কিশোর-কিশোরীদের জন্য মেটার এআই চ্যাটবট নীতিতে পরিবর্তন

- আপডেট: ১২:১৯:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ১০১৮৩ বার দেখা হয়েছে
মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট মেটা কিশোর-কিশোরীদের অনলাইনে নিরাপদ রাখতে তাদের এআই চ্যাটবট ব্যবহারে নতুন নীতি গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি শিশু ও কিশোরদের মধ্যে এ ধরনের প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দেওয়ায় এ পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে মেটার এই উদ্যোগকে ঘিরেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে মার্কিন সেনেটের বিচার বিভাগীয় কমিটি।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
মেটা জানিয়েছে, তাদের এআই চ্যাটবট এখন থেকে ১৮ বছরের নিচের ব্যবহারকারীদের সঙ্গে সীমিত আকারে কথোপকথন করবে। চ্যাটবট ব্যবহারকারীদের প্রশ্নের উত্তর দেবে কেবল নির্দিষ্ট ও শিক্ষামূলক বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে। স্বাস্থ্য, মানসিক চাপ, সম্পর্ক কিংবা ব্যক্তিগত তথ্যসংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন এলে বট ব্যবহারকারীদের নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইটে পাঠাবে অথবা অভিভাবক কিংবা শিক্ষকের সাহায্য নিতে উৎসাহিত করবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিশোর-কিশোরীরা কৌতূহলবশত বিভিন্ন স্পর্শকাতর বা ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্য নিতে পারে। কিন্তু সঠিকভাবে ফিল্টার না করা হলে তারা ভুল তথ্য পেতে পারে। যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণেই দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের অভিভাবক, গবেষক ও নীতিনির্ধারকরা টেক কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ দিচ্ছিলেন।
এ প্রেক্ষাপটেই সম্প্রতি মার্কিন সেনেট তদন্ত শুরু করেছে। আইনপ্রণেতারা বলছেন, মেটার মতো বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো কেবল লাভের কথা চিন্তা করে চলতে পারে না। তাদের শিশু-কিশোর ব্যবহারকারীদের সুরক্ষার দায়িত্বও নিতে হবে। তদন্তে খতিয়ে দেখা হবে, মেটার নতুন নীতি বাস্তবে কতটা কার্যকর এবং তা শিশুদের জন্য অনলাইন নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত করছে।
সেনেট সদস্যরা বিশেষভাবে জানতে চাইছেন, মেটা কীভাবে ব্যবহারকারীদের বয়স যাচাই করছে এবং কিশোর-কিশোরীদের জন্য কন্টেন্ট ফিল্টার কীভাবে কার্যকর করছে। পাশাপাশি শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্য এআই সিস্টেমে কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এআই উন্নয়নে ২ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ বিক্রি করবে মেটা
এদিকে শিশু অধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো বলছে, কেবল নীতি পরিবর্তন যথেষ্ট নয়। তারা চাইছে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে মেটাকে নিয়মিতভাবে রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে এবং কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষায় স্বতন্ত্র পর্যবেক্ষণ সংস্থা গঠনের আহ্বান জানাতে হবে।
মেটার এক মুখপাত্র জানান, “আমরা চাই কিশোর-কিশোরীরা নিরাপদে প্রযুক্তি ব্যবহার করুক। আমাদের এআই চ্যাটবট এখন আর ব্যক্তিগত বা স্পর্শকাতর কোনো বিষয়ে পরামর্শ দেবে না। বরং তারা নির্ভরযোগ্য উৎসে তথ্য খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।”
বিশ্লেষকদের মতে, কিশোরদের অনলাইন নিরাপত্তা এখন বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর শিশুদের সুরক্ষায় নতুন আইন ও বিধিনিষেধ আরোপের দাবি উঠছে। ফলে মেটার নতুন নীতি শুধু একটি কোম্পানির উদ্যোগ নয়, বরং পুরো প্রযুক্তি খাতের জন্য বড় বার্তা বহন করছে।
ঢাকা/এসএইচ