০১:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইইউতে পোশাক রপ্তানিতে বেড়েছে ৩৭ শতাংশ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৪:১৪:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১০৩৭৮ বার দেখা হয়েছে

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে পোশাক রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ৩ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ে ইইউর মোট পোশাক আমদানি ১৭ দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়ে ১৬ দশমিক ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। তবে এই সময়ে আমদানি ইউনিট মূল্যে ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। যার ফলে পোশাকের গড় দাম কমে এসেছে।

বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশের রপ্তানির ক্ষেত্রে ৩৯ দশমিক ০২ শতাংশ পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটলেও ইউনিট মূল্য ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ কমেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দাম কমার প্রবণতার মধ্যেও বাংলাদেশের রপ্তানির এমন শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি বাজারে দেশের পোশাক খাতের সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ।

বিশ্লেষণে আরও উঠে এসেছে, উচ্চমূল্যের পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি, ইইউর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা, শ্রমিক নিরাপত্তায় উন্নয়ন এবং শ্রমিক-উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এই প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। ফলে ইউরোপীয় ক্রেতাদের আস্থা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

একই সময়ে ইইউতে অন্যান্য দেশের রপ্তানিতেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গেছে। পরিসংখ্যান বলছে, চীনের রপ্তানি ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারে। এছাড়া ভারতের রপ্তানি বেড়েছে ২৫ দশমিক ৬০ শতাংশ, পাকিস্তানের ২৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং কম্বোডিয়ার রপ্তানি বেড়েছে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ। তবে তুরস্কের রপ্তানি ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ বছর পুরো সময়জুড়ে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ইতিবাচক ধারাবাহিকতা বজায় থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক উত্তেজনা ও বাণিজ্য পরিস্থিতির কারণে ক্রেতারা বাংলাদেশের প্রতি আরও মনোযোগী হচ্ছেন। ফলে চলতি বছরে নতুন ক্রয়াদেশ বৃদ্ধির সম্ভাবনাও রয়েছে।

আরও পড়ুন: সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে ভাঙানের প্রবণতা বেশি

তবে রপ্তানি প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি ইউনিট মূল্য হ্রাস একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। এ অবস্থায় মূল্য সংযোজন বাড়ানো, নতুন বাজার অনুসন্ধান এবং টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থার দিকে আরও মনোযোগ দেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে এখন থেকেই কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধি প্রমাণ করে, বিশ্ববাজারে ক্রেতাদের আস্থা বাড়ছে। তবে ইউনিট মূল্য আরও বৃদ্ধির প্রয়োজন। যদিও পুরো বিশ্ব জুড়েই প্রতিযোগিতার কারণে দাম কমছে। তবে এর মধ্যেও বাজার ধরে রাখতে আরও দক্ষ ব্যবস্থাপনা, পণ্যে বৈচিত্র্য ও বাজার সম্প্রসারণ জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

ইইউতে পোশাক রপ্তানিতে বেড়েছে ৩৭ শতাংশ

আপডেট: ০৪:১৪:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে পোশাক রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ৩ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেশি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ইউরোপীয় পরিসংখ্যান সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ে ইইউর মোট পোশাক আমদানি ১৭ দশমিক ৮১ শতাংশ বেড়ে ১৬ দশমিক ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। তবে এই সময়ে আমদানি ইউনিট মূল্যে ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ কমেছে। যার ফলে পোশাকের গড় দাম কমে এসেছে।

বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাংলাদেশের রপ্তানির ক্ষেত্রে ৩৯ দশমিক ০২ শতাংশ পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটলেও ইউনিট মূল্য ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ কমেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দাম কমার প্রবণতার মধ্যেও বাংলাদেশের রপ্তানির এমন শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি বাজারে দেশের পোশাক খাতের সক্ষমতা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ।

বিশ্লেষণে আরও উঠে এসেছে, উচ্চমূল্যের পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি, ইইউর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা, শ্রমিক নিরাপত্তায় উন্নয়ন এবং শ্রমিক-উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এই প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। ফলে ইউরোপীয় ক্রেতাদের আস্থা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

একই সময়ে ইইউতে অন্যান্য দেশের রপ্তানিতেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গেছে। পরিসংখ্যান বলছে, চীনের রপ্তানি ২৫ দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলারে। এছাড়া ভারতের রপ্তানি বেড়েছে ২৫ দশমিক ৬০ শতাংশ, পাকিস্তানের ২৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং কম্বোডিয়ার রপ্তানি বেড়েছে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ। তবে তুরস্কের রপ্তানি ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ বছর পুরো সময়জুড়ে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ইতিবাচক ধারাবাহিকতা বজায় থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক উত্তেজনা ও বাণিজ্য পরিস্থিতির কারণে ক্রেতারা বাংলাদেশের প্রতি আরও মনোযোগী হচ্ছেন। ফলে চলতি বছরে নতুন ক্রয়াদেশ বৃদ্ধির সম্ভাবনাও রয়েছে।

আরও পড়ুন: সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে ভাঙানের প্রবণতা বেশি

তবে রপ্তানি প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি ইউনিট মূল্য হ্রাস একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। এ অবস্থায় মূল্য সংযোজন বাড়ানো, নতুন বাজার অনুসন্ধান এবং টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থার দিকে আরও মনোযোগ দেওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্টরা।

তারা বলছেন, প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে এখন থেকেই কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল জানান, বাংলাদেশের এই প্রবৃদ্ধি প্রমাণ করে, বিশ্ববাজারে ক্রেতাদের আস্থা বাড়ছে। তবে ইউনিট মূল্য আরও বৃদ্ধির প্রয়োজন। যদিও পুরো বিশ্ব জুড়েই প্রতিযোগিতার কারণে দাম কমছে। তবে এর মধ্যেও বাজার ধরে রাখতে আরও দক্ষ ব্যবস্থাপনা, পণ্যে বৈচিত্র্য ও বাজার সম্প্রসারণ জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাকা/এসএইচ