কুসিক নির্বাচন: আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে ৯ জনের কারাদণ্ড

- আপডেট: ০৩:০৭:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুন ২০২২
- / ১০৩৫৪ বার দেখা হয়েছে
বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গ, স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম প্রভাবিত করা এবং বহিরাগত হিসেবে ভোটকেন্দ্র এলাকায় প্রবেশ করার দায়ে ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার সকাল ৮টায় ভোট শুরুর পর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পাঁচ ঘণ্টায় পৃথক এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঠানো পৃথক পৃথক ক্ষুদে বার্তা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, বজ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশ থেকে দুই বহিরাগতকে গ্রেপ্তার করে সাতদিনের জেল প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজা মতিন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শুভাশিষ ঘোষ আরেকজন বহিরাগতকে তিনদিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়া ফরিদা বিদ্যায়তন কেন্দ্র থেকে তিন বহিরাগতকে তিনদিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল রানা।
স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে ২৩ নং ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে নির্বাচনী কার্যক্রম প্রভাবিত করার অপরাধে কে এম দিদার হোসেন (২৮) নামের এক ব্যক্তিকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান। ৩ নং ওয়ার্ডের পিটিআই কেন্দ্রে আচরণ বিধিমালা ভঙ্গ করার দায়ে দুইজনকে তিন মাস করে কারাদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহুল চন্দ।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ভোটকেন্দ্রে কেউ কোনো অনিয়ম কিংবা সহিংসতার চেষ্টা করলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শেষ করতে আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে কাজ করছি। আশা করি, বাকি সময়টুকুও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শেষ করতে পারব।
প্রথম পাঁচ ঘণ্টায় বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে ভোটগ্রহণে ইভিএমের ধীরগতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরপর রিটার্নিং অফিসার শাহেদুন্নবী চৌধুরী জানিয়েছেন, ভোটকেন্দ্রে যতক্ষণ ভোটার থাকবে ততক্ষণ ভোটগ্রহণ করা হবে।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ধীরগতির বিষয়টা হচ্ছে, এখানে একজন ভোটার কিন্তু তিনটা ব্যালটে ভোট দেন। তারা ভোট দেয়ার আগে চিন্তা করতে সময় নেন। তাছাড়া এবারই প্রথমবার ইভিএমে ভোট দিচ্ছেন। এসব কারণে কিছুটা সময় লাগতে পারে।
নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি ভোটকেন্দ্রে ৬৪০টি বুথে ভোট হচ্ছে ইভিএমে। এ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। এর মধ্যে নারী ১ লাখ ১৭ হাজার ৯২ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার দুইজন।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের এটি তৃতীয় নির্বাচন। এবারই কুমিল্লায় প্রথম ইভিএমে ভোট হচ্ছে। এর আগে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সিটির দ্বিতীয় নির্বাচন হয় ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন প্রার্থী। তাদের মধ্যে আলোচনায় বেশি আওয়ামী লীগের আরফানুল হক রিফাত (নৌকা প্রতীক) এবং গত দুইবারের মেয়র স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর (টেবিল ঘড়ি প্রতীক) নাম। এই দুজনের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্য তিনজন হলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাশেদুল ইসলাম (হাত পাখা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন (ঘোড়া) ও কামরুল আহসান (হরিণ)। এরমধ্যে মনিরুল হক বিএনপির এবং নিজামউদ্দিন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ছিলেন। বিএনপির সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাদের দুজনকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৬ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন প্রার্থী লড়াই করছেন।
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ব্যাপক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে প্রশাসন। নির্বাচনে ১০৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৭৫টি তল্লাশিচৌকি, ১০৫টি মোবাইল টিম, ১২ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ৩০টি টিম, ৫২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশের ৩ হাজার ৬০৮ জন সদস্য মাঠে রয়েছেন।
নির্বাচনে ইভিএমে কোনো ধরনের যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে মেরামতের জন্য রয়েছেন ৩৫ জন। ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের সারিতে একটি করে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। প্রতি বুথে (কক্ষে) একটি করে মোট ৬৪০টি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। ভোট কক্ষের ভেতরে কোনো এজেন্ট কোনো ভোটারকে তার পছন্দের প্রতীকে ভোটদানে প্রভাবিত করলে তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/এসএ