সরাসরি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারবে না। এটা সম্পূর্ণ ভুল নীতি। তাদেরকে দ্রুত সহজ পন্থায় বাজারে তালিকাভুক্তির সুযোগ করে দিতে হবে। বাজারের নীতি প্রণয়নকারীরা যদি মার্কেট সম্পর্কে সামান্য ধারনা না রাখেন, তাহলে উন্নয়ন হবে কিভাবে। এই বিষয়গুলো আমাদের সংশোধন হওয়া দরকার।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে আস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন। বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: আস্থার ঘাটতি তো আছেই। বিনিয়োগকারীদের মাঝে কখনও আস্থা ফিরে আসে, আবার কখনও চলে যায়। এভাবে দীর্ঘমেয়াদে লাভবানও যেমন হওয়া যায় না, তেমনি বাজারেরও উন্নয়ন হয় না। আস্থা ধরে রাখতে হবে। মার্কেট কখনও সিঙ্গেল লাইনে চলে না। এর আপস অ্যান্ড ডাউন থাকবেই। ডাউন হলেও আস্থা ধরে রাখতে হবে বিনিয়োগকারীদের। আর যারা পলিসি সাপোর্ট মেকার, তারা দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা না করেই পলিসি তৈরি করেন এবং তা প্রয়োগ করেন। এটাও ঠিক না।

বিজনেস জার্নাল:  স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর জন্য ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট কতটুকু কাজে এসেছে? ডিএসই, সিএসই এবং বাজারের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আইনটি কি রিভিউ করা উচিত?

আরও পড়ুন: বিএসইসি ও ডিএসই’র সার্ভিল্যান্সের ‘নাকের ডগায়’ চলছে কারসাজি! 

মোহাম্মদ এ হাফিজ: স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর জন্য যখন ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন অ্যাক্ট হলো তখন আমরা বেশ কম্ফোর্ট ছিল। কিন্তু আমরা পরবর্তীতে দেখলাম ধীরে ধীরে গ্যাম্বলারদের তৎপরতা বেড়ে গেলো। তারা কৃত্রিম উপায়ে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে মার্কেট থেকে টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে, অন্য দিকে তাদের খপ্পরে পড়ে বিনিয়োগকারীরা সর্বশান্ত হচ্ছেন। অথেনটিকভাবে শেয়ারের দাম বাড়তে পারে। কিন্তু কৃত্রিম উপায়ে শেয়ারের দাম বাড়ানো হলে, তার নেগেটিভ (নেতিবাচক) প্রভাব বাজারে পড়বে। এই অ্যাক্টের অবশ্যই রিভিউ এর প্রয়োজন রয়েছে। এই মার্কেটকে ব্রোকারেজ হাউজগুলো চিনিয়েছে। অথচ পলিসি ম্যাকিংয়ে তাদের কোনো প্রতিনিধি নেই। এটাতো হতে পারে না। ইনডিপেনডেন্ট ডাইরেক্টররা (স্বতন্ত্র পরিচালক) একটি সিদ্ধান্ত দিচ্ছে আমরা তা মেনে নিচ্ছি। এভাবে চলতে পারে না।

বিজনেস জার্নাল: বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্রোকারেজ হাউজগুলো ব্যবসায়িক অবস্থা কেমন? ইদানিং শোনা যাচ্ছে বেশকিছু সিকিউরিটিজ হাউসে কর্মী ছাঁটাই হচ্ছে, এর কারণ কি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ:  বর্তমানে প্রেক্ষাপটে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। অনেক হাউজ রয়েছে, যাদের যেপরিমাণ ট্রেড (লেনদেন) হওয়া দরকার সে পরিমাণ হচ্ছে না। ফলে অনেকেই কর্মীদের বেতন কমিয়ে দিচ্ছেন। অফিসের খরচ কমাচ্ছেন। আবার অনেকেই কর্মী ছাটাই করছেন। মার্কেটের লেনদেন ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকার মধ্যে হচ্ছে, যা অতি নগন্য। এরমধ্যে আবার নতুন ব্রোকারেজ হাউজের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। যাদেরকে নতুন করে লাইসেন্স দেওয়া হলো, তারা কি ভালো আছে? তারাও ভালো নেই। পুঁজিবাজারের লেনদেন এরকম থাকলে অনেক ব্রোকারেজ হাউজ বন্ধ হয়ে যাবে।

বিজনেস জার্নাল: সাম্প্রতিক আইপিওগুলো বাজারে কি ধরনের প্রভাব ফেলেছে? বিনিযোগকারীদের জন্য আইপিওতে বিনিয়োগের ঝুঁকি ও সুযোগ কি?

মোহাম্মদ এ হাফিজ:  অতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে যেসমস্ত কোম্পানি পুঁজিবাজারে এসেছে তাদের অধিকাংশের পারফর্মেন্স ভালো না। অনেকে ভালো ইপিএস দেখিয়ে বাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতেই, তাদের পারফর্মেন্স খারাপ হয়ে গেছে। তারা বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না। অথচ যখন তারা পুঁজিবাজারে আসার জন্য আবেদন করলো, তখনই যদি তাদের আর্থিক অবস্থা ভালোভাবে দেখা হতো, তাহলে তারা আসতে পারতো না। যাদের হাত দিয়ে এসমস্ত খারাপ আইপিও বাজারে এসেছে, এর দায় তাদের নিতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কতটা আকর্ষনীয়? এই বিনিযোগ বাড়ানোর জন্য কি উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: আমাদের পুঁজিবাজার আইন প্রনেতারা বিদেশি কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত হতে দিচ্ছে না। তাদেরকে সহজভাবে তালিকাভুক্তির সুযোগ করে দিতে হবে। শুধু মুখে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর কথা আমাদের বোদ্ধারা বলছেন, কিন্তু এটি নিয়ে আসতে যেধরনের উদ্যোগ নেওয়া উচিত, তা নিচ্ছেন না। পৃথিবীর আমেরিকা, চিনসহ বহু দেশ তাদের পুঁজিবাজারে বিদেশি কোম্পানিকে খুব সহজভাবে তালিকাভুক্তির সুযোগ করে দিচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদের তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া কঠিন করে রেখেছি। এভাবে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। তাদের নিজের দেশের ব্যবসায়িক পারফর্মেন্স দেখে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির সুযোগ করে দিতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: মূল্যস্ফীতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তনগুলি কিভাবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করছে?

মোহাম্মদ এ হাফিজ:  গত কিছুদিন আগে আমাদের মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে গিয়েছিল। যার নেতিবাচক প্রভাব পুঁজিবাজারে পড়েছিল। তবে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে। আশা করি এখন মার্কেট ভালো হবে। আর বৈশ্বিক নানা সংকটের কারণে আমাদের পুঁজিবাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় আগুন লাগে, সেই ভয়ে আমাদের এখানকার বিনিযোগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এটা এক ধরনের বোকামি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে আমাদের দেশের বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। আমাদের দেশের অর্থনীতি এতোই ছোট যে, বিশ্বের এসমস্ত অস্থিরতাগুলো, পুঁজিবাজারে বাহ্যিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলার কথা না। কিন্তু মনস্তাত্বিকভবে বিনিয়োগকারীরা নিজেরা আতঙ্কিত হচ্ছেন, যার প্রভাব পড়ছে বাাজরে।

বিজনেস জার্নাল: নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য এই বাজারে প্রবেশের উপযুক্ত সময় কখন এবং তাদের কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বাজার যখন ঊর্ধ্বমুখি থাকে বিনিয়োগকারীরা তখনই বিনিযোগ করেন, এটা তাদের ভুল পলিসি। বাজার যখন নিম্নগামী থাকবে, শেয়ারের দাম কম থাকবে, তখনই বিনিয়োগ করা উচিত। দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে হবে। ইউ হ্যাভ টুবি এ ইনভেস্টর, নট ট্রেডার। যারা সত্যিকার অর্থে ইনভেস্টর বা বিনিয়োগকারী তারা কখনই লোকসান করে না। তারা প্রফিট (মুনাফা) নিয়ে বের হয়ে যায়। সময় দিতে হবে। তবে দেখে, বুঝে, জেনে বিনিয়োগ করতে হবে।

বিজনেস জার্নাল: দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য বর্তমান বাজারে কি সম্ভাবনা রয়েছে?  বিনিয়োগ কারীরা কিভাবে একটি স্থায়ী কৌশল তৈরি করতে পারে?

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বিনিয়োগ আসলে দীর্ঘমেয়াদে করা উচিত। অনেক কোম্পানির পিই রেশিও অনেক কম। সেগুলোতে বিনিযোগ করে বসে থাকা উচিত। অনেক ব্যাংক এক সময় মাত্র ৬ শতাংশ ইন্টারেস্ট দিতো। সে তুলনায় পুঁজিবাজার থেকেতো ১০ থেকে ১২ শতাংশ মুনাফা সহজেই করা যায়। কিন্তু সংসার খরচের টাকা বিনিয়োগ করে যদি তিন দিন ট্রেড করে শেয়ার সেল (বিক্রি) করেন, তাহলেতো হবে না।

বিজনেস জার্নাল: বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে যদি কিছু বলতেন

মোহাম্মদ এ হাফিজ: বিনিয়োগকারীরা অনেক কষ্টের টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেন। তারা আমার ভাই। আমার একটি স্লোগান রয়েছে বাই দ্যা কোম্পানি, নট শেয়ারস। আপনারা কোম্পানি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে বিনিয়োগ করেন। লাভবান হবেন, ক্ষতিগ্র্স্ত হবেন না।

ঢাকা/টিএ