০৮:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চার মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৩১ হাজার কোটি টাকা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৩০:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১০৩২২ বার দেখা হয়েছে

বৈশ্বিক মন্দা কিংবা দেশে চলমান নানা সংকটের প্রভাব থেকে বের হতে পারছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) আয়কর, মূসক বা ভ্যাট ও শুল্ক আদায়ে ঘাটতি বেড়েই চলছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩০ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রবৃদ্ধি যথারীতি ঋণাত্মক (-১.০৩ শতাংশ)। যেখানে প্রথম তিন মাসে তিন বিভাগে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ২৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ১১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। যার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ২৮১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এ সময়ে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ৩০ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গনমাধ্যমকে বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশ সবচেয়ে সংকট সময় অতিক্রম করছে। সরকার পরিবর্তনের পরও আবার ব্যবসা–বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। যে কারণে কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় করা যায়নি। সংকট ধীরে ধীরে কেটে যাবে আশা করছি।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, তিন মাসের মধ্যে অর্থবছরের জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ২০ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম মাসেই রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয় পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি। পরের মাস আগস্ট ও সেপ্টেম্বরেও প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা করে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে।

আরও পড়ুন: সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ২৪.৩ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি

আর সর্বশেষ অক্টোবর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৭২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ঘাটতি ৮ হাজার ৫৪১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি মাত্র দশমিক ৮৪ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি মাসেই রাজস্ব আদায় থেকে পিছিয়ে পড়ছে এনবিআর।

খাত ভিত্তিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা যায়, প্রথম চার মাসে আয়কর খাতেই ঘাটতি হয়েছে ১৩ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। এই খাতে আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৪৫ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। এ সময়ে আদায় হয়েছে ৩১ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১.৭৮ শতাংশ।

অন্যদিকে আমদানি-রপ্তানি খাতে চার মাসে ৩৯ হাজার ৬৩২ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এই খাতে ঘাটতি হয়েছে ৬ হাজার ৯৬০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ০.৮৩ শতাংশ।

গত জুলাই-অক্টোবরে ভ্যাট বা মূসক আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ১০ হাজার ৫০৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ওই সময়ে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৩৬ হাজার ৭২৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এ সময়ে এই খাতের লক্ষ্য ছিল ৪৭ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। এই খাতে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ৪.৮৮ শতাংশ।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাজেটে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে। যা জিডিপির ৯.৭ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। আর অন্যান্য উৎস হতে ৬১ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আয়কর, মুনাফা ও মূলধনের ওপর কর থেকে আসবে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, ভ্যাট থেকে ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৮৩ কোটি, সম্পূরক শুল্ক ৬৪ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা, ৪৯ হাজার ৪৬৪ কোটি, রপ্তানি শুল্ক ৭০ কোটি, ৫ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা ও অন্যান্য কর থেকে আসবে ১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।

ঢাকা/এসএইচ

ট্যাগঃ

শেয়ার করুন

চার মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৩১ হাজার কোটি টাকা

আপডেট: ১০:৩০:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বৈশ্বিক মন্দা কিংবা দেশে চলমান নানা সংকটের প্রভাব থেকে বের হতে পারছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) আয়কর, মূসক বা ভ্যাট ও শুল্ক আদায়ে ঘাটতি বেড়েই চলছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩০ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রবৃদ্ধি যথারীতি ঋণাত্মক (-১.০৩ শতাংশ)। যেখানে প্রথম তিন মাসে তিন বিভাগে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ২৫ হাজার ৫৯৭ কোটি টাকা।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ১১৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। যার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ২৮১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এ সময়ে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ৩০ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গনমাধ্যমকে বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশ সবচেয়ে সংকট সময় অতিক্রম করছে। সরকার পরিবর্তনের পরও আবার ব্যবসা–বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। যে কারণে কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় করা যায়নি। সংকট ধীরে ধীরে কেটে যাবে আশা করছি।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, তিন মাসের মধ্যে অর্থবছরের জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ২০ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম মাসেই রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয় পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি। পরের মাস আগস্ট ও সেপ্টেম্বরেও প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা করে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে।

আরও পড়ুন: সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে ২৪.৩ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি

আর সর্বশেষ অক্টোবর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৭২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ঘাটতি ৮ হাজার ৫৪১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি মাত্র দশমিক ৮৪ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি মাসেই রাজস্ব আদায় থেকে পিছিয়ে পড়ছে এনবিআর।

খাত ভিত্তিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা যায়, প্রথম চার মাসে আয়কর খাতেই ঘাটতি হয়েছে ১৩ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। এই খাতে আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৪৫ হাজার ২৪৩ কোটি টাকা। এ সময়ে আদায় হয়েছে ৩১ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১.৭৮ শতাংশ।

অন্যদিকে আমদানি-রপ্তানি খাতে চার মাসে ৩৯ হাজার ৬৩২ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এই খাতে ঘাটতি হয়েছে ৬ হাজার ৯৬০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ০.৮৩ শতাংশ।

গত জুলাই-অক্টোবরে ভ্যাট বা মূসক আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ১০ হাজার ৫০৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ওই সময়ে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৩৬ হাজার ৭২৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এ সময়ে এই খাতের লক্ষ্য ছিল ৪৭ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। এই খাতে প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ৪.৮৮ শতাংশ।

চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের বাজেটে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় প্রাক্কলন করা হয়েছে। যা জিডিপির ৯.৭ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। আর অন্যান্য উৎস হতে ৬১ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আয়কর, মুনাফা ও মূলধনের ওপর কর থেকে আসবে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, ভ্যাট থেকে ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৮৩ কোটি, সম্পূরক শুল্ক ৬৪ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা, ৪৯ হাজার ৪৬৪ কোটি, রপ্তানি শুল্ক ৭০ কোটি, ৫ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা ও অন্যান্য কর থেকে আসবে ১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।

ঢাকা/এসএইচ