ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত এক মাসে কমেছে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা

- আপডেট: ০১:৪৬:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪
- / ১০৪৯৩ বার দেখা হয়েছে
দেশের ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে ব্যাপক ঋণ অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। আর এর নেতৃত্ব দিয়েছে ব্যাপক সমালোচিত চট্রগ্রামভিত্তিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। এতেই এসব ব্যাংকে গ্রাহকদের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। এর ফলে চলতি বছরের জুলাই মাসে এর আগের মাসের তুলনায় ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত ৩ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
তথ্য মতে, চলতি বছরের জুন শেষে দেশের পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত ছিল ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। আর পরের মাস জুলাইয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে ৩ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা।
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একদিকে আমানত কমছে আর অপরদিকে ঋণ বিতরণ বাড়ছে-এটা প্রমাণ করে ইসলামি ব্যাংকগুলোর অবস্থা ভাল না। তাদের আয় হচ্ছে কম আবার ব্যয় করছে বেশি। ব্যাংকগুলোতে সব সমস্যার মূলে হল সুশাসন। সুশাসনের অভাবে ইসলামি ব্যাংকগুলোতে এসব সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমানত কমা মানে এখানে মানুষের আস্থার অভাব আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৪ সালের জুন শেষে দেশের পূর্ণাঙ্গ ১০টি ইসলামি ব্যাংক, কয়েকটি প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামিক শাখা ও উইন্ডোগুলোর আমানতের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৪০ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা। আর এক মাস পর অর্থাৎ চলতি বছরের জুলাই শেষে ইসলামি ব্যাংক, প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামি শাখা ও উইন্ডোগুলোর আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত কমেছে ৩ হাজার ১৪ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: টানা চারদিন বন্ধ থাকবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান
আর প্রচলিত ব্যাংকগুলোর ইসলামিক উইন্ডোগুলোতে জুন শেষে আমানত ছিল ১৬ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। আর পরের মাস জুলাইয়ে ইসলামিক উইন্ডোগুলোর আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। সেই এক মাসে প্রচলিত ব্যাংকগুলোর ইসলামিক উইন্ডোগুলোতে আমানত বেড়েছে ৭৫৩ কোটি টাকা।
অপরদিকে, চলতি বছরের জুন শেষে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর ইসলামী ব্যাংকিং শাখাগুলোতে আমানত ছিল ২৫ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। পরে মাস জুলাইয়ে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর ইসলামী ব্যাংকিং শাখাগুলোতে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে আমানত কমেছে ১৩৮ কোটি টাকা।
এদিকে, ইসলামি ব্যাংকগুলো চলতি বছরের জুনের চেয়ে জুলাইয়ে ঋণ বিতরণ বেশি করেছে ১ হাজার ১০৭ কোটি টাকা।
তথ্য বলছে, জুন শেষে ইসলামি ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের স্থিতি ছিল ৫ লাখ ১৩ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। আর এক মাস পর জুলাইয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১৪ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ বেশি হয়েছে ১ হাজার ১০৭ কোটি টাকা।
এদিকে, আমাতের সাথে কমেছে ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আসা রপ্তানি আয়ও। প্রতিবেদন বলছে, চলতি বছরের জুন মাসে ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রপ্তানি আয় এসেছিল ৭ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। আর পরের মাস জুলাইয়ে রপ্তানি আয় এসেছে ৭ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে জুলাইয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রপ্তানি আয় কম এসেছে ২২৫ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুন শেষে শরীয়াহ ভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ১০ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা। আর পরের মাস জুলাইয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলো মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৭ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে জুলাইয়ে ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় কম এসেছে ২ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা।
ঢাকা/এসএইচ