০৪:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

এখনও অমিমাংসিত ৯৬’র শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির মামলা!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১২:১৫:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ১০৬৩৯ বার দেখা হয়েছে

বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ এস এফ রহমান এবং ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানদের বিরুদ্ধে ১৯৯৬ সালের শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির আলোচিত দুই মামলা বাতিল করেছিলেন হাইকোর্ট।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সেই বাতিলের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত সাত বছরেও এই দুই মামলার আপিল নিষ্পত্তি হয়নি। এই দুই মামলায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর হোল্ডিংস, ব্যক্তি হিসেবে এ এস এফ রহমান, সালমান এফ রহমান ছাড়াও এ বি সিদ্দিকুর রহমান ও ডি এইচ খান (মৃত) আসামি ছিলেন।

সালমান এফ রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হলে পলাতক থাকেন সালমান এফ রহমান। গত ১৩ আগস্ট ঢাকার সদরঘাটে নৌকায় করে পালানোর চেষ্টাকালে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে হত্যা মামলায় কয়েক দফা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ (রিমান্ড) করা হয়।

১৯৯৬ সালের শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৯৯৭ সালের ৪ মে বিএসইসি পক্ষ থেকে মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে মামলা দুটি করা হয়। মামলা হলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। পরে উচ্চ আদালত মামলার বিচার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ আরোপ করলে দুই মামলার বিচারকাজও থেমে যায়।

আরও পড়ুন: অবশেষে ডিএসই ও সিএসইর পর্ষদ নিয়োগ দিয়েছে বিএসইসি

২০১৫ সালে পুঁজিবাজারবিষয়ক মামলা নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়ার পর মামলা দুটি বিচারিক কার্যক্রমের জন্য সেখানে স্থানান্তর হয়ে আসে।

কিন্তু ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম শুরুর আগেই মামলা দুটি বাতিল করে দেন উচ্চ আদালত।

মামলা দুটি বাতিল হওয়ায় শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির দায় থেকে আসামিরা মুক্ত হয়ে যান। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এই মামলা দুটি বাতিল করেন। আদালতের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘কোয়াশড’।

উচ্চ আদালতের আদেশের পর বিচারিক আদালতে মামলা দুটির যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

মামলা দুটি বিচারের জন্য শেয়ারবাজারবিষয়ক মামলা নিষ্পত্তিতে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে তালিকাভুক্ত ছিল।

বিএসিইসির প্যানেল আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ মামলা দুটি বাতিলের রায় দেন। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স-১৯৬৯-এর ১৭ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু আইনের ওই ধারার সঙ্গে মামলার অভিযোগ সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় মামলা দুটি বাতিল করা হয় বলে রায়ে উল্লেখ করেন উচ্চ আদালত। পরে আদালতের সেই রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালতে পৌঁছে প্রায় দুই বছর পর, ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি। আর উচ্চ আদালতের মামলা বাতিলের আদেশ পেয়ে শেয়ারবাজারবিষয়ক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মামলা দুটির যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।

আলোচিত ১৯৯৬-এর শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য আমীরুল ইসলাম চৌধুরীর তদন্ত প্রতিবেদনে বেক্সিমকো ফার্মা সম্পর্কে বলা হয়, ’৯৬ সালের ৩০ জুন কম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৬৭ টাকা। একই বছরের ১৬ নভেম্বর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬৮ টাকায়। আর নভেম্বরের শেষে এসে বাজারে পতন শুরু হয়। তদন্ত কমিটির মতে, কম্পানিটির শেয়ার নিয়ে অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। যার সঙ্গে কিছু ব্রোকারস, কম্পানিটির বড় অঙ্কের শেয়ারধারী এবং কম্পানির কিছু কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন।

শাইনপুকুর হোল্ডিংস সম্পর্কে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ’৯৬ সালের ৩০ জুন কম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল মাত্র ৭৩ টাকা। একই বছরের ২৮ নভেম্বর তা বেড়ে সর্বোচ্চ ৭৫৪ টাকায় ওঠে। ’৯৬ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর সময়ে কম্পানিটির প্রায় ৫২ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়। শাইনপুকুরের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ছিল বেক্সিমকো ইনভেস্টমেন্ট কম্পানি, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ, সাতক্ষীরা ফিশারিজ, বাকখালী ফিশারিজ, মৃত্তিকা লিমিটেড এবং বেনামে বেক্সিমকো গ্রুপের কিছু কর্মকর্তা।

সাত বছর ধরে ঝুলছে আপিল

এদিকে সংশ্লিষ্ট একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাতিল হওয়া মামলা দুটি পুনরুজ্জীবিত করতে আপিলের সুযোগ রয়েছে। সে জন্য ২০১৭ সালে আপিলও করে বাদী বিএসইসি। এই দুটি মামলাসহ শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিসংক্রান্ত ১৭টি মামলা পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিএসইসির আইন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান চৌধুরী গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর একটি অফিস আদেশ জারি করে মামলাগুলোর শুনানির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর দেওয়া নোটিশে বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুরের মামলার হালনাগাদ তথ্যের সঙ্গে আইনজীবী এ এম মাছুমের নাম উল্লেখ করা আছে। বিষয়টি সম্পর্কে এই আইনজীবী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলা দুটি আমার কাছে ছিল। কিন্তু পরে ছেড়ে দিয়েছি। ফলে মামলার বর্তমান অবস্থা নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’

আরও পড়ুন: ইমাম বাটনের এমডি হাসিব হাসানকে এক কোটি টাকা জরিমানা

আরো যত মামলা

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার চার মাসের মাথায় শেয়ারবাজারে ভয়াবহ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। সে সময় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

১৯৯৬ সালের পর শেয়ারবাজারে আরেক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে ২০১০ সালে। এ দুই কেলেঙ্কারির ঘটনায় মোট ১৭টি মামলা করা হয়। ১৯৯৬ সালে জালিয়াতির মাধ্যমে শেয়ারের দাম হেরফের করার অভিযোগে ৩৮ ব্যক্তি, আটটি তালিকাভুক্ত কম্পানি এবং ছয়টি ব্রোকারেজ ফার্মের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা করে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

এখনও অমিমাংসিত ৯৬’র শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির মামলা!

আপডেট: ১২:১৫:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান এ এস এফ রহমান এবং ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানদের বিরুদ্ধে ১৯৯৬ সালের শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির আলোচিত দুই মামলা বাতিল করেছিলেন হাইকোর্ট।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সেই বাতিলের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত সাত বছরেও এই দুই মামলার আপিল নিষ্পত্তি হয়নি। এই দুই মামলায় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর হোল্ডিংস, ব্যক্তি হিসেবে এ এস এফ রহমান, সালমান এফ রহমান ছাড়াও এ বি সিদ্দিকুর রহমান ও ডি এইচ খান (মৃত) আসামি ছিলেন।

সালমান এফ রহমান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হলে পলাতক থাকেন সালমান এফ রহমান। গত ১৩ আগস্ট ঢাকার সদরঘাটে নৌকায় করে পালানোর চেষ্টাকালে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে হত্যা মামলায় কয়েক দফা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ (রিমান্ড) করা হয়।

১৯৯৬ সালের শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৯৯৭ সালের ৪ মে বিএসইসি পক্ষ থেকে মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে মামলা দুটি করা হয়। মামলা হলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। পরে উচ্চ আদালত মামলার বিচার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ আরোপ করলে দুই মামলার বিচারকাজও থেমে যায়।

আরও পড়ুন: অবশেষে ডিএসই ও সিএসইর পর্ষদ নিয়োগ দিয়েছে বিএসইসি

২০১৫ সালে পুঁজিবাজারবিষয়ক মামলা নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়ার পর মামলা দুটি বিচারিক কার্যক্রমের জন্য সেখানে স্থানান্তর হয়ে আসে।

কিন্তু ট্রাইব্যুনালে বিচার কার্যক্রম শুরুর আগেই মামলা দুটি বাতিল করে দেন উচ্চ আদালত।

মামলা দুটি বাতিল হওয়ায় শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির দায় থেকে আসামিরা মুক্ত হয়ে যান। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এই মামলা দুটি বাতিল করেন। আদালতের ভাষায় যাকে বলা হয় ‘কোয়াশড’।

উচ্চ আদালতের আদেশের পর বিচারিক আদালতে মামলা দুটির যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

মামলা দুটি বিচারের জন্য শেয়ারবাজারবিষয়ক মামলা নিষ্পত্তিতে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে তালিকাভুক্ত ছিল।

বিএসিইসির প্যানেল আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে, হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ মামলা দুটি বাতিলের রায় দেন। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স-১৯৬৯-এর ১৭ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু আইনের ওই ধারার সঙ্গে মামলার অভিযোগ সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় মামলা দুটি বাতিল করা হয় বলে রায়ে উল্লেখ করেন উচ্চ আদালত। পরে আদালতের সেই রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালতে পৌঁছে প্রায় দুই বছর পর, ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি। আর উচ্চ আদালতের মামলা বাতিলের আদেশ পেয়ে শেয়ারবাজারবিষয়ক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মামলা দুটির যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।

আলোচিত ১৯৯৬-এর শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য আমীরুল ইসলাম চৌধুরীর তদন্ত প্রতিবেদনে বেক্সিমকো ফার্মা সম্পর্কে বলা হয়, ’৯৬ সালের ৩০ জুন কম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৬৭ টাকা। একই বছরের ১৬ নভেম্বর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬৮ টাকায়। আর নভেম্বরের শেষে এসে বাজারে পতন শুরু হয়। তদন্ত কমিটির মতে, কম্পানিটির শেয়ার নিয়ে অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। যার সঙ্গে কিছু ব্রোকারস, কম্পানিটির বড় অঙ্কের শেয়ারধারী এবং কম্পানির কিছু কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন।

শাইনপুকুর হোল্ডিংস সম্পর্কে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ’৯৬ সালের ৩০ জুন কম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল মাত্র ৭৩ টাকা। একই বছরের ২৮ নভেম্বর তা বেড়ে সর্বোচ্চ ৭৫৪ টাকায় ওঠে। ’৯৬ সালের জুলাই থেকে নভেম্বর সময়ে কম্পানিটির প্রায় ৫২ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়। শাইনপুকুরের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ছিল বেক্সিমকো ইনভেস্টমেন্ট কম্পানি, নিউ ঢাকা ইন্ডাস্ট্রিজ, সাতক্ষীরা ফিশারিজ, বাকখালী ফিশারিজ, মৃত্তিকা লিমিটেড এবং বেনামে বেক্সিমকো গ্রুপের কিছু কর্মকর্তা।

সাত বছর ধরে ঝুলছে আপিল

এদিকে সংশ্লিষ্ট একাধিক আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাতিল হওয়া মামলা দুটি পুনরুজ্জীবিত করতে আপিলের সুযোগ রয়েছে। সে জন্য ২০১৭ সালে আপিলও করে বাদী বিএসইসি। এই দুটি মামলাসহ শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিসংক্রান্ত ১৭টি মামলা পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিএসইসির আইন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান চৌধুরী গত বছর ৪ সেপ্টেম্বর একটি অফিস আদেশ জারি করে মামলাগুলোর শুনানির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মাহবুবুর রহমান চৌধুরীর দেওয়া নোটিশে বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুরের মামলার হালনাগাদ তথ্যের সঙ্গে আইনজীবী এ এম মাছুমের নাম উল্লেখ করা আছে। বিষয়টি সম্পর্কে এই আইনজীবী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মামলা দুটি আমার কাছে ছিল। কিন্তু পরে ছেড়ে দিয়েছি। ফলে মামলার বর্তমান অবস্থা নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’

আরও পড়ুন: ইমাম বাটনের এমডি হাসিব হাসানকে এক কোটি টাকা জরিমানা

আরো যত মামলা

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার চার মাসের মাথায় শেয়ারবাজারে ভয়াবহ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। সে সময় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

১৯৯৬ সালের পর শেয়ারবাজারে আরেক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে ২০১০ সালে। এ দুই কেলেঙ্কারির ঘটনায় মোট ১৭টি মামলা করা হয়। ১৯৯৬ সালে জালিয়াতির মাধ্যমে শেয়ারের দাম হেরফের করার অভিযোগে ৩৮ ব্যক্তি, আটটি তালিকাভুক্ত কম্পানি এবং ছয়টি ব্রোকারেজ ফার্মের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা করে।

ঢাকা/এসএইচ