ত্রাণ বিতরণ সিম্বলিক, মূল উদ্দেশ্য ছিল অবরোধ ভাঙা: শহিদুল আলম

- আপডেট: ০৫:৩২:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫
- / ১০১৮০ বার দেখা হয়েছে
বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলম বলেছেন, ফিলিস্তিনে ফ্লোটিলা যাত্রার মূল উদ্দেশ্য ছিল অবরোধ ভাঙা। ইসরায়েলিরা দেশটিতে সাংবাদিক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রবেশাধিকার অবরোধ করে রেখেছে। এই অবরোধ ভাঙাই ফ্লোটিলা যাত্রার মূল উদ্দেশ্য ছিল। ত্রাণ বিতরণ তো একটি সিম্বলিক মাত্র।
তিনি বলেন, ত্রাণ দেওয়ার জন্য তো দেশটিতে শত শত ট্রাক অপেক্ষা করছে। প্রবেশ অধিকার পাচ্ছে না বলে সেই ত্রাণ প্রবেশ করতে পারছে না।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় রাজধানীর পান্থপথে দৃকপাঠ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শহিদুল আলম। দখলদার ইসরায়েলের হাতে তার বেআইনিভাবে আটক ও মুক্ত হয়ে ঢাকায় ফেরার অভিজ্ঞতা জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশি এই আলোকচিত্রী বলেন, ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সাংবাদিকদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে সেখানের প্রকৃত চিত্র জানা যাচ্ছে না। স্বাস্থ্য কর্মীদের অবাধ যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে না। আক্রান্ত ফিলিস্তিনবাসীর ওপর হসপিটালে আক্রমণ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মী ও মানবাধিকার কর্মীকে মেরে ফেলা হচ্ছে। আমরা প্রকৃতপক্ষে এই অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যে গিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, যেখানে ইসরায়েল নিজেদের মোরাল আর্মি হিসেবে নিজেদের দাবি করেন। সেখানে তারা কীভাবে একটি জাতির ওপর এমন নির্যাতন করছে, এটা আমাদের প্রশ্ন। আন্তর্জাতিক আইন কীভাবে তারা প্রতিদিন ভাঙছে, এটা আমাদের প্রশ্নের বিষয়।
শনিবার ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান শহিদুল আলম। এর আগে শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ২৫ মিনিট) তাকে বহনকারী টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ইসরায়েল থেকে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। তখন তাকে স্বাগত জানান ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. মিজানুর রহমান। পরে ইস্তাম্বুলের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে শহিদুল আলম ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের নৃশংসতা বন্ধ ও গাজায় ইসরায়েলি নৌ অবরোধ ভাঙার প্রত্যয় নিয়ে ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ নামে একটি বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্ম গাজা অভিমুখে ওই নৌযাত্রা শুরু করেছিল। ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে আত্মপ্রকাশ করা আরেক উদ্যোগ থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজার আটটি নৌযানও এ যাত্রায় অংশ নিয়েছিল। মোট ৯টি নৌযানের এ বহরে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকার কর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। সেই দলে ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। গত বুধবার (৮ অক্টোবর) ওই নৌবহরে আক্রমণ করে সব অধিকার কর্মী ও নাবিককে ধরে নিয়ে যান ইসরায়েলি সেনারা।
পরে শহিদুল আলমসহ আটক অনেককে ইসরায়েলের কেৎজিয়েত কারাগারে নেওয়া হয়। ইসরায়েলে আটক হওয়ার পর থেকেই শহিদুল আলমের মুক্তি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার জর্ডান, মিসর ও তুরস্কের মাধ্যমে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আসছিল।
কারামুক্ত হয়ে শহিদুল আলম ইসরায়েল থেকে তুরস্কের উদ্দেশে যাত্রা করেন। শহিদুল আলমের মুক্তি ও ইসরায়েল থেকে তার প্রত্যাবর্তনে সাহায্য করার জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ঢাকা/এসএইচ