০৬:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

তিন মাসে খেলাপি ঋণ কমেছে ১৪ হাজার কোটি টাকা

বিজনেস জার্নাল প্রতিবেদক:
  • আপডেট: ০৩:০৯:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ১০৪৯২ বার দেখা হয়েছে

প্রতিকী ছবি

ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ও হার দুটোই কমেছে। গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ আগের প্রান্তিকের চেয়ে কমেছে ১৩ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। যদিও ২০২১ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় বেড়েছে ১৭ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। করোনার প্রভাব মোকাবিলায় ঋণ পরিশোধে ছাড় বাড়ানো এবং ঋণ পুনঃতপশিলের নতুন নীতিমালা সার্বিকভাবে খেলাপি ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।

২০২০ সালে কভিডের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংক এক নির্দেশনার মাধ্যমে ঋণ পরিশোধে ছাড় দেয়। কোনো গ্রাহক ঋণ পরিশোধ না করলেও খেলাপি করতে নিষেধ করা হয়। আর ২০২১ সালে একজন গ্রাহকের যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করার কথা, কেউ তার ১৫ শতাংশ পরিশোধ করলেই আর খেলাপি হননি।

করোনার প্রভাব কমে আসার কারণে গত বছরের জুন মাসে এক সার্কুলারে জানানো হয়, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে কিস্তির ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত পরিশোধ করলে খেলাপিমুক্ত থাকা যাবে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ওই হার কমিয়ে ৫০ শতাংশ করে। এ সিদ্ধান্তের প্রভাবে খেলাপি ঋণ কমতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ধারণা করছেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে শ্রেণিকৃত বা খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের অনুপাতে ছিল ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর ২০২১ সাল শেষে ১৩ লাখ এক হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা ঋণ স্থিতির বিপরীতে খেলাপি ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছিল খেলাপি।

বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সম্প্রতি যে ঋণ দিতে রাজি হয়েছে, তার অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে ব্যাংক খাতে খেলাপি কমাতে হবে। আর এক্ষেত্রে ২০২৬ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় ব্যাংগুলোর খেলাপি ঋণ নামাতে হবে ১০ শতাংশের নিচে। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা হবে ৫ শতাংশের কম। বাংলাদেশ ব্যাংক আইএমএফের এ শর্তে সায় দিয়ে এরই মধ্যে ১০টি ‘দুর্বল’ ব্যাংকে আলাদাভাবে তদারকি করা হচ্ছে। এসব ব্যাংকে সমন্বয়ক নিয়োগের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ কমানোসহ বিভিন্ন সূচকে উন্নতির লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক সই করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ১৭ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০৫ কোটি ডলার

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ক্যাটাগরিতে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৭৮ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫৬ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা বা ২০ দশমিক ২৮ শতাংশ খেলাপি। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ক্যাটাগরিতে ডিসেম্বর শেষে ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৪৪৮ কোটি টাকা। এ খাতে মোট ঋণের ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ খেলাপি, যার পরিমাণ ৫৬ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা।

বিদেশি ব্যাংক ক্যাটাগরিতে ৬২ হাজার ১৩৭ কোটি টাকার মধ্যে ৩ হাজার ৪৮ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ খেলাপি। বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোর ৩৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ খেলাপি।

ঢাকা/এসএ

শেয়ার করুন

error: Content is protected ! Please Don't Try!

তিন মাসে খেলাপি ঋণ কমেছে ১৪ হাজার কোটি টাকা

আপডেট: ০৩:০৯:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ও হার দুটোই কমেছে। গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ আগের প্রান্তিকের চেয়ে কমেছে ১৩ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। যদিও ২০২১ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় বেড়েছে ১৭ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। করোনার প্রভাব মোকাবিলায় ঋণ পরিশোধে ছাড় বাড়ানো এবং ঋণ পুনঃতপশিলের নতুন নীতিমালা সার্বিকভাবে খেলাপি ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।

২০২০ সালে কভিডের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংক এক নির্দেশনার মাধ্যমে ঋণ পরিশোধে ছাড় দেয়। কোনো গ্রাহক ঋণ পরিশোধ না করলেও খেলাপি করতে নিষেধ করা হয়। আর ২০২১ সালে একজন গ্রাহকের যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করার কথা, কেউ তার ১৫ শতাংশ পরিশোধ করলেই আর খেলাপি হননি।

করোনার প্রভাব কমে আসার কারণে গত বছরের জুন মাসে এক সার্কুলারে জানানো হয়, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে কিস্তির ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত পরিশোধ করলে খেলাপিমুক্ত থাকা যাবে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ওই হার কমিয়ে ৫০ শতাংশ করে। এ সিদ্ধান্তের প্রভাবে খেলাপি ঋণ কমতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ধারণা করছেন।

অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারের গুরুত্বপূর্ন সংবাদ পেতে আমাদের সাথেই থাকুন: ফেসবুকটুইটারলিংকডইনইন্সটাগ্রামইউটিউব

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে শ্রেণিকৃত বা খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের অনুপাতে ছিল ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর ২০২১ সাল শেষে ১৩ লাখ এক হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা ঋণ স্থিতির বিপরীতে খেলাপি ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। মোট ঋণের ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছিল খেলাপি।

বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সম্প্রতি যে ঋণ দিতে রাজি হয়েছে, তার অন্যতম একটি শর্ত হচ্ছে ব্যাংক খাতে খেলাপি কমাতে হবে। আর এক্ষেত্রে ২০২৬ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় ব্যাংগুলোর খেলাপি ঋণ নামাতে হবে ১০ শতাংশের নিচে। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা হবে ৫ শতাংশের কম। বাংলাদেশ ব্যাংক আইএমএফের এ শর্তে সায় দিয়ে এরই মধ্যে ১০টি ‘দুর্বল’ ব্যাংকে আলাদাভাবে তদারকি করা হচ্ছে। এসব ব্যাংকে সমন্বয়ক নিয়োগের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ কমানোসহ বিভিন্ন সূচকে উন্নতির লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক সই করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ১৭ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১০৫ কোটি ডলার

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে সরকারি মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক ক্যাটাগরিতে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ২ লাখ ৭৮ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫৬ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা বা ২০ দশমিক ২৮ শতাংশ খেলাপি। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ক্যাটাগরিতে ডিসেম্বর শেষে ঋণের পরিমাণ ১১ লাখ ৪৪৮ কোটি টাকা। এ খাতে মোট ঋণের ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ খেলাপি, যার পরিমাণ ৫৬ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা।

বিদেশি ব্যাংক ক্যাটাগরিতে ৬২ হাজার ১৩৭ কোটি টাকার মধ্যে ৩ হাজার ৪৮ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৯১ শতাংশ খেলাপি। বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলোর ৩৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে ১২ দশমিক ৮০ শতাংশ খেলাপি।

ঢাকা/এসএ