০৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে ব্যাংক খাত

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৬:৪৯:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
  • / ১০৩৬৭ বার দেখা হয়েছে

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ব্যাংক বন্ধ ছিল। ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ায় টানা ছয় দিন ধরে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন ছিল সুইফট ব্যবস্থা থেকে। এই সময়ে বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সব ধরনের আর্থিক লেনদেন কার্যত বন্ধ ছিল। ব্যাংকগুলো ইতিমধ্যেই ক্ষতির কিছুটা আঁচ পেতে শুরু করেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ব্যাংকগুলো ইতিমধ্যেই ক্ষতির কিছুটা আঁচ পেতে শুরু করেছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকয় বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সব ধরনের আর্থিক লেনদেন কার্যত বন্ধ ছিল। অর্থ লেনদেন-সংক্রান্ত বার্তা আদান-প্রদানের বৈশ্বিক ব্যবস্থা হলো সুইফট।

সুইফট ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে কী ধরনের বিপদ হতে পারে, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রাশিয়া। বাংলাদেশে যেসব ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি করেন, তাঁদের নির্দিষ্ট সময়ে তার দাম মেটাতে হয়। এ কাজেই দরকার সুইফট ব্যবস্থা।

এদিকে এমন পরিস্থিতিতে দেশে প্রবাসী আয় আসা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় তা নেমে এসেছে অর্ধেকে। এটা দেশের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা। এসবের প্রভাবে চলতি জুলাই মাসে ২৭ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ১৫৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এর মধ্যে প্রথম ১৩ দিনে আসে ৯৭ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং ১৪ থেকে ২০ জুলাই ৭ দিনে আসে ৪৫ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আর পরের সপ্তাহ অর্থাৎ ২১ থেকে ২৭ জুলাই তা নেমে দাঁড়ায় ১৩ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ডলারে।

এ হিসাব অনুযায়ী জুলাইয়ের ২৭ দিনে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৫ কোটি ৪০ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪ ডলার। এটি আগের মাস জুনের চেয়ে কম। জুনে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। ওই মাসে প্রতিদিন প্রবাসী আয় ছিল ৮ কোটি ৪৭ লাখ ২১ হাজার ৬৬৬ মার্কিন ডলার।

আরও পড়ুন: শাটডাউনের ধাক্কায় কমেছে প্রবাসী আয়

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যার পর থেকে সারা দেশে পুরোদমে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের ফলে প্রবাসীরা কোনো রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেননি। এরই প্রভাব পড়ে পুরো মাসের প্রবাসী আয়ে।

দেশে দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলছে ডলার সংকট। পরিস্থিতির উন্নতি না হয়ে ধীরে ধীরে আরও অবনতি হচ্ছে। এরই মধ্যে যোগ হয়েছে প্রবাসীদের মধ্যে ‘রেমিটেন্স শাটডাউন’ এর ব্যাপক প্রচারণা। এর ফলে দেশের ব্যাংক খাত আরও সংকটে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের উপর নির্বিচার গুলিতে কয়েকশত নিরীহ মানুষের মৃত্যুর প্রতিবাদে দেশে রেমিটেন্স না পাঠানোর প্রচারণা শুরু হয়েছে। এতে সরকারের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহে দেশে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহে ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার ঘটনা এই আতঙ্ককে বাড়িয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতির সম্ভাব্য ভয়াবহতা টের পেয়েছে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকও। এরই মধ্যে ক্ষতি এড়ানোর উপায় ভাবতে শুরু করেছে তারা। প্রথম পর্যায়ে দেশের সব ব্যাংকে বর্তমানের চেয়ে কিছুটা বেশি দামে প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলার কেনার নির্দেশ দিয়েছে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে ব্যাংক খাত

আপডেট: ০৬:৪৯:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ব্যাংক বন্ধ ছিল। ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ায় টানা ছয় দিন ধরে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন ছিল সুইফট ব্যবস্থা থেকে। এই সময়ে বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সব ধরনের আর্থিক লেনদেন কার্যত বন্ধ ছিল। ব্যাংকগুলো ইতিমধ্যেই ক্ষতির কিছুটা আঁচ পেতে শুরু করেছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

ব্যাংকগুলো ইতিমধ্যেই ক্ষতির কিছুটা আঁচ পেতে শুরু করেছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকয় বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সব ধরনের আর্থিক লেনদেন কার্যত বন্ধ ছিল। অর্থ লেনদেন-সংক্রান্ত বার্তা আদান-প্রদানের বৈশ্বিক ব্যবস্থা হলো সুইফট।

সুইফট ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে কী ধরনের বিপদ হতে পারে, তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে রাশিয়া। বাংলাদেশে যেসব ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি করেন, তাঁদের নির্দিষ্ট সময়ে তার দাম মেটাতে হয়। এ কাজেই দরকার সুইফট ব্যবস্থা।

এদিকে এমন পরিস্থিতিতে দেশে প্রবাসী আয় আসা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় তা নেমে এসেছে অর্ধেকে। এটা দেশের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা। এসবের প্রভাবে চলতি জুলাই মাসে ২৭ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ১৫৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এর মধ্যে প্রথম ১৩ দিনে আসে ৯৭ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং ১৪ থেকে ২০ জুলাই ৭ দিনে আসে ৪৫ কোটি ৭০ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আর পরের সপ্তাহ অর্থাৎ ২১ থেকে ২৭ জুলাই তা নেমে দাঁড়ায় ১৩ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ডলারে।

এ হিসাব অনুযায়ী জুলাইয়ের ২৭ দিনে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৫ কোটি ৪০ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪ ডলার। এটি আগের মাস জুনের চেয়ে কম। জুনে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। ওই মাসে প্রতিদিন প্রবাসী আয় ছিল ৮ কোটি ৪৭ লাখ ২১ হাজার ৬৬৬ মার্কিন ডলার।

আরও পড়ুন: শাটডাউনের ধাক্কায় কমেছে প্রবাসী আয়

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৮ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যার পর থেকে সারা দেশে পুরোদমে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউটের ফলে প্রবাসীরা কোনো রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেননি। এরই প্রভাব পড়ে পুরো মাসের প্রবাসী আয়ে।

দেশে দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলছে ডলার সংকট। পরিস্থিতির উন্নতি না হয়ে ধীরে ধীরে আরও অবনতি হচ্ছে। এরই মধ্যে যোগ হয়েছে প্রবাসীদের মধ্যে ‘রেমিটেন্স শাটডাউন’ এর ব্যাপক প্রচারণা। এর ফলে দেশের ব্যাংক খাত আরও সংকটে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের উপর নির্বিচার গুলিতে কয়েকশত নিরীহ মানুষের মৃত্যুর প্রতিবাদে দেশে রেমিটেন্স না পাঠানোর প্রচারণা শুরু হয়েছে। এতে সরকারের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহে দেশে দেশে রেমিটেন্স প্রবাহে ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ার ঘটনা এই আতঙ্ককে বাড়িয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতির সম্ভাব্য ভয়াবহতা টের পেয়েছে খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকও। এরই মধ্যে ক্ষতি এড়ানোর উপায় ভাবতে শুরু করেছে তারা। প্রথম পর্যায়ে দেশের সব ব্যাংকে বর্তমানের চেয়ে কিছুটা বেশি দামে প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলার কেনার নির্দেশ দিয়েছে।

ঢাকা/এসএইচ