০৫:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে বছরের ব্যবধানে গ্রাহক বেড়েছে ১৪ লাখ

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০২:১৫:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫
  • / ১০২৭২ বার দেখা হয়েছে

ব্যাংকখাতের সংকটকালেও ডিজিটালের কারণে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এজেন্ট ব্যাংকিং। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই খাতের গ্রাহক, আমানত, ঋণ বিতরণ ও প্রবাসী আয়ের পরিমাণে গত এক বছরে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ২০২৪ সালের জুন মাস শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮টি। এক বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে ২০২৫ সালের জুনে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬ হাজার ২৩৬টিতে। অর্থাৎ এক বছরে নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়েছে প্রায় পৌনে ১৪ লাখ (১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৯৮), যা প্রবৃদ্ধির ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

একই সময়ে এ খাতে ঋণ বিতরণ ১৮ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৮ কোটি টাকায়। ফলে এক বছরে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা বা প্রায় ৫৫ শতাংশ।

প্রবাসী আয়েও বড় উল্লম্ফন দেখা গেছে। ২০২৪ সালের জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসী আয় ছিল ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩১২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুনে তা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৮ কোটি ১৫ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক বছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৫ হাজার ৫৭৫ কোটি ২১ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।

অন্যদিকে, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আমানত ২০২৪ সালের জুনের ৪০ হাজার ৭৩ কোটি টাকা থেকে বেড়ে গত জুনে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৬০৫ কোটি ২৭ লাখ টাকায়। অর্থাৎ আমানত বেড়েছে ৫ হাজার ৫৩২ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

তবে গ্রাহক ও লেনদেনে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হলেও এজেন্ট ও আউটলেটের সংখ্যা কমেছে। গত এক বছরে এজেন্ট কমেছে ৬১৮টি এবং আউটলেট কমেছে ৯১৬টি। বর্তমানে সক্রিয় এজেন্টের সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৭৩ এবং আউটলেট ২০ হাজার ৫৭৭টি।

আরও পড়ুন: এলডিসি উত্তরণে দাম বাড়তে পারে ওষুধ-সফটওয়্যারসহ বিভিন্ন পণ্যে

শীর্ষ অবস্থানে ইসলামী ব্যাংক

প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এককভাবে শীর্ষে রয়েছে। ২০২৫ সালের এপ্রিল-জুন সময়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোট রেমিট্যান্সের ৫৫.০৮ শতাংশ (১ লাখ ১ হাজার ২৮২ কোটি টাকা) সংগ্রহ করেছে ব্যাংকটি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক (৫১ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা) এবং তৃতীয় স্থানে ব্যাংক এশিয়া (১৪ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা)।

এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের রেকর্ড ভাঙা কেবল পরিসংখ্যান নয় বরং এটি প্রান্তিক অঞ্চলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিপ্লব। বিশেষ করে প্রবাসী আয় বিতরণে এজেন্ট ব্যাংকিং এখন অন্যতম প্রধান চ্যানেলে পরিণত হয়েছে।

এর আগে ২০১৩ সালে চালু হওয়া এজেন্ট ব্যাংকিং বর্তমানে দেশের গ্রামীণ ও ব্যাংকবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কাছে সহজলভ্য আর্থিক সেবার নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবাসী আয়ের প্রবাহ, ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ ও গ্রামীণ জনগণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এটি এখন কার্যকর বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে বছরের ব্যবধানে গ্রাহক বেড়েছে ১৪ লাখ

আপডেট: ০২:১৫:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৫

ব্যাংকখাতের সংকটকালেও ডিজিটালের কারণে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এজেন্ট ব্যাংকিং। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই খাতের গ্রাহক, আমানত, ঋণ বিতরণ ও প্রবাসী আয়ের পরিমাণে গত এক বছরে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হয়েছে।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ২০২৪ সালের জুন মাস শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ৫৩৮টি। এক বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে ২০২৫ সালের জুনে দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬ হাজার ২৩৬টিতে। অর্থাৎ এক বছরে নতুন গ্রাহক যুক্ত হয়েছে প্রায় পৌনে ১৪ লাখ (১৩ লাখ ৭১ হাজার ৬৯৮), যা প্রবৃদ্ধির ৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

একই সময়ে এ খাতে ঋণ বিতরণ ১৮ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৮ কোটি টাকায়। ফলে এক বছরে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা বা প্রায় ৫৫ শতাংশ।

প্রবাসী আয়েও বড় উল্লম্ফন দেখা গেছে। ২০২৪ সালের জুন শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রবাসী আয় ছিল ১ লাখ ৫৮ হাজার ৩১২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। চলতি বছরের জুনে তা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৮ কোটি ১৫ লাখ টাকায়। অর্থাৎ এক বছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ২৫ হাজার ৫৭৫ কোটি ২১ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।

অন্যদিকে, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের আমানত ২০২৪ সালের জুনের ৪০ হাজার ৭৩ কোটি টাকা থেকে বেড়ে গত জুনে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৬০৫ কোটি ২৭ লাখ টাকায়। অর্থাৎ আমানত বেড়েছে ৫ হাজার ৫৩২ কোটি ২৭ লাখ টাকা।

তবে গ্রাহক ও লেনদেনে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি হলেও এজেন্ট ও আউটলেটের সংখ্যা কমেছে। গত এক বছরে এজেন্ট কমেছে ৬১৮টি এবং আউটলেট কমেছে ৯১৬টি। বর্তমানে সক্রিয় এজেন্টের সংখ্যা ১৫ হাজার ৩৭৩ এবং আউটলেট ২০ হাজার ৫৭৭টি।

আরও পড়ুন: এলডিসি উত্তরণে দাম বাড়তে পারে ওষুধ-সফটওয়্যারসহ বিভিন্ন পণ্যে

শীর্ষ অবস্থানে ইসলামী ব্যাংক

প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি এককভাবে শীর্ষে রয়েছে। ২০২৫ সালের এপ্রিল-জুন সময়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোট রেমিট্যান্সের ৫৫.০৮ শতাংশ (১ লাখ ১ হাজার ২৮২ কোটি টাকা) সংগ্রহ করেছে ব্যাংকটি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক (৫১ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা) এবং তৃতীয় স্থানে ব্যাংক এশিয়া (১৪ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা)।

এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের রেকর্ড ভাঙা কেবল পরিসংখ্যান নয় বরং এটি প্রান্তিক অঞ্চলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিপ্লব। বিশেষ করে প্রবাসী আয় বিতরণে এজেন্ট ব্যাংকিং এখন অন্যতম প্রধান চ্যানেলে পরিণত হয়েছে।

এর আগে ২০১৩ সালে চালু হওয়া এজেন্ট ব্যাংকিং বর্তমানে দেশের গ্রামীণ ও ব্যাংকবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কাছে সহজলভ্য আর্থিক সেবার নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবাসী আয়ের প্রবাহ, ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ ও গ্রামীণ জনগণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এটি এখন কার্যকর বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

ঢাকা/এসএইচ