০১:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় মোখায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যেসব জেলা!

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৭:০৮:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩
  • / ১০৩১৮ বার দেখা হয়েছে

ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‌‘মোখা’। দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী এলাকা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ মে) বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ এ তথ্য জানান।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক এ গবেষক বলেন, আজ সারাদিন বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন অংশের সমুদ্র পৃষ্ঠে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পানির গভীরতা, উলম্ব বায়ু শিয়ারের মান, ভারত উপমহাদেশের ওপর জেটস্ট্রিমের অবস্থা ও চলার গতির তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সেই বিশ্লেষণের সঙ্গে বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাসের সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছি। উপরোক্ত তথ্য ও আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাসের আলোকে আমি আশঙ্কা করছি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা আগামী রোববার (১৪ মে) সকাল ৬টার পর থেকে ১৫ মে সকাল ৬টার মধ্যে অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার ওপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করবে।

ঘূর্ণিঝড় মোখার একটি ছবির বর্ণনা দিয়ে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গবেষক জানান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেল হতে প্রাপ্ত ঘূর্ণিঝড় মোখার ৫১টি সম্ভব্য যাত্রাপথ ও বাতাসের গতিবেগের চিত্র ওই ছবিতে দেখানো হয়েছে। এটিকে আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় এসেম্বল আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলা হয়।

স্থলভাগে আঘাতের স্থানটি নিয়ে এখনো সামান্য পরিমাণ অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। যে কারণে ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমারের দিকে কিংবা বরিশাল বিভাগের দিকে সামান্য পরিমাণ ঝুঁকে পড়তে পারে। অর্থাৎ, ঘূর্ণিঝড়টির চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার কিছু সম্ভাবনা রয়েছে। একইভাবে ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা ডান দিকে সরে গিয়ে কক্সবাজার ও মায়ানমারে রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করার কিছু সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন: মসজিদের সামনে কার্টন নবজাতকের লাশ-চিঠি, সঙ্গে টাকা

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা যে অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘণ্টায় প্রায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে পূর্ব বঙ্গোপসাগর উপকূলে আঘাত করতে যাচ্ছে এই বিষয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত আবহাওয়া পূর্বাভাসের ওপর আমি পূর্ণ আস্থা রাখছি। এই ঘূর্ণিঝড়টি যে খুবই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হবে সেই আশঙ্কার কথা আগেও বলা হয়েছে৷

সম্ভব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে কত ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে? এর জবাবে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলের ওপর দিয়ে ঝড়টি অতিক্রম করার সময় এ দুই জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ৭ থেকে ১০ ফুট ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো ৫ থেকে ৮ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টির কারণে দেশের কোন এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে গবেষক জানান, আমি আশঙ্কা করছি যে ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্র কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপ, টেকনাফ, কুতুবদিয়া, ও মহেশখালী উপজেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার কথা। সম্ভাব্য এ ঘূর্ণিঝড়টি টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোর ওপর দিয়ে অতিক্রম করারও আশঙ্কা প্রবল।

সম্ভাব্য এ ঝড়ের প্রভাবে দেশের কোন বিভাগে কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ২৫০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার, বরিশাল বিভাগ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোর ওপর ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করছি। এছাড়া খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার; ঢাকা ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতে ১০০ থেকে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ঢাকা/এসএম

শেয়ার করুন

x

ঘূর্ণিঝড় মোখায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যেসব জেলা!

আপডেট: ০৭:০৮:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩

ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‌‘মোখা’। দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী এলাকা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ মে) বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ এ তথ্য জানান।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক এ গবেষক বলেন, আজ সারাদিন বঙ্গোপসাগরের বিভিন্ন অংশের সমুদ্র পৃষ্ঠে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পানির গভীরতা, উলম্ব বায়ু শিয়ারের মান, ভারত উপমহাদেশের ওপর জেটস্ট্রিমের অবস্থা ও চলার গতির তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। সেই বিশ্লেষণের সঙ্গে বিভিন্ন আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাসের সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছি। উপরোক্ত তথ্য ও আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাসের আলোকে আমি আশঙ্কা করছি বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা আগামী রোববার (১৪ মে) সকাল ৬টার পর থেকে ১৫ মে সকাল ৬টার মধ্যে অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার ওপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করবে।

ঘূর্ণিঝড় মোখার একটি ছবির বর্ণনা দিয়ে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গবেষক জানান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেল হতে প্রাপ্ত ঘূর্ণিঝড় মোখার ৫১টি সম্ভব্য যাত্রাপথ ও বাতাসের গতিবেগের চিত্র ওই ছবিতে দেখানো হয়েছে। এটিকে আবহাওয়া বিজ্ঞানের ভাষায় এসেম্বল আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলা হয়।

স্থলভাগে আঘাতের স্থানটি নিয়ে এখনো সামান্য পরিমাণ অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। যে কারণে ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমারের দিকে কিংবা বরিশাল বিভাগের দিকে সামান্য পরিমাণ ঝুঁকে পড়তে পারে। অর্থাৎ, ঘূর্ণিঝড়টির চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার কিছু সম্ভাবনা রয়েছে। একইভাবে ঘূর্ণিঝড়টি কিছুটা ডান দিকে সরে গিয়ে কক্সবাজার ও মায়ানমারে রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করার কিছু সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও পড়ুন: মসজিদের সামনে কার্টন নবজাতকের লাশ-চিঠি, সঙ্গে টাকা

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা যে অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘণ্টায় প্রায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে পূর্ব বঙ্গোপসাগর উপকূলে আঘাত করতে যাচ্ছে এই বিষয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল হতে প্রাপ্ত আবহাওয়া পূর্বাভাসের ওপর আমি পূর্ণ আস্থা রাখছি। এই ঘূর্ণিঝড়টি যে খুবই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হবে সেই আশঙ্কার কথা আগেও বলা হয়েছে৷

সম্ভব্য এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে কত ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে? এর জবাবে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলের ওপর দিয়ে ঝড়টি অতিক্রম করার সময় এ দুই জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ৭ থেকে ১০ ফুট ও খুলনা বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলো ৫ থেকে ৮ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টির কারণে দেশের কোন এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে গবেষক জানান, আমি আশঙ্কা করছি যে ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্র কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপ, টেকনাফ, কুতুবদিয়া, ও মহেশখালী উপজেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার কথা। সম্ভাব্য এ ঘূর্ণিঝড়টি টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোর ওপর দিয়ে অতিক্রম করারও আশঙ্কা প্রবল।

সম্ভাব্য এ ঝড়ের প্রভাবে দেশের কোন বিভাগে কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ২৫০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার, বরিশাল বিভাগ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোর ওপর ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা করছি। এছাড়া খুলনা বিভাগের জেলাগুলোতে ১৫০ থেকে ২৫০ মিলিমিটার; ঢাকা ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে ১০০ থেকে ২০০ মিলিমিটার, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে ৫০ থেকে ১০০ মিলিমিটার ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতে ১০০ থেকে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ঢাকা/এসএম