ঢাকায় আসছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী

- আপডেট: ০৪:১০:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২
- / ১০৩৪৯ বার দেখা হয়েছে
বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক: প্রথমবারের মতো ঢাকায় আসছেন রাশিয়ার কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের ঢাকা সফর নিয়ে কূটনৈতিক মহলে নানা কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়া বৈশ্বিকভাবে চাপে থাকলেও দেশটির সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণে বাংলাদেশ রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।
অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুক–টুইটার–লিংকডইন–ইন্সটাগ্রাম–ইউটিউব
ভারত মহাসাগরের উপকূলীয় দেশগুলোর সহযোগিতা সংস্থা ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে যোগ দিতে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা আসছেন। রাশিয়া আইওআরএ-এর সদস্য না হলেও পর্যবেক্ষক হিসেবে যোগ দিচ্ছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আইওআরএ-এর সম্মেলনে যোগ দিলেও এই সফর অনেকটা দ্বিপক্ষীয় সফরের মতোই গুরুত্ব পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ঢাবির অবদান স্মরণীয়: প্রধানমন্ত্রী
সূত্র জানায়, সের্গেই ল্যাভরভের ঢাকা সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হতে পারে।
রূপপুর পরমাণু প্রকল্প: বাংলাদেশে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করছে রাশিয়া। তবে ইউক্রেন সংঘাত ঘিরে রাশিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে এই প্রকল্পের আর্থিক লেনদেনে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকল্পটি ঝুলে যাবে কি না এমন আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। যদিও রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সময় মতোই রূপপুর প্রকল্প শেষ হবে। তবে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে রূপপুর প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা গুরুত্ব পাবে।
রোহিঙ্গা সঙ্কট: রোহিঙ্গা সঙ্কটে বন্ধু দেশ হিসেবে রাশিয়াকে পাশে পেতে চায় বাংলাদেশ। এই সঙ্কটের শুরু থেকেই বাংলাদেশ রাশিয়ার কাছে বিষয়টি উত্থাপন করে আসছে। বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাশিয়া যেন বাংলাদেশের পক্ষে থাকে, সেই আহ্বান জানানো হয়। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে রোহিঙ্গা ইস্যুটি উত্থাপন করা হবে।
জ্বালানি তেল আমদানি: ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে জ্বালানির বৈশ্বিক সংকট তৈরি হওয়ায় রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনতে আগ্রহী বাংলাদেশ। রাশিয়া থেকে সরাসরি তেল ক্রয়ে নানা বাধা থাকলেও প্রয়োজনে তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ তা সংগ্রহ করতে চায়। এ নিয়ে বাংলাদেশ নানা উপায়ও খুঁজছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে বিষয় আলোচনায় উঠতে পারে।
খাদ্যশস্য- সার আমদানি: রাশিয়ার কাছ থেকে খাদ্যশস্য বিশেষ করে গম আমদানি করে থাকে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে দেশটি থেকে বিপুল পরিমাণ সার আমদানি করা হয়। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে গম ও সার আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নতুন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার কাছ থেকে কীভাবে গম ও সার আনা যায় সেটা আলোচনা হতে পারে।
বৈশ্বিক রাজনীতি: ঢাকা-মস্কোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধি ও ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে বৈশ্বিক রাজনীতি নিয়েও আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাশিয়ার ওপর থেকে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি তুলেছে। আর যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশেরও শক্তিশালী সমর্থন পেতে চায় রাশিয়া। এছাড়া আঞ্চলিক ও ভৌগোলিক রাজনীতি নিয়েও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে আলোচনা হতে পারে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা রাশিয়াকে আরো কাছে পেতে চাই। সে বিষয়টি তুলবো। তিনি বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশে রাশিয়ার রূপপুরসহ বিভিন্ন প্রকল্পগুলোতে কোনো প্রভাব না পড়ে তা নিয়েও আলোচনা হবে বলে আমরা আশা করি। জ্বালানি ও খাদ্যশস্য সরবরাহ নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান চেয়ার বাংলাদেশ। ২৩ সদস্য দেশের এই সংস্থার মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন আগামী ২৩- ২৪ নভেম্বর ঢাকায় শুরু হচ্ছে। এতে যোগ দিতে আসছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ঢাকা/টিএ