০৬:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

তিন ব্রোকারহাউজের কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে বিএসইসির তদন্ত কমিটি

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ১০:৩৮:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১০৬৫৯ বার দেখা হয়েছে

ফাইল ফটো

পুঁজিবাজারের সদস্য তিনটি ব্রোকারেজহাউজের কার্যক্রমে অসঙ্গতি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিটিকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সম্প্রতি বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ‌্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসির সার্বিক নজরদারিতে থাকা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মধ্যে পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেড (ডিএসই ট্রেক নং- ৭৯), প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড (ডিএসই ট্রেক নং- ২৩৬) এবং শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের (ডিএসই ট্রেক নং- ৩) কার্যক্রম খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।

এর ধারাবাহিকতায় বিএসইসির জারি করা আদেশ সংশ্লিষ্ট এই তিন ব্রোকারেজ হাউজের ব‌্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।

আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেড, প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করা প্রয়োজন। তাই, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ আইন- ২০২০ এর বিধি ১৭ এবং সিকিউরিটিজ অ‌্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত) বিধিমালা, ২০০০ এর বিধি ১৫ ও ১৬-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন ৩ কর্মকর্তাকে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কার্যক্রম তদন্ত করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হলো।

আরও পড়ুন: নতুন বিনিয়োগে যাচ্ছে বিএটিবিসি

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মো. ওহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মো. মতিউর রহমান এবং সহকারী পরিচালক মো. সাগর ইসলাম। পরিদর্শক কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন এবং পরিদর্শন প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেবেন বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটি যেসব বিষয় খতিয়ে দেখবেন

তিন ব্রোকারেজ হাউজের মার্জিন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেগেটিভ ইক্যুইটিসহ বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, প্রকৃত নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ, প্রভিশনস, প্রভিশনসের ঘাটতি, মার্জিন অ্যাকাউন্টে অনুমতিবিহীন লেনদেন ও এর কারণ এবং ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ কেন বাড়ছে ও এর জন্য কারা দায়ী?

ব্রোকারেজ হাউজগুলো কেন আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশনস বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে? ব্রোকারেজ হাউজগুলো কোন কোন ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করছে?

২০১৬ সাল থেকে একাধিকবার সময় চেয়েও ব্রোকাররেজ হাউজগুলো কেন আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশনস বজায় রাখতে ব্যার্থ হচ্ছে?

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্য কোনো প্রাসঙ্গিক সমস্যা থাকেলে, সেটাও চিহ্নিত করবে তদন্ত কমিটি।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিগত হাসিনা সরকারের বহুমুখী আর্থিক অনিয়মে জর্জরিত পুঁজিবাজরের সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। বিগত সরকারের আমলে আইন লঙ্ঘন করা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে ১৮ আগস্ট গঠিত খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।

এর ধারাবাহিকতায় তদন্ত কমিটি ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মার্জিন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেগেটিভ ইক্যুইটিসহ বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেতিবাচক ইক্যুইটি কেন বাড়ছে ও এর জন‌্য কারা দায়ী, নেতিবাচক ইক্যুইটির পরিমাণ, প্রভিশনস বা মার্জিন অ্যাকাউন্টের বিপরীতে রক্ষিত তহবিল, প্রভিশনসের ঘাটতি, মার্জিন অ্যাকাউন্টে অননুমোদিত লেনদেনসহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখবে।

তদন্তের চিঠি পাওয়া ও এ সংক্রান্ত বিষয়ে মতামতের জন্য ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সাথে  যোগাযোগ কার হলে, পিএফআই সিকিউরিটিজের এমডি কাজী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের এমডি সাজেদুল ইসলাম চিঠির বিষয় নিশ্চিত করলেও তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি। এছাড়া প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডির মোবাইলে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম গণমাধ্যমেকে বলেছেন, ব্রোকারেজ হাউজগুলো কার্যক্রমে কোনো অসঙ্গতি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে। তদন্ত প্রতিবেদনে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

ঢাকা/এসএইচ

শেয়ার করুন

তিন ব্রোকারহাউজের কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে বিএসইসির তদন্ত কমিটি

আপডেট: ১০:৩৮:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

পুঁজিবাজারের সদস্য তিনটি ব্রোকারেজহাউজের কার্যক্রমে অসঙ্গতি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কমিটিকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

সম্প্রতি বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ‌্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন থেকে এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

বিএসইসির সার্বিক নজরদারিতে থাকা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মধ্যে পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেড (ডিএসই ট্রেক নং- ৭৯), প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড (ডিএসই ট্রেক নং- ২৩৬) এবং শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের (ডিএসই ট্রেক নং- ৩) কার্যক্রম খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।

এর ধারাবাহিকতায় বিএসইসির জারি করা আদেশ সংশ্লিষ্ট এই তিন ব্রোকারেজ হাউজের ব‌্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।

আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে, পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে পিএফআই সিকিউরিটিজ লিমিটেড, প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করা প্রয়োজন। তাই, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ আইন- ২০২০ এর বিধি ১৭ এবং সিকিউরিটিজ অ‌্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক ডিলার, স্টক ব্রোকার ও অনুমোদিত) বিধিমালা, ২০০০ এর বিধি ১৫ ও ১৬-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন ৩ কর্মকর্তাকে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর কার্যক্রম তদন্ত করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হলো।

আরও পড়ুন: নতুন বিনিয়োগে যাচ্ছে বিএটিবিসি

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মো. ওহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মো. মতিউর রহমান এবং সহকারী পরিচালক মো. সাগর ইসলাম। পরিদর্শক কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন এবং পরিদর্শন প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেবেন বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটি যেসব বিষয় খতিয়ে দেখবেন

তিন ব্রোকারেজ হাউজের মার্জিন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেগেটিভ ইক্যুইটিসহ বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, প্রকৃত নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ, প্রভিশনস, প্রভিশনসের ঘাটতি, মার্জিন অ্যাকাউন্টে অনুমতিবিহীন লেনদেন ও এর কারণ এবং ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ কেন বাড়ছে ও এর জন্য কারা দায়ী?

ব্রোকারেজ হাউজগুলো কেন আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশনস বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে? ব্রোকারেজ হাউজগুলো কোন কোন ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করছে?

২০১৬ সাল থেকে একাধিকবার সময় চেয়েও ব্রোকাররেজ হাউজগুলো কেন আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশনস বজায় রাখতে ব্যার্থ হচ্ছে?

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্য কোনো প্রাসঙ্গিক সমস্যা থাকেলে, সেটাও চিহ্নিত করবে তদন্ত কমিটি।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিগত হাসিনা সরকারের বহুমুখী আর্থিক অনিয়মে জর্জরিত পুঁজিবাজরের সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। বিগত সরকারের আমলে আইন লঙ্ঘন করা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে ১৮ আগস্ট গঠিত খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।

এর ধারাবাহিকতায় তদন্ত কমিটি ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মার্জিন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেগেটিভ ইক্যুইটিসহ বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেতিবাচক ইক্যুইটি কেন বাড়ছে ও এর জন‌্য কারা দায়ী, নেতিবাচক ইক্যুইটির পরিমাণ, প্রভিশনস বা মার্জিন অ্যাকাউন্টের বিপরীতে রক্ষিত তহবিল, প্রভিশনসের ঘাটতি, মার্জিন অ্যাকাউন্টে অননুমোদিত লেনদেনসহ বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখবে।

তদন্তের চিঠি পাওয়া ও এ সংক্রান্ত বিষয়ে মতামতের জন্য ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সাথে  যোগাযোগ কার হলে, পিএফআই সিকিউরিটিজের এমডি কাজী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও শ্যামল ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের এমডি সাজেদুল ইসলাম চিঠির বিষয় নিশ্চিত করলেও তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি। এছাড়া প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের এমডির মোবাইলে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম গণমাধ্যমেকে বলেছেন, ব্রোকারেজ হাউজগুলো কার্যক্রমে কোনো অসঙ্গতি আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে। তদন্ত প্রতিবেদনে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া গেলে সে অনুযায়ী কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

ঢাকা/এসএইচ